যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থা

যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থা বলতে তাৎক্ষণিকভাবে কোন মোটরগাড়ির বা মোটরযানের অবস্থান জানার একটি ব্যবস্থাকে বোঝায়। সাধারণত একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে গাড়ির বিভিন্ন ধরনের তথ্য সমন্বয় করে গাড়ি অবস্থানের একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরার মাধ্যমে এই ব্যবস্থাটি কাজ করে থাকে। আধুনিক মোটর যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থায় গাড়ি সন্ধানের জন্য সাধারণত বিশ্বজনীন অবস্থান-নির্ণায়ক ব্যবস্থা (জিপিএস) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও অন্যান্য যানবাহন অবস্থান নির্ণয়কারী প্রযুক্তির ব্যবহারও করা হয়ে থাকে। যানবাহন সন্ধানের এই পদ্ধতিতে, ইন্টারনেট এবং বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক মানচিত্রে গাড়ির অবস্থান দেখা যায়। বিশ্বের বড় বড় শহরগুলির পৌর গণপরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের যানবাহনের নিরাপত্তা এবং নজরদারির জন্য যানবাহন সন্ধান সিস্টেম ব্যবহার করে থাকে। ইংরেজি পরিভাষাতে একে "ভেহিকেল ট্র্যাকিং সিস্টেম" (ইংরেজি: Vehicle tracking system) বলে।

টিকে১০২বি মডেলের যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থার বাক্স ও ডিভাইস

সক্রিয় বনাম অক্রিয় সন্ধান সম্পাদনা

বিভিন্ন ধরনের যানবাহন সন্ধানী যন্ত্র রয়েছে। সাধারণত, "সক্রিয়" (অ্যাকটিভ) এবং "অক্রিয়" (প্যাসিভ)- এই দুই ধরনের যানবাহন সন্ধানী যন্ত্র বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অক্রিয় যন্ত্রগুলি গাড়ির বৈশ্বিক (জিপিএস) ভৌগোলিক অবস্থান, গতি, গতিপথ এবং অন্যান্য সক্রিয়কারী ঘটনা যেমন, ইঞ্জিন চালু/বন্ধ, দরজা খোলা/ বন্ধ হবার তথ্যসহ আরও অনেক ধরনের তথ্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রের মধ্যে সংরক্ষণ করে রাখে। গাড়িটি পূর্বনির্ধারিত কোনও গন্তব্যে পৌঁছানোর পর যন্ত্রটি খুলে, যন্ত্রে সংরক্ষিত তথ্যসমূহ কম্পিউটারে স্থানান্তর করে গাড়ির চলাচল এবং গতিবধি মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। অক্রিয় ব্যবস্থাতে স্বয়ংক্রিয় স্থানান্তর (ডাউনলোড) পদ্ধতিও যুক্ত করা থাকে, যাতে তারহীন পদ্ধতিতে স্থানান্তরের মাধ্যমে তথ্য আনয়ন করা যায়। অন্যদিকে ''সক্রিয়'' যন্ত্রও যানবাহন সম্পর্কিত একই রকম তথ্যগুলি ধারণ করে এবং সেলুলার বা উপগ্রহ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বাস্তব সময়ে (রিয়েল টাইম) তাৎক্ষণিক উপাত্ত হিসেবে কম্পিউটারে বা উপাত্ত কেন্দ্রে (ডাটা সেন্টারে) প্রেরণ করে দেয়।

অনেক আধুনিক যানবাহন সন্ধানী যন্ত্র আছে, যেগুলিতে "অক্রিয়" এবং "সক্রিয়" উভয় পদ্ধতিই একত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যখন কোন সেলুলার নেটওয়ার্কের সাথে যন্ত্রটি যুক্ত থাকে তখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডাটা সার্ভারে তথ্য পাঠিয়ে যেয়। আবার, যখন যন্ত্রটি সেলুলার নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে তখন নিজের মধ্যে তথ্য সংরক্ষণ করতে থাকে এবং পরবর্তীতে যখন সেলুলার নেটওয়ার্কের যাথে যুক্ত হয়, তখন সংরক্ষিত তথ্য পুনরায় ডাটা সার্ভারে প্রেরণ করে দেয়।

যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থাতে যানবাহনের মধ্যে একটি বাক্স বা যন্ত্র সংস্থাপন (ইন্সটল) করা হয় এবং যন্ত্রটিকে সচল রাখার জন্য এটিকে বাক্সের মধ্যে থাকা তড়িৎকোষ (ব্যাটারি) বা যানবাহনের মধ্যে থাকা তড়িৎকোষের সাথে যুক্ত করে দেয়া হয়। যানবাহনের অবস্থান নির্ণয় এবং নজরদারির জন্য এখন পর্যন্ত এখন পর্যন্ত এটিই সর্বোত্তম উপায় বলে বিবেচিত। যদিও এখন অনেক কোম্পানি মোবাইল যোগাযোগ প্রউক্তি যুক্ত করে যানবাহন সন্ধানী সেবা প্রদান করে থাকে, যাতে করে একই সাথে অনেক যানবাহন হাতে থাকা মোবাইল ফোনেই সন্ধান করা যায়। এই সিস্টেমে গাড়ির উপর নজরদারির পাশাপাশি কল সন্ধান, বার্তা সন্ধান, ওয়েব ব্যবহারসহ আরো বিভিন্ন রকম সুবিধা দিয়ে থাকে।

সাধারণ গঠন সম্পাদনা

জিপিএস-ভিত্তিক সন্ধান পদ্ধতির প্রধান উপাদানগুলো হলো-

  1. জিপিএস সন্ধান: যানবাহনের উপর নজরদারির জন্য তাতে একটি যন্ত্র যুক্ত করে দেয়া থাকে। এই যন্ত্রটি যানবাহনের জিপিএস-ভিত্তিক অবস্থান সহ, অন্যান্য তথ্য গ্রহণ করে থাকে। অন্যান্য তথ্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জ্বালানির পরিমান, ইঞ্জিনের তাপমাত্রা, উচ্চতা, বিপরীত ভূ-সঙ্কেতায়ন (জিওকোডিং), দরজা খোলা/বন্ধ, টায়ারের চাপ, জ্বালানি বিচ্ছিন্নকরণ, স্ফুলিঙ্গায়ন (ইগনিশন) বন্ধ করা, সামনের বাতি (হেডলাইট), পেছনের বাতি (টেললাইট) অন করা, ব্যাটারির অবস্থা, জিএসএম এরিয়া কোড, যুক্ত জিপিএস স্যাটেলাইটের সংখ্যা, গ্লাস খোলা/বন্ধ, ইমারজেন্সি বোতামের অবস্থা, যানবাহনের নিশ্চল অবস্থা, ওডোমিটারের পরিমাপ, ইঞ্জিন আরপিএম, থ্রটলের অবস্থান, জিপিআরএস অবস্থা এবং আরো অনেক কিছুই। [১] এই যন্ত্রটির ক্ষমতার উপরে পুরো যানবাহন সন্ধান ব্যবস্থাটির ক্ষমতা নির্ভর করে থাকে। বেশিরভাগ যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থায় যানবাহনের অবস্থানগত তথ্যের সাথে আরো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পরিবহন ও যোগাযোগ সংক্রান্ত তথ্য সেবা দিয়ে থাকে। এসব তথ্যের সমন্বয়ে পরিবহন ব্যাবস্থাকে অনবোর্ড সিস্টেমে একত্রীকরণ করে পরিবহন ব্যবস্থার উপর নিয়ন্ত্রণ ও স্বয়ংক্রিয় পরিচালনা করা সম্ভব।
  2. জিপিএস সন্ধান সার্ভার: জিপিএস সার্ভারের প্রধান তিনটি দায়িত্ব হচ্ছে, জিপিএস সন্ধান ইউনিট থেকে যানবাহনের তথ্য গ্রহণ করা, নিরাপত্তার সাথে এইসব তথ্য সংরক্ষণ করা এবং চাহিদা অনুসারে এই তথ্যগুলো  ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছে দেয়া।
  3. ইউজার ইন্টারফেস: যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থার একজন ব্যবহারকারী কীভাবে তার যানবাহনের তথ্যগুলো দেখতে পাবেন তা নির্ভর করে ইউজার ইন্টারফেসের উপর। এই ইউজার ইন্টারফেসেই ব্যবহারকারী এইসব তথ্যের খুঁটিনাটি বিবরণ পেয়ে থাকে।

