শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ

বাংলাদেশের ঢাকা শহরের কলেজ

শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত সামরিক ভূমি ও ক্যান্টনমেন্ট অধিদপ্তর পরিচালিত একটি উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কলেজটি মূলত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সন্তানদের জন্য হলেও বেসামরিক ব্যক্তিবর্গের সন্তানরাও এখানে পড়াশোনা করতে পারে।

শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ
শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের মনোগ্রাম.jpg
শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের মনোগ্রাম
ঠিকানা
মানচিত্র
এমইএস (জিয়া কলোনী)



স্থানাঙ্ক২৩°৪৮′৫৭″ উত্তর ৯০°২৪′১২″ পূর্ব / ২৩.৮১৫৮০° উত্তর ৯০.৪০৩২৪° পূর্ব / 23.81580; 90.40324
তথ্য
ধরনস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান
প্রতিষ্ঠাকাল১৯৯৮ (1998)
বিদ্যালয় বোর্ডমাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা
বিদ্যালয় জেলাঢাকা
কর্তৃপক্ষসামরিক ভূমি ও ক্যান্টনমেন্ট অধিদপ্তর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
বিদ্যালয় নম্বর১০৭৮৫৭
ইআইআইএন১০৭৮৫৭ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
চেয়ারম্যানব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সেলিম মাহমুদ, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি
অধ্যক্ষনূর নাহার ইয়াসমীন
অনুষদ৫০+
লিঙ্গছেলে ও মেয়ে
বয়সসীমা১৬-২৮
ভর্তি২,০০০+
ভাষাবাংলা এবং ইংরেজি
শিক্ষায়তন৫ একর
ক্যাম্পাসের ধরনশহুরে
রংআকাশী, নীল, লাল ও সবুজ
ক্রীড়াফুটবল, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, ভলিবল, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন, হ্যান্ডবল
ডাকনামSRCC
বার্ষিক ম্যাগাজিনদিশারী
ওয়েবসাইটsrcc.edu.bd

ইতিহাসসম্পাদনা

এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।[১] সেই সময় এটি ইউনিট স্কুল নামে পরিচিত ছিল। ১৯৫১ সালে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড গঠিত হলে ১৯৫২ সালে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড প্রতিষ্ঠানটি অধিগ্রহণ করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বীর বিক্রম রমিজ উদ্দিনের নামানুসারে বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয় শহীদ রমিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়। ৫ অক্টোবর ১৯৯৮ সালে বিদ্যালয়টিকে কলেজে উন্নীত হয় এবং নামকরণ করা হয় শহীদ রমিজ উদ্দিন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ২০০২ সালে বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজ নামকরণ করা হয় ও পরে পুনঃনামকরণ করে "শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ" করা হয়।

অবস্থান ও ক্যাম্পাসসম্পাদনা

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের ঢাকা সেনানিবাসের প্রাণকেন্দ্রে কলেজটি অবস্থিত।

শিক্ষা ও পাঠ্যক্রমসম্পাদনা

কলেজটিতে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণিতে বিজ্ঞান শাখা, মানবিক শাখা ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার কার্যক্রম চালু রয়েছে। এখানে ২,০০০-এরও অধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। কলেজে মোট শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে প্রায় ৬০ জন।

২০০৪-২০০৫ শিক্ষাবর্ষে কলেজটিকে ডিগ্রি পর্যায়ে উন্নীত করা হয় হয় এবং বিএ, বিএসসি ও বিএসএস (পাস) কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম শুরু করা হয়।

ভর্তি প্রক্রিয়াসম্পাদনা

প্রতিবছর এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনের মাধ্যমে নতুন ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হয়। শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষার নম্বরের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা মেধা তালিকা অনুযায়ী ভর্তি করা হয়। তবে সামরিক বাহিনীর কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের সন্তানদের ভর্তির জন্য বিশেষ কোটা রয়েছে। যা অনলাইনে আবেদনের সময় এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে "বিশেষ কোটা" নামে ব্যবহার হয়।

কলেজ পোশাকসম্পাদনা

কলেজে ছাত্রছাত্রীদের জন্য গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন পোশাকের ধরন ও পরিচয়পত্র কলেজ কর্তৃক সুনির্দিষ্ট রয়েছে। ক্লাসটেস্ট, পরীক্ষা দেওয়া বা যে কোনো ক্ষেত্রে কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থানকালে সকল ছাত্রছাত্রীর কলেজ ড্রেস পরিধান ও পরিচয়পত্র বহন করে থাকা বাধ্যতামূলক। বোর্ড চূড়ান্ত পরীক্ষাসমূহ যা অন্য কলেজ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় সেক্ষেত্রেও কলেজ ড্রেস পরিধান ও পরিচয়পত্র বহন করা বাধ্যতামূলক।

পরিচয়পত্রসম্পাদনা

ছাত্রছাত্রীর জন্য পরিচয়পত্র ভর্তির পর অফিস থেকে সরবরাহ করা হয়। কলেজে ক্লাস, সেমিনার ও লাইব্রেরিতে অধ্যয়ন, পরীক্ষা এবং যাবতীয় শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সময় প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে অবশ্যই পরিচয়পত্র সাথে রাখতে হয়।

প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক কার্যক্রমসম্পাদনা

  • বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা
  • সাংস্কৃতিক কার্যক্রম
  • মেধা ও সৃজনশীল কার্যক্রম
  • স্কাউট ও রোভার স্কাউট কার্যক্রম
  • পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অভিযান
  • বার্ষিক মিলাদ মাহফিল
  • নবীন বরণ অনুষ্ঠান
  • বোর্ড পরিক্ষার্থীদের বিদায় সম্বর্ধনা
  • বার্ষিক দেয়ালিকা প্রকাশ
  • অভিভাবক দিবস

সুযোগ-সুবিধা ও কার্যক্রমসম্পাদনা

কলেজটিতে রয়েছে সকল ধরনের বিষয় ভিত্তিক ল্যাব সুবিধা। আরও রয়েছে একটি কম্পিউটার ল্যাব, যেখানে ৩০টিরও অধিক কম্পিউটার রয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে কম্পিউটার শিক্ষার জন্য কম্পিউটার ল্যাবটি ব্যবহৃত হয়। কলেজে একটি গ্রন্থাগার রয়েছে যেখানে লাইব্রেরি কার্ড জমাদান সাপেক্ষে যে কেউ প্রয়োজনীয় বই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইস্যু করা যায় তাছাড়া লাইব্রেরিতে দৈনিক, সাপ্তাহিক পত্রিকার ব্যবস্থা রয়েছে।

সহশিক্ষা কার্যক্রমসম্পাদনা

কলেজটি বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সুপরিচিত। কলেজের শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবইয়ের শিক্ষার পাশাপাশি নানা ধরনের সহশিক্ষা কার্যক্রমে নিয়মিত অংশ নিয়ে থাকে। এখানে রয়েছে প্রায় ১০টি ক্লাব। এই ক্লাবগুলো নিয়মিত আন্তঃকলেজ এবং জাতীয় পর্যায়ের সকল প্রোগ্রামে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে থাকে। মহান স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও অন্যান্য জাতীয় দিবসসমূহ এই প্রতিষ্ঠান যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে।

পাঠ্যক্রম অধ্যয়নের পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক, সংগীত ইত্যাদি চর্চা করে থাকে। ছাড়া বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা অনুশীলন সহ ছাত্রছাত্রীদের নৈতিক মনোবল দৃঢ় করার উদ্দেশ্যে কলেজ কর্তৃক প্রতিবছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

ক্লাবগুলো হলো:সম্পাদনা

  • বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি)
  • রোভার স্কাউটস, বাংলাদেশ স্কাউটস
  • শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ ডিবেটিং ক্লাব
  • শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ সাংস্কৃতিক ক্লাব
  • শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ আর্ট অ্যান্ড ক্রাফট ক্লাব
  • শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ ফটোগ্রাফি ক্লাব
  • শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ বিজ্ঞান ক্লাব
  • শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ বিজনেস ক্লাব
  • শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ ইংরেজী ক্লাব
  • শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ গণিত ক্লাব

ফলাফল ও সাফল্যসম্পাদনা

উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষাতে প্রতিষ্ঠানের সাফল্য অতুলনীয়। ৯৮% থেকে ১০০% পর্যন্ত শিক্ষার্থী বিভিন্ন বোর্ড পরিক্ষায় পাশ করে থাকে। গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ এবং জিপিএ ফাইভ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা অসংখ্য।

আবাসনসম্পাদনা

এখানে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কলেজের নিজস্ব আবাসন এর সুবিধা নেই। তবে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এর অভ্যন্তরে নির্ঝর আবাসিক এলাকায় দুইটি বহুতল (১৪ তলা) বিল্ডিং রয়েছে, এখানে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও মিরপুর ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আবাসন সুবিধা গ্রহণ করতে পারে।

খেলাধুলাসম্পাদনা

কলেজটিতে রয়েছে একটি বড় খেলার মাঠ যেখানে প্রাত্যহিক সমাবেশ ও বিভিন্ন খেলাধুলা হয়ে থাকে। অত্র প্রতিষ্ঠানে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় 'বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা'। এছাড়া স্কুলের চারটি হাউসের মধ্যে আয়োজিত হয় 'আন্তঃহাউস ফুটবল প্রতিযোগিতা' ও 'আন্তঃহাউস হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতা। প্রতিষ্ঠানে সারাবছর চারটি হাউসের মধ্যে এসব প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

চিত্রশালাসম্পাদনা

আরও দেখুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "Shaheed Ramiz Uddin Cantonment Public School & College"www.mawbiz.com.bd (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১৪ 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা