মাহবুবুল আলম (সাংবাদিক)

বাংলাদেশি সাংবাদিক

মাহবুবুল আলম (৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬ — ৫ জুন ২০১৪) ছিলেন বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং দ্য ইনডিপেন্ডেন্টের সম্পাদক। তিনি বিশেষ খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন ১৯৬৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের এবং ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় ভারতীয় লোকসভার উত্তেজনাপূর্ণ বিতর্কের খবরাখবর পরিবেশন করে।[]

মাহবুবুল আলম
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা
কাজের মেয়াদ
৩১ অক্টোবর ২০০৬ – ১১ জানুয়ারি ২০০৭
দি ইন্ডিপেন্ডেন্টের সম্পাদক
কাজের মেয়াদ
সেপ্টেম্বর ১৯৮০ – ২০১৩
বাসসের প্রধান সম্পাদক
কাজের মেয়াদ
১৯৮৭ – ১৯৮৯
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯৩৬-০২-০৫)৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬
বাংলাবাজার, মুন্সীগঞ্জ, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু৫ জুন ২০১৪(2014-06-05) (বয়স ৭৮)
বারডেম
সমাধিস্থলআজিমপুর কবরস্থান
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
বাংলাদেশ
দাম্পত্য সঙ্গীসুলতানা বেগম
সন্তান৩ মেয়ে
প্রাক্তন শিক্ষার্থীঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পুরস্কারঅতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক

ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন, নিউইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটিইউনিভার্সিটি অব মিশিগানসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ বিষয়ে প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

প্রাথমিক জীবন

সম্পাদনা

মাহবুবুল আলম ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬ সালে মুন্সীগঞ্জের বাংলাবাজার ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়নের ফেলো হিসেবে ১৯৬৩ সালে জার্নালিজম অ্যান্ড কমনওয়েলথ রিলেশনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকেও তিনি একটি সংক্ষিপ্ত কোর্স করেন।

তার স্ত্রী সুলতানা বেগম ও তিন মেয়ে মহুয়া আলম, হিজল আলম ও পাপিয়া আলম যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।[]

কর্মজীবন

সম্পাদনা

মাহবুবুল আলম ১৯৫৩ সালে সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটস প্রেস অব পাকিস্তানের (এপিপি) মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন। সর্বশেষ তিনি দ্য ইনডিপেন্ডেন্টে ১৮ বছর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর ২০১৩ সালে তিনি অবসরে যান।[]

ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন, নিউইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটিইউনিভার্সিটি অব মিশিগানসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ বিষয়ে প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিব হিসেবে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন।[]

তিনি লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনে ১৯৭৬-১৯৭৮ সময়ে প্রেস কাউন্সিলর ছিলেন।[]

১৯৮৯-১৯৯২ সাল পর্যন্ত ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত পদমর্যাদায় প্রেস মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়া মাহবুবুল আলম একই দূতাবাসে ১৯৭৮-৮০ সময়ে প্রেস কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[]

এইচ এম এরশাদের শাসনামলে ১৯৮০-১৯৮৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ও এক্সটার্নাল পাবলিসিটি উইংয়ের মহাপরিচালক ছিলেন।[]

১৯৮০-১৯৮৩ সময়ে বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটের গভর্নিং বডি’র সদস্য ছিলেন।[]

তিনি ১৯৮৭-১৯৮৯ সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসের প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন।[]

১৯৮৩-১৯৮৬ সালে ভুটানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি।[]

তিনি ১৯৮৬-১৯৮৭ সাল পর্যন্ত তিনি ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ নেশন’র সম্পাদক ছিলেন।

১৯৯২-১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তিনি সাপ্তাহিক ডায়লগ’র  সম্পাদক ছিলেন।

তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সংবাদপত্র মালিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা ক্লাবঅফিসার্স ক্লাবের সদস্য ছিলেন।[]

মাহবুব ৩১ অক্টোবর ২০০৬ থেকে ১১ জানুয়ারি ২০০৭ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন।[]

সম্মাননা

সম্পাদনা

মৃত্যু

সম্পাদনা

মাহবুবুল আলম ৫ জুন ২০১৪ সালে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। আজিমপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।[][]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. সৈয়দ জিয়াউর রহমান (১৫ জুন ২০১৪)। "শ্রদ্ধাঞ্জলি: অনন্য সাংবাদিক মাহবুবুল আলম"দৈনিক প্রথম আলো। ৯ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০২৩ 
  2. "না ফেরার দেশে সাংবাদিক মাহবুবুল আলম"দৈনিক কালের কণ্ঠ। ৭ জুন ২০১৪। ৯ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০২৩ 
  3. "সাংবাদিক মাহবুবুল আলমের জীবনাবসান"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৯ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০২৩