মানব কঙ্কাল
মানবদেহের অভ্যন্তরের অস্থিগুলি পরস্পর সংযুক্ত হয়ে গঠিত যে কঠিন ও দৃঢ় কাঠামো দেহকে আকৃতি প্রদান করে এবং যার সাথে দেহের পেশী ও অন্যান্য নরম দেহকলাগুলি সংযুক্ত হয়ে থাকে, তাকে মানব কঙ্কাল বলে। একজন গড়পড়তা প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কঙ্কালে সাধারণত ২০৬টি অস্থি বা হাড় থাকে (ত্রিকাস্থি ও অনুত্রিকাস্থির একীভূত কশেরুকাগুলিকে স্বতন্ত্রভাবে গণনা না করে)।[১] অস্থিগুলি সন্ধিবন্ধনী ও পেশীবন্ধনীর (কণ্ডরা) মাধ্যমে অস্থিসন্ধি নামক অবস্থানগুলিতে একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকে। ২১ বছর বয়সে কঙ্কালের অস্থিগুলির ঘনত্ব সর্বোচ্চ হয়। মানব কঙ্কালকে দুইটি অংশে ভাগ করা যায় -- অক্ষীয় কঙ্কাল এবং প্রান্তিক কঙ্কাল। মাথার খুলি, বক্ষপিঞ্জর ও মেরুদণ্ড অক্ষীয় কঙ্কাল গঠন করে। অন্যদিকে উরশ্চক্র, শ্রোণিচক্র এবং বাহু ও পায়ের অস্থিগুলি প্রান্তিক কঙ্কাল গঠন করেছে। কঙ্কাল শক্ত হলেও ভারী নয়, এটির ওজন মানবদেহের মোট ওজনের মাত্র ২০%-এরও কম।[২]
মানব কঙ্কাল | |
---|---|
শনাক্তকারী | |
টিএ৯৮ | A02.0.00.000 |
টিএ২ | 352 |
শারীরস্থান পরিভাষা |

মানব কঙ্কাল ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। প্রথমত এটি দেহের অন্যান্য অঙ্গতন্ত্রগুলিকে অবলম্বন প্রদান করে। দ্বিতীয়ত এটি মানুষের চলাচলে অপরিহার্য ভূমিকা রাখে, কেননা এই চলনক্ষম কিন্তু দৃঢ় ও স্থিতিশীল কাঠামোর উপরে পেশীগুলি সহজে কাজ করতে পারে। এছাড়া মানব কঙ্কাল মানবদেহের অভ্যন্তরীণ অনেক অঙ্গকে সুরক্ষা প্রদান করে। চতুর্থত কঙ্কালতন্ত্রে বিভিন্ন রক্তকণিকাগুলি উৎপাদিত হয়। কঙ্কালের অস্থিগুলি মানুষের দেহের খনিজ (যেমন ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস) এবং স্নেহ পদার্থের ভাণ্ডার হিসেবে কাজ করে। এছাড়া অন্তঃক্ষরা তন্ত্রের নিয়ন্ত্রণেও কঙ্কালতন্ত্র ভূমিকা রাখে।