মাঘনোয়া দ’ল নারায়ণপুর-এর ফুলবাড়ি গাওঁতে অবস্থিত, একে ফুলবাড়ি দ’ল নামেও জানা যায়। পিচলা নদীর পূর্বে মাঘনোয়া বিলের পারে দ'লটি অবস্থিত। একসময় এটি শক্তির অধিষ্ঠাত্রী দেবী কালীর মুখ্য পূজন স্থল ছিল। আহোম রাজত্বে কয়েকজন স্বর্গদেবের এই স্থান দর্শন করার প্রমাণ পাওয়া য়ায়। মানের আক্রমণের সময় দোল এবং পূজারীরা এখান থেকে যাওয়ার সময় দ'লের মুখ্য প্রতিমা (বিগ্রহ) লুকিয়ে রাখা হয়েছিল কিন্তু এটি দ’লে পুনরায় ফিরে আসেনি। পরে কলাবাড়ি ঘর তৈরি করে প্রতিমাটি স্থাপন করা হয়। এটিই হল বর্তমানের বরকালিকা থান[১]

মাঘনোয়া দ’ল
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলা লক্ষীমপুর
অবস্থান
অবস্থাননারায়ণপুর-এর ফুলবাড়ি
রাজ্যআসাম
দেশভারত
স্থাপত্য
ধরনআহোম যুগীয়া
সৃষ্টিকারীকোনো আহোম স্বর্গদেউ

দ'লের বিবরণ সম্পাদনা

মাঘনোয়া দ’লটির চারিদিকে প্রায় ৫ ফুট উঁচু ইটের বেড়া। দ'লে মিশে থাকা বুলনি ঘরের পারে প্রায় ১২৫ হাত দূরে ইটের বেড়ায় মিশে থাকা বাট চোরাসহ মন্দির প্রাঙ্গণে ঢুকতে একটি মাত্র দুয়ার আছে। ইটের গড়ের চারিদিকে একটি মাটির গড়। মাটির গড়ের মধ্যের আয়তন প্রায় ৩৩/১৫ লোচা। গড়ের দক্ষিণ পূর্ব চুকটি মাঘনোয়া বিলে মিশেছে। মাঘনোয়া বিলের আয়তন ৮৯/১৮ লোচা। দ’লটি আটকোণা এবং সম্মুখের গায়ে মিশে আছে বুলনি ঘর। দ’লটি মাটির তলায় কতটা মিশে গিয়েছে বলা শক্ত। বর্তমানে এটি ৩০ হাত সমান উঁচু। আটকোণা দ’লটির প্রত্যেক বাহুর বাইরের দিকের দৈর্ঘ্য ৯ হাত। দ’লটির বেড়ার সাতহাত উঁচুতে একটি কার্নিস আছে। কার্নিসের নিচ থেকে মাটিতে লাগা বেড়ার অংশের মধ্য ভাগ মৃদংগের মতো ফোলা। দ’লটির কার্নিসের নিচে প্রত্যেক বেড়ায় সারিতে পাঁচটি করে দুসারি মূর্তি লাগানো ছিল। বর্তমানে সেসব মূর্তি নাই এবং দ’লটির কলসিও নেই। দ'লের বেড়াগুলি সাতফুট মত উঁচু। বুলনি ঘর দৈর্ঘ্যে বার হাত, প্রস্থ নয় হাত এবং উঁচু প্রায় আট হাত। এর বেড়া প্রায় তিন ফুট উঁচু। দুইদিকের বেড়ায় চারটিকরে চাকি রাখা থাকে। বেড়ায় লাগানো তিনটি ভাঙা এবং আটটি ভাল মূর্তি এখানে তৈরি রাখা আছে।[২]

বুরঞ্জী সম্পাদনা

এই দ’লটি কে নির্মাণ করেছিলেন তার সংবাদ পাওয়া যায় না। ঘর এবং ইটের ঠাট দেখে এই দ’ল আহোম রাজারা নির্মাণ করেছিলেন বলা যায়। আনন্দ চন্দ্র আগরওয়ালা "কামরূপ তীর্থর বিবরণ" প্রবন্ধ (আবাহন ৫ম বছর) তে মাঘনোয়া দ'লের পারে বিভাণ্ডক মুনির আশ্রম আছে বলে লিখেছেন।

ওবেদ চাবর বুরঞ্জীর মতে স্বর্গদেউ রাজেশ্বর সিংহ(১৭৫১-১৭৬৯)ই পিচলা নদীতে স্নান করে ফুলবাড়ি দেবালয়ে গোঁসানী সেবা করে ৪,০০০ তিরোতা এবং ছেলে মেয়েকে কাপড়, টাকা এবং সোনা দান করেন।

বর্তমান সম্পাদনা

সরকার এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের অবহেলার জন্য দ’লটির প্রায়গুলি সামগ্রীর নষ্ট সাধন হয়েছে। এখনও প্রতিবছর পূজার জন্য অনেক ভক্তর এখানে আগমন ঘটে। কমবেশি পরিমাণে পর্যটকও দেখতে পাওয়া যায়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. শিব শর্মার "বার বৈষ্ণবর স্থান নারায়ণপুর এবং মহাপুরুষ শ্রীশ্রীমাধবদেব সমন্বিতে এর সন্তসকল
  2. মহেশ্বর নেওগ- "পবিত্র আসাম"

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

টেমপ্লেট:আসামে হিন্দু মন্দির