মোহাম্মদ আবুল হাশেম
মোহাম্মদ আবুল হাশেম (১১ এপ্রিল ১৯২২–৯ এপ্রিল ২০২১) ছিলেন বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধা। সমাজসেবায় তার অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১১ সালে তাকে রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক-এ ভূষিত করেন। তিনি ছিলেন ১৯৭০ সালের পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের এমএলএ।[১][২]
মোহাম্মদ আবুল হাশেম | |
---|---|
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১১ এপ্রিল ১৯২২ রাজা চাপীতলা, মুরাদনগর, কুমিল্লা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত। (বর্তমান বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ৯ এপ্রিল ২০২১ ঢাকা |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
দাম্পত্য সঙ্গী | নূরুন্নাহার |
সন্তান | ২ ছেলে ও ১০ মেয়ে |
পিতামাতা | বদিউল আলম, অজিফা খাতুন |
পুরস্কার | একুশে পদক -২০১১ |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনামোহাম্মদ আবুল হাশেম ১১ এপ্রিল ১৯২২ সালে কুমিল্লার মুরাদনগরের রাজা চাপীতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বদিউল আলম ছিলেন সরকারী চাকুরীজীবি ও মা অজিফা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। তিনি মাউথফুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর ঢাকার নবকুমার হাইস্কুল থেকে ১৯৪৩ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন।[২]
তিনি ১৫ মে ১৯৫২ সালে ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার নূরুন্নাহারকে বিয়ে করেন, এই দম্পতীর ১০ মেয়ে ও ২ ছেলে।[২]
কর্মজীবন
সম্পাদনামোহাম্মদ আবুল হাশেম ৯৪৫ সাল থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার বিক্রয় ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এর পর আদিল-খলিল কোম্পানীতে ব্যবস্থাপক হিসেবে চাকুরি করেন।[২]
১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখেন। এর পর শুরু করেন ব্যবসা। ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন গ্লোব প্রিন্টিং ওয়ার্কস, ১৯৫৫ সালে নিউ ঢাকা ব্রেইড ফ্যাক্টরী, রুমি মেডিকেল স্টোর, ১৯৬২ সালে জবা টেক্সটাইল মিল্স ও করিম ইন্ডাস্ট্রিয়াল করপোরেশন লি:। তিনি ১৯৭০ সালে পাকিস্তান টেক্সটাইল মিলস ওনার্সের চেয়ারম্যান, ১৯৭৩ সালে লায়ন্স ক্লাব অব ঢাকা নর্দানের পরিচালক ও ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ আ্যসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ছিলেন।[২]
কুমিল্লায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ৬৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সমাজসেবার অসমান্য অবদানের জন্য তিনি ২০১১ সালে একুশে পদকে ভুষিত হন।[১][২]
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনাহাশেম ১৯৭০ সালের পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে এমএলএ নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় ও ১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রতিদন্ধীতা করে হেরে যান আবুল হাশেম। তিনি ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।[২]
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনা- সমাজসেবায় ২০১১ সালে একুশে পদক
- স্বরূপানন্দ ফাউন্ডেশন পদক
মৃত্যু
সম্পাদনামোহাম্মদ আবুল হাশেম ৯ এপ্রিল ২০২১ সালে ঢাকার শ্যামলী নিজ বাসভবনে বাধ্যর্কজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "'একুশের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠন করতে হবে'"। ডয়চে ভেলে বাংলা। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ "চলে গেলেন দানবীর আবুল হাশেম"। দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। ১০ এপ্রিল ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০২১।