মোজাফফর আহমদ
মোজাফফর আহমদ (জন্ম: ২৭ মার্চ, ১৯৩৬ - মৃত্যু: ২২ মে, ২০১২) বাংলাদেশের বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমিরেটাস ছিলেন তিনি। এছাড়াও নাগরিক সংগঠন সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক)-এর সভাপতি ছিলেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি দীর্ঘদিন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন তিনি। [১] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মোজাফফর ২০০৮ সালে একুশে পদক পান। তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়েছিলেন।
মোজাফফর আহমদ | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ২৭ মার্চ, ১৯৩৬ |
মৃত্যু | ২২ মে, ২০১২ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ![]() |
পরিচিতির কারণ | অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ |
পুরস্কার | একুশে পদক |
জন্ম ও পরিবারসম্পাদনা
মোজাফফর আহমদ জন্ম ১৯৩৬ সালের ২৭ মার্চ কলকাতায়। তার বাবার নাম নাজির আহমেদ এবং মায়ের নাম জাহানারা বেগম। ৫ ভাই ২ বোনের তার অবস্থান ছিলো ২য়। মোজাফফর আহমদের সহধর্মিণী অধ্যাপিকা রওশন জাহান। ১৯৬৬ সালে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
শিক্ষাজীবনসম্পাদনা
মোজাফফর আহমদ ১৯৫০ সালে নোয়াখালী জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫২ সালে ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে তিনি অনার্স এবং ১৯৫৬ সালে মাস্টার্স করেন। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে পিএইচডি সম্পন্ন করেন । অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী বব লুকাস তার সহপাঠী ছিলেন। [২]
কর্মজীবনসম্পাদনা
হরগঙ্গা কলেজে স্বল্প সময়ের জন্য অর্থনীতির শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন মোজাফফর আহমদ। পরবর্তীতে পিএইচডি করতে যাওয়ার আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে যোগদান করেছিলেন। পিএইচডি শেষ করে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যোগদান করলেও কিছুদিন পর পদত্যাগ করেন। এরপর কিছুদিন করাচিতে ইউনাইটেড ব্যাংকে কাজ করে ঢাকায় ফিরে আসেন। যোগ দেন ইপিআইডিসিতে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে পরিকল্পনা কমিশনে যোগ দেন। ১৯৭৪ সালের সেপ্টেম্বরে পরিকল্পনা কমিশন ছেড়ে দেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে (আইবিএ) যোগদান করেন অধ্যাপক হিসেবে। দীর্ঘ ৩০ বছর এখানে অধ্যাপনা করে ২০০৪ সালে অবসর গ্রহণ করেন। [৩] দেশ-বিদেশে তার একাধিক বই ও প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া কাজ করেছেন ইউনেসকোসহ একাধিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে।
সম্মাননাসম্পাদনা
মৃত্যুসম্পাদনা
অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ ২০১২ সালের ২২ মে মঙ্গলবার মৃত্যুবরণ করেন। বার্ধ্যক্য জনিত রোগে আক্রান্ত হলে তাকে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১১.০০ টা ২২ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. ইমরান তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।[৪] মৃত্যুর পর তার মৃতদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হয়। পরের দিন বুধবার ধানমন্ডির পুরোনো ঈদগাহ ময়দানে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাকে তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী আজিমপুর কবরস্থানে তার মায়ের কবরের ওপর চিরনিদ্রায় সমাহিত করা হয়।[৫]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ বিডিনিউজ ২৪ ডট কম[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "দৈনিক প্রথম আলো"। ২০১৫-০৯-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-০৩।
- ↑ বাংলানিউজ ২৪ ডট কম[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ "অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ আর নেই"। বার্তা৭১। ২০১৬-০৩-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১৪।
- ↑ "শেষ শ্রদ্ধায় শায়িত মোজাফফর আহমদ"। দৈনিক প্রথম আলো। ২৩-০৫-২০১২। ২০১৪-০৪-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 2013-06-14। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য)