সাধারণ ব্যবহার সম্পাদনা

যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থা মুলত অনেক যানবাহন যারা ব্যবহার করে তাদের জন্য। একসাথে অনেকগুলো গাড়ির যাওয়া আসার পথ, গাড়িগুলো কোথায় কোথায় থামছে , সব ধরনের তথ্য আর নিরাপত্তা নিশ্চিতে যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থাটি ব্যবহার করা হয়। কিছু যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থা ফ্লিট ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যারের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে। ব্যাবসায়িক কাজের পাশাপাশি নগর পরিবহন এজেন্সিগুলোও বিভিন্ন উদ্দেশ্যে যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেকগুলো বাস বা যানবাহনের সংখ্যা, শিডিউল, বাসের বাটন পরিবর্তনের কাজ , গন্তব্য নির্দিষ্টকরণ বা পরিবর্তন, কোন নির্দিষ্ট স্থানে বাসের গন্তব্য ঠিক করা অথবা যাত্রীদের কোন ঘোষণা দেওয়ার কাজেও যানবাহন সন্ধান সেবা ব্যবহৃত হয়।

২০০৯ সালের শুরুতে অ্যামেরিকান পাবলিক ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন থেকে জানানো হয় যে , যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক যাত্রী পরিবহন বাসগুলোতে যাত্রীদের বিরতির ঘোষণা দেওয়ার জন্য জিপিএস ভিত্তিক ভেহিকেল সন্ধান সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে যাত্রীকে বাসের বাইরে থেকে বাসটির বিভিন্ন কাজের বিবরণ দেওয়া হয় অর্থাৎ যখন বাসের দরজা খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়। এছাড়া বাসের পথ, সংখ্যা ইত্যাদি, মুলত দৃষ্টিশক্তিহীন মানুষের সুবিধার জন্য বলা হয়ে থাকে। অথবা যাত্রীদের পরের গন্তব্যের ব্যাপারে আগে থেকে জানানোর জন্য যাত্রীদের সুবিধার্থে নির্দিষ্ট স্টপেজ বা পরের স্টপেজ সম্পর্কে আগে থেকে একটি বড় এলইডি বা এলসিডি স্ক্রিনে দেখানো হয় এবং সাথে লাউড স্পিকারে বলাও হয়ে থাকে। একটি কম্পিউটারের নিরবচ্ছিন্ন ডাটা সংগ্রহের মাধ্যমে গাড়ির নির্দিষ্ট গন্তব্যের সাথে সময়ের তুলনা করা হয়। এর ফলে গাড়ির ড্রাইভারকে ক্রমাগত গাড়ির বর্তমান তথ্য একটি বড় পর্দায় দেখানো হয়। তাকে জানানো হয় কোথায় সে নির্দিষ্ট সময়ের আগে বা পরে গিয়েছে এবং যা পরে তার জন্য প্রকাশিত শিডিউল মেনে চলা  সহজ হয়।

কিছু প্রোগ্রাম যাত্রীদের প্রকৃত সময় জানায়। অর্থাৎ যানবাহনটি আসতে কত সময় বা কতটুকু দেরি হতে পারে বা কত সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে এসব তথ্য জানিয়ে থাকে। এছাড়াও কাছাকাছি যানবাহনের স্টপেসজে পৌঁছানোর সময়টিও জানানো হয়। এর ফলে শিডিউল করা গাড়ির সময় থেকেও এই প্রক্রিয়ায় যানবাহনের  ভাল তথ্য পাওয়া যায়। এ ধরনের ট্রানজিট সিস্টেমের মাধ্যমে যাত্রীরা একটি স্টপেজ নম্বরের মাধ্যমে ট্রানজিটের ওয়েবসাইটে অথবা স্বয়ংক্রিয় টেলিফোনের মাধ্যমে ট্রানজিট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।

কিছু ট্রানজিট কোম্পানি তাদের ওয়েবসাইটে ম্যাপ সরবরাহ করে থাকে, কিছু চিহ্ন দিয়ে বাসের বর্তমান অবস্থান বোঝানো হয় যে কোন রুটে কোন বাস রয়েছে, অন্য চিহ্ন দিয়ে যাত্রীদের তথ্য  বা স্টপেজ  ছেড়ে যাওয়া কর্মীদের তথ্য থাকে।

অন্য প্রোগ্রামগুলোতে ড্রাইভারের ব্যবহার  অর্থাৎ একজন কর্মচারী বা নিয়োগকারীর আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হয়।

যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থা ব্যক্তিগত ভাবেও অনেক জনপ্রিয় হচ্ছে গাড়ির চোর ধরার জন্য। এছাড়া গাড়ি পর্যবেক্ষণ অথবা হারিয়ে যাওয়া গাড়ি খুজে বের করার ক্ষেত্রেও ভেহিকেল সন্ধান সাভিসের চাহিদা অনেক বেশি। পুলিশ খুব সহজেই এর মাধ্যমে দেওয়া সিগনাল পায় ও খুব সহজেই হারিয়ে যাওয়া গাড়িটি খুজে বের করতে পারে। আগের দিনের গাড়ির অ্যালার্মের পরিবর্তে বর্তমানে এই ভেহিকেল সন্ধান সিস্টেমটি এখন ব্যবহৃত হয়। কিছু ভেহিকেল সন্ধান সিস্টেমের দ্বারা গাড়িটিকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং জরুরি অবস্থায় গাড়ির দরজা খোলা বা বন্ধ বা ইঞ্জিন বন্ধ করা যায়। ভেহিকেল সন্ধান সিস্টেমের মাধ্যমে গাড়ির ইনস্যুরেন্স খরচ কমানো যায়,কারণ এর মাধ্যমে গাড়ির সামগ্রিক ক্ষতি উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যায়।

ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স ক্রাইম ব্যুরোর মতে ভেহিকেল সন্ধান সিস্টেম আসলে চোরের হাত থেকে গাড়িকে বাঁচানোর জন্য একটি স্তর যুক্ত ছাদ বিশেষ। এর মাধ্যমে একটি গাড়িকে চার স্তরের ভেতরে রেখে  নিরাপত্তা দেওয়া হয়।

ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স ক্রাইম ব্যুরোর (ইউএস) মতে, ভেহিকেল সন্ধান সিস্টেম থাকাটা একটি গাড়ির নিরাপত্তা বেষ্টনীর মতো কাজ করে এবং হারিয়ে যাওয়া গাড়িটিকে খুজে বের করতেও পুলিশকে সহায়তা করে।

কিছু ভেহিকেল সন্ধান সিস্টেমের মাধ্যমে সম্পূর্ণ গাড়িটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। উদাহরণ স্বরূপ গাড়ির চলাচল ,অবস্থান বা  নির্দিষ্ট অবস্থানের বাইরে গেলে ফোনে বা ই-মেইলের মাধ্যমে তার একটি নোটিফিকেশন পাঠানো হয়।

