লীলা নায়ডু

ভারতীয় অভিনেত্রী

লীলা নায়ডু (তেলুগু: లీలా నాయుడు; ১৯৪০ - ২৮শে জুলাই ২০০৯) একজন ভারতীয় অভিনেত্রী ছিলেন, যিনি হিন্দি এবং ইংরেজি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তিনি সত্যিকারের জীবনের নানাবতী মামলার উপর ভিত্তি করে নির্মিত ইয়ে রাস্তে হ্যায় পেয়ার কে (১৯৬৩) সহ বেশ কয়েকটি হিন্দি এবং ইংরেজি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন এবং মার্চেন্ট আইভরি প্রোডাকশনের চলচ্চিত্র দ্য হাউজহোল্ডার ছিল তাঁর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র। তিনি ১৯৫৪ সালের ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া-র বিজয়ী ছিলেন এবং মহারানী গায়ত্রী দেবীর সাথে ভোগ ম্যাগাজিন দ্বারা প্রকাশিত "বিশ্বের সেরা দশ সুন্দরী" তালিকার একজন ছিলেন; এই তালিকায় তিনি ১৯৫০-এর দশক থেকে ১৯৬০-এর দশক পর্যন্ত টানা স্থান পেয়েছিলেন। তাঁর অত্যাশ্চর্য সৌন্দর্য এবং সূক্ষ্ম অভিনয় দক্ষতার জন্য তাকে স্মরণ করা হয়।

লীলা নায়ডু
২০১১ সালে প্রকাশিত ভারতের একটি স্ট্যাম্পে লীলা নায়ডু
জন্ম১৯৪০[১]
মৃত্যু২৮ জুলাই ২০০৯
পেশাঅভিনেত্রী, মডেল[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
কর্মজীবন১৯৬০–৯২
দাম্পত্য সঙ্গী
পিতা-মাতা
পুরস্কারমিস ইন্ডিয়া

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

লীলা নায়ডু ১৯৪০ সালে ভারতের বোম্বেতে (বর্তমানে মুম্বই) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা ড. পাত্তিপতি রামাইয়া নায়ডু একজন খ্যাতনামা পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানী ছিলেন, যিনি অন্ধ্র প্রদেশের চিত্তুর জেলার মদনপালের বাসিন্দা ছিলেন এবং তিনি প্যারিসে নোবেল বিজয়ী মারি ক্যুরির তত্ত্বাবধানে একটি গবেষণাগারে কাজ করেছিলেন। তিনি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ইউনেস্কোর বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা এবং পরে টাটা গ্রুপের উপদেষ্টা ছিলেন। তাঁর মা ড. মার্থে মঙ্গে নায়ডু একজন সাংবাদিক এবং ভারততত্ত্ববিদ ছিলেন, যিনি সুইস-ফরাসি বংশোদ্ভূত এবং দক্ষিণ-ফ্রান্সের পোঁত দঁ'আবিগনের বাসিন্দা ছিলেন এবং তিনি সর্বন থেকে পিএইচডি অর্জন করেছিলেন।[২][৩][৪] এই দম্পতির আটটি সন্তানের মধ্যে লীলা নায়ডু একমাত্র জীবিত সন্তান ছিলেন; কারণ মার্থের সাতটি গর্ভপাত হয়েছিল।

লীলা নায়ডু শৈশব থেকে পিতামাতার সাথে তাঁর সম্পর্ক উপভোগ করেছিলেন। তিনি ইউরোপে তাঁর শৈশব অতিবাহিত করেছেন এবং সুইজারল্যান্ডের জেনেভার একটি অভিজাত স্কুলে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন এবং তাঁর কৈশোর বয়সে জিন রেনোয়ারের কাছ থেকে অভিনয়ের শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। লীলা নায়ডু প্যারিসের গ্র্যান্ড-হোটেল অপেরাতে সালভাদোর দালির সাথে দেখা করেছিলেন; যেখানে তিনি তাঁর প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন।[৫] কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা এবং মুক্তিযোদ্ধা সরোজিনী নায়ডু ছিলেন তাঁর খালা।[৬]

পেশা সম্পাদনা

লীলা নায়ডু ১৯৫৪ সালে ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া খেতাব জয়লাভ করেছিলেন এবং একই বছর ভোগ ম্যাগাজিনের বিশ্বের সেরা দশ সুন্দরী মহিলাদের তালিকায় স্থান পেয়েছিল।[২][৭]

মৃত্যু সম্পাদনা

তাঁর দ্বিতীয় স্বামী মোরেসের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ লীলা নায়ডুকে একটি বড় ধাক্কা দিয়েছিল। অতঃপর তিনি কোলাবা কোজওয়ের ক্যান্ট বাই লেনের সার্জেন্ট হাউজের একটি বড় পুরানো বাসায় একা থাকতেন। মারাত্মক বাত অসুখ তাঁর সামাজিক জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। নায়ডু শেষ দশকের বেশিরভাগ সময় বাড়িতেই কাটিয়েছেন। তিনি তাঁর বন্ধুদের ডেকে নিতেন তাঁর বাড়ি, এছাড়াও তাঁর মেয়ে এবং নাতি উভয়ের সাথে যোগাযোগ রাখতেন। তাঁর মেয়ে প্রিয়া ২০০৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি তারিখে হৃৎপেশীর রক্তাভাবজনিত কারণে মারা যান।

লীলা নায়ডু ৬৯ বছর বয়সে দীর্ঘকালীন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে, ফুসফুস কাজ করা বন্ধ করে দিলে, ২০০৯ সালের ২৮শে জুলাই তারিখে মুম্বইয়ে মারা যান।[৮][৯] ২৯শে জুলাই চন্দনওয়াড়ি শ্মশানঘরে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়; সেখানে তাঁর মেয়ে মায়া, নাতি নাতনি এবং বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Leela Naidu: Miss India of 1954 who went on to forge a career as an"। ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৯। 
  2. The Times of India (২৯ জুলাই ২০০৯)। "Leela Naidu put India on the beauty map"The Times Of India। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০০৯ 
  3. Profile Lata Khubchandani, Prevention Today (India Today)."French Mother"
  4. "The Art Of Being Radiant"। Outlook। ১৭ আগস্ট ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৫ 
  5. Pinto, Jerry (২০১০-০৫-০৬)। LEELA: A PATCHWORK LIFE (ইংরেজি ভাষায়)। Penguin UK। আইএসবিএন 9788184752540 
  6. Pinto, Jerry (২০১০-০৫-০৬)। LEELA: A PATCHWORK LIFE (ইংরেজি ভাষায়)। Penguin UK। আইএসবিএন 9788184752540 
  7. "Actress, beauty queen Leela Naidu dead"Press Trust of India। ২৮ জুলাই ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০০৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  8. "Veteran Hindi film actress Leela Naidu dies"Times of India। ২৮ জুলাই ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০০৯ 
  9. Leela Naidu dead ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩১ জুলাই ২০০৯ তারিখে CNN IBN 28 July 2009.

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা