মানসম্মত পানির উৎস

মানসম্মত পানির উৎস (অথবা মানসম্মত পানযোগ্য-পানির উৎস বা মানসম্মত পানি সরবরাহ) এমন একটি বিষয়, যেখানে নির্দিষ্ট প্রকার বা ধরনের পানি সরবরাহ প্রক্রিয়াকে পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। এটিকে এমন এক ধরনের পানির উৎস হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যেন, বৈশিষ্ট্যগত দিক দিয়ে এর গঠন বাইরের দূষণ থেকে সুরক্ষিত অথবা এমন কার্যক্ষম ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে যেন উৎসটি বাইরের দূষণ থেকে সুরক্ষিত থাকে, বিশেষ করে মনুষ্যবর্জ্য [১] এর দূষণ থেকে।

২০১৫ সালের এসডিজি ৬ সূচক ৬.১.১ অনুযায়ী বৈশ্বিক মানচিত্র: "সুরক্ষিত ব্যবস্থা অনুসারে পানযোগ্য-পানি ব্যবহারকারী জনসংখ্যার অনুপাত"।
কিগালির রাস্তায় চলমান পানি সরবরাহকারী ট্রাক

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) এর ৭ নং লক্ষ্যমাত্রার অগ্ৰগতি পর্যবেক্ষণে সহায়তার জন্য প্রথম বারের মত ২০০২ সালে ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর পানি সরবরাহ‌ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার লক্ষ্যে যৌথ পর্ববেক্ষণ কার্যক্রম(জেএমপি) এ এই বিষয়টি উত্থাপিত হয়। জেএমপি এর নির্ধারিত সংজ্ঞা অনুসারে "মানসম্মত পানির উৎস" এর বিপরীত হিসেবে "মানহীন পানির উৎস" নির্ধারন করা হয়।

একই বিষয়গুলো ২০১৫ সাল থেকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৬ (লক্ষ্য ৬, সূচক ৬.১.১) এর অগ্ৰগতি পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হয়।[২] এখানে উক্ত বিষয় গুলি "'সুরক্ষিত পরিচালনায় পানযোগ্য-পানির ব্যবস্থা" এর উপাদান হিসেবে বিবেচিত।

সংজ্ঞাসমূহ সম্পাদনা

এসডিজি সময়কাল (২০১৫ থেকে ২০৩০) সম্পাদনা

 
ভারতে অবস্থিত একটি পানি শোধনাগার

এসডিজি সূচক ৬.১.১ হল "সুরক্ষিত ব্যবস্থা অনুসারে পানযোগ্য-পানি ব্যবহারকারী জনসংখ্যার অনুপাত"। "সুরক্ষিত ব্যবস্থা অনুসারে পানযোগ্য-পানি" এটিকে সংজ্ঞায়িত করা হয় এভাবে যে: পানযোগ্য-পানি, যা একটি মানসম্মত উৎস থেকে সংগৃহীত এবং উৎসটি নিকটস্থ প্রাঙ্গনে অবস্থিত যাতে প্রয়োজন হলে পাওয়া যায় এবং এটি মনুষ্যবর্জ্য ও রাসায়নিক দূষণ থেকে সুরক্ষিত।[২]:

২০১৭ সালে জেএমপি নতুন একটি বিষয় " মৌলিক পানি পরিষেবা" এর অবতারণা করে। এটিকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এভাবে যে পানযোগ্য পানি যেটি মানসম্মত উৎস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে তার সংগ্ৰহকাল যেন ৩০‌ মিনিট রাউন্ড ট্রিপের বেশি না হয়। বর্তমানে একটি নিম্নস্তরের পরিষেবা যা "নিয়ন্ত্রিত পানি পরিষেবা" নামে পরিচিত, সেটি মৌলিক পরিষেবার সমতুল্য কিন্তু এটির ক্ষেত্রে সংগ্ৰহকাল ৩০ মিনিটের অধিক।[২] :

পরিষেবার স্তরগুলিকে (সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ) এভাবে সাজানো হয়: ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত পানি, অপরিশোধিত, সীমিত, প্রয়োজনীয়, সুরক্ষিতভাবে পরিচালিত।[২]:

এসডিজি সময়কাল (২০০০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত) সম্পাদনা

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা(এমডিজি) এর পর্যবেক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তুলনার আনুমানকে অনুমোদন দেয়ার লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা/ইউনিসেফ এর পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার দিকে যৌথ পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম (জেএমপি) "মানসম্মত" পানির উৎস হিসেবে নিম্নোক্ত উৎসগুলিকে তুলে ধরে:

যেসব পানির উৎস "মানসম্মত" হিসেবে বিবেচিত নয় সেগুলো হলো:

 
তৈজসপত্র এবং শাকসবজি ধৌতকরণ
  • অরক্ষিত অবস্থায় থাকা খননকৃত কূপ[৩]
  • অরক্ষিত অবস্থায় থাকা ঝরনা[৩]
  • পানি বিক্রেতা কর্তৃক সরবরাহকৃত পানি[৩]
  • ঠেলাগাড়িতে থাকা ছোট ট্যাঙ্ক/ড্রাম[৩]
  • বোতলজাতকৃত পানি, কিন্তু এক্ষেত্রে অপ্রধান উৎসটি পরিবারের রান্না ও ব্যাক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা জন্য মানসম্মত বিবেচনা করা হয় না।[৩]
  • পানির ট্যাঙ্ক বহনকারী ট্রাক[৩]
  • ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত পানি[৩]

আরো দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউনিসেফ কর্তৃক জেএমপি ওয়েবসাইটে মানসম্মত পানির উৎসের সংজ্ঞা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১২-০৬-০৬ তারিখে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জেনেভা এবং ইউনিসেফ, নিউ ইয়র্ক, প্রবেশ করায় জুন ১০, ২০১২এ।
  2. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউনিসেফ (২০১৭) পানযোগ্য-পানি, পয়ঃনিষ্কাশন এবং স্বাস্থ্যবিধির উন্নতি: ২০১৭ এর হালনাগাদ এবং এসডিজি বেসলাইন অনুযায়ী. জেনেভা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) এবং জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), ২০১৭।
  3. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউনিসেফ কর্তৃক জেএমপি ওয়েবসাইটে মানসম্মত পানির উৎসের প্রকারভেদ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৫-১০-০৩ তারিখে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জেনেভা এবং ইউনিসেফ, নিউ ইয়র্ক, প্রবেশ করায় জুন ১০, ২০১২এ।