রামকুত্তা

স্তন্যপায়ী প্রাণীর প্রজাতি

রামকুত্তা (Cuon alpinus), এশীয় বুনো কুকুর, ভারতীয় বুনো কুকুর বা ঢোল কেনিডি (Canidae) পরিবারের অন্তর্গত এক প্রজাতির বন্য কুকুর। এদের আবাস দক্ষিণ এশিয়াদক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। প্রজাতিটি Cuon (কুয়ন) গণভূক্ত একমাত্র জীবিত প্রজাতি। Canis (কেনিস) গণভূক্ত সদস্যদের তুলনায় এদের পেষণ দাঁতের সংখ্যা কম ও স্তনবৃন্তের সংখ্যা বেশি। পূর্ণবয়স্ক রামকুত্তার ওজন ১৫ কেজি মতো হয়। [২]

রামকুত্তা
Cuon alpinus
সময়গত পরিসীমা: অন্ত্য-প্লেইস্টোসিন-বর্তমান
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণী জগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: Mammalia
বর্গ: Carnivora
পরিবার: Canidae
উপপরিবার: Caninae
গণ: Cuon
Hodgson, 1838
প্রজাতি: C. alpinus
দ্বিপদী নাম
Cuon alpinus
(Pallas, 1811)
বৈশ্বিক বিস্তৃতি

বর্তমান অবস্থা সম্পাদনা

ক্রমান্বয়ে আবাসস্থল ধ্বংস, শিকার কমে যাওয়া, অন্যান্য শিকারী প্রাণীর সাথে প্রতিযোগিতা, নির্মূল প্রক্রিয়া, গৃহপালিত কুকুরবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপ প্রভৃতি কারণে এদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে আসছে। সেজন্য আইইউসিএন রামকুত্তাকে বিপন্ন বলে ঘোষণা করেছে।[১] বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]

রামকুত্তা সামাজিক প্রাণী। অনেকগুলো সদস্য মিলে প্রায় গোত্রের মত বড় বড় দলে এরা বসবাস করে। দলবদ্ধভাবে থাকার জন্য এদের খপ্পর থেকে বেরোনো মুশকিল।[২] শিকার ধরার সময় এসব দল আবার ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে যায়।[৪] শুধুমাত্র ঘ্রাণশক্তির ওপর নির্ভর করেই অব্যর্থ ভাবে শিকার করে।[২] বড় ও মধ্যম আকারের তৃণভোজী প্রাণী যেমন হরিণ, বুনো শূকর, বাইসন প্রভৃতি এদের প্রধান খাদ্য।[২] বহু সময় ধরে এরা শিকারকে তাড়া করে আর শিকার একসময় ক্লান্ত হয়ে গেলে দলবদ্ধভাবে ঘিরে ফেলে এবং শিকারের পেট চিরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। শিকার করা প্রাণী এদের ছানাদের আগে খেতে দেয়, পরে নিজেরা খায়, যেটা অন্যসব সামাজিক কেনিডদের চেয়ে ব্যতিক্রম।[৪] এরা ভীষণ ক্ষিপ্র, তাই দেখা মেলা দুঃসাধ্য,[২] মানুষকে ভয় পেলেও রামকুত্তা বুনো শূকর, বুনো মহিষ বা বাঘের মত বড় বড় প্রাণী আক্রমণ করতে ভয় পায় না।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Durbin, L.S., Hedges, S., Duckworth, J.W., Tyson, M., Lyenga, A. & Venkataraman, A. (IUCN SSC Canid Specialist Group – Dhole Working Group) (2008). Cuon alpinus. 2008 IUCN Red List of Threatened Species. IUCN 2008. Retrieved on 22 March 2009. Database entry includes justification for why this species is endangered
  2. "বক্সায় রামকুত্তাদের বংশবৃদ্ধি" 
  3. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৯৬
  4. Fox, M. W. (১৯৮৪), The Whistling Hunters: Field Studies of the Indian Wild Dog (Cuon Alpinus), Steven Simpson Books, আইএসবিএন 0-9524390-6-9 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা