মিক মলোন
মাইকেল মিক ফ্রান্সিস মলোন (ইংরেজি: Mick Malone; জন্ম: ৯ অক্টোবর, ১৯৫০) পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার স্কারবোরা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ও সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮২ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | মাইকেল ফ্রান্সিস মলোন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | স্কারবোরা, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া | ৯ অক্টোবর ১৯৫০|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ফাস্ট বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২৮২) | ২৫ আগস্ট ১৯৭৭ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ৩৩) | ২ জুন ১৯৭৭ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ২৭ জানুয়ারি ১৯৮২ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৭৫ - ১৯৮২ | ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৭৯ - ১৯৮০ | ল্যাঙ্কাশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন মিক মলোন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণের পূর্বে বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ান রুলস ফুটবলে ফুল-ফরোয়ার্ড হিসেবে ডব্লিউএএনএফএলে সুবিয়াকোর পক্ষে খেলেছেন।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯৭৪-৭৫ মৌসুম থেকে ১৯৮১-৮২ মৌসুম পর্যন্ত মিক মলোনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৫ তারিখে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। শেফিল্ড শিল্ডের ঐ খেলায় প্রতিপক্ষীয় ভিক্টোরিয়ার বব বল্ড্রিকে দুইবার আউট করার কৃতিত্বে দেখান। খেলায় তিনি পাঁচ উইকেট দখল করেছিলেন।
নিজস্ব দ্বিতীয় খেলায় নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে সাত উইকেট পান। তন্মধ্যে, তারকা খেলোয়াড় ও ব্লুজের অধিনায়ক ডগ ওয়াল্টার্স তার শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। ঐ বছরে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া দল শেফিল্ড শিল্ডের শিরোপা জয় করেছিল। মৌসুমের শেষ দুই খেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তিনি।
১৯৭৫-৭৬ মৌসুমের শিল্ড ক্রিকেটে ১৮.৭৫ গড়ে ২৮ উইকেট দখল করেন। তন্মধ্যে দুইবার ইনিংসে পাঁচ-উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। টেস্ট খেলোয়াড় ডেনিস লিলি, জেফ থমসন, অ্যাশলে মলেট ও অ্যালান হার্স্টই কেবলমাত্র তার তুলনায় অধিকসংখ্যক উইকেট পেয়েছেন; তবে, মলোনের গড় তাদের তুলনায় শ্রেয়তর ছিল।[১] জিলেট কাপের খেলায় ২/৩৭ ও ৩৩ রান সংগ্রহ করে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। জন ইনভেরারিটি’র সাথে ৮৮ রানের জুটি গড়ে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়াকে জয় এনে দেন।[২]
১৯৭৬-৭৭ মৌসুমের শেফিল্ড শিল্ডের খেলায় মিক মলোন সর্বাপেক্ষা সেরা ক্রীড়াশৈলী উপহার দেন। মাত্র ১৬.১২ গড়ে ৪০ উইকেট পান। এরফলে, প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিতে পরিণত হন। তন্মধ্যে, চারবার পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পেয়েছিলেন। ঐ বছর ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া শিল্ড ও জিলেট কাপের শিরোপা জয়ের কৃতিত্বে দেখায়। ভোটের মাধ্যমে মলোনকে মৌসুমের দ্বিতীয় সেরা খেলোয়াড়ের মর্যাদা দেয়া হয়।[৩]
ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে শিল্ডের খেলায় ডেনিস লিলি’র সাথে ৪১ রানের জুটি গড়ে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়াকে নাটকীয়ভাবে জয়লাভ করতে সহায়তা করেন।[৪] জিলেট কাপের চূড়ান্ত খেলায় আরও একবার ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান। এ পর্যায়ে নয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে অপরাজিত ৪৭ রানের দূর্দান্ত ইনিংস উপহার দেন। ক্রেগ সার্জেন্টের সাথে ৫১ রানের জুটি গড়েন তিনি। পাঁচ বল বাকী থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় তার দল। এ প্রসঙ্গে অধিনায়ক রড মার্শ মন্তব্য করেন যে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন তিনি। ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে তিন খেলায় বিজয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। গত বছরে জিলেট কাপ, সাম্প্রতিককালে শিল্ডের খেলায় একটি।[৫] এরপর, শিল্ডের খেলায় ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে ৬/৩৩ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান।[৬]
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনাসমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্ট ও দশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন মিক মলোন। ২৫ আগস্ট, ১৯৭৭ তারিখে ওভালে স্বাগতিক ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল।
ঘরোয়া ক্রিকেটে দূর্দান্ত খেলা উপহার দেয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৭ সালে ইংল্যান্ড গমনকল্পে অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে মনোনীত করা হয়।[৭] ধারণা করা হয়েছিল যে, জেফ থমসন ও ম্যাক্স ওয়াকারকে সহযোগিতার লক্ষ্যে লেন পাস্কো ও জিওফ ডাইমকের সাথে রাখা হয়েছিল।[৮]
ইংল্যান্ডের মাটিতে একদিনের খেলায় নিজস্ব প্রথম বলেই উইকেট পান তিনি।[৯] তবে সিরিজের শুরুতেই মলোনসহ দলের অধিকাংশ খেলোয়াড়ের বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় চুক্তিতে স্বাক্ষর করার কথা রটে যায়।[১০]
সফরের সূচনালগ্নে মলোনকে দুইটি একদিনের আন্তর্জাতিকের জন্য দলে নেয়া হয়। খেলাগুলোয় ইংল্যান্ড দল খুব সহজেই জয় পায়। প্রথম খেলায় তিনি দুই উইকেট পেলেও পরেরটিতে উইকেট শূন্য অবস্থায় থাকেন।[১১] টেস্ট খেলাগুলোয় দল নির্বাচকমণ্ডলী তৃতীয় পেসার হিসেবে পাস্কোকে প্রাধান্য দেন। পাস্কো বেশ ভালোমানের বোলিং করলেও আঘাতের কারণে পঞ্চম টেস্টের বাইরে থাকেন। ফলশ্রুতিতে, মলোনকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়।[১২]
এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। কেনিংটন ওভালে অনুষ্ঠিত খেলাটিকে তিনি স্বর্ণালী মুহূর্ত হিসেবে আখ্যায়িত করেন। প্রথম ইনিংসে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করে ৫/৬৩ পান। এরপর নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৬ রান তুলেন।[১৩] খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলেও অস্ট্রেলিয়া দল ৩-০ ব্যবধানে সিরিজে পরাজিত হয়।
অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের প্রচারমাধ্যমে ক্যারি প্যাকার ও তার বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেট খেলাকে অস্ট্রেলিয়ার পরাজয়ের জন্য দায়ী করে। এ প্রসঙ্গে মলোন দ্বিমত পোষণ করে বলেন যে, গণমাধ্যমে দলের বিভক্তির কথা বলা হয়েছে। আদতে তা নয়। ১৭জন খেলোয়াড়ের ১৩জনই প্যাকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। প্রত্যেকেই তা জানতাম। প্রকৃত কারণ হচ্ছে, আমরা শক্তিধর দলে সাথে পেরে উঠতে পারছিলাম না এবং জিওফ বয়কট তার সেরা খেলা উপহার দিয়েছিলেন।[১৪]
বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে অংশগ্রহণ
সম্পাদনাবিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে মিক মলোন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। তবে, ১৯৭৯ সালে মেলবোর্নের ভিএলএল পার্কে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটিমাত্র সুপারটেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। ক্লাইভ লয়েড, রিচার্ড অস্টিন ও ভিভ রিচার্ডসের উইকেট পেয়েছিলেন ও সাত রান সংগ্রহ করেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল।[১৫] সীমিত ওভারের খেলায় সপ্রতিভ ছিলেন তিনি। ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে ইন্টারন্যাশনাল কাপে চার খেলা থেকে চার উইকেট পান।
কান্ট্রি কাপে মিক মলোন নিজেকে আরও অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্র তৈরি করেন। ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমের কান্ট্রি কাপে আট খেলায় অংশ নেন। ২০.৭৬ গড়ে ২৫ উইকেট পান তিনি। এ সফরে তিনি ওভারপ্রতি মাত্র ২.৭৮ গড়ে রান দিয়েছিলেন। ক্যানবেরার ম্যানুকা ওভালে কান্ট্রি কাপের চূড়ান্ত খেলায় বিশ্ব একাদশের বিপক্ষে ৭৫ ওভারে ৩/৬২ পান। অস্ট্রেলিয়া পরাজিত হয়। এছাড়াও, হ্যামিল্টনে বিশ্ব একাদশের বিপক্ষে ৫/৩৫ পেয়েছিলেন তিনি।[১৬]
১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড সফরে আটটি খেলায় অংশ নেন। ১৩.১৪ গড়ে ১৪ উইকেট পান। ওয়াঙ্গানুইয়ের কুকস গার্ডেন্সে ৪/৯ পান। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম একাদশে নিয়মিত খেলার বিষয়ে মলোন আশাবাদী ছিলেন। ইন্টারন্যাশনাল কাপের ১১ খেলায় অংশ নিয়ে ১০ উইকেট পান। তন্মধ্যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চূড়ান্ত খেলার চারটি খেলা অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে, ৩-১ ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়া দল পরাজিত হয়েছিল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মিক মলোন বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটের ছয়টি সীমিত ওভারের খেলায় অংশ নেন।[১৭] ২৭.৫০ গড়ে ৬ উইকেট পান।[১৮] ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ৮-২ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। মলোনের অংশগ্রহণকৃত প্রত্যেক খেলায় অস্ট্রেলিয়া দল পরাজয়বরণ করেছিল।
ল্যাঙ্কাশায়ার লীগের অংশগ্রহণ
সম্পাদনা১৯৭৯ সালে পেশাদারী পর্যায়ে ক্রিকেট খেলার উদ্দেশ্যে ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে হ্যাসলিংডেন ক্রিকেট ক্লাবের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। এ লীগে টিকে থাকা বেশ কষ্টকর বিষয় ছিল। ইয়ান চ্যাপেলের ন্যায় অনেক বিদেশী পেশাদার ও জনপ্রিয় খেলোয়াড় এতে অংশ নিয়েছেন।[১৯] ১০-এর অল্প বেশি রান গড়ে ৪৫ উইকেট পেয়েছিলেন।[২০]
ক্লাইভ লয়েডের ন্যায় বিখ্যাত খেলোয়াড়ের সাথে দ্বিতীয় বিদেশী খেলোয়াড় হিসেবে ল্যাঙ্কাশায়ারে যোগ দেন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিনান পল রবিনসনের স্থলাভিষিক্ত হন। দুই খেলায় অংশ নিয়ে ১৮ উইকেট সংগ্রহ করে নিজেকে স্মরণীয় করে রাখেন। তন্মধ্যে, ব্ল্যাকপুলের স্ট্যানলি পার্কে নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং নৈপুণ্য ৭/৮৮ লাভ করেন। ডেরেক র্যান্ডল ও ক্লাইভ রাইসের ন্যায় তারকা ব্যাটসম্যান তার শিকারে পরিণত হয়েছিলেন।[২১] নিজস্ব দ্বিতীয় খেলায় লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ৬/৬০ পান। এবার ডেভিড গাওয়ারকে শিকার করেন তিনি।[২২]
জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন
সম্পাদনাইংল্যান্ড থেকে কৌশলগতভাবে লাভবান মিক মলোন দেশে ফিরে শিল্ড ক্রিকেটে অংশ নেন। ১৯৭৯-৮০ মৌসুমে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলেন। বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়েরা বাকীদের সাথে খেলেন। তার ভাষায়, আমি কয়েক মাসের মধ্যে দেখতে পাই যে, ব্যাপারটি সকলেই ভুলে গিয়েছেন। শুরুতে কিছু সমস্যার মুখোমুখি হবার সম্ভাবনার কথা ভাবছিলাম। বিশেষ করে দল নির্বাচনের বিষয়ে। কিন্তু, প্রত্যেকই একে-অপরের বিপক্ষে শিল্ড প্রতিযোগিতায় পুনরায় অংশ নেয়। কে সেরা ক্রিকেটার হবে তা পরিষ্কার হয়ে যায়। কে দলে থাকবে, আর কে থাকবে না এ বিষয়টিও স্পষ্টতর হতে থাকে।[২৩]
ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া এ প্রতিযোগিতায় ২৮.৭৫ গড়ে ৩২ উইকেট নিয়ে মাঝারিমানের সফলতা পান। দলের জন্যেও এ মৌসুমটি তেমন ভালো ছিল না। দলটি মাত্র একটি খেলায় জয় পায়। নিজেদের মাঠে তাসমানিয়ার বিপক্ষে জয়ী হয় তার দল। তবে, খেলার ছন্দে থাকায় ১৯৭৯-৮০ মৌসুমে পাকিস্তান গমনের উদ্দেশ্যে তাকে দলে রাখা হয়।[২৪]
তিন টেস্টের কোনটিতেই তার খেলার সুযোগ হয়নি। বিসিসিপি সভাপতি একাদশ ও পাঞ্জাব গভর্নর একাদশের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পান। তবে, ধীরগতিসম্পন্ন পিচে মাত্র কয়েক ওভার বোলিং করে একটিমাত্র উইকেট পান। এ পর্যায়ে রে ব্রাইটের স্পিনের উপর অস্ট্রেলিয়া দল অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে ফিরে ১৯৮০ সালে পুরোটা সময় অতিবাহিত করেন। ১৫টি কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় অংশ নেন। প্রতি উইকেট লাভে $৫০ ডলার লাভের কথা তাকে জানানো হয়।[২৫] উইলি হগের ২১.১৬ গড়ে ৫০ উইকেট লাভের পর ২৫.৮৮ গড়ে ৪৫ উইকেট নিয়ে কাউন্টি দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক হন। তাসত্ত্বেও, ল্যাঙ্কাশায়ার দল পয়েন্ট তালিকায় নিচেরদিক থেকে তৃতীয় স্থানে অবস্থান করে। দলটি মাত্র চার খেলায় জয়ী হয়েছিল।[২৬] এ পর্যায়ে সফররত অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে তিনদিনের খেলায় অংশ নেন। তবে, কোন উইকেট পাননি।
শিল্ড ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আর মাত্র দুই মৌসুম খেলেন। ১৯৮১-৮২ মৌসুম শেষে অবসর নেন। এ পর্যায়ে তিনি মাত্র বারো খেলায় অংশ নেন। ১৯৮০-৮১ মৌসুমে মাত্র ১৪ উইকেট পান। অন্যদিকে, চূড়ান্ত মৌসুমে ১৩ উইকেট পেলেও ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া দল পুনরায় শিল্ডের শিরোপা জয়ে সক্ষমতা দেখায়। ম্যাকডোনাল্ডস কাপের সেমি-ফাইনালে ১০ ওভারে ২/১৮ পান।[২৭] আঘাতের কারণে ১৯৮১ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে খেলতে পারেননি।[২৮]
অবসর
সম্পাদনাঘরোয়া মৌসুমে কয়েকটি খেলায় সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ মিক মলোনকে অস্ট্রেলিয়া দলে ফিরিয়ে আনা হয়। ১৯৮১-৮২ মৌসুমের বেনসন এন্ড হেজেস বিশ্ব সিরিজ কাপ, পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেন। তিনি আঘাতপ্রাপ্ত টেরি অল্ডারম্যানের স্থলাভিষিক্ত হন।[২৯] নির্ধারিত দশ ওভারে ২/৯ লাভ করলেও অস্ট্রেলিয়া দল পরাজিত হয়েছিল।[৩০] পরের খেলাগুলোতেও তাকে রাখা হয়। আট খেলায় ২৭.৮৮ গড়ে ৯ উইকেট পান। ওভারপ্রতি মাত্র ৩.১৩ রান খরচ করে অস্ট্রেলিয়ার সেরা মিতব্যয়ী বোলারে পরিণত হন।[৩১]
অ্যাডিলেড ওভালে সিরিজের তৃতীয় খেলায় সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেরি অল্ডারম্যানের পরিবর্তে দলে রাখা হয়। তবে, দ্বাদশ খেলোয়াড়ের মর্যাদা পান।[৩২] ১৯৮২ সালে নিউজিল্যান্ড গমনের উদ্দেশ্যে সম্ভাব্য খেলোয়াড় ছিলেন।[৩৩] কিন্তু তিনি এ সফরে যাননি ও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসরের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন। ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে নিজের শেষ একদিনের খেলায় অংশ নেন। সাত ওভারে ৩.১৯ পেয়েছিলেন। মলোন মন্তব্য করেন যে, আমি শিল্ডের খেলায় দলে খেলার জন্য উপযুক্ত ছিলাম না ও মনে করি যে, অবসর গ্রহণের এটিই উপযুক্ত সময়। এ সিদ্ধান্তে আমি দ্বিতীয় কোন চিন্তা করিনি।[৩৪] ১৯৮১-৮২ মৌসুম শেষে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এ পর্যায়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৭৩ খেলায় অংশ নিয়ে ২৪.৭৭ গড়ে ২৬০ উইকেট পান।
শীত মৌসুমে অস্ট্রেলীয় রুলস ফুটবলে ফুল-ফরোয়ার্ড অবস্থানে খেলতেন। ডব্লিউএএনএফএলে সুবিয়াকোর পক্ষে ১০৪ খেলায় অংশ নেন। তন্মধ্যে, ১৯৭৩ সালে দলের শিরোপা জয়ে ভূমিকা রাখেন। ১৯৭৮ সালে সুবিয়াকোর পক্ষে ১০০তম খেলায় অংশগ্রহণ করেন। ৫৪.৪৭ গড়ে গোলকিকিং করে শীর্ষে ছিলেন। এ মৌসুমে প্রো-ফুটির পক্ষে সর্বশেষ মৌসুম অতিবাহিত করেন।[৩৫] বর্তমানে তিনি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ডাবলভিউ এলাকায় আবাসন শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট।[৩৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Cricket Archive – Bowling in Sheffield Shield 1975/76
- ↑ "WA rallies to close cup win"। The Canberra Times। 50 (14,207)। ২৭ অক্টোবর ১৯৭৫। পৃষ্ঠা 10। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Player-of-year award to Robinson"। The Canberra Times। 51 (14,625)। ৪ মার্চ ১৯৭৭। পৃষ্ঠা 18। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "W.A. WINS TENSE SHIELD STRUGGLE"। The Canberra Times। 51 (14,542)। ২৪ নভেম্বর ১৯৭৬। পৃষ্ঠা 40। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "WA wins cup in final over"। The Canberra Times। 51 (14,591)। ২৪ জানুয়ারি ১৯৭৭। পৃষ্ঠা 14। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "WA heads for victory"। The Canberra Times। 51 (14,596)। ২৯ জানুয়ারি ১৯৭৭। পৃষ্ঠা 44। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Thomson goes in; Gilmour dropped"। The Canberra Times। 51 (14,637)। ১৮ মার্চ ১৯৭৭। পৃষ্ঠা 18। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "THREE BOWLERS SEEK ONE POSITION"। The Canberra Times। 51 (14,670)। ২৬ এপ্রিল ১৯৭৭। পৃষ্ঠা 22। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "As the English like it"। The Canberra Times। 51 (14,673)। ২৯ এপ্রিল ১৯৭৭। পৃষ্ঠা 16। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "KERRY PACKER CRICKET TROUPE"। The Canberra Times। 51 (14,772)। ১০ মে ১৯৭৭। পৃষ্ঠা 1 (SPORTING SECTION)। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ Cricket Archive – Prudential Trophy 1977, ১২ জুলাই ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
- ↑ "Sodden field delays start"। The Canberra Times। 51 (14,865)। ২৬ আগস্ট ১৯৭৭। পৃষ্ঠা 20। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "5th Test: England v Australia at The Oval, Aug 25-30, 1977"। espncricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১২-১৮।
- ↑ The Times – Caught in Time: Australia tour of England 1977
- ↑ "WSC game drawn in Melbourne"। The Canberra Times। 53 (15,821)। ১৬ জানুয়ারি ১৯৭৯। পৃষ্ঠা 18। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Malone on top"। The Canberra Times। 52 (14,997)। ৩০ জানুয়ারি ১৯৭৮। পৃষ্ঠা 1 (SPORTS SECTION)। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Thomson, Lillee paired agaiin"। The Canberra Times। 53 (15,829)। ২৪ জানুয়ারি ১৯৭৯। পৃষ্ঠা 32। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ Cricinfo – World Series Cricket Internationals (in West Indies), 1978/79 – WSC Australia – Batting and bowling averages
- ↑ Cricket Archive – Lancashire League Matches 1979
- ↑ "Century No 17 for Boycott"। The Canberra Times। 53 (15,999)। ১৪ জুলাই ১৯৭৯। পৃষ্ঠা 39। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "CRICKET England grinds on in Test"। The Canberra Times। 54 (16,050)। ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯। পৃষ্ঠা 16। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "CRICKET Malone's fine form"। The Canberra Times। 54 (16,054)। ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯। পৃষ্ঠা 16। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Spin-offs that players like"। The Canberra Times। 54 (16,111)। ৪ নভেম্বর ১৯৭৯। পৃষ্ঠা 9। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "CRICKET Beaten team kept for next Test"। The Canberra Times। 55 (16,198)। ৩১ জানুয়ারি ১৯৮০। পৃষ্ঠা 22। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "IN BRIEF Reid's charge dismissed"। The Canberra Times। 54 (16,297)। ৯ মে ১৯৮০। পৃষ্ঠা 13। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ Cricket Archive – Schweppes County Championship 1980 Table
- ↑ "Moment of glory"। The Canberra Times। 55 (16,578)। ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮১। পৃষ্ঠা 22। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Test bowler injured"। The Canberra Times। 55 (16,588)। ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮১। পৃষ্ঠা 40। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Uphill for Australia"। The Canberra Times। 56 (16,906)। ১০ জানুয়ারি ১৯৮২। পৃষ্ঠা 13। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "CRICKET Another loss for Australia"। The Canberra Times। 56 (16,907)। ১১ জানুয়ারি ১৯৮২। পৃষ্ঠা 14। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ Cricket Archive – Bowling for Australia Benson and Hedges World Series Cup 1981/82
- ↑ "CRICKET Chappell pledges all-out attack."। The Canberra Times। ৩০ জানুয়ারি ১৯৮২। পৃষ্ঠা 42। সংগ্রহের তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "CRICKET Tourists likely to seek another fast man"। The Canberra Times। 56 (16,943)। ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২। পৃষ্ঠা 16। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Malone retires, after WA win"। The Canberra Times। 56 (16,962)। ৭ মার্চ ১৯৮২। পৃষ্ঠা 28। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৭ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে।
- ↑ Subilions Tales – An Unofficial Record of the Subiaco Football Club 1970–2008
- ↑ Mick Malone Real Estate – Homepage, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে মিক মলোন (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে মিক মলোন (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- Article at The Age which mentions his football career