মির্জাপুর, বাংলাদেশ

বাংলাদেশের টাংগাইল জেলার একটি ছোট শহর

মির্জাপুর(English:Mirzapur) হচ্ছে একটি ছোট শহর যেটি বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার অন্তর্গত। এটি টাঙ্গাইল শহরের ৪১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ও রাজধানী ঢাকা শহরের ৫৪ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। এই শহরের উত্তরে ফতেহপুরআজগোনা; দক্ষিণে ভাওড়াবহুরিয়া; পূর্বে আজগানাগোড়াই , পশ্চিমে ভাতগ্রাম। শহরটির উত্তর পাশ দিয়ে বংশাই নদী এবং দক্ষিণ পাশ দিয়ে লৌহজং নদী প্রবহমান। প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ পাকুল্লার তিন গম্বুজবিশিষ্ট প্রাচীন মসজিদ (অষ্টাদশ শতাব্দী)।

মির্জাপুর
শহর
মির্জাপুর বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
মির্জাপুর
মির্জাপুর
বাংলাদেশে মির্জাপুর শহরের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°০৬′৩০″ উত্তর ৯০°০৫′৩০″ পূর্ব / ২৪.১০৮৩° উত্তর ৯০.০৯১৭° পূর্ব / 24.1083; 90.0917
দেশবাংলাদেশ
বিভাগঢাকা বিভাগ
জেলাটাঙ্গাইল জেলা
উপজেলামির্জাপুর উপজেলা
প্রতিষ্ঠাকাল১৮ জুন, ২০০০
সরকার
 • ধরনপৌরসভা
 • প্রথম মেয়রএডভোকেট মোশারফ হোসেন মনি
 • বর্তমান মেয়রশাহাদাত হোসেন (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ)
আয়তন
 • মোট৮.৫৮ বর্গকিমি (৩.৩১ বর্গমাইল)
উচ্চতা১৪ মিটার (৪৬ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট৩১,৯৭৫
 • জনঘনত্ব৩,৭০০/বর্গকিমি (৯,৭০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবাংলাদেশ মান সময় (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড১৯৪০
এলাকা কোড৯২২৯
ওয়েবসাইটমির্জাপুর তথ্য বাতায়ন

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল এ উপজেলার গোড়ান সাটিয়াচড়ায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে বেশ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয় এবং ৩৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১ (গোড়ান সাটিয়াচড়া) বধ্যভূমি ১ (পাকুল্লা)।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩০৬, মন্দির ১০৫। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: পাকুল্লার মসজিদ, পাকুল্লার শ্রী শ্রী রাধা কালাচাঁদ মন্দির, ছাওয়ালীর কালী মন্দির,মির্জাপুর জামে মসজিদ ইত্যাদি।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৮.৩%; পুরুষ ৫৩.১%, মহিলা ৪৩.৪%। কলেজ ৬, মেডিকেল কলেজ ১, ক্যাডেট কলেজ ১, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার ১, নার্সিং ইনস্টিটিউট ২, মাধ্যমিকইত্যাদি বিদ্যালয় ৪৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫৯, মাদ্রাসা ১৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ (১৯৬৫), কুমুদিনী মেডিকেল কলেজ (২০০১), মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং স্কুল (১৯৭০), মহেড়া আনন্দ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৯০), জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), মির্জাপুর এস কে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), মৈশামূড়া বি কে উচ্চবিদ্যালয় (১৯২০), গস্থামাটিয়া এস সি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭), বরাবি নরদানা বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৮), ভাতগ্রাম দয়াময় চতুষ্পাঠি।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: বংশাই (অনিয়মিত)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান নাট্যমঞ্চ ১, ক্লাব ৬০, খেলার মাঠ ৫০।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৪.৯৪%, অকৃষি শ্রমিক ৩.০২%, শিল্প ১.০৬%, ব্যবসা ১২.৫৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.০২%, চাকরি ১১.৬%, নির্মাণ ১.২৬%, ধর্মীয় সেবা ০.১৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৪.০১% এবং অন্যান্য ৯.৩৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৬.০৫%, ভূমিহীন ৩৩.৯৫%। শহরে ৫০.৯০% এবং গ্রামে ৬৭.২৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, সরিষা, আলু, গম, ডাল, আখ, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি মটর, খেসারি, মিষ্টি আলু, তিল, মাষকলাই।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২৫০, গবাদিপশু ৭৮, হাঁস-মুরগি ৩৫০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৩০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ২০০ কিমি; নৌপথ ৩২ নটিক্যাল মাইল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ডুলি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা কটন মিল, স্পিনিং মিল, জুট মিল, বিস্কুট ফ্যাক্টরি, ব্যাটারি কারখানা, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, কাঁসাশিল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প, কাঠের কাজ।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য আলু, পাট, আখের গুড়।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪২.৫৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৮.৪০%, পুকুর ০.৬৯%, ট্যাপ ১.৫৮% এবং অন্যান্য ৯.৩৩%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৪.৩৬% (গ্রামে ৩২.২৫% ও শহরে ৬১.০৩%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫০.৮৭% (গ্রামে ৫২.১৬% ও শহরে ৩৪.৪৫%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ১৪.৭৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৬, ক্লিনিক ১২।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার অনেক লোক প্রাণ হারায়। এছাড়া ১৯৮৮ সালের বন্যায় ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

জনসংখ্যাতত্ত্ব সম্পাদনা

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক পরিচালিত আদমশুমারি ২০১১ অনুযায়ী, মির্জাপুর শহরের মোট জনসংখ্যা ৩১,৯৭৫ জন। এই শহরে মোট ঘরসংখ্যা ৬১২৯ টি।[১]

শিক্ষা সম্পাদনা

মির্জাপুর শহরের গড় স্বাক্ষরতার হার শতকরা ৬৯.৭ ভাগ (পুরুষ ৭১%, মহিলা-৬৮.৬%)।[২]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Tangail Table C-01 : Area, Households, Population, Density by Residence and Community" (পিডিএফ)bbs.gov.bd (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-১১-১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-০১ 
  2. "Tangail Table C-06 : Distribution of Population aged 7 years and above by Literacy, Sex, Residence and Community" (পিডিএফ)bbs.gov.bd (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-১১-১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০২-২৫