মোহাম্মদ সানাউল্লাহ

বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা

মোহাম্মদ সানাউল্লাহ (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ২৮ নভেম্বর, ১৯৭১ ) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে। [১]

মোঃ সানা উল্লাহ
মৃত্যু২৮ নভেম্বর, ১৯৭১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর বিক্রম

জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

মো. সানা উল্লাহর জন্ম লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের নন্দনপুর গ্রামে। তার বাবার নাম সোলায়মান মিয়া এবং মায়ের নাম সাদিয়া খাতুন। তার স্ত্রীর নাম মনোয়ারা বেগম। তাদের এক মেয়ে।

কর্মজীবন সম্পাদনা

মো. সানা উল্লাহ চাকরি করতেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। ১৯৭১ সালে এই রেজিমেন্টের অবস্থান ছিল সৈয়দপুর সেনানিবাসে। জানুয়ারি মাসে তিনি ছুটিতে বাড়িতে আসেন। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে আবার চাকরিতে যোগ দেন। এর কিছু দিন পর শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। তিনি যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা সম্পাদনা

১৯৭১ সালের মার্চে সম্ভাব্য ভারতীয় আগ্রাসনের কথা বলে তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বেশিরভাগ সদস্যকে সেনানিবাসের বাইরে মোতায়েন করা হয়। কিছু অংশ থাকে সেনানিবাসে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তারা ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ করেন। এরপর ভারতে যান। সেখানে তারা পুনর্গঠিত হন। এ সময় তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক নিযুক্ত হন মেজর শাফায়াত জামিল (বীর বিক্রম, পরে কর্নেল)। একটি কোম্পানির (ডেলটা [ডি]) অধিনায়ক নিযুক্ত হন লেফটেন্যান্ট এস আই এম নূরুন্নবী খান (বীর বিক্রম, পরে কর্নেল)। মো. সানা উল্লাহ ছিলেন চার্লি (‘সি’) কোম্পানিতে। রাধানগরে চার্লি কোম্পানির একটি প্লাটুন ও ডেলটা কোম্পানির সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নেয়। ওই প্লাটুনেই ছিলেন মো. সানা উল্লাহ। নভেম্বরের শেষে রাধানগরে ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। রাধানগরের বিভিন্ন স্থানে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থান। তাদের একটি অবস্থান ছিল ছোটখেলে। ২৬ নভেম্বর মিত্রবাহিনীর ৫/৫ গোর্খা রেজিমেন্ট রাধানগরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সব অবস্থানে একযোগে আক্রমণ করে। মুক্তিযোদ্ধারাও তাদের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নেন। এই যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পাল্টা আক্রমণে গোর্খা রেজিমেন্টের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তাদের কোম্পানি কমান্ডারসহ ৬৭ জন শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধা কয়েকজন আহত হন। তবে কেউ এদিন শহীদ হননি। মিত্রবাহিনীর ২৬ নভেম্বরের আক্রমণ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হওয়ার পর মুক্তিবাহিনীর ওপর দায়িত্ব পড়ে রাধানগর দখলের। ২৮ নভেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা প্রথমে ছোটখেল আক্রমণ করেন। এই যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর পক্ষে নেতৃত্ব দেন শাফায়াত জামিল। যুদ্ধে তিনি আহত হলে নেতৃত্ব দেন এস আই এম নূরুন্নবী খান। মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে ছোটখেল দখল করেন। পাকিস্তানি সেনারা তাদের অবস্থান ছেড়ে পিছু হটে যায়। সকাল আটটার দিকে তারা পুনর্গঠিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একের পর এক আক্রমণ মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিহত করেন। সেদিন যুদ্ধে মো. সানা উল্লাহসহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও অনেকে আহত হন।

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ০৩-০৫-২০১২"। ২০১৯-১২-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-০৩ 

বহি:সংযোগ সম্পাদনা