রন্ন (কন্নড় কবি)

ভারতীয় কবি

রন্ন (কন্নড়: ರನ್ನ) ছিলেন কন্নড় ভাষার প্রাচীনতম এবং শ্রেষ্ঠ কবিদের অন্যতম। তাঁর রচনাশৈলীকে প্রায়শই আদিকবি পম্পের (খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দীর প্রথমার্ধ) রচনাশৈলীর সঙ্গে তুলনা করা হয়। রন্ন, আদিকবি পম্প ও পোন্নকে বলা হয় “প্রাচীন কন্নড় সাহিত্যের ত্রিরত্ন”।[১][২][৩]

রন্ন
স্থানীয় নাম
ರನ್ನ
জন্ম৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ
মুধোল, বাগালকোট জেলা, কর্ণাটক
মৃত্যু১০২০ খ্রিস্টাব্দ (বয়স ৭১)
পেশাকবি
আত্মীয়
  • জিনবল্লভ (পিতা)
  • অব্বলব্বে (মাতা)
কন্নড় লিপিতে রন্নর হস্তাক্ষরে খোদিত “কবি রত্ন”, শ্রবণবেলগোলা

জীবনী সম্পাদনা

রন্ন ছিলেন দশম শতাব্দীর কন্নড় কবি।[৪] ৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে প্রাচীন বেলাগালি (অধুনা রন্ন বেলাগালি, বাগালকোট জেলা, কর্ণাটক) এক চুড়ি বিক্রেতার পরিবারে রন্নের জন্ম হয়।[৫]

সাহিত্য সম্পাদনা

লেখকজীবনের প্রথম ভাগে রন্নর পৃষ্ঠপোষকতা করতেন সম্ভবত পশ্চিম গঙ্গ রাজবংশের বিখ্যাত মন্ত্রী চবুন্দরায়[৬] পশ্চিম চালুক্য সাম্রাজ্যের উত্থানের পর রন্ন রাজা দ্বিতীয় তৈলপের রাজসভার একজন গুরুত্বপূর্ণ কবির আসন পেয়েছিলেন। তাঁর উত্তরসূরি রাজা সত্যশ্রয় রন্নকে “কবি চক্রবর্তী” (অর্থাৎ “কবি সম্রাট”) উপাধি প্রদান করেন।[৫]

রন্ন “হেলেগন্নড়” বা প্রাচীন কন্নড় ভাষায় লিখতেন। তাঁর রচিত পাঁচটি প্রধান জ্ঞাত সাহিত্যকর্মের মধ্যে দু’টি পূর্ণাঙ্গ আকারে একটি অংশত পাওয়া যায়। এগুলি হল: অজিত পুরাণ, পরশুরামচরিতে (অবলুপ্ত), সাহসভীম বিজয় (অপর নাম গদাযুদ্ধ), রন্নকাণ্ডচক্রেশ্বরচরিতে (অবলুপ্ত)।[৭][৫][৬][৮][৯]

অজিত পুরাণ (৯৯৩ খ্রিস্টাব্দ) একটি জৈন চম্পু (গদ্য-পদ্য মিশ্রিত সাহিত্য) পুরাণ। দ্বিতীয় তীর্থংকর অজিতনাথের জীবনী অবলম্বনে বারোটি পর্বে এটি রচিত। অত্তিমাব্বে নামে এক জৈন ভদ্ররমণীর (তিনি ছিলেন সেনাধ্যক্ষ নাগবর্মার পত্নী) পৃষ্ঠপোষকতায় রন্ন এই পুরাণটি রচনা করেছিলেন।[৫] রন্নকাণ্ড (৯৯০ খ্রিস্টাব্দ) গ্রন্থটির নামকরণ হয়েছিল “কাণ্ড” ছন্দে রচনার কারণে। এটিই কন্নড় ভাষার প্রাচীনতম বিদ্যমান অভিধান। তবে এই গ্রন্থের মাত্র দু’টি পর্বই পাওয়া যায়।[৫][৮] পরশুরামচরিতে (৯৮০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ) হল গঙ্গ মন্ত্রী ও সেনাধ্যক্ষ চামুণ্ডারায়ের একটি স্তবগাথা। কবি তাঁর পৃষ্ঠপোষককে এতটাই সম্মান করতেন যে, নিজের পুত্রের নাম পৃষ্ঠপোষকের সম্মানে রেখেছিলেন “রায়”। উল্লেখ্য, এই চামুণ্ডারায়কে “সমর পরশুরাম” সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল।[৬] বীর বা রৌদ্ররসাত্মক সাহসভীমবিজয় বা গদাযুদ্ধ হল নিঃসন্দেহে রন্নর শ্রেষ্ঠ কীর্তি। এটির রচনাকাল ১০০০ খ্রিস্টাব্দ (তবে কেউ কেউ এটিকে রন্নর যৌবনের রচনা বলে মনে করেন)। কন্নড় সাহিত্যের ধ্রুপদি রচনাগুলির অন্যতম এই গ্রন্থে কবি তাঁর পৃষ্ঠপোষক চালুক্য রাজা সত্যশ্রয়কে পাণ্ডব রাজপুত্র ভীমের সঙ্গে তুলনা করেছেন।[৯]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Kamath 1980, পৃ. 114।
  2. Sastri 1955, পৃ. 356।
  3. Sen 1999, পৃ. 583।
  4. Upinder Singh 2016, পৃ. 29।
  5. Sastri 2002, পৃ. 356।
  6. Kamath 2001, পৃ. 45।
  7. Kamath 2001, পৃ. 114।
  8. Mukherjee 1999, পৃ. 324।
  9. Datta 1988, পৃ. 1335।

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা