শারদা সিনহা

ভারতীয় গায়িকা

শারদা সিনহা (১ অক্টোবর ১৯৫২) একজন ভারতীয় লোকসঙ্গীত শিল্পী। তিনি মূলতঃ মৈথিলী ভাষার কন্ঠশিল্পী যদিও তিনি ভোজপুরী এবং মগহী ভাষার গানে কণ্ঠদান করেছেন। তিনি ছট পূজার গান 'হো দিননাথ'-এর মৈথিলী সংস্করণ গেয়ে বিশেষভাবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। মৈথিলী লোকসঙ্গীতের ক্ষেত্রটিতে তাঁর অগ্রণী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯১ সালে ভারত সরকার তাঁকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মশ্রী এবং ২০১৮ সালে তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ প্রদান করে।[২][৩]

শারদা সিনহা
জন্ম১ অক্টোবর ১৯৫২
হুলাস, রাঘোপুর, সুপোয়াল জেলা, বিহার[১]
পেশাকণ্ঠশিল্পী
কর্মজীবন১৯৮০ – বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীব্রজকিশোর সিনহা
পুরস্কারপদ্মভূষণ, ২০১৮
পদ্মশ্রী, ১৯৯১

জীবনী সম্পাদনা

১৯৫২ সালের ১ অক্টোবর তারিখে বিহার-এর মিথিলা ক্ষেত্রের সুপোয়াল জেলার হুলাস গ্রামে শারদা সিনহার জন্ম হয়েছিল।[৪] তাঁর পিতা সুখদেব ঠাকুর বিহার সরকারের শিক্ষা বিভাগের একজন প্রধান ছিলেন।[৫] ছোট থেকে শারদার সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ থাকতে দেখে তাঁর পিতা একজন নৃত্য-গীতের শিক্ষককে ঘরে এসে শেখানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।[৫] পরে তিনি পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলা বিভাগের স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।[৬] তাঁর ব্রজকিশোর সিনহার সঙ্গে বিবাহ হওয়ার পর শহুরের বাড়ি থেকে সঙ্গীতের ক্ষেত্রে অল্প বাধার সম্মুখীন হয়েছিল যদিও তাঁর স্বামী তাঁকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন।[৪]

কর্মজীবন সম্পাদনা

শারদা সিনহা ৮০র দশকে মৈথিলী, ভোজপুরী এবং মগহী ভাষার পারম্পরিক লোকগান গেয়ে সমাদৃত হয়েছিলেন। লোকগীতির বাইরে তিনি মৈথিলী কবি বিদ্যাপতির গান শ্রদ্ধাঞ্জলি নামের এলবামে রেকর্ডিং করেছিলেন। সেইসময়ে তাঁর ভোজপুরী গানসমূহ বিহার এবং উত্তর প্রদেশে বিখ্যাত হয়েছিল। তাঁর জনপ্রিয়তার জন্য একটি গানের রেকর্ডিং-এর জন্য সেইসময়ে ৫০ হাজার টাকা পারিতোষিক লাভ করেছিলেন।[৭][৮] তিনি হিন্দী ছবি 'ম্যায়নে প্যার কিয়া', 'হাম আপকে হে কন' এবং সাম্প্রতিক সময়ে 'গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর' ছবিতে কণ্ঠদান করেছেন। ১৯৮৯ সালে মুক্তি লাভ করা 'মাই' নামের হিন্দী চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয়ও করেছিলেন।[৮]

ছট পূজার গানের সঙ্গে শারদা সিনহার নাম বিশেষভাবে জড়িত হয়ে আছে। পারম্পরিক ছট গান সমূহ গেয়ে তিনি বিখ্যাত হয়ে উঠেছিলেন। তিনি দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থানে সঙ্গীতানুষ্ঠান পরিবেশন করেছেন।

পুরস্কার এবং সম্মান সম্পাদনা

শারদা সিনহা মৈথিলী লোকসঙ্গীতের ক্ষেত্রটিতে অগ্রণী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯১ সালে ভারত সরকার তাঁকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মশ্রী প্রদান করেছিল। বিহার সরকার তাঁকে বিহার কোকিলা উপাধিতে সম্মানিত করেছিল। ২০০৬ সালে মধ্যপ্রদেশ সরকার তাঁকে দেবী অহল্যা সম্মান প্রদান করেছিল। ২০১৮ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মভূষণ পুরস্কার প্রদান করে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Padmashri Sharda Sinha interviewed by Lalit Narayan Jha"মিথিলা মিরর (সাক্ষাৎকার)। 
  2. "Government announces recipients of 2018 Padma awards"দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া। ২৬ জানুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ 
  3. "This Chhath Puja song is making people so nostalgic, they want to go home"দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। ৪ নভেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৬ 
  4. ধ্রুব কুমার (২০১৩)। বিহার শতাব্দী কে ১০০ নায়ক। প্রভাত প্রকাশনা। পৃষ্ঠা 165–। আইএসবিএন 978-93-5048-361-9 
  5. অর্জুন, শ্বাতী (২ সেপ্টেম্বর ২০১২)। "'তার বিজলী' ছে পেহলে দর রেহি থি:শারদা সিনহা"bbc.com/hindi (হিন্দি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৭ 
  6. বিজয় কুমার; যুবরাজ দেব প্রসাদ (২০১২)। বিহার কে বিকাশ মে মহিলাও কি ভূমিকা। পৃষ্ঠা 109–। আইএসবিএন 978-93-81456-00-2 
  7. Peter Manuel (১৯৯৩)। Cassette Culture: Popular Music and Technology in North India। University of Chicago Press। পৃষ্ঠা ১৬৫ –। আইএসবিএন 978-0-226-50401-8 
  8. Avijit Ghosh (২২ মে ২০১০)। CINEMA BHOJPURI। Penguin Books Limited। পৃষ্ঠা 87–। আইএসবিএন 978-81-8475-256-4