শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত (জন্ম- ২০ জুলাই ১৮৯২ - মৃত্যু-০৫ মার্চ ১৯৬১)একজন বাঙালি নাট্যকার, সাংবাদিক। তিনি বাংলাদেশের খুলনা জেলার সেনহাটি গ্রামে তার জন্মগ্রহণ করেন। [১] তার পিতার নাম সত্যচরণ সেনগুপ্ত।
শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত | |
---|---|
![]() শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত | |
জন্ম | সেনহাটি, খুলনা জেলাঅধুনা বাংলাদেশ | ২০ জুলাই ১৮৯৭
মৃত্যু | ৫ মার্চ ১৯৬১ | (বয়স ৬৮)
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারতীয় |
পেশা | লেখক, নাট্যকার, সাংবাদিক |
পরিচিতির কারণ | নাটক |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | সিরাজুদ্দৌলা |
ব্যক্তিজীবনসম্পাদনা
শচীন্দ্রনাথ পিতা সত্যচরণ সেনগুপ্তের কর্মস্থল রংপুরে শিক্ষালাভ করেন। সেখানে বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকী ছিলেন তার সহপাঠী। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে স্বদেশী আন্দোলনে যোগ দিয়ে শচীন্দ্রনাথ বিদ্যালয় ত্যাগ করেন এবং অনুশীলন সমিতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার জাতীয় বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা পাস করে তিনি বিএ পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। এরপর কটক মেডিক্যাল স্কুলে চিকিৎসাবিদ্যা ও ময়মনসিংহে কবিরাজী চিকিৎসা করেন।
কর্মজীবনের শুরুতে কিছুদিন জাতীয় কলেজে অধ্যাপনা করে পরে সাংবাদিকতা পেশায় যোগ দেন। তার সাংবাদিক জীবনের শুরু দৈনিক কৃষক ও ভারত পত্রিকায় সহসম্পাদকরূপে। এছাড়া তিনি সাপ্তাহিক হিতবাদী, বিজলী ( বারীন্দ্রকুমার ঘোষ প্রতিষ্ঠিত), আত্মশক্তি প্রভৃতি পত্রিকায় সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।[২]
সাহিত্যজীবনসম্পাদনা
শচীন্দ্রনাথ নাথ নাট্যকার হিসেবেই সমধিক পরিচিত। তার রচিত ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক নাটকের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় দেশাত্মবোধ। তার রচিত সামাজিক নাটকেও দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়। তার নাটকের অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও হিন্দু-মুসলমানের মিলনের বাণী। ইতিহাসনিষ্ঠায়, কাহিনীর দৃঢ় সংবদ্ধতায় ও শক্তিশালী সংলাপে তার নাটক সমৃদ্ধ।
তার উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক নাটক হচ্ছে: গৈরিক পতাকা (১৯৩০), দেশের দাবি (১৯৩৪), রাষ্ট্রবিপ্লব (১৯৪৪), সিরাজুদ্দৌলা (১৯৩৮), ধাত্রীপান্না (১৯৪৮), সবার উপরে মানুষ সত্য (১৯৫৭), আর্তনাদ ও জয়নাদ (১৯৬১)। তার ঐতিহাসিক নাটক সিরাজুদ্দৌলা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ১৯৪৬ সালে কলকাতার রঙ্গমঞ্চে রাষ্ট্রবিপ্লব নাটকটিও বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।[২]
রক্তকমল (১৯২৯), ঝড়ের রাতে (১৯৩১), নার্সিংহোম (১৯৩৩), স্বামী-স্ত্রী (১৯৩৭), তটিনীর বিচার (১৯৩৯), মাটির মায়া, কাঁটা ও কমল, প্রলয়, জননী প্রভৃতি তার সামাজিক নাটক। এসব নাটকে ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনের বিচিত্র জটিলতা ও সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও তার রচিত কিশোরদের নাটক, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনী ও অনুবাদ গ্রন্থ আছে।
দেশভ্রমণসম্পাদনা
বেসরকারি সাংস্কৃতিক দলের নেতা হিসেবে শচীন্দ্রনাথ রাশিয়া, নরওয়ে, পোল্যান্ড, চীন, সিংহল ইত্যাদি দেশ ভ্রমণ করেন। [১]
মৃত্যুসম্পাদনা
১৯৬১ সালের ৫ মার্চ শচীন্দ্রনাথ মৃত্যুবরণ করেন।