এছাড়াও এই প্রযুক্তির মধ্যে যা যা রয়েছে তা হল-

  • চুরি হয়ে যাওয়া গাড়ি উদ্ধার: ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক সব ধরনের যানবাহনে জিপিএস ও আরএফএসের ব্যবহার করা হয় যা হারানো গাড়ি উদ্ধারের সময় পুলিশ তথ্য গুলো কাজে লাগায়।কিছু সময় পুলিশ সরাসরি সন্ধান যন্ত্রটি সক্রিয় করে গাড়ির অবস্থানটি জেনে নেয়।
  • সম্পদের খোঁজ রাখা: কোম্পানিগুলো তাদের মূল্যবান সম্পদ গুলোর ইনস্যুরেন্স করে রাখে এগুলো নিরপদে রাখার জন্য বা এগুলোর দিকে খেয়াল রাখার জন্য। কিন্তু সন্ধান যন্ত্রটির  মাধ্যমে সম্পদের অবস্থান ম্যাপে দেখা যাবে এবং তা যদি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যায় তারও নিবিড়ভাবে  পর্যবেক্ষণ করা যাবে।
  • মাঠ পর্যায়ে ব্যবস্থাপনায়: যেসব কোম্পানিগুলো মেরামত বা রক্ষনাবেক্ষনের কাজ করে থাকে তাদের কর্মচারীদের শিডিউল যেমন কখন তারা কাজে আসে কখন যায় তার একটি বিবরণী থাকে তাও এই সন্ধান সিস্টেমের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এর মাধ্যমে নিকটবর্তী কোন ইঞ্জিনিয়ার বা কোন ক্রেতাকে খুজে বের করতে ও সেবা প্রদানে অনুরোধ করে।
  • মাঠ পর্যায়ে বিক্রয়: যারা মোবাইলের মাধ্যমে বেশি কাজ করে থাকে তাদের পণ্যের নির্দিষ্ট জায়গার সঠিক অবস্থান জানা দরকার পড়ে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে- কোন অপরিচিত জায়াগায় পণ্যটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পোঁছে দেওয়ার কাজটি তখনি সঠিকভাবে হয় যখন তার সাথে এমন কোন যন্ত্র থাকে যা ঠিকানা খুজে বের করতে বা তাকে সনাক্ত করতে সক্ষম। ভেহিকেল সন্ধান সিস্টেমের সুবিধা হল,  কম সময়ে ক্রেতার নিকট তার কাঙ্ক্ষিত পণ্যটি পৌঁছানোর মাধ্যমে ক্রেতার সন্তুষ্টি অর্জন।
  • ভারি যানবাহন সন্ধান; মালবাহী এবং লজিস্টিকস কোম্পানিগুলো প্রায় সময় কিছু খোলা যায় এমন লোড বহনকারী যানবাহনের সাথে লরি যুক্ত করে পণ্য আনা নেওয়ার কাজ করে। বিভিন্ন ধরনের পণ্য নেওয়ার জন্য আলাদা আলাদা অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা হয়ে থাকে যেমন সমতল, শীতল, ঢাকনা যুক্ত, বাক্সের মত ইত্যাদি।
  • নজরদারি: একটি গাড়ি নজরদারিতে রাখার জন্য একটি সন্ধানার এমন ভাবে যুক্ত করতে হয় যেন গাড়িটি যেদিকে যাবে গাড়ির অবস্থান সম্পর্কে জানা যাবে।
  • পরিবহন সন্ধান করা: সাময়িকভাবে কোন সম্পদ বা মালবাহী গাড়ির এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া অনুসরন করা। গাড়িটি পণ্য পরিবহন করে আবার একই স্থানে ফেরত আসছে কিনা এই নিশ্চয়তা পেতে ব্যবহারকারীরা যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থা ব্যবহার করে থাকে। এতে করে সম্পদের নিরাপত্তা বজায় থাকে।
  • জ্বালানীর দিকে লক্ষ রাখা: সন্ধান যন্ত্রের মাধ্যমে জ্বালালির দিকে লক্ষ রাখা যায়।
  • দূরত্ব পরিমাপ: সন্ধান যন্ত্রের মাধ্যমে গাড়িটি কটটুকু রাস্তা অতিক্রম করেছে তা জানা যায়।
  • ওবিডি:ওবিডি সন্ধান এঁর মাধ্যমে ইঞ্জিনের যাবতীয় তথ্য পাওয়া যায়।

যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থা এখন সারাবিশ্বে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। উপাদান গুলো হয়তো একেকটা একেক রকম কিন্তু বেশিরভাগই জিপিএস প্রযুক্তি এবং জিএসএম সেবা ব্যবহার করে থাকে। এগুলোর মধ্যে ওয়াই-ফাই এর মত ছোটো পরিসরে ব্যবহার করার মতো যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যও থাকে। কিছু  যন্ত্র সরাসরি গাড়িটি দেখায় আবার কোনোটা ডাটা লগারের মত ভিডিও রেকর্ড করে রেখে দেয়। এ ধনের প্রক্রিয়াতে সমস্যাগুলো রেকর্ড করা হয় এবং পরে সমাধানের জন্য রাখা হয়।

ওবিডি যানবাহন সন্ধান ব্যবস্থা সম্পাদনা

যানবাহনস্থিত নিরূপণ বা অন বোর্ড ডায়াগনোসিস (ওবিডি) যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থায়, একটি ওবিডি জিপিএস সন্ধানার হালকা বা মধ্যম কর্মক্ষমতার গাড়ির ওবিডি পোর্টে যুক্ত করে দেয়া হয়। একটি সেলুলার ওবিডি সন্ধানার সরাসরি সেলুলার টাওয়ারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে এবং সেলুলার ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের মধ্যমে যানবাহনের অবস্থান এবং অন্যান্য তথ্য সার্ভারে প্রেরণ করে দেয়। সাধারণত, যানবাহনের ওবিডি পোর্ট থেকে শক্তি নিয়ে নিজেকে সচল রাকে। এতে একটি জিপিএস মডিউল, এন্টেনা যুক্ত থাকে, যার মাধ্যমে সন্ধানারটি জিপিএস সিগন্যাল গ্রহণ করে। এর পাশাপাশি ওবিডি সন্ধানারগুলো যানবাহনের অন্যান্য সাব-সিস্টমের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে এবং যানবাহনের অবস্থা নিরূপণ এববগ জ্বালানী সংক্রান্ত তথ্য গ্রহণ করে। একজন ব্যবহারকারী ডেস্কটপ/ল্যাপটপ কম্পিউটারে সফটওয়্যার কিংবা ব্রাউজার ব্যবহার করে অথবা স্মার্টফোনের অ্যাপের মাধ্যমে একাই, খুব কম সময়ের মধ্যে যানবাহনের এইসকল তথ্যয়ের উপর নজর রাখতে পারেন।  

