মাহমুদুন্নবী
মাহমুদুন্নবী (জন্ম: ডিসেম্বর ১৬, ১৯৩৬; মৃত্যু: ডিসেম্বর ২০, ১৯৯০) একজন খ্যাতনামা বাংলাদেশী সঙ্গীত শিল্পী। তিনি 'আমি সাত সাগর পাড়ি দিয়ে কেন সৈকতে পড়ে আছি', 'আয়নাতে ঐ মুখ দেখবে যখন', 'সুরের ভুবনে আমি আজও পথচারী', 'ক্ষমা করে দিও যদি না তোমায় মনের মত গান শুনাতে পারি', 'গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে বল কি হবে?' ইত্যাদি জনপ্রিয় গানের গায়ক।
মাহমুদুন্নবী | |
---|---|
জন্ম | ডিসেম্বর ১৬, ১৯৩৬ |
মৃত্যু | ডিসেম্বর ২০, ১৯৯০ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | সঙ্গীতশিল্পী, কন্ঠশিল্পী |
দাম্পত্য সঙ্গী | রাশিদা চৌধুরী [১] |
সন্তান | সামিনা চৌধুরী, ফাহমিদা নবী, রিদওয়ান নবী পঞ্চম, তানজিদা নবী |
জন্ম ও পরিবার
সম্পাদনা১৯৩৬ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বর্তমান ভারতের বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমার কেতুগ্রাম নামক এক থানা সংযুক্ত গ্রামে মাহমুদুন্নবী'র জন্ম।[২]
মাহমুদুন্নবী'র চার সন্তান। তারা হলেন কণ্ঠশিল্পী সামিনা চৌধুরী, সঙ্গীতশিল্পী ফাহমিদা নবী, শিল্পী রিদওয়ান নবী পঞ্চম ও তানজিদা নবী।[৩]
সঙ্গীত জীবন
সম্পাদনামাহমুদুন্নবী ছিলেন সহজ-সরল, মিষ্টভাষী এবং গানপাগল অভিমানী এক মানুষ। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি কেবল গান-ই লালন করেছেন তার হৃদয়ে। তার উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে “তুমি যে আমার কবিতা, আমারও বাঁশি রাগিণী”, “তুমি কখন এসে দাড়িয়ে আছো আমার অজান্তে”, “ও গো মোর মধুমিতা”, “সালাম পৃথিবী তোমাকে সালাম দুনিয়া কে করেছো টাকার গোলাম”, “আমি সাত সাগর পাড়ি দিয়ে কেন সৈকতে পড়ে আছি” অন্যতম। মাহমুদুন্নবী বাংলাদেশের আধুনিক ও চলচ্চিত্রের গানে যে শুভ সূচনার উন্মেষ ঘটিয়েছিলেন সেই ধারাবাহিকতা আজ এই দেশের চলচ্চিত্রের গানে লক্ষ্য করা যায়না বললেই চলে।[৪]
- আমি সাত সাগর পাড়ি দিয়ে
(চলচ্চিত্র: আলো তুমি আলেয়া, সহশিল্পী: আবিদা সুলতানা, গীতিকার: গাজী মাজহারুল আনোয়ার, সুরকার: সুবল দাস) - গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে
(চলচ্চিত্র: স্বরলিপি, সহশিল্পী: রুনা লায়লা, গীতিকার: গাজী মাজহারুল আনোয়ার, সুরকার: সুবল দাস; এটা বাংলা চলচ্চিত্রে রুনা লায়লার গাওয়া প্রথম গান।[৬] ) - তুমি যে আমার কবিতা (চলচ্চিত্র: দর্পচূর্ণ, সহশিল্পী: সাবিনা ইয়াসমিন, গীতিকার: আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সুরকার: সুবল দাস)
- এক অন্তবিহীন স্বপ্ন ছিল (চলচ্চিত্র: স্বরলিপি)
- মনে তো পড়ে না কোন দিন
- আমি তো আজ ভুলে গেছি সবই
(চলচ্চিত্র: দি রেইন। এই গানটির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী হিসেবে ১৯৭৭ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন [৭] ছায়াছবিটির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন আনোয়ার পারভেজ। বাংলা ভাষার গীত রচনা করেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার) - সালাম পৃথিবী তোমাকে সালাম
- সুরের ভুবনে আমি আজো পথচারী (চলচ্চিত্র: হারজিৎ)
- বড় একা একা লাগে তুমি পাশে নেই বলে (চলচ্চিত্র: দীপ নিভে নাই)
- এই স্বপ্ন ঘেরা দিন রাখবো ধরে (চলচ্চিত্র: দর্পচূর্ণ)
- তুমি কখন এসে দাঁড়িয়ে আছো আমার অজান্তে (চলচ্চিত্র: আবির্ভাব)
- গীতিময় এইদিন সেইদিন চিরদিন রবে কি (চলচ্চিত্র: ছন্দ হারিয়ে গেল)
- ওগো মোর মধুমিতা (চলচ্চিত্র: মধুমিতা)
- আমি ছন্দহারা এক নদীর মত ছুটে যাই
- আয়নাতে ঐ মুখ দেখবে যখন (চলচ্চিত্র: নাচের পুতুল, গীতিকার: মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও কে জি মুস্তাফা)
- ও মেয়ের নাম দিব কি (চলচ্চিত্র: স্বরলিপি)
পুরস্কার ও সম্মননা
সম্পাদনা১৯৭৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রোমান্টিক চলচ্চিত্র দি রেইন-এ "আমি তো আজ ভুলে গেছি সবই" গানটির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী হিসেবে ১৯৭৭ সালে ২য় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন [৮]
মৃত্যু
সম্পাদনাশিল্পী মাহমুদুন্নবী তার চার সন্তান ও অগণিত ভক্ত-শ্রোতা রেখে ১৯৯০ সালের ২০ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।[৯]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "কণ্ঠশিল্পী সামিনা চৌধুরীর সাক্ষাৎকার"। বিবিসি বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১৩, ২০০৭।
- ↑ বাংলাদেশ প্রতিদিন অনলাইন (শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬)। "মাহমুদুন্নবী স্মরণে চার সন্তান"। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১২, ২০১৭। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ মোসাদ্দিক উজ্জ্বল (জানুয়ারি ২৯, ২০১২)। "মাহমুদুন্নবী এক কালজয়ী জাত শিল্পীর না পাওয়ার গল্প"। আমার ব্লগ ডটকম। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১২, ২০১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "বাংলা লিরিকস"। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১২, ২০১৭।
- ↑ "বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় ২০টি গান"। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭।
- ↑ উইকিপিডিয়া বাংলা। "২য় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (বাংলাদেশ)"। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১২, ২০১৭।
- ↑ উইকিপিডিয়া বাংলা। "২য় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (বাংলাদেশ)"। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১২, ২০১৭।
- ↑ "মাহমুদুন্নবী স্মরণে চার সন্তান"। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭।