মুহম্মদ সিরাজুল ইসলাম

বাংলাদেশী ইতিহাসবিদ, ইবি উপাচার্য

মুহম্মদ সিরাজুল ইসলাম (মৃত্যু: ৫ ডিসেম্বর ২০০৪) একজন বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দ্বিতীয় উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে গাজীপুর থেকে কুষ্টিয়ায় স্থানান্তরে অবদান রাখেন।[১][২] এছাড়াও তিনি বাংলাপিডিয়ার ১৪৫০ সম্পাদকের মধ্যে একজন সাধারণ লেখক-সম্পাদক।[৩]

মুহম্মদ সিরাজুল ইসলাম
২য় উপাচার্য
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ
কাজের মেয়াদ
২৮ ডিসেম্বর, ১৯৮৮ – ১৭ জুন ১৯৯১
পূর্বসূরীএ. এন. এম মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী
উত্তরসূরীমুহাম্মদ আবদুল হামিদ
ব্যক্তিগত বিবরণ
মৃত্যুডিসেম্বর ৫, ২০০৪(২০০৪-১২-০৫)
জাতীয়তাবাংলাদেশী
সন্তানসাবিহা
শবনম শেহনাজ চৌধুরী দীপা
প্রাক্তন শিক্ষার্থীকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাশিক্ষাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসক

শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

মুহম্মদ সিরাজুল ইসলাম কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক লাভ করেন।[২]

কর্মজীবন সম্পাদনা

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তিনি শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হলে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৮৮ সালে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের উপাচার্য পদে দায়িত্ব লাভ করেন।[২]

ইবি ক্যাম্পাস কুষ্টিয়ায় স্থানান্তর সম্পাদনা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য মমতাজ উদ্দিনের অপসারণের পরে ১৯৮৮ সালে মুহম্মদ সিরাজুল ইসলাম যখন বিশ্ববিদ্যালয়টির দ্বিতীয় উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান, তখন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুরে ছিলো। ১৯৯০ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে গাজীপুর থেকে কুষ্টিয়ায় স্থানান্তরের সরকারি সিদ্ধান্ত হয়। প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষক এই স্থানান্তরের বিরোধিতা করে জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রতিবাদের আয়োজন করেন। তবে উপাচার্য সিরাজুল ইসলাম এই স্থানান্তরের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন। অবশেষে ১৯৯০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কুষ্টিয়াতে স্থানান্তরে সক্ষম হন।[২]

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মুঈদ রহমান তাঁর অবদান স্বীকার করে বলেন,[২]

ইবি উপাচার্যের পদ থেকে অব্যাহতি সম্পাদনা

১৯৯১ সালের দিকে ক্যাম্পাসে উপাচার্যের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের অবমূল্যয়নের অভিযোগ ওঠে। ছাত্রদলের আন্দোলন ও দেশীয় বিভিন্ন চাপের মুখে ১৯৯১ সালের ১৭ জুন তাঁকে উপাচার্যের পদ থেকে অব্যাহতি নিতে হয়।[২][৪][৫]

মৃত্যু সম্পাদনা

সিরাজুল ইসলাম ৫ ডিসেম্বর ২০০৪ সালে স্বাভাবিকভাবে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষক শোক প্রকাশ এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন।

স্থাপনা সম্পাদনা

মুহম্মদ সিরাজুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর অবদান ও কৃতিত্বকে স্মরণীয় করে রাখতে তাঁর নামে বিভাগটিতে একটি আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব স্থাপিত হয়েছে।[৬] অধ্যাপক মুহম্মদ সিরাজুল ইসলামের পরিবারের আর্থিক সহায়তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্যে কলা ভবনের ৭ম তলায় অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সিরাজুল ইসলাম কম্পিউটার ল্যাব স্থাপিত হয়েছে। ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এই আধুনিক কম্পিউটার ল্যাবটি উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রয়াত শিক্ষকের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন,[৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "List the Honorable Former-Vice-Chancellors - Islamic University, Bangladesh" [মাননীয় সাবেক উপাচার্যদের তালিকা - ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ]। iu.ac.bd (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৫-১৯ 
  2. "ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কোন পথে পরিচালিত হবে"যুগান্তর। ২০২০-১০-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-১৯ 
  3. "সম্পাদকবৃন্দ - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৫ 
  4. "ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অসন্তোষ কেন"এডুকেশন বাংলা। ২০২০-০৮-০৯। ২০২০-১০-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৫-১৯ 
  5. "১১ উপাচার্যের কেউই মেয়াদ শেষ করতে পারেননি"প্রথম আলো। ২০১৬-১০-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-১৯ 
  6. "ঢাবিতে সিরাজুল ইসলাম কম্পিউটার ল্যাব উদ্বোধন"দৈনিক শিক্ষা। ২০১৮-১১-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৫-১৯ 
  7. "ঢাবি-এ 'অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সিরাজুল ইসলাম কম্পিউটার ল্যাব' উদ্বোধন"du.ac.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-১৯