ফ্লিট ব্যবস্থাপনা যানবাহন সন্ধান সম্পাদনা

গাড়ি চুরি রোধ করা ছাড়া, পণ্য সরবরাহ ও পরিবহনের কাজে এবং যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই সিস্টেম  জিপিএস ও জিএসএম প্রযুক্তি ব্যবহারের করে ব্যবহার করে যানবাহনের যথাযথ অবস্থানের নিয়মিত তথ্য একজন ফ্লিট ম্যানেজারের কাছে সরবরাহ করে। জ্বালানীর খরচ, গাড়ির গড় গতি, গাড়ির বর্তমান অবস্থান ও সময় ছাড়াও অন্যান্য  ফিচারের সমন্বয়ে গঠিত এই সিস্টেমের মাধ্যমে যানবাহনের উপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপন এবং পরিবহন ব্যবস্থার পরিসংখ্যান নজরদারি করা যায়। বর্তমানে এই পদ্ধতিটি জনপ্রিয় হবার একজন ড্রাইভারের দৈনিক কার্যপদ্ধতি এবং সময় নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি গাড়ির কর্মক্ষমতা নিরূপণ করা সম্ভব হয়েছে বিধায়, যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থার জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ইউকের যেসব প্রতিষ্ঠানের গাড়ি পণ্য পরিবহনে ব্যবহার করা হয়, তাদের সব যানবাহনে একটি টেকোগ্রাফ  স্থাপনের আইন রয়েছে । এই আইন অনেকেই মেনে নিয়েছে এবং এর মাধ্যমে সবাই ভাল ফলই পেয়েছে। ফ্লিট ব্যবস্থাপনা সন্ধান ব্যবস্থা জিপিএস ও জিএসএম প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। ঠিক যেভাবে অন্য সন্ধানারগুলো কাজ করে; যদিও ফ্লিট ব্যবস্থাপনার জন্য পরিবহন সন্ধানী ব্যবস্থায় আরো অনেক তথ্যসমৃদ্ধ বৈশিষ্ট্যাবলি দিয়ে থাকে।

ফ্লিট ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গাড়িগুলোকে একসাথে সন্ধান করার ক্ষেত্রে, জ্বালানী পর্যবেক্ষণ, দূরত্ব হিসাব, সম্পত্তির দেখাশনা করা এবং মাঠ পর্যায়ে পণ্য বিক্রি ইত্যাদি সুবিধাও পাওয়া সম্ভব।

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার সম্পাদনা

গাড়ি চুরি রোধ করা ছাড়া, পণ্য সরবরাহ ও পরিবহনের কাজে এবং  যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থা  ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই সিস্টেম  জিপিএস ও জিএসএম  প্রযুক্তি ব্যবহারের করে ব্যবহার করে যানবাহনের যথাযথ অবস্থানের নিয়মিত তথ্য একজন ফ্লিট ম্যানেজারের কাছে সরবরাহ করে। জ্বালানীর খরচ, গাড়ির গড় গতি, গাড়ির বর্তমান অবস্থান ও সময় ছাড়াও অন্যান্য  ফিচারের সমন্বয়ে গঠিত এই সিস্টেমের মাধ্যমে যানবাহনের উপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপন এবং পরিবহন ব্যবস্থার পরিসংখ্যান নজরদারি করা যায়। বর্তমানে এই পদ্ধতিটি জনপ্রিয় হবার একজন ড্রাইভারের দৈনিক কার্যপদ্ধতি এবং সময় নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি গাড়ির কর্মক্ষমতা নিরূপণ করা সম্ভব হয়েছে বিধায়, যানবাহন সন্ধানী ব্যবস্থার জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যুক্তরাজ্যের যেসব প্রতিষ্ঠানের গাড়ি পণ্য পরিবহনে ব্যবহার করা হয়, তাদের সব যানবাহনে একটি টেকোগ্রাফ স্থাপনের আইন রয়েছে। এই আইন অনেকেই মেনে নিয়েছে এবং এর মাধ্যমে সবাই ভাল ফলই পেয়েছে। ফ্লিট ব্যবস্থাপনা সন্ধানী ব্যবস্থা জিপিএস ও জিএসএম প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। ঠিক যেভাবে অন্য সন্ধানারগুলো কাজ করে; যদিও ফ্লিট ব্যবস্থাপনার জন্য পরিবহন সন্ধানী ব্যবস্থায় আরো অনেক তথ্যসমৃদ্ধ ফিচার দিয়ে থাকে।

ফ্লিট ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গাড়িগুলোকে একসাথে সন্ধান করার ক্ষেত্রে, জ্বালানী পর্যবেক্ষণ, দূরত্ব হিসাব, সম্পত্তির দেখাশনা করা এবং মাঠ পর্যায়ে পণ্য বিক্রি ইত্যাদি সুবধাও পাওয়া সম্ভব।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা