শামসুল হুদা চৌধুরী
শামসুল হুদা চৌধুরী (১ মে ১৯২০ – ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০০) পরিণত বয়সে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যোগদান করেন এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে যিনি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৫ম স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[২] তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় ধর্ম বিষয়ক, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীকালে রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভায় তিনি প্রথমে তথ্য ও বেতার মন্ত্রী ও পরে বেতার, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রেল ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরও দায়িত্ব পালন করেছেন।
শামসুল হুদা চৌধুরী | |
---|---|
জাতীয় সংসদের ৫ম স্পিকার | |
কাজের মেয়াদ ১০ জুলাই ১৯৮৬ – ৫ এপ্রিল ১৯৯১ | |
পূর্বসূরী | মির্জা গোলাম হাফিজ |
উত্তরসূরী | আব্দুর রহমান বিশ্বাস |
ময়মনসিংহ-৫ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ৭ মে ১৯৮৬ – ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ | |
পূর্বসূরী | খুররম খান চৌধুরী |
উত্তরসূরী | কেরামত আলী তালুকদার |
ময়মনসিংহ-৮ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ – ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ | |
পূর্বসূরী | আব্দুল হালিম |
উত্তরসূরী | হাশিম উদ্দিন আহমেদ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | বীরভূম, অবিভক্ত বাংলা, ব্রিটিশ ভারত | ১ মে ১৯২০
মৃত্যু | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০০ ঢাকা | (বয়স ৭৯)
রাজনৈতিক দল | জাতীয় পার্টি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল |
দাম্পত্য সঙ্গী | লায়লা আর্জুমান্দ বানু |
সন্তান | শাহনাজ হুদা[১] |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | প্রেসিডেন্সি কলেজ আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় |
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাশামসুল হুদা চৌধুরী ১ মে ১৯২০ সালে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯৪১ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমএ ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। ভারত বিভাগের পর তিনি নবসৃষ্প পূর্ব পাকিস্তানে আগমন করেন ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় অভিবাসন গ্রহণ করেন। তার স্ত্রী গায়িকা ও সমাজকর্মী লায়লা আর্জুমান্দ বানু।[২]
রাজনৈতিক ও কর্মজীবন
সম্পাদনাশামসুল হুদা চৌধুরী ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ ব্রডকাস্টিং এনকোয়্যারি কমিশনের চেয়ারম্যান। গণমাধ্যমের প্রতি আজীবন আগ্রহী শামসুল হুদা চৌধুরী ছিলেন টেলিভিশন ও বেতারের এক সুপরিচিত। তিনি অল ইন্ডিয়া রেডিও এবং পরবর্তীকালে রেডিও পাকিস্তানের আঞ্চলিক পরিচালক, পর্যটন বিভাগের উপ-পরিচালক, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, ইপিআইডিসি-র জনসংযোগ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক দলের নেতৃত্ব দেন তিনি।[২]
তিনি নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৭৭ সালে তথ্য ও প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নিযুক্ত হন। ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন ময়মনসিংহ-৮ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৩]
জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় তিনি ধর্মীয় বিষয়ক, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৪]
আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভায় তিনি ২৪ নভেম্বর ১৯৮১ সাল থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ সাল পর্যন্ত তথ্য ও বেতার মন্ত্রী ও ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ সাল থেকে ২৪ মার্চ ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বেতার, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৪][৫][৬]
৭ মে ১৯৮৬ সালের তৃতীয় ও ৩ মার্চ ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে ময়মনসিংহ-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৭][৮] ১০ জুলাই ১৯৮৬ সাল থেকে ৫ এপ্রিল ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৫ম স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি রেল ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরও দায়িত্ব পালন করেন।[২]
মৃত্যু
সম্পাদনা২০০০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শামসুল হুদা চৌধুরীর মৃত্যু হয় এবং ঢাকায় স্ত্রী লায়লা আর্জুমান্দ বানুর কবরের পাশে সমাহিত হন।[২]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ রকিবুল ইসলাম সোহাগ। "দেশবরেণ্য কন্ঠশিল্পী লায়লা আর্জুমান্দ বানুর আজ ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী"। ২ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "চৌধুরী, শামসুল হুদা"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০।
- ↑ "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ মাহফুজ উল্লাহ। প্রেসিডেন্ট জিয়া: রাজনৈতিক জীবনী।
- ↑ এ এস এম শামসুল আরেফিন। বাংলাদেশে নির্বাচন।
- ↑ খালেদা হাবিব। বাংলাদেশঃ নির্বাচন, জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রিসভা ১৯৭০-৯১।
- ↑ "৩য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "৪র্থ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৮ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।