আমীরচাঁদ বা মাস্টার আমীরচাঁদ (জন্ম:- ১৮৬৯ -মৃত্যু:- ৮ মে ১৯১৫) স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন মাস্টার আমীরচাঁদ। তিনি মহান বিপ্লবী লালা হরদয়াল-এর সংস্পর্শে আসেন এবং বিপ্লব মন্ত্রে দীক্ষিত হন। তারপর রাসবিহারী বসুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হন। তিনি গদর পার্টির কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং উত্তর ভারত জুড়ে বিপ্লবী রচনার সংমিশ্রণ করেছিলেন। আমির চাঁদ ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের উপর বোমা নিক্ষেপের ষড়যন্ত্রে ধরা পড়েছিলেন। মাস্টার আমির চাঁদ, ভাই বালমুকুন্দ , অবোধ বিহারী এবং বসন্ত বিশ্বাস ষড়যন্ত্রের মামলায় জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালের ৮ ই মে দেশপ্রেমীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।[১]

মাস্টার আমীরচাঁদ
জন্ম১৮৬৯
মৃত্যু৮ মে ১৯১৫
আন্দোলনভারতীয় বিপ্লবী

জন্ম ও শৈশব সম্পাদনা

আমীরচাঁদ জন্মগ্রহণ করেন ১৮৬৯ সালে দিল্লির একটি বৈশ্য পরিবারে। পড়াশোনার জন্য তিনি দিল্লির সেন্ট স্টিফেন কলেজে ভর্তি হন। তিনি দিল্লির সেন্ট স্টিফেন কলেজের ছাত্র ছিলেন। আমির চাঁদ পেশায় একজন শিক্ষক ছিলেন। দেশপ্রেমের প্রতি বিশ্বাস তাঁর মনে এতটাই দৃঢ় ছিল যে স্বদেশী আন্দোলনের সময় তিনি হায়দ্রাবাদের বাজারে একটি স্বদেশী স্টোর খোলেন, সেখানে তিনি দেশপ্রেমিক এবং বিপ্লবী সাহিত্যের ছবি বিক্রি করতেন। তিনি দিল্লিতে একটি দেশীয় প্রদর্শনীও করেছিলেন।

বিপ্লবী কর্মকাণ্ড সম্পাদনা

আমির চাঁদ, অবোধ বিহারী, ভাই বালমুকুন্দ এবং বসন্ত কুমার বিশ্বাস তাঁরা বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে সাথে ছিলেন। বাংলার বিপ্লবী দল ও দিল্লির একটি বিপ্লবী দল ২৩ শে ডিসেম্বর ১৯১২ সালে লর্ড হার্ডিঞ্জকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। ঠিক সেদিন তারা দিল্লির চাঁদনী চকে লর্ড হার্ডিঞ্জের ওপর বোমা নিক্ষেপ করেন। ভাইসরয় এতে বেঁচে গিয়েছিলেন, তবে তার দেহরক্ষীরা নিহত হয়েছিল।বোমাটি রাসবিহারী বোসের সহযোগী বসন্ত কুমার বিশ্বাস নিক্ষেপ করেছিলেন, তবে এর পরিকল্পনার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন মাস্টার আমির চাঁদ।

গ্রেপ্তার সম্পাদনা

রাসবিহারী বসু ব্রিটিশ পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে জাপানে চলে যান, কিন্তু পুলিশ একটি দীর্ঘায়িত অনুসন্ধানের পরে ৯ই ফেব্রুয়ারি ১৯১৪ সালে আমীরচাঁদকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। সে সময় তিনি দিল্লির রামজাস হাই স্কুলে বিনা বেতনে পড়াতেন।[২]

ফাঁসি সম্পাদনা

 মাস্টার আমির চাঁদ, ভাই বালমুকুন্দ , অবোধ বিহারী এবং বসন্ত কুমার বিশ্বাস ষড়যন্ত্রের মামলায় জড়িয়ে পড়ে। প্রথম তিনজনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল এবং বসন্ত বিশ্বাসের অল্প বয়স হওয়ার কারণে বসন্ত কুমারকে প্রথমে কালাপানী শাস্তি দিয়েছিলেন, তারপরে তার সাজাও আবেদনে পরিবর্তন করা হয়েছিল এবং ফাঁসির রায় রায় শোনানো হয়েছিল্। ৮ই মে ১৯১৫ সালে মাস্টার আমির চাঁদ সহ আরো দুজন বিপ্লবী ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. রায়, প্রকাশ। "বিস্মৃত বিপ্লবী"। বিপ্লবীদের জীবনী 
  2. রায়, প্রকাশ (২০২১)। ক্ষমা নেই দেশদ্রোহী প্রথম খণ্ডচেন্নাইআইএসবিএন=‎978-1-68494-815-4: নোশনপ্ৰেস চেন্নাই তামিলনাড়ু