মাদাম কামা

ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের কর্মী (১৮৬১ - ১৯৩৬)

মাদাম কামা (২৪ সেপ্টেম্বর, ১৮৬১ - ১৩ আগস্ট, ১৯৩৬) বা ভিকাজী রুস্তম কামা ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তাকে ভারতীয় বিপ্লববাদের জননী বলা হয়।

মাদাম ভিকাজী কামা
জন্ম(১৮৬১-০৯-২৪)২৪ সেপ্টেম্বর ১৮৬১
মৃত্যু১৩ আগস্ট ১৯৩৬(1936-08-13) (বয়স ৭৪)
মুম্বই
প্রতিষ্ঠানইন্ডিয়া হাউস,
প্যারিস ইন্ডিয়ান সোসাইটি,
ভারতের জাতীয় কংগ্রেস
আন্দোলনভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

মাদাম কামা ১৮৬১ সালে ব্রিটিশ ভারত বোম্বাইতে একটি পারসি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, তার পিতার নাম ছিল ভিখাই সোরাব প্যাটেল। তিনি আলেকজান্দ্রা নেটিভ গার্লস ইনস্টিটিউশনে পড়াশোনা করেন। ১৮৮৫ সালে ভিখাজি কামা রুস্তম কামাকে বিবাহ করেছিলেন। তার স্বামী পেশায় আইনজীবী ও ইংরেজপন্থী ছিলেন। ভিখাজি রুস্তম কামা সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কাজে বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকতেন।

বিপ্লবী কর্মকাণ্ড সম্পাদনা

১৮৯৬ সালে বোম্বাই এলাকায় দুর্ভিক্ষ ও প্লেগ আক্রান্ত হলে কামা মেডিকেল কলেজের সেবামূলক কাজে যোগ দেন ও নিজেও প্লেগে আক্রান্ত হন। স্বাস্থ্যোদ্ধারের জন্যে লন্ডন যান তিনি। ১৯০৮ সালে বিপ্লবী শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মাদাদাভাই নৌরোজি >র সাথে তার আলাপ হয়। তিনি নৌরোজির ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন। কামা হোমরুল আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। ব্রিটিশ সরকার তার এই কার্যকলাপ ভাল চোখে দেখেনি। দেশে ফেরার জন্য তাকে মুচলেকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় এই শর্তে যে তিনি ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন এর সাথে নিজেকে সংযুক্ত রাখবেননা, কামা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। প্যারিসে গিয়ে তিনি প্যারিস ইন্ডিয়া সোসাইটি তৈরি করেন বিদেশে বসবাসস্থিত জাতীয়তাবাদী ব্যক্তিদের সাথে। ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দের ২২ আগস্ট তিনি জার্মানির স্টুটগার্ট শহরে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সমাজবাদী সম্মেলনে করেন। সেই সম্মেলনে ভারতের তিন রঙা পতাকার নিচে দাঁড়িয়ে ভারতে ব্রিটিশ শাসন ও শোষণের তীব্র সমালোচনা করেন মাদাম কামা। বিপ্লবীদের দমন পীড়ন নির্যাতন চালিয়ে বিপ্লবী কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য বিলাতে ভারত সচিবের একান্ত সচিব স্যার কার্জন উইলি সক্রিয় ছিলেন। ফলে শ্যামজি কৃশণবর্মার ঘনিষ্ট সহযোগী মদন লাল ধিংড়া কার্জন উইলিকে হত্যা করে বিপ্লবীদের ওপর নির্যাতনের প্রতিশোধ নেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে লন্ডনে কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিনায়ক দামোদর সাভারকরকে গ্রেপ্তার করে বিচারের জন্য ভারতে পাঠানো হয়। পথিমধ্যে সাভারকর পালাবার চেষ্টা করেন ফ্রান্স উপকূলে। এসময় মাদাম কামার সাহায্য পাওয়ার সুযোগ তিমি পাননি। তাকে ধরে ব্রিটিশ পুলিশ। কামাকেও ফেরত পাঠানোর দাবী তোলে ইংল্যান্ড কিন্তু ফ্রান্স সরকার তা গ্রহণ না করায় শ্রীমতি কামার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। সোভিয়েত রাশিয়া থেকে রুশ বিপ্লবের নেতা লেনিন শ্রীমতি কামাকে আমন্ত্রন জানান তার দেশে আশ্রয় নেওয়ার জন্যে যদিও কামা সেখানে যেতে পারেননি।

মৃত্যু সম্পাদনা

১৩ই আগস্ট ; ১৯৩৬

তথ্যসূত্র সম্পাদনা