মহেশ

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি ছোটগল্প

মহেশ বাঙালি ঔপন্যাসিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি ছোটগল্প।[১][২]

মহেশ
লেখকশরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ভাষাবাংলা
ধরনছোটগল্প

রচনার প্রেক্ষাপট সম্পাদনা

তৎকালীন নদিয়া জেলায় (বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা জেলা) কাশীপুর জমিদার বাড়ি নামে একটি জমিদার বাড়ি ছিল। এই বাড়িটিতে বিনয় কুমার চট্টোপাধ্যায় ও মিনায় কুমার চট্টোপাধ্যায় নামে দুইজন জমিদার থাকতেন। এই অঞ্চলে তাদের জমিদারি ছিল। তারা সম্পর্কে শরৎচন্দ্রের মামা হতেন। সেজন্য এখানে শরৎচন্দ্রের আসা-যাওয়া ছিল। শরৎচন্দ্রের মামারা খুবই অত্যাচারী ছিলেন। শরৎচন্দ্র যখন এই বিষয়টি জানতে পারেন তখন তিনি খুবই মর্মাহত হন এবং এই জমিদার বাড়িটিতে বসেই তিনি মহেশ নামক গল্পটি রচনা করেন।[৩][৪]

কাহিনি সংক্ষেপ সম্পাদনা

কাশীপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক গফুর। তার মেয়ে আমিনার সাথে সে কোনরকমে একটি জীর্ণ ঘরে দিন গুজরান করে। তার পরিবারের সদস্য বলতে তারা দুই জন আর মহেশ।[৫] সে যে গ্রামে থাকে, সে গ্রামের জমিদার শিববাবু ও তার পণ্ডিত তর্করত্ন তাকে গরুর প্রতি অবহেলার দায়ে অভিযুক্ত করে। তারা গো শব্দের শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা করে গফুরকে বোঝালেও নিজেরা গরুকে খাওয়ার জন্য খড় দিতে অস্বীকার করে। টাকার লোভে গ্রামে গরু চরে বেড়ানোর একমাত্র মাঠ বিক্রি করে দেয়। গল্পের শেষে একটি ঘটনায় মেজাজ হারিয়ে গফুর তার মহেশকে লাঙলের ফলা দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলে, যে মহেশকে সে তার 'ছেলে' বলে অভিহিত করেছিল। এরপর সে গ্রামে থাকা সবকিছু ফেলে ফুলবেড়ের চটকলে কাজ করতে চলে যায়। সে যাবার পথে উপরওয়ালার কাছে যারা মহেশের খাবার ঘাস কেড়ে নিয়েছে, খাবার পানি কেড়ে নিয়েছে, তাদের কসুর মাফ না করার ফরিয়াদ জানায়।

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে সম্পাদনা

২০১৫ সালে বাংলাদেশে গল্পটি অবলম্বনে একটি টেলিভিশন নাটক নির্মিত হয়। নাটকটিতে গফুর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রাজ্জাক এবং আমেনা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন স্নেহা।[৬]

জনপ্রিয় বাংলা অডিওস্টোরির ইউটিউব চ্যানেল গপ্পো মীরের ঠেকে ২ ডিসেম্বর ২০২৩ এই গল্পটি পাঠ করা হয়, যেখানে মহেশের কণ্ঠস্বর দেন সুদীপ মুখার্জি ও আমিনার চরিত্রে কণ্ঠস্বর প্রদান করেন গোধূলি শর্মা।

এছাড়াও স্কুল ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন ক্লাসের পাঠক্রমে এই গল্পটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Bengali's daily life is covered with Sharat Chandra Chattopadhyay – News18 Bangla"web.archive.org। ২০২১-১২-০৫। Archived from the original on ২০২১-১২-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-০২ 
  2. Front, News (২০১৭-০৯-১৬)। "শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়:নিপীড়িত মানুষের মুখপাত্র"News Front (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-৩০ 
  3. রুমঃ, নিউজ (২০২১-১২-০২)। "সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের পথে কাশিপুর জমিদার বাড়ি | Daily Somoyer Somikoron" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-২৯ 
  4. "অবহেলায় পড়ে আছে কাশিপুরের জমিদার বাড়ি"জাগো নিউজ২৪। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০২৩ 
  5. প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০২০-০৮-০৭)। "'মহেশ' শান্ত হয়েছিল আঘাতে, 'শান্ত বাবু' সর্বস্বান্ত করবে একালের গফুরকে?"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২১ 
  6. https://www.bdnews24.com/bn/detail/glitz/906999[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]