মানকুমারী বসু
মানকুমারী বসু (ইংরেজি: Mankumari Basu)( জন্ম- ২৫ জানুয়ারি, ১৮৬৩ - মৃত্যু - ২৬ ডিসেম্বর , ১৯৪৩) বাংলাদেশে সর্বজনবিদিত অন্যতম মহিলা কবি ও লেখিকা । [১]
মানকুমারী বসু | |
---|---|
জন্ম | ২৫ জানুয়ারি, ১৮৬৩ |
মৃত্যু | ২৬ ডিসেম্বর ১৯৪৩ (বয়স ৮০) |
পেশা | জনপ্রিয় ছোট-গল্পকার ও ঔপন্যাসিক |
দাম্পত্য সঙ্গী | বিধুশঙ্কর বসু |
সন্তান | প্রিয়বালা |
পিতা-মাতা | আনন্দমোহন দত্ত (পিতা) শান্তমণি দেবী (মাতা) |
পুরস্কার | কুন্তলীন পুরস্কার ভুবনমোহনী দাসী সুবর্ণপদক জগত্তারিণী সুবর্ণপদক |
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনামানকুমারী বসুর জন্ম অবিভক্ত বাংলার যশোহর জেলার কেশবপুর থানার সাগরদাঁড়িতে। পিতা আনন্দমোহন দত্ত ও মাতা শান্তমণি। আনন্দমোহন দত্ত ছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্তের পিতৃব্য রাধামোহন দত্তের পুত্র । সেই সম্পর্কে মধুকবি ছিলেন তার খুল্লতাত। ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে তার মাত্র দশ বৎসর বয়সে তৎকালীন সরকারের নামজাদা ডেপুটি ম্যাজিসেট্রট রাসবিহারী বসুর পুত্র মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র বিধুশঙ্কর বসুর সাথে বিবাহ হয়। কিন্তু ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে বিবাহের মাত্র নয় বছর পরে একমাত্র কন্যা সন্তান (প্রিয়বালা) নিয়ে মানকুমারী বিধবা হন। [২]
সাহিত্যসাধনা
সম্পাদনাস্বামীর মৃত্যুবেদনায় ব্যথিত মানকুমারী স্বামীর মনোবাঞ্ছা স্মরণযোগ্য করে রাখার জন্য সাহিত্য সাধনায় মনোনিবেশ করেন । তার প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ 'প্রিয়প্রসঙ্গ' ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় । মূলতঃ অন্তঃপুর শিক্ষার জন্য শিক্ষয়িত্রী, পল্লীগ্রামে স্ত্রীচিকিৎসক ও ধাত্রীর আবশ্যকতা বিষয়ে এবং সমাজের দুর্নীতি ও কুসংস্কার নিবারণের জন্য কলম ধরেন । এই সব বিষয়ে যে সমস্ত প্রবন্ধ রচনা করেন কয়েকটি পাঠক সমাজে বিশেষ আদৃত ও পুরস্কৃতও হয়। তিনি 'বামাবোধিনী' র লেখিকা শ্রেণীভুক্ত ছিলেন। কবিতা ছাড়াও গল্প প্রবন্ধ রচনাতেও তিনি সিদ্ধান্ত ছিলেন। তার সাহিত্য প্রতিভার জন্য আমৃত্যু ভারত সরকারের বৃত্তি পান। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ দুর্লভ সম্মান ও মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। তার রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল -
- 'প্রিয় প্রসঙ্গ' (১৮৮৪)
- 'বিভূতি' (১৯২৪)
- 'শুভ সাধনা'(১৯২৪)
- 'কাব্যকুসুমাঞ্জলি'(১৯৮৩)
- 'কনকাঞ্জলি'
- 'পুরাতন ছবি'(১৯৩৬)
- 'বাঙালি রমণীদের গৃহকর্ম(১৮৯০)
- 'বিবাহিতা স্ত্রীলোকের' কর্তব্য(১৮৯০)
- 'বীরকুমারবধ কাব্য'(১৯০৪)
- 'বনবাসিনী' (১৮৮৮)
- 'সোনার শাঁখা'(১৯২৬)
সম্মাননা
সম্পাদনামানকুমারী বসু 'রাজলক্ষ্মী', 'অদৃষ্টচক্র', এবং 'শোভা' গল্পের জন্য হেমেন্দ্রমোহন বসু প্রবর্তিত 'কুন্তলীন পুরস্কার ' লাভ করেন । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে 'ভুবনমোহনী দাসী স্বর্ণপদক' এবং ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে 'জগত্তারিণী সুবর্ণপদক' দানে সম্মানিত করে। মানকুমারী বসু ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে চন্দননগরে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মেলনের'কাব্যসাহিত্য' শাখার সভানেত্রী হয়েছিলেন।[৩]
মৃত্যু
সম্পাদনাবাংলা সাহিত্যের সুলেখিকা মানকুমারী বসু আশি বৎসর বয়সে ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে ২৬ শে ডিসেম্বর কন্যা প্রিয়বালার বাংলাদেশের খুলনায় অবস্থিত বাড়ীতে প্রয়াত হন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ৫৬৬, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
- ↑ "কুন্তলীন পুরস্কার প্রাপ্ত লেখিকা মানকুমারী বসু"। dailysangram.com। ১ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০২০। অজানা প্যারামিটার
|সংগ্রহের তারিখ=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ সংসদ
- বাঙ্গলা সাহিত্যের কথা - শ্রী সুকুমার সেন - সপ্তম সংস্করণ
আরও দেখুন
সম্পাদনা- বাংলাপিডিয়ায় - ইংরেজি ভার্সন