মুজিবুর রহমান (চিকিৎসা বিজ্ঞানী)

একুশে পদক প্রাপ্ত ব্যক্তি

মুজিবুর রহমান (মৃত্যু: ২৯ জুন ২০১৫) ছিলেন একজন বাংলাদেশী চিকিৎসা বিজ্ঞানী। তিনি প্রথম ইনস্টিটিউট অফ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল অ্যান্ড রিসার্চে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) রক্তদান কেন্দ্র স্থাপন করেন।[১] সমাজসেবায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৪ সালে তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করে।[২]

ডঃ

মুজিবুর রহমান
জন্ম
মৃত্যু২৯ জুন ২০১৫ (৯৬ বছর)
মৃত্যুর কারণবার্ধক্য
সমাধিমিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান, ঢাকা
জাতীয়তাবাংলাদেশী
শিক্ষাচিকিৎসা বিজ্ঞান, রক্তবিজ্ঞান
মাতৃশিক্ষায়তনগ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাচিকিৎসা বিজ্ঞানী
কর্মজীবন১৯৫২-২০০২
উল্লেখযোগ্য কর্ম
রক্তদান কেন্দ্র স্থাপন
সন্তান২ পুত্র, ২ কন্যা
পুরস্কারএকুশে পদক (২০১৪)

শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

মুজিবুর সিলেট জিলা স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করেন। পরে তিনি আসামের গুয়াহাটির বেরি-হোয়াইট স্কুল অব মেডিসিনে (পরবর্তীতে গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজ নামকরণ করা হয়) চার বছর চিকিৎসা বিষয়ে পড়াশুনা করেন। তিনি ১৯৫২ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) ফিরে আসেন এবং তিন বছর মিডফোর্ড হাসপাতাল (বর্তমান স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) যোগ দেন। এসময়ে তিনি ১৯৬২ সালে রেলওয়ে হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এ ব্লাড ব্যাংক স্থাপনে ভূমিকা রাখেন। ১৯৬৪ সালে তিনি গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম ব্যক্তি হিসেবে রক্তবিজ্ঞানরক্তদান বিষয়ে পিএইচডি লাভ করেন।[৩]

কর্মজীবন সম্পাদনা

গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরে এসে মুজিবুর রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ এর রক্তদান কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮২ সালে তিনি সরকারি চাকুরি থেকে অবসর নেন। সরকারি চাকুরি করার সময়ে তিনি পুরাতন বোতলের পরিবর্তে রক্ত সংরক্ষণের জন্য প্লাস্টিক ব্যাগ উদ্ভাবন করেন এবং ৩০টি রক্তদান কেন্দ্র স্থাপন করেন। তিনি ১৯৭৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত একজন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ পরামর্শক প্যানেলের সম্মানিত সদস্য পদ লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশে রক্তদান সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।[৩]

রহমান ছয়টি বই রচনা করেন, যা দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে পড়ানো হয়। এছাড়া তিনি বাংলাদেশী আনারস থেকে ব্লাড গ্রুপিং অ্যান্টিসেরাম ও এনজাইম ব্রোমেলেইন আবিষ্কার বিষয়ে গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন।[৩]

তিনি বিরল রক্তের গ্রুপ বের করার জন্য বাংলাদেশী খরগোশ ও ছাগলের রক্ত থেকে এন্টি-হিউম্যান গ্লুবলিন আবিষ্কার করেন। এছাড়া তিনি দুই বাংলাদেশী পরিবারে বিরল প্রজাতির বম্বে রক্তের ধরন আবিষ্কার করেন।[৪]

মৃত্যু সম্পাদনা

মুজিবুর রহমান ২০১৫ সালে ৯৬ বছর বয়সে বার্ধক্য জনিত কারণে ঢাকার বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়। [৫]

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Dr Mujibur Rahman"দ্য ডেইলি স্টার। ৩০ জুন ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৭ 
  2. একুশে পদকপ্রাপ্ত সুধীবৃন্দ ও প্রতিষ্ঠান (পিডিএফ)সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। পৃষ্ঠা ১। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১৪ 
  3. Rahman, Md Fazlur (৬ মার্চ ২০১৪)। "Of blood transfusion architect"দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৭ 
  4. "Prof Mujibur Rahman dies"নিউ এজ। ৩০ জুন ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৭ 
  5. "Ekushey Padak winner emeritus Prof Majibur Rahman passes away"বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা। ২৯ জুন ২০১৫। ২০১৭-০৯-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৭ 
  6. "Detractors of Ekushey are enemies: Hasina"দ্য ডেইলি স্টার। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৭