রাবেয়া খাতুন তালুকদার
রাবেয়া খাতুন তালুকদার (২৫ মে ১৯২৬ - ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯) একজন ব্রিটিশ ভারতীয় মহিলা অ্যাথলেট। তিনি বগুড়ার কাটনাপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।[১]
রাবেয়া খাতুন তালুকদার | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | রাবেয়া খাতুন ২৫ মে ১৯২৬ |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারতীয়, পাকিস্তানি, বাংলাদেশী |
মাতৃশিক্ষায়তন | ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (বিটি) |
পেশা | অ্যাথলেট |
দাম্পত্য সঙ্গী | কেরামত আলী তালুকদার (বি. ১৯৪৭) |
সন্তান | ১ |
পুরস্কার | জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার |
প্রারম্ভিক জীবনসম্পাদনা
রাবেয়া খাতুন ১৯২৬ সালের ২৫শে মে বগুড়ার কাটনারপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মহির উদ্দিন আহমেদ ছিলেন কাটনারপাড়া ক্রীড়া ক্লাবের সেক্রেটারি এবং মাতা সবুরননেসা একজন গৃহিণী। পাঁচ বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে রাবেয়া খাতুন সর্বজ্যেষ্ঠ।[১]
ব্যক্তিগত জীবনসম্পাদনা
রাবেয়া খাতুন ১৯৪৭ সালের ১৭ই জুন কেরামত আলী তালুকদারের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের পর তিনি ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিটি ডিগ্রি অর্জন করেন।[১] এই দম্পতির একমাত্র কন্যা কুলসুম আকতার বানু।[২] সাদিয়া শেহরীন এবং মির্জা সাকিব তার দুই নাতি-নাতনী।
কর্মজীবন
দাম্পত্য জীবনের পর পর কর্মজীবনে প্রবেশ। ১৯৪৭-এর শেষ ভাগে। মেধা, শ্রম, একাগ্রতা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভের লড়াইয়ে নামলেন রাবেয়া খাতুন তালুকদার। কর্মজীবনের সূচনা ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি গালর্স স্কুলে। ১৯৫০ সালে চলে আসেন ঢাকায়। যোগ দেন কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এখানে থাকতে ফিজিক্যাল এডুকেশনের উপর উচ্চ শিক্ষা নিতে যান ইংল্যান্ডে।
শারিরীক শিক্ষার উপর প্রশিক্ষণ শেষে প্রথমে তিনি ঢাকার ইডেন গার্লস কলেজের ফিজিক্যাল এডুকেশন টিচার, কিছুদিন ময়মসিংহ মহিলা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের ফিজিক্যাল এডুকেশন লেকচারার এবং ঢাকা শারীরিক শিক্ষা কলেজের লেকচারারের দায়িত্ব পালন করেন দক্ষতার সঙ্গে। তিনি তার যোগ্যতা ও দক্ষতার প্রেক্ষিতে সরকারী ক্রীড়া পরিদপ্তরের উপ-পরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন।
পেশাগত জীবনে সৎ একনিষ্ঠ এবং কর্মদক্ষতায় পারদর্শী রাবেয়া খাতুন তালুকদার মহিলা ক্রীড়াক্ষেত্রের সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে অনন্য কৃতিত্বের সাক্ষর রাখেন। তিনিই এ দেশে প্রথম ইষ্ট পাকিস্তান উইমেন্স এ্যামেচার গেইমস এন্ড স্পোর্টস এসোসিয়েশন গঠন করেন। তিনি এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এদেশের উত্সাহী মহিলা ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠকদের একত্রিত করে মহিলাদের খেলাধুলায় উত্সাহিত করতে সচেষ্ট হন। এই সংগঠনই পরে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রীড়া সংস্থায় রূপ লাভ করে। তিনিই প্রথম বাংলাদেশ উইমেন্স স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট এন্ড কন্ট্রোল বোর্ডের প্রেসিডেন্টের পদ অলংকৃত করে দেশব্যাপী ক্রীড়া আন্দোলন গড়ে তোলেন। তিনিই প্রথম বাংলাদেশ উইমেন্স হকি এসোসিয়েশন গঠন করে এ দেশের মহিলাদের হকি চর্চার ব্যবস্থা করেন। রাবেয়া খাতুন তালুকদার বাংলাদেশ উইমেন্স স্পোর্টস ফেডারেশন ও বাংলাদেশ উইমেন্স স্পোর্টস লীডারস এসোসিয়েশন গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের্, ব্যাডমিন্টন ও জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন, বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি, বাংলাদেশ শারিরীক শিক্ষাবিদ সমিতি, শারিরীক শিক্ষার সিলেবাস কমিটিসহ বহু সংগঠকের সঙ্গেঁ নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন।
কেমব্রিজ থেকে ফিরে ইডেন কলেজে ফিজিক্যাল এডুকেশন টিচার হিসেবে যোগ দেন। পরের বছর (১৯৫৮) ময়মনসিংহের টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রভাষক। এক বছর পরেই (১৯৫৯) আবার ইডেন কলেজে স্বপদে ফিরে আসেন। ১৯৬২ সালে ঢাকার ফিজিক্যাল এডুকেশন কলেজ। প্রভাষক হিসেবে এই কলেজে ছিলেন ১৯৭৮ পর্যন্ত। এই বছরে ক্রীড়া পরিদফতরে এ্যাসিস্টেন্ট ডাইরেক্টর হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮২ সালে আবারো ঢাকার ফিজিক্যাল কলেজে ফিরে আসেন। এই কলেজ থেকেই রাবেয়া তালুকদার বর্ণময় কর্মজীবনের অবসান হয়।[৩]
পুরস্কারসম্পাদনা
- ১৯৭৬ - জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার
- ১৯৯৬ - আমেরিকান বাইওগ্রাফিক্স ইন্সটিটিউট প্রদত্ত ডিসটিংগুউইস লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ গ "রাবেয়া খাতুন তালুকদার"। www.gunijan.org.bd। গুণীজন। ১৬ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "রাবেয়া খাতুন তালুকদার"। দেশে বিদেশে। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ":: Welcome to GUNIJAN :: The Eminent :: Largest electronic journal of bangladeshi eminents :."। www.gunijan.org.bd। ২০১৮-০৯-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৮।