মুশতারী শফী
বেগম মুশতারী শফী (জন্ম ১৫ জানুয়ারি ১৯৩৮ - ২০ ডিসেম্বর ২০২১) একজন বাংলাদেশি সাহিত্যক, উদ্যোক্তা, নারী নেত্রী ও সমাজসংগঠক যিনি ‘শহীদজায়া’ নামে বেশি পরিচিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অনন্য ভূমিকা পালনের জন্য তাকে বাংলা একাডেমি কর্তৃক ২০১৬ সালে ‘ফেলোশিপ’ প্রদান করা হয়।[১] আমৃত্যু তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বেগম মুশতারী শফী | |
---|---|
জন্ম | ১৫ জানুয়ারি ১৯৩৮ |
মৃত্যু | ২০ ডিসেম্বর ২০২১ |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
পেশা | সাহিত্যক |
পুরস্কার | অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-১৪২৪, বাংলা একাডেমি ফেলো (২০১৬), বেগম রোকেয়া পদক (২০২০) |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনামুশতারী শফী ১৯৩৮ সালের ১৫ জানুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার পৈতৃক নিবাস ফরিদপুর জেলায়।[২] তার পিতার কর্মস্থল ছিল কলকাতায়।
কর্মজীবন
সম্পাদনামুশতারী শফী মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ‘মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের নারী’, ‘চিঠি, জাহানারা ইমামকে’ এবং ‘স্বাধীনতা আমার রক্তঝরা দিন’। এছাড়াও তিনি প্রবন্ধ, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনী, কিশোর গল্পগ্রন্থ, স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ প্রভৃতি শাখায়ও অবদান রেখেছেন। অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে লেখা ‘আমি সুদূরের পিয়াসী’, স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ, ‘স্মৃতিতে অমলিন যারা’, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ছোটগল্পের সংকলন ‘দুটি নারী ও একটি মুক্তিযুদ্ধ’, ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প’ ও ‘একুশের গল্প’সহ প্রভৃতি।[৩]
১৯৬০-এর দশকে তিনি চট্টগ্রামে ‘বান্ধবী সংঘ’ নামে নারীদের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।[৩] এ সংগঠন থেকে তিনি ‘বান্ধবী’ নামে একটি নিয়মিত পত্রিকা প্রকাশ করেন ও ‘মেয়েদের প্রেস’ নামে একটি ছাপাখানা চালু করেন।[৩] তিনি একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সাথেও যুক্ত।[৩]
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাব্যক্তিগত জীবনে মুশতারী চট্টগ্রামের দন্ত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ শফীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির সাত সন্তান রয়েছে।[৪] ১৯৭১ সালেরে এপ্রিলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মোহাম্মদ শফি ও তার ছোট ভাই এহসান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাতে শফী পরিবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[২] মুশতারীর দাদা কাজি আজিজুল হক ছিলেন একজন বাঙালি উদ্ভাবক ও ব্রিটিশ ভারতীয় পুলিশে কর্মরত একজন কর্মকর্তা। তিনি হস্তছাপ রক্ষনের মাধ্যমে অপরাধী সনাক্তকরনের উদ্ভাবক হিসেবে পরিচিত।[৫]
সম্মাননা
সম্পাদনা- অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-১৪২৪[৬]
- বাংলা একাডেমি ফেলো (২০১৬)
- বেগম রোকেয়া পদক (২০২০) [৭]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক তালিকা"। banglaacademy.org.bd। বাংলা একাডেমি। ২৭ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ গ "বেগম মুশতারি শফি"। বিডিনিউজ২৪.কম। ২১ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ ক খ গ ঘ "'অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার' পাচ্ছেন লেখক ও মুক্তিযোদ্ধা বেগম মুশতারী শফী"। ইত্তেফাক। ১০ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ "শহীদ জায়া মুক্তিসংগ্রামী বেগম মুশতারী শফি"। জনকণ্ঠ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ "Indelible Imprints: The Genius from Khulna"। ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ মে ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ "মুশতারী শফী"। দৈনিক আজাদী। ২৭ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ "রোকেয়া পদক পেলেন পাঁচজন"। দৈনিক প্রথম আলো। ০৯ ডিসেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০২১। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য)