রিনা আমিরি একজন আফগান বংশোদ্ভূত সক্রিয় কর্মী, যিনি 'আফগান নারী, মেয়ে ও মানবাধিকার' বিষয়ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি। যুক্তরাষ্ট্রে তার কর্মজীবনে তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ফোরামে আফগানদের অধিকার প্রতিষ্ঠার মুখপাত্র হয়ে ওঠেন। তিনি ওবামা প্রশাসনে রাষ্ট্রপতির বিশেষ উপদেষ্টা হওয়া এবং আফগান শরনার্থীরদের অবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সচেতনা বৃদ্ধি তার কর্মজীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

রিনা আমিরি
২০২২ সালে রিনা আমিরি
আফগান 'নারী, মেয়ে ও মানবাধিকার' বিষয়ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
৬ জুন, ২০২২
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৯৬৯ (বয়স ৫৪–৫৫)
আফগানিস্তান রাজ্য
নাগরিকত্বমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
প্রাক্তন শিক্ষার্থীইন্দ্রপ্রস্থ কলেজ ফর উইমেন, রুহর বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়েস্টার্ন মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ফ্লেচার স্কুল অব ল এন্ড ডিপ্লোমেসি

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা সম্পাদনা

আমিরির জন্ম আফগানিস্তানে, কিন্তু তার বয়স যখন চার বছর তখন তিনি শরণার্থী হয়েছিলেন।[১] তার বাবা-মা ভারতে যাওয়ার পূর্বে আফগানিস্তানের বাইরে যাওয়ার জন্য গোপনে খাইবার গিরিপথ দিয়ে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে তারা ক্যালিফোর্নিয়ায় বসতি স্থাপন করেন। তার বাবা পেশায় একজন চিকিৎসক এবং মা একটি ব্যাংকে চাকরি করতেন।[১] তিনি আফগানিস্তানের প্রয়াত নির্বাসিত রাজার আত্মীয়।[২]

কর্মজীবন সম্পাদনা

২০২২ সালে, আমিরি তার জীবন-পরিবর্তনকারী একটি ঘটনা অনুভব করেন যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর জন কেরি ২০০১ সালে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর টাফ্টস ইউনিভার্সিটির ফ্লেচার স্কুল অফ ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসির একটি ফোরামে বক্তৃতা দান করেন এবং প্রশ্নের আহ্বান জানান।[২] তিনি যখন উঠে দাঁড়ালেন তখন তিনি মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে "আমাদের চুল এবং আমাদের ত্বকের রঙ আমাদের হৃদয় ও মনে যা আছে তা প্রতিফলিত করে না। ..আফগান জনগণ তালেবান নয়। তারাই তালেবানদের প্রথম শিকার।"[১]

তিনি পরবর্তীকালে আফগানিস্তানের চাওয়া-পাওয়া সংক্রান্ত একজন বিশেষজ্ঞ এবং বক্তা হয়ে ওঠেন। আমিরি জাতীয় সংবাদমাধ্যম যেমন সিএনএন ও ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওতে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন; পিবিএস-এ জিম লেহারের সাথে নিউজআওয়ারে উপস্থিত হয়েছিলেন; এবং বোস্টন ও নিউ ইংল্যান্ড টিভি প্রোগ্রামে তার প্রোফাইল উপস্থাপন করা হয়েছে। সারা দেশের প্রধান সংবাদপত্রগুলি তাকে উদ্ধৃত করেছে, এবং তার লেখা নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ সম্পাদকীয় পাতার বিপরীতে প্রকাশিত হয়েছিল।[১] যদিও তিনি আফগানিস্তানের সংঘাত সম্পর্কিত বিষয়গুলিতে মনোযোগ দেওয়ার উপর জোর দিয়েছিলেন, ব্যক্তিগতভাবে নিজের দিকে না গিয়ে, তিনি একজন আফগান-আমেরিকান হিসাবে তার দ্বৈত পরিচয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।[১]

 
২০২২ সালে "ইউএস পলিসিমেকিংয়ে আফগান নারী ও সুশীল সমাজকে জড়িত করা" সম্পর্কিত আলোচনা। বাঁ থেকে ডানে: পালওয়াশা হাসান, অসিলা ওয়ারদাক, নাহিদ সারাবি ঝ আমিরি।

আমিরি রিচার্ড হলব্রুকের একজন উপদেষ্টা ছিলেন, যিনি আফগানিস্তান ও পাকিস্তান বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছিলেন।[৩] ২০১৫ সালে, তিনি হলব্রুকের জীবন সম্পর্কে তথ্যমূলক চলচ্চিত্র দ্য ডিপ্লোম্যাটে-এ উপস্থিত হয়েছিলেন, যা ব্রুকের মৃত্যুর পরে চিত্রায়িত হয়েছিল।[৪]

২৯ ডিসেম্বর, ২০২১-এ, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন আমিরিকে আফগান নারী, মেয়ে ও মানবাধিকারের সম্পর্কিত বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগের ঘোষণা দেন। ক্ষমতাসীন তালেবানদের দ্বারা দেশটিতে নারীরা ক্রমবর্ধমান নিপীড়নের সম্মুখীন হওয়ার সময় এই নিয়োগ করা হয়েছিল।[৫] তিনি আফগান শরণার্থীদের দুর্দশার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বাড়াতেও কাজ করেছেন যারা "সর্বত্র আটকা পড়েছে" এবং বছরের পর বছর অনিশ্চয়তার মুখোমুখি।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Tufts Journal: Features: Afghan activist"tuftsjournal.tufts.eduTufts University। ৩১ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-২৯ 
  2. MacQuarrie, Brian (নভেম্বর ১৬, ২০০১)। "Answering the call: Afghan activist steps up to the microphone to help other women"The Boston Globe। ৩১ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-৩০Newspapers.com-এর মাধ্যমে। 
  3. Buncombe, Andrew (সেপ্টেম্বর ৫, ২০২১)। "Afghan refugees facing up to 10 years of uncertainty"The Independent। ৩১ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-৩০Newspapers.com-এর মাধ্যমে। 
  4. Robbins, Caryn। "Documentary THE DIPLOMAT to Debut Exclusively on HBO, 11/2"BroadwayWorld.com (ইংরেজি ভাষায়)। ৩১ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-৩০ 
  5. "Rina Amiri Named US Special Envoy for Afghan Women, Girls, and Human Rights"VOA News। ৩১ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০২১