লজ্জা (উপন্যাস)

তসলিমা নাসরিন রচিত একটি উপন্যাস

লজ্জা বাংলাদেশী ঔপন্যাসিক ও নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন রচিত একটি উপন্যাস। উপন্যাসটি একাধিক ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯৯৩ সালে প্রথম প্রকাশিত এই বইটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।[১][২][৩] এই উপন্যাসটিতে লেখক ইসলাম এর বিভিন্ন পবিত্র বিষয়কে অসম্মান ও অমর্যাদা করায় ব্যাপক সমালোচনা ও আন্দোলনের সম্মুখীন হন।পরবর্তীতে তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।[৪]  প্রথম ছয় মাসেই "লজ্জা"র প্রায় পঞ্চাশ হাজার কপি বিক্রি হয়েছিল।[৫]

লজ্জা
লজ্জা উপন্যাসের প্রচ্ছদ
লেখকতসলিমা নাসরিন
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
ধরনউপন্যাস
প্রকাশনার তারিখ
১৯৯৩
আইএসবিএন১-৫৭৩৯২-১৬৫-৩

 নাসরিন বইটি ভারতীয় উপমহাদেশ নিবাসী মানুষদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন। 

সারসংক্ষেপ সম্পাদনা

ভারতের বাবরি মসজিদকে ঘিরে ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা সংঘটিত হলে এর প্রভাব এসে পড়ে পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশেওলজ্জা বইটি সেই সময়কার হিন্দু ধর্মালম্বীদের জীবনযাত্রা নিয়ে লেখা। বইটিতে ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে হওয়া বৈষম্য সেক্যুলারিজমের ছায়ায় বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে। 

কাহিনী সংক্ষেপ সম্পাদনা

১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর, ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার খবরে প্রভাব পড়ে পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশে। দাঙ্গার প্রভাবে দত্ত পরিবার এলাকাবাসীর ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়। পরিবারটির প্রতিটি সদস্য সেই সময়টুকু নিজের অনুভূতি দিয়ে নিজের মত করে দেখে।[১]

সুধোময় একজন দেশপ্রেমী। দেশকে নিজের মায়ের মত দেখে। তার বিশ্বাস, মায়ের মত করে বাংলাদেশও তাকে রক্ষা করবে। কিরণমায়া একজন বিশ্বস্ত স্ত্রীর মতো পতিদেবের আদর্শকেই মানে। তাদের ছেলে সুরঞ্জন মনে করে, জাতীয়তাবাদ সম্প্রদায়প্রীতির চেয়েও শক্তিশালী। অবশ্য তার হতাশ হতে সময় লাগে না। সে আবিষ্কার করে সাম্প্রদায়িকতা তার জানা দেশপ্রেমের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। নীলাঞ্জনা তার দাদার এরূপ ভাবলেশহীনতাকে অবজ্ঞা করে এবং পরিবারের নিরাপত্তার জন্য ভাইকে কোন মুসলমান বন্ধুর বাসায় ওঠার কথা বলতে থাকে। লজ্জা একটি রূপান্তর হওয়ার গল্প। একটি সর্বনাশা ঘটনার প্রভাবে মোহমুক্তি ঘটে ধ্বংসপ্রবণ হয়ে উঠার গল্প। 

অনুবাদ সম্পাদনা

লজ্জা  একাধিক ভাষায় অনূদিত হয়েছে।[৬] ইংরেজি ছাড়াও ফরাসি, ওলন্দাজ, জার্মান, স্পেনীয়, ইতালীয়, সুয়েডীয়,নরওয়েজীয়, ফিনীয়আইসল্যান্ডীয়, ফার্সি, আরব,অসমীয়া, কন্নড়, হিন্দি,গুজরাতি, ওড়িয়া, উর্দু, মারাঠি, তেলুগু, তামিল, পাঞ্জাবি, নেপালি, মালয়লম এবং সিংহলি ভাষায় লজ্জার অনুবাদ করা হয়েছে। 

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "লজ্জা ও নিষিদ্ধ লজ্জার দুই যুগ | banglatribune.com"Bangla Tribune। ২০১৮-০৫-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৫ 
  2. Bangladesh Seeks Writer, Charging She Insults Islam, New York Times, 8 June 1994.
  3. Book Review, New York Times, 28 August 1994.
  4. Censorship by Death New York Times, 6 July 1994.
  5. ENCOUNTERS; Crossing Cultures: The Complex Life of a Man of All Things New York Times, 13 March 1994.
  6. "After 20 years, Taslima's Lajja translated afresh"দ্য হিন্দু। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা