লেইলা পাহলভি
রাজকন্যা লেইলা পাহলভি (ফার্সি: لیلا پهلوی, ২৭ মার্চ ১৯৭০ – ১০ জুন ২০০১) ছিলেন ইরানের রাজকন্যা এবং ইরানের শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি এবং তার তৃতীয় স্ত্রী ফারাহ দিবার কনিষ্ঠ কন্যা। লেইলা ফ্যাশন লেবেল ভ্যলেন্তিনোর খণ্ডকালীন মডেল ছিলেন।[১]
লেইলা পাহলভি | |||||
---|---|---|---|---|---|
ইরানের রাজকন্যা | |||||
জন্ম | তেহরান, ইরান | ২৭ মার্চ ১৯৭০||||
মৃত্যু | ১০ জুন ২০০১ লন্ডন, যুক্তরাজ্য | (বয়স ৩১)||||
সমাধি | |||||
| |||||
রাজবংশ | পাহলভি (জন্মসূত্রে) | ||||
পিতা | মোহাম্মদ রেজা পাহলভি | ||||
মাতা | ফারাহ দিবা |
প্রাথমিক জীবন, নির্বাসন ও শিক্ষা
সম্পাদনাইরানের রাজকন্যা লেইলা এর রীতি | |
---|---|
উদ্ধৃতিকরণের রীতি | তার রাজকীয় মহিমা |
কথ্যরীতি | আপনার রাজকীয় মহিমা |
লেইলা পাহলভি ২৭ মার্চ ১৯৭০ সালে ইরানের তেহরানে পাহলভি রাজবংশে জন্ম নেন।[১] তিনি শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির পঞ্চম এবং তার তৃতীয় সম্রাজ্ঞী ফারাহ দিবার চতুর্থ ও কনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন। তার দুই বোন শাহনাজ পাহলভি ও ফারাহনায পাহলভি এবং দুই ভাই রেজা পাহলভি ও আলি-রেজা পাহলভি।[২][৩]
১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তার বড় বোন ফারাহনায পাহলভির মত লেইলা তেহরানে নিজ রাজবংশের বিশেষ বিদ্যালয় নিয়াবরনে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করে।[১][২]
১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের ফলে তার পরিবারকে নির্বাসনে বাধ্য করা হলে নয় বছর বয়সে লেইলা পরিবারের সঙ্গে ইরান ত্যাগ করেন।[৩] ১৯৭৯ সালেই তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিমাউন্ট স্কুল অব নিউ ইয়র্কে পুনরায় প্রথমিক শিক্ষা গ্রহণ শুরু করেন এবং ১৯৮০ সাল পর্যন্ত সেখানে অধ্যয়ন করেন। সে সময়ে তার পরিবার মিশরের কায়রোতে বাস করতো। মাধ্যমিক শিক্ষালাভের জন্য তিনি মিশরের কায়রোতে কায়রো আমেরিকান কলেজে যোগ দেন।[১]
১৯৮০ সালের জুলাইয়ে অ-হুডকিন্স লিম্ফোমা ক্যান্সারে কারণে মিশরে তার বাবা রেজা পাহলভির মৃত্যুর পর, তাদের পরিবার মিশর ত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত হয় এবং সেখানে বসতি স্থাপন করে।[৩] পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস উইলিয়ামসটাউনের পাইন কোবল বিদ্যালয়ে যোগ দেন। ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত লেইলা নিউ ইয়র্কের রাই কান্ট্রি ডে স্কুলে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে স্নাতক শিক্ষার্থী হিসেবে প্রভিডেন্স, রোড আইল্যান্ডের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন করেন।[২][৩]
লেইলা অবিবাহিত ছিলো এবং তার জীবনের বেশিভাগ সময় যুক্তরাষ্ট্রের গ্রীনিচ, কানেকটিকাট এবং ফ্রান্সের প্যারিসে তার মা ফারহার সঙ্গে বাড়িতে কাটিয়েছিল।[২][৩]
বংশ
সম্পাদনালেইলা পাহলভি-এর পূর্বপুরুষ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|
মৃত্যু
সম্পাদনা২০১২ সালের ১০ জুন রোববার যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় ৭:৩০ বিএসটি এর পূর্বে লন্ডনে লিওনার্ড হোটেলের কর্মচারী লেইলাকে তার কক্ষে মৃত অবস্থায় আবিষ্কার করে।[১][৩] তার বয়স হয়েছিল ৩১ বছর।[২]
রাজকন্যা লেইলা, লিওনার্ড হোটেলে তার প্রিয় সুইটের জন্য প্রতি রাত ৪৫০ ইয়োরো ব্যয় করতেন।[৩] হোটেল কর্মকর্তা উল্লেখ করেন যে লেইলা মূলত হোটেলে প্রশন্ন হওয়ার উদ্দেশ্যে অবস্থান নিয়েছিলেন।[৩] তার শরীরে মারাত্মক সেকোনালের ডোজ পাঁচবারেরও বেশি ছিল বলে মনে করা হয়; এটি একটি বারবিচুরেট বা নিদ্রা-উদ্রেককর ঔষধবিশেষ যা অনিদ্রা উপসম করে, যা তার শরীরের মধ্যে স্বল্প পরিমাণ কোকেইনসহ ব্যবহার করা হয়।[৪] তাকে বিছানায় পাওয়া যায় এবং তার শরীর অ্যানোরেক্সিয়া, বালিমিয়া[৪] ও খাদ্য অসহিষ্ণুতা দ্বারা ক্ষয়াপ্রাপ্ত ছিল।[৫] ওয়েস্টমিনস্টার করণারের আদালত পরিচালিত একটি ময়না তদন্ত থেকে তথ্য অন্তর্ভুক্ত তার মৃত্যুর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি একটি সাক্ষাতের সময় তার চিকিৎসকের কাছ থেকে সেকোনাল চুরি করেন বলে ধারণা করা হয়। তিনি ড্রাগ আসক্ত ছিলেন, সাধারণত নির্ধারিত দুটি বড়ির পরিবর্তে একবারে ৪০টি বড়ি গ্রহণ করেছেন বলে জানা যায়।[৪]
২০০১ সালের ১৭ জুন, ফ্রান্সের প্যারিসের সিমেটিয়ার ডি পাসিতে, তার মাতামহ ফরিদহ ঘোটবি দিবার পাশে তাকে সমাধিস্থ করা হয়। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় তার মা সম্রাজ্ঞী ফারাহ ও ইরানের সাম্রাজ্য পরিবার, এছাড়াও ছিলেন সাবেক ফরাসি রাজ পরিবারের সদস্য, ফ্রেডেরিক মিটার্রান্ড এবং ফরাসি রাষ্ট্রপতি ফ্রেঞ্চিও মিটার্রান্ডের ভাতিজা।[৬]
লেইলার মৃত্যু আনেকটা স্বেচ্ছামৃত্যুর ইঙ্গিত করে। ২০১১ সালের ৪ জানুয়ারি, তার ভাই আলি-রেজা পাহলভিকেও বস্টন ম্যাসাচুসেটসে আত্মহত্যার পর মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।[৭]
সম্মান
সম্পাদনাইরানের সম্মান
সম্পাদনাটেলিভিশন তালিকা
সম্পাদনা- ভি.আই.পি.-শোকোল (১৯৭৩)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ ব্রিটানি বার্গার (২৮ জানুয়ারি ২০১৮)। "A look at the Shah and Empress Farah's two daughters – Princesses Farahnaz and Leila"। historyofroyalwomen.com (ইংরেজি ভাষায়)। রাজকীয় মহিলাদের ইতিহাস। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "রাজকন্যা লেইলা পাহলভি"। farahpahlavi.org। ফারাহ পাহলভি। ৩ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ "Shah's daughter found dead" [শাহ'র কন্যাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়]। বিবিসি নিউজ। বিবিসি। ১২ জুন ২০০১। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ গ নেইল টিভিডি (২৬ জুলাই ২০০১)। "Shah's daughter stole to fuel her drug habit" (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ বিল হিউইট (১৬ জুলাই ২০০১)। "Burden of Grief" [দুঃখের বোঝা] (ইংরেজি ভাষায়)। পিপল। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Shah's daughter laid to rest" [শাহ'র কন্যা সমাহিত]। বিবিসি নিউজ। বিবিসি। ২৭ জুন ২০০১। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ সিএনএন ওয়্যার স্টাফ (৫ জানুয়ারি ২০১১)। "Son of former shah of Iran commits suicide" (ইংরেজি ভাষায়)। সিএনএন। সিএনএন। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৮।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে লেইলা পাহলভি (ইংরেজি)
- ফাইন্ড এ গ্রেইভে লেইলা পাহলভি (ইংরেজি)
- ফারহা পাহলভি ওয়েবসাইট থেকে রাজকন্যা লেইলা পাহলভি ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে
- Iranian.com editorial about Pahlavi's death
- Guardian article about results of Pahlavi death inquest