লক্ষ্মীপতি বালাজি

ভারতীয় ক্রিকেটার

লক্ষ্মীপতি বালাজি (উচ্চারণ; তামিল: லக்ஷ்மிபதி பாலாஜி; জন্ম: ২৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮১) তামিলনাড়ুর চেন্নাই এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০০-এর দশকের শুরুরদিক থেকে ২০১০-এর দশকের শুরুরদিক পর্যন্ত ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

লক্ষ্মীপতি বালাজি
২০১৬ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে শুবেক গিল (ডানে) ও লক্ষ্মীপতি বালাজি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামলক্ষ্মীপতি বালাজি
জন্ম (1981-09-27) ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৮১ (বয়স ৪২)
চেন্নাই, তামিলনাড়ু, ভারত
ডাকনামনাইডু
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার, কোচ
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৪৫)
৮ অক্টোবর ২০০৩ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৪ মার্চ ২০০৫ বনাম পাকিস্তান
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৪৭)
১৮ নভেম্বর ২০০২ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ ওডিআই৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ বনাম শ্রীলঙ্কা
ওডিআই শার্ট নং৫৫
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ৪৩)
১১ সেপ্টেম্বর ২০১২ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টি২০আই২ অক্টোবর ২০১২ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
টি২০আই শার্ট নং৫৫
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০১ - ২০১৬তামিলনাড়ু
২০০৮ - ২০১০চেন্নাই সুপার কিংস (জার্সি নং ৫৫)
২০০৯ওয়েলিংটন ফায়ারবার্ডস
২০১১ - ২০১৩কলকাতা নাইট রাইডার্স (জার্সি নং ৫৫)
২০১৪কিংস ইলাভেন পাঞ্জাব (জার্সি নং ৫৫)
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই টি২০আই আইপিএল
ম্যাচ সংখ্যা ৩০ ৭৩
রানের সংখ্যা ৫১ ১২০ ৩৬
ব্যাটিং গড় ৫.৬৬ ১২.০০ ৪.৫
১০০/৫০ -/- -/- ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ৩৫ ২১* ১৫
বল করেছে ১৭৫৬ ১৪৪৭ ৯৬ ১৫১৩
উইকেট ২৭ ৩৪ ১০ ৭৬
বোলিং গড় ৩৭.১৮ ৩৯.৫২ ১২.১০ ২৬.৭
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ৫/৭৬ ৪/৪৮ ৩/১৯ ৫/২৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/- ১১/- ০/- ১১/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৫ অক্টোবর ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে তামিলনাড়ু, চেন্নাই সুপার কিংস, কিংস ইলাভেন পাঞ্জাব, কলকাতা নাইট রাইডার্স, আলবার্ট টুটি প্যাট্রিয়টস দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন তিনি।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

২০০০-০১ মৌসুম থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত লক্ষ্মীপতি বালাজি’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ২০০৮ সালের আইপিএলের উদ্বোধনী আসরে তিনি বেশ ভালো খেলেন। চেন্নাই সুপার কিংসের পক্ষে হ্যাট্রিকসহ ১১ উইকেট পান। এরপর, রঞ্জী ট্রফিতেও সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। ১৭.৫০ গড়ে ৩৬ উইকেট নিয়ে তামিলনাড়ু দলকে সেমি-ফাইনাল অবধি নিয়ে যান। তামিলনাড়ু দলকে রঞ্জী ট্রফিতে নেতৃত্ব দেন। ২০১২ সালের আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষে বেশ মিতব্যয়ী বোলিং করেন।

২০০৮ সালের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের উদ্বোধনী আসরে চেন্নাই সুপার কিংসের পক্ষে খেলেন। সবমিলিয়ে প্রথম তিন আসরে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ১০ মে, ২০০৮ তারিখে আইপিএল প্রতিযোগিতায় প্রথম হ্যাট্রিক করেন। চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় দলের প্রতিপক্ষ ছিল কিংস ইলাভেন পাঞ্জাব। খেলায় তিনি পাঁচ-উইকেট নিয়ে দলকে জয়ী করেন। তবে, শেষ খেলায় চূড়ান্ত ওভারে শেন ওয়ার্নসোহেল তানভীরের মুখোমুখি হন। তন্মধ্যে, তানভীর শেষ বল থেকে জয়সূচক রান সংগ্রহ করেন।

আইপিএলের দ্বিতীয় আসরে খেলে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে চার উইকেট পান। ৩০ এপ্রিল, ২০০৯ তারিখের ঐ খেলায় তার দল জয়লাভ করেছিল। তৃতীয় আসরে সাত খেলায় অংশ নিয়ে সাত উইকেট পান। এ আসরে তার দল শিরোপা জয় করে। এরপর তিনি এসিএলটি২০ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। প্রতিযোগিতার অধিকাংশ খেলায় অংশ নেন ও মিতব্যয়ী বোলিংশৈলী উপহার দেন। ভারতীয় অধিনায়ক এমএস ধোনি’র কাছ থেকে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা কুড়ান ও তাকে প্রতিযোগিতায় সিএসকে’র বিজয়ে অন্যতম খেলোয়াড় হিসেবে মন্তব্য করেন। ২০১১ সালের চতুর্থ আসরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষে চুক্তিবদ্ধ হন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে আটটিমাত্র টেস্ট, ত্রিশটি একদিনের আন্তর্জাতিক ও পাঁচটিমাত্র টি২০আইয়ে অংশগ্রহণ করেছেন লক্ষ্মীপতি বালাজি। ৮ অক্টোবর, ২০০৩ তারিখে আহমেদাবাদে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৪ মার্চ, ২০০৫ তারিখে বেঙ্গালুরুতে সফরকারী পাকিস্তান দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

প্রথম চার ওভারে ৪৪ রান খরচ করেছিলেন। নিজ দেশে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টে তার ভূমিকা সাধারণমানের ছিল। ২০০৩-০৪ মৌসুমে পাকিস্তানে ঐতিহাসিক সফরে তিনি ভারতের শীর্ষস্থানীয় ফাস্ট বোলার হিসেবে আবির্ভূত হন। বিশেষতঃ রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে দুইটি অধিবেশনে তিনি অপ্রতিরোধ্য ছিলেন। এ পর্যায়ে তিনি বলকে উভয় দিক থেকেই সুইং করাতে সক্ষম হন ও তার তৎকালীন সেরা ৪/৬৩ লাভ করেন।

ঘরোয়া ক্রিকেটে সুন্দর খেলার স্বীকৃতিস্বরূপ পুনরায় জাতীয় দলের পক্ষে খেলার জন্যে আমন্ত্রিত হন। জানুয়ারি, ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কায় পাঁচটি ওডিআই নিয়ে গড়া সিরিজে মুনাফ প্যাটেলের আঘাতের কারণে তাকে দলে নেয়া হয়। এরপর নিউজিল্যান্ড সফরে গেলেও তাকে কোন খেলায় অংশগ্রহণ করানো হয়নি।

অবসর সম্পাদনা

নভেম্বর, ২০১৬ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ও লিস্ট এ ক্রিকেট থেকে নিজের অবসর গ্রহণের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন।[১] বর্তমানে তিনি চেন্নাই সুপার কিংসের বোলিং কোচের দায়িত্বে রয়েছেন। এ দলেই তিনি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়াও, স্টার স্পোর্টস তামিলের সাথে কাজ করছেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "L Balaji calls time on first-class, List A career"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-২৪ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা