মহাকাশ যাত্রার ইতিহাস

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
(মহাশূন্যে যাত্রার ইতিহাস থেকে পুনর্নির্দেশিত)

বিংশ শতাব্দীতে কন্‌স্তান্তিন ৎসিওলকোভ্‌স্কি এবং রবার্ট এইচ গডার্ডের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক পর্যায়ে অতুলনীয় অবদানের মাধ্যমে মহাকাশ যাত্রার ইতিহাস শুরু হয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন সর্বপ্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে এবং সর্বপ্রথম পুরুষ ও নারীকে মহাকাশে পাঠায়। ফলে রাষ্ট্রটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীতে মহাকাশ প্রতিযোগিতায় এগিয়ে ছিল। কিন্তু ১৯৬০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদ্বন্দ্বী সোভিয়েত ইউনিয়নের সমতুল্য ও পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালে চাঁদে প্রথম মানুষ পাঠিয়ে এই প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়। একই সময়ে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জাপান ও চীন সীমিত উৎক্ষেপণ ক্ষমতা অর্জন করছিল।

আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সাপাচেওাল্কের সংখ্যা তৎকালীন অভিজ্ঞতার তুলনায় অনেক বেশি ছিল, এই বাধা "ওয়াল অফ ইভিএ" নামে পরিচিত। [১]
কক্ষপথে মানুষের মহাকাশ যাত্রা
কর্মসূচি বছর যাত্রার সংখ্যা
Vostok ১৯৬১-১৯৬৩
Mercury ১৯৬২-১৯৬৩ [ক]
Voskhod ১৯৬৪-১৯৬৫
Gemini ১৯৬৫-১৯৬৬ ১০
Soyuz ১৯৬৭-বর্তমান ১৩৭[খ]
Apollo ১৯৬৮-১৯৭২ ১১[গ]
Skylab ১৯৭৩-১৯৭৪
Apollo-Soyuz ১৯৭৫ [ঘ]
Space Shuttle ১৯৮১-২০১১ ১৩৫[ঙ]
Shenzhou ২০০৩-বর্তমান
Suborbital human spaceflight
কর্মসূচি বছর মহাকাশ যাত্রা
Mercury ১৯৬১
X-15 ১৯৬৩
Soyuz 18a ১৯৭৫
SpaceShipOne ২০০৪

মহাকাশ প্রতিযোগিতার পরে মহাকাশ যাত্রার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, স্বল্পমূল্যে পৃথিবীর অক্ষ অধিগমন, এবং আন্তর্জাতিক উদ্যোগের বিস্তৃতি। আন্তঃগ্র্রহ সন্ধানীগুলি সৌরজগতের সবগুলি গ্রহ পরিদর্শন করেছে এবং মানবজাতি মির এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ইত্যাদি মহাকাশ কেন্দ্রের সাহায্যে দীর্ঘক্ষণ নিম্ন ভূ-কক্ষপথে অবস্থান করছে। অন্যদিকে মহাকাশে কার্যরত বাণিজ্যিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলি পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট বুস্টার এবং বায়ুনির্ভর যন্ত্র উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।

পটভূমি সম্পাদনা

 
Description of a space station in Hermann Noordung's The Problem of Space Travel (1929).

বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে আন্তঃগ্রহ যাত্রা সম্পর্কিত বিপুল পরিমাণে বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনা করা হয়। এটি মূলত জুল ভার্নহারবার্ট জর্জ ওয়েলস এর মত লেখকের রচিত কল্পকাহিনি থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলো।

মহাকাশে যাত্রার জন্য সর্বপ্রথম বাস্তবিক প্রস্তাব করেন ১৯০৩ সালে কন্‌স্তান্তিন ৎসিওলকোভ্‌স্কি তার রচিত "Исследование мировых пространств реактивными приборами" ধারণাটির মাধ্যমে। কিন্তু এই তত্ত্বীয় ধারণাটি রাশিয়ার বাইরে তেমন প্রভাবশালী ছিল না।

মহাকাশে ভ্রমণ প্রকৌশলগত দৃষ্টিকোণে সম্ভাবনাময় হয়ে ওঠে রবার্ট এইচ গডার্ডের ১৯১৯ সনে গবেষণা "A Method of Reaching Extreme Altitudes"(অতীব উচ্চতায় পৌঁছানর একটি উপায়) দ্বারা তিনি উপস্থাপন করেন যে "দে লাভাল নযেল"(দে লিসা সয্য্বেল) এর মাধ্যমে তরল জালানি নির্ভর রকেটে পর্যাপ্ত শক্তি প্রদান করলে আন্তঃগ্রহ যাত্রা সম্ভব। এই গবেষণাটি পরবর্তীতে নামকরা গবেষকগণ হের্মান ওবের্ট এবং ভের্নার ফন ব্রাউনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।

১৯২৯ সালে স্লোভনেস অফিসার হারমান পোটোনিক এর রচিত "মহাকাশ ভ্রমণের সমস্যা (The Problem of Space Travel) বইটিতে সর্বপ্রথম স্পেস স্টেশনের ধারণা দেওয়া হয়।

১৯৪৪ সালের জুন মাসে ভি-২ রকেট উলম্ব উড্ডায়ন পরিক্ষায় প্রথমবার সফলভাবে মহাকাশে পৌছায়। যুদ্ধের পরে (ব্রিটিশ)অধ্যাদেশ অফিসের গবেষণা ও উন্নয়ন শাখা অপারেশন ব্যাকফায়ার পরিচালনা করেন।

১৯৪৫ সালে অক্টোবর পর্যাপ্ত ভি ২ মিসাইল এবং সংশিষ্ট উপকরণ একত্রিত করার ফলে তারা সেগুলো উত্তর জার্মানির চাক্এক্সাহাভেন এর নিকটবর্তী স্থানে তিনটি(মতান্তরে ৪টি) উৎক্ষেপণ করতে পেরেছিল। যদিও এই উৎক্ষেপণ গুলো সীমিত ছিল এবং যুক্তিগতভাবে উপ-অক্ষে পৌঁছাতে পারেনি, বাকফায়ার রকেটের উপরে বিস্তীর্ণ যান্ত্রিক প্রতিবেদন ইতিহাসে অন্যতম, যেখানে সকল সহায়ক প্রক্রিয়া, নিয়োজিত যানবাহন ও জ্বালানির গঠন অন্তর্ভুক্ত।

পরবর্তীকালে, ব্রিটিশ ইন্টারপ্ল্যানেটরি সোসাইটি মেগারক নামক মানব ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ভি ২ এর একটি বড় আকৃতির সংস্করণের প্রস্তাব দেন। ১৯৪৬ সালে রচিত এই পরিকল্পনাটি ৩ বছরের উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ১৯৪৯ সালে টেষ্ট পাইলট এরিক ব্রাউনকে উপ- অক্ষীয় অভিযানে উৎক্ষেপণ করা হয়।

মহাকাশ প্রতিযোগিতা সম্পাদনা

মেগারক প্রস্তাবনার প্রায় এক শতাব্দী পরে, স্নায়ু যুদ্ধ চলাকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র মনুষ্যবাহী এবং মনুষ্যবিহীন উভয় পর্যায়ই প্রকৃত কাক্ষিক মহাকাশ যাত্রা উন্নয়ন করা হয়। এই প্রতিযোগিতাটি স্পেস রেস নামকরণ করা হয়েছিল।

মনুষ্যবিহীন মহাকাশযানের সূচনা সম্পাদনা

 
প্রদর্শনে স্পুৎনিক ১ -এর অনুলিপি।

প্রতিযোগিতাটি সুরু হয় ১৯৫৭ সালে, যখন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউএসএসআর উভয়ই ১৮ মার্চ দীর্ঘ আন্তর্জাতিক গ্রফিজাইক্যাল বছর(জুলাই ১৯৫৭ - ডিসেম্বর ১৯৫৮) উপলক্ষে মহাকাশ কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর ঘোষণা দেন। ১৯৫৭ সালের ২৯শে জুলাই যুক্তরাষ্ট্র ১৯৫৮ সালের বসন্তের আগেই ভ্যানগার্ডের পরিকল্পিত উৎক্ষেপণের ঘোষণা দেয় এবং ৩১শে জুলাই ইউএসএসআর ঘোষণা দেয় যে তারা ১৯৫৭ সালের বসন্তে একটি মাহাকাশযান উৎক্ষেপণ করবে।

১৯৫৭ সালের অক্টোবর মাসের ৪ তারিখে সোভিয়েত ইউনিয়ন মানবজাতির সর্বপ্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে।

একই সালে নভেম্বরের ৩ তারিখে সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বিতীয় কৃত্রিম উপগ্রহ স্পুৎনিক ২ উৎক্ষেপণ করেন। এটির সাহায্যে লাইকা নামক কুকুরকে মহাকাশে সর্বপ্রথম জীবন্ত প্রাণী হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। ১৯৫৮ সালের ১৫ ই মে স্পুৎনিক ৩ উৎক্ষেপিত হয়। এটি ভুগা ঠনিক গবেষণার জন্য উপকরণের বিশাল সমাহার বহন করে এবং বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরের চাপ ও গঠন, আধনযুক্ত কণার পরিমাণ, মহাজাগতিক তরঙ্গের ফোটন ও ভারী কেন্দ্রীকা, চৌম্বক ও স্থির তড়িৎ ক্ষেত্র এবং ধূমকেতুর কণা সম্পর্কিত তথ্য প্রদান করেছিল।

কিছু ব্যর্থতার পরে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৫৮ সালের ১লা ফব্রুয়ারি তাদের প্রথম কৃত্রিম গ্রহ এক্সপ্লোরার ১ সফলভাবে উৎক্ষেপণ করে। এটি বৈজ্ঞানিক উপকরণ বহন করেছিল এবং পরিকল্পিত ভ্যান অ্যালেন রেডিয়েশন বেল্ট সনাক্ত করেছিল।

স্পুৎনিক ১ সম্পর্কিত সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের আতঙ্ক স্পুৎনিক ক্রাইসিস নামে পরিচিত।

১৯৫৯ সালে, নাসা এক ব্যক্তি বিশেষের জন্য ক্যাপসুল পাঠাতে প্রজেক্ট মার্কারি এর সূচনা করে এবং সাতটি মহাকাশচারীর একটি সৈন্যদল নির্বাচন করে। এটি মার্কারি সেভেন নামে পরিচিত।

মহাকাশে প্রথম মানব সম্পাদনা

১৯৬১ সালে প্রথম কসমনট(মহাকাশচারীর রাশিয়ান শব্দ) ইউরি গাগারিনকে মহাকাশে পাঠানোর মধ্য দিয়ে মনুষ্যবাহী মহাকাশ যাত্রার সূচনা হয়। এটি সোভিয়েত ভস্টক কর্মসূচির অংশ ছিল। গাগারিনের মহাকাশ যাত্রাটি ১০৮ মিনিট দীর্ঘ ছিল এবং পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করেছিল।

১৯৬১ সালে ৫ ই মে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের প্রথম উপ- অক্ষীয় মার্কারি মহাকাশচারী আলান শেফার্ডকে ফ্রিডম ৬ ক্যাপসুলের মাধ্যমে মহাকাশে পাঠানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ মহাকাশে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিস্তার ও প্রধান ভূমিকায় ক্রমবর্ধমান রূপে আতঙ্কিত ও সচেতন হয়েছিল। এজন্য ২৫ শে মে রাষ্ট্রপতি জন এফ. কেনেডি ১৯৭০ সালের আগে মানুষকে ছাদে পাঠানোর ঘোষণা দেন। এতে তিনজন ব্যক্তি সম্পন্ন অ্যাপোলো কর্মসূচি-র সূচনা হয়।

১৯৬২ সালে ফেব্রুয়ারি ২০, তারিখ যুক্তরাষ্ট্র সফলভাবে ইতিহাসের তৃতীয় মনুষ্যবাহী অক্ষীয় মহাকাশ যাত্রা ফ্রেডশিপ-৭ অভিযানে পৃথিবীকে তিনবার প্রদক্ষিণ করে। ১৯৬৩ সালের ১৬ ই মে পর্যন্ত, যুক্তরাষ্ট্র মোট ছয়টি প্রজেক্ট মার্কারি মহাকাশচারী উক্ষেপণ করে; একত্রিত অবস্থায় ৩৪ বার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে এবং মহাকাশে ৫১ ঘণ্টা অতিক্রম করে।

মহাকাশে প্রথম নারী সম্পাদনা

মহাকাশের প্রথম নারী ভ্যালেন্টিনা তেরেস্কোভা ছিলেন। তিনি সোভিয়েত অভিযান ভস্টক ৬ এর মাধ্যমে ১৯৬৩ সালের ১৬ ই জুন অক্ষে পৌঁছান। সোভিয়েত মহাকাশযানের প্রধান নকশা প্রণয়নকারি সার্জেয় করয়লভ একটি নারী মহাকাশচারী নিযুক্ত করার এবং ভস্টক ৫/৬ এ একই সময়ে নারীকে উৎক্ষেপণের ধারণা দেন। যদিও, তার পরিকল্পনার পরিবর্তন করে ভস্টক ৫ এ একজন পুরুষ এবং পরবর্তীতে তেরেস্কভাকে পাঠানো হয়। তেরিকোভার মহাকাশ যাত্রার সময় রাষ্ট্রপতি ক্রুশ্চেভ ব্যক্তিগতভাবে তার সাথে কথা বলেন।

১৯৬৩ সালের নভে্বরের ৩ তারিখে তেরেস্কিভা একজন মহাকাশচারী আন্ড্রিয়ান নিকোলায়েভকে বিবাহ করেন; যিনি ভস্টক ৩ এর মাধ্যমে যাত্রা করছেন। ১৯৬৪ সালের ৮ই জুন, তিনি দুই মহাকাশচারী দ্বারা ধারণকৃত সর্বপ্রথম সন্তানের জন্মদান করেন। ১৯৮২ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে এবং পরবর্তীতে তেরেস্কোভা সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাবশালী সদস্য হন।

বিমানচালক সয়েভতলানা স্যাভিটিস্কেয়া দ্বিতীয় নারী মহাকাশচারী ছিলেন। তিনি ১৯৮২ সালের ১৮ ই আগস্ট সয়োজ টি -৭ যানে যাত্রা করেছিলেন।

১৯৮৩ সালের ১৮ই জুনে স্পেস শাটল এসটিএস-৭ যাত্রা করে স্যালি রাইড যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম মহাকাশচারী হন। ১৯৮০-এর দশকে নারী মহাকাশচারী একটি সাধারণ বিষয় হয়ে অঠে।

প্রতিযোগিতার অগ্রগতি সম্পাদনা

জেমিনি এবং অ্যাপোলো পরিকল্পনা ঘোষিত হলে ক্রুশচেভ আরও মহাকাশের আরও বৃহতাংশ অর্জনের জন্য করলিয়ভ-এর উপর চাপ প্রয়োগ করেন। তাকে মানবীয় সয়োজ মহাকাশযান তৈরি করতে দেওয়ার পরিবর্তে ভস্টক ক্যাপ্সুলের পরিবর্তন করিয়ে জোরপূর্বক দুই বা তিনজন মানুষ ধারনের উপযোগী ভস্টক তৈরি করানো হয়েছিল;পরিবর্তিত ভস্টকের নামকরণ করা হয় Voskhod(ভস্খড)। ভস্খডের কেবলমাত্র দুইটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। ভস্খড ১ তিনজন যাত্রীবাহী প্রথম মহাকাশযান ছিল, যার আকার ও ওজনের সীমাবদ্ধতার জন্য যাত্রীরা স্পেস স্যুট(মহাকাশযাত্রায় ব্যাবহারের উপযোগী বিশেষ ধরনের পোশাক) পরতে পারেনি। ১৯৬৫ সালের ৮ই মার্চ ভস্খড ২ থেকে বের হয়ে আলেক্সি লেওনভ সর্বপ্রথম মহাকাশে পদাচারন করেন। জেমিনি অভিযানের প্রারম্ভ নাসার পরিকল্পনার ১ বছর পরে হয়েছিল। কিন্তু ১৯৬৫-১৯৬৬ সালে বিস্তারভাবে সফল দশটি উৎক্ষেপণ করা হয়।

সোভিয়েত ইউনিয়ন সমসাময়িক কালে কোনও ""মনুষ্যবাহী"" মহাকাশ যাত্রা করেনি বরং কেনেডির ঘোষিত অভ্যন্তরীণ চন্দ্র প্রতিযোগিতা গোপনভাবে গ্রহণ করে। এজন্য তারা চন্দ্রের অক্ষ এবং অবতরণের জন্য সয়োজ-এর বিভিন্ন পর্যায় নকশা করে। তারা এন ১ তৈরির প্রচেষ্টা চালিয়েছিল, যা যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটার্ন ভ এর ন্যায় মনুষ্যবাহী ও চাঁদে পৌঁছানর ক্ষমতাসম্পন্ন বৃহৎ উৎক্ষেপণ যান।

দুইটি দেশই তাদের সদ্য তৈরিকৃত মহাকাশযান মানুষের সাথে মহাকাশ যাত্রার জন্য ব্যস্ত ছিল। আর এই প্রতিযোগিতার তীব্রতা প্রকাশ পায় ১৯৬৭ সালের শুরুতে , যখন যাত্রীরা দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। জানুয়ারির ২৭ তারিখে, পরিকল্পিত মহাকাশ যাত্রার প্রায় ১ মাস পূর্বে ভূমিতে পরীক্ষার সময় সকল যাত্রী, অর্থাৎ "গাস" গ্রিমসন, এড হোয়াইট, এবং রজার শ্যাফ্ফে‌ কুঠরিতে অগ্নিকান্ডের ফলে শ্বাসরূদ্ধ হয়ে মারা যান। এপ্রিলের ২৪ তারিখে ভূমিতে পরীক্ষালব্ধ সময়ে, সয়োজ ১ এ বৈদ্যুতিক এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় অভিযান সংক্ষেপিত হয় এবং একজন চালক, ভ্লাদিমির কোমারোভ অবতরণের সময় পেঁচিয়ে যায় ও ভূমি সংঘর্ষে মৃত্যুবরণ করেন। এ দুটি দুর্ঘটনাই হয়েছিল মহাকাশযানের নকশা সংক্রান্ত ত্রুটি কারণে, যেগুলো মানুষ্যবাহী মহাকাশ যাত্রার পুনরারম্ভ করার পূর্বে সঠিক করা হয়।

১৯৬৯ সালে ২০ই জুলাই অ্যাপোলো ১১ এর চাঁদে অবতরণের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সফলভাবে রাষ্ট্রপতি কেনেডির উদ্দেশ্য পূরণ করে। সর্বপ্রথম নীল আর্মস্ট্রং এবং বাজ আল্ড্রিন চাঁদে পদার্পণ করেন। ১৯৭২ সাল পর্যন্ত এরূপ ৬টি সফল অবতরণ হয়েছিল এবং কেবলমাত্র অ্যাপোলো ১৩ ব্যর্থ হয়েছিল।

১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত এন-১ রকেটটি ৪টি বিধ্বংসী মনুষ্যবিহীন উৎক্ষেপণে ব্যর্থতা বহন করতে হয় এবং সোভিয়েত সরকার ১৯৭৪ সালের ২৪শে জুন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তাদের মনুষ্যবাহী চন্দ্র কর্মসূচি স্থগিত করে যখন ভ্যালেন্টিন গ্লাশকো মহাকাশযান নকশাকারদের জেনারেল হিসেবে পদ্ গ্রহণ করেন।

দুটি দেশই পরবর্তীতে তুলনামূলকভাবে ছোট মহাকাশ যাত্রা প্রকল্প গ্রহণ করে। তাদের সয়োজ এবং অ্যাপোলো রকেটকে শাটল হিসেবে ব্যবহার করে স্যালিউট এবং স্কাইল্যাব নামক মনুষ্যবাহী মহাকাশ ল্যাবরেটরি তৈরি করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র কেবলমাত্র স্কাইল্যাব উৎক্ষেপণ করলেও, সোভিয়েত ইউনিয়ন সর্বমোট ৭টি স্যালিউট উৎক্ষেপণ করেছিল, যার মধ্যে ৩টি গোপনভাবে অ্যাল্মায সৈন্যবাহিনী মনুষ্যবাহী পরিদর্শন ব্যবস্থা- এটির মধ্যে রক্ষ্ণনাত্নক ক্যানন অন্তর্ভুক্ত। মনুষ্যবাহী পরিদর্শন ব্যবস্থা তুলনামূলক ত্রুটিপূর্ণ কল্পনা ছিল কেননা মনুষ্যবাহী কৃত্রিম উপগ্রহ কম মূল্যে আরও দক্ষভাবে কাজটি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী ম্যান্‌ড অর্বিটাল ল্যাবরেটরি নামক একটি মনুষ্যবাহী পরিদর্শন ব্যবস্থা পরিকল্পনা করেছিল, যা ১৯৬৯ সালে বাতিল করা হয়। সোভিয়েত ১৯৭৮ সালে অ্যাল্মায বর্খাস্থ করেন। বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে বৈরিতার অবসানের সময়, দুই প্রতিযোগী অ্যাপোলো সয়োজ টেস্ট প্রোজেক্ট এর দ্বারা প্রতিযোগিতার সমাপ্তি ঘোষণা করে ও হাত মেলায়। এই যন্ত্রে তাদের দুটি যান ভিড়িয়ে যাত্রীরা পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ করে।

কর্মসূচি সম্পাদনা

নাসা সম্পাদনা

জাতীয় বিমানচালনাবিদ্যা এবং মহাকাশ প্রশাসন(নাসা) হল যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বিশেষ শাখার একটি স্বাধীন সংস্থা। এটি অসামরিক মহাকাশ কার্যক্রম এবং বিমানচালনাবিদ্যা ও মহাকাশ গবেষণার জন্য দায়ী।

প্রোজেক্ট মার্কিউরি সম্পাদনা

প্রোজেক্ট মার্কিউরি হলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম মানববাহী মহাকাশ যাত্রা কর্মসূচি, যা ১৯৫৮ সাল থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত চলমান ছিল। এটির উদ্দেশ্য ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের পুর্বে পৃথিবীর অক্ষে মানুষকে পৌঁছানো এবং সুরক্ষিতভাবে ভূমিতে ফিরিয়ে আনা। জন গ্লেন্‌ প্রথম মার্কিন যিনি মহাকাশে গমন করেন। মার্কিউরি অ্যাট্‌লাস ৬ বাহনে করে ১৯৬২ সালের ২০ই ফেব্রুয়ারি তিনি প্রিথিবীতে আবর্তন করেন।

প্রোজেক্ট জেমিনি সম্পাদনা

প্রোজেক্ট জেমিনি নাসার পরিচালিত দ্বিতীয় মনুষ্যবাহী মহাকাশ যাত্রা কর্মসূচি। কর্মসূচিটি ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত চলমান ছিল। এই কর্মসূচিটি মহাকাশে আশ্রয়ের জন্য পথ প্রদর্শক ছিল। ১৯৬৫ সালের ৩রা জুন জেমিনি ৪ অভিযান চলাকালীন এড হোয়াইট সর্বপ্রথম যানবাহন বহির্ভুক্ত কর্মকাণ্ড(ইভিএ) সম্পাদন করেন। ১৯৬৫ সালের ১৫ই ডিসেম্বর জেমিনি ৬এ এবং ৭ সর্বপ্রথম মহাকাশে আশ্রয় অর্জন করে। ১৯৬৫ সালের ১৬ই মার্চ গেমিনি ৪ অভিযানে মনুষ্যবিহীন আজেনা টার্গেট ভেহিকেল এর সাহায্যে ডকিং সম্ভব হয়। এছাড়াও জেমিনি ৪ প্রথম যুক্তরাষ্ট্রীয় মহাকাশযান ছিল যেটি মহাকাশে থাকা অবস্থায় জটিল ব্যররথতার সম্মুখীন হয়েছিল এবং যাত্রীদের জীবনের প্রতি হমকি প্রদর্শন করেছিল।

অ্যাপোলো কর্মসূচি সম্পাদনা

অ্যাপোলো কর্মসূচি নাসা দ্বারা সংগথিত তৃতীয় মনুষ্যবাহী মহাকাশ যাত্রা কর্মসূচি। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হিল চাঁদকে প্রদক্ষিণ করা এবং চাঁদের ভূপৃষ্ঠে মনুষ্যবাহী বাহন অবতরণ করা। এই কর্মসূচিটির সময়কাল হলো ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২। অ্যাপোলো ৪ অভিযানে মানুষ ১৯৬৮ সালের ২১শে ডিসেম্বর প্রথমবার পৃথিবীর অক্ষ পেরিয়ে চাঁদকে আবর্তন করেছিল। ১৯৬৯ সালের ২০ই জুলাই অ্যাপোলো ১১ মশনের মাধ্যমে নীল আর্মস্ট্রং এবং বাজ আল্‌ড্রিন সর্বপ্রথম চাঁদের ভূমিতে পদাঙ্কন করেন।

স্কাইল্যাব সম্পাদনা

স্কাইল্যাব কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল নাসার সর্বপ্রথম স্পেস স্তেশন তৈরি করা। এই কর্মসূচিটি ১৯৭৩ সালের ১৯ই মে স্যাটার্ন V রকেটের সর্বশেষ উৎক্ষেপন চিহ্নত করে। অনেক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চলমান অবস্থায় করা হয়েছিল যার মধ্যে অভূতপূর্ব সৌর গবেষণা অন্তর্ভুক্ত। স্কাইল্যাব ৪ এই কর্মসূচির সবচেয়ে দীর্ঘকালীন অভিযান যা ৮৪ দিন স্থায়ী ছিল(১৯৭৩ সালের ১৬ই নভেম্বর থেকে ১৯৭৪ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি)। এই মশনটি ২২৪৯ দিন স্থায়ী হয়েছিল। অবশেষে ১৯৭৯ সালের ১১ই জুলাই স্কাইল্যাব নিজ কক্ষপথ হতে অস্ট্রেলিয়ার উপর স্থলন হয়।

স্পেস শাটল সম্পাদনা

স্পেস রেস-এর পর মহাকাশ অনুসন্ধানের অগ্রগতি ধীরগতিসম্পন্ন হলেও অবিরাম ছিল। ১৯৮১ সালের ১২ই এপ্রিল গ্যাগারিনের মহাকাশ যাত্রার ২০তম বার্ষিকীতে যুক্তরাষ্ট্র সর্বপ্রথম পুনঃব্যাবহারযোগ্য মহাকাশ্যান অর্থাৎ স্পেস শাটল উৎক্ষেপণ করে। ১৯৮৮ সালের ১৫ই নভেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়ন কেবলমাত্র ১টি বুর‍্যান ক্লাস শাটলের মহাকাশ যাত্রার মাধ্যমে নিজস্ব প্রথম পুনঃব্যবহারযোগ্য মনুষ্যবিহীন মহাকাশ যাত্রা করে স্পেস শাটলের অনুকরণ করে। প্রথম মহাকাশ যাত্রার পরবর্তীতে এটি আর ব্যবহৃত হয় নি,বরং এর বদলে সোভিয়েত ইউনিয়ন স্পেস স্টেশন তৈরি করার জন্য সয়োজ মহাকাশযানকে যাত্রীবাহী শাটেল হিসেবে ব্যবহার করতে থাকে।

১৯৮৩ সালে স্যালি রাইড সর্বপ্রথম মার্কিন নারী হিসেবে মহাকাশে যান। এইলীন কলীন্স সর্বপ্রথম নারী শাটেল চালক ছিলেন। আর ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসে এসটিএস-৯৩ শাটল অভিযানের প্রথম নারী হিসেবে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রীয় মহাকাশযান নেতৃত্ব করেন। যুক্তরাষ্ট্র আইএসএস ও অন্যান্য উদ্দেশ্যে ব্যয়বহুল শাটল মুশন অবিরত রাখে, যা ২০১১ সালে অবসরপ্রাপ্ত হয়।

সোভিয়েত স্পেস কর্মসূচি সম্পাদনা

সোভিয়েত মহাকাশ কর্মসূচি হলো ১৯৩০ এর দশক থেকে ১৯৯৯ সন পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বারা সংগঠিত রকেটবিদ্যা এবং মাহাকাশ অনুসন্ধান কর্মসূচি।

স্পুটনিক সম্পাদনা

১৯৫৭ সালের ৪ঠা অক্টোবর স্পুটনিক ১ পৃথিবীর সর্বপ্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ হয়। কৃত্রিম উপগ্রহটি একটি রেডিও সংকেত প্রেরণ করে,এছাড়া কোনো সেন্সর ছিল না। স্পুটনিক ১ গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম উপগ্রহটির আবস্থান ও বেগ পরিমাপ করএ বায়ুমন্ডলের উপরের স্তরে এটির টান(ড্র‍্যাগ) গণনা করেন। স্পুটনিক ১ ২১ দিন সম্প্রচার করে এবং ১৯৫৭ সালের ৪ঠা অক্টোবর ব্যাটারি গ্রাস হলে অবশেষে ১৯৫৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি কৃত্রিম উপগ্রহটি কক্ষপথ হতে পতিত হয়।

লুনা কর্মসূচি সম্পাদনা

লুনা কর্মসূচি হলো মনুষ্যবিহীন যন্ত্রচালিত কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের একটি ক্রমধারা যার উদ্দেশ্য ছিল চাঁদকে নিয়ে গবেষণা। এই কর্মসূচিটি ১৯৫৯ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত চলমান ছিল এবং ১৫টি সফল অভিযান উৎক্ষেপিত হয়েছিল। এই কর্মসূচিটি বহু কিছু সর্বপ্রথম অর্জন করে এবনহ চাঁদের রাসায়নিক গতি, অভিকর্ষজ ত্বরণ, তাপমাত্রা এবনহ বিকিরণ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করে। লুনা ২ সর্বপ্রথম মানবনির্মিত বস্তু যেটি ১৯৬৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চাঁদের ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে আসে। ১৯৫৯ সালের অক্টোবর মাসে লুনা ৩ চাঁদের ভূপৃষ্ঠের সর্বপ্রথম ছবি প্রেরণ করে।

ভস্টক সম্পাদনা

ভস্টক কর্মসূচি হলো সোভিয়েত নাগরিকদের পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে উৎক্ষেপণ ও সুরক্ষিতভাবে ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বপ্রথম সোভিয়েত মহাকাশ যাত্রা প্রকল্প। ১৯৬১ থেকে ১৯৭৩ পর্যন্ত এই কর্মসূচি ৬টি মনুষ্যবাহী মহাকাশ যাত্রা পরিচালনা করে। এটি সর্বপ্রথম কর্মসূচি যেটি মানুষকে মহাকাশে পাঠাতে সক্ষম হয়েছিল। এই কর্মসূচির মাধ্যমেই ১৯৬১ সালের ১২ই এপ্রিল ইউরি গ্যাগারিন সর্বপ্রথম মহাকাশে যান। ঘারম্যান টিটভ সর্বপ্রথম মানুষ ছিলেন যিনি ভস্টক ২ যানে ১৯৬১ সালের ৭ই আগস্ট একটি পুর্ণদিবস কক্ষিপথে থাকেন। ১৯৬৩ সালের ১৬ই জুন ভস্টক-৬ অভিযানে ভালেন্তিনা তেরেশকোভা মহাকাশে গমনকারী সর্বপ্রথম নারী হিসেবে পরিচিত হন।

ভস্খড সম্পাদনা

ভস্খড কর্মসূচি ১৯৬৪ সালে আরম্ভ হয় এবং এটি দুইজন মনুষ্যবাহী মহাকাশ যাত্রা ছিল। ১৯৬৬ সালে সয়োজ কর্মসূচি কর্তৃক এতি বাতিল করে দেওয়া হয়। ১৯৬৪ সালের ১২ই অক্টোবর ভস্খড ১ উৎক্ষেপিত হয় এবং এটি একাধিক যাত্রী বিশিষ্ট মনুষ্যসোমৃদ্ধ বাহন। আলেক্সেই লেওনভ ১৯৬৭ সালের ১৮ই মার্চ ভস্খড ২ এর যাত্রী হিসেবে সর্বপ্রথম মহাকাশে পদাচারণ করেন।

স্যালিউট সম্পাদনা

স্যালিউট কর্মসূচি সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বারা পরিচালিত সর্বপ্রথম কর্মসূচি। এটির উদ্দেশ্য হলো মহাকাশে থাকার জটিলতা এবং বিভিন্ন জ্যোতির্বিদ্যা,জীববিজ্ঞান সংক্রান্ত এবং পার্থিব সম্পদ পরীক্ষা করে দীর্ঘকালীন গবেষণা করা। এই কর্মসূচিটি ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত চলমান ছিল। এই কর্মসূচির সর্বপ্রথম স্টেশন স্যালিউট ১ হলো পৃথিবীর সর্বপ্রথম মনুষ্যস্মৃদ্ধ স্পেস স্টেশন।

সয়োজ কর্মসূচি সম্পাদনা

১৯৬০ এর দশকে সোভিয়েত মহাকাশ কর্মসূচি কর্তৃক সয়োজ কর্মসূচিটি প্রারম্ভ করা হয় এবং এটি এখনও "‍‍রসকসমস" (রাশিয়া মহাকাশ অনুসন্ধান কর্মসূচি) তে অব্যাহত ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে এই কর্মসূচিতে মোট ১৪০টি মহাকাশ যাত্রা সম্পন্ন হয়েছে এবং স্পেস শাটল অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে মানুষ স্থানান্তরে সক্ষম এমন মমহাকাশযান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল চাঁদে মানুষ প্রেরণ কিন্তু পরবর্তীতে এটি মির স্পেস স্টেশন তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মির সম্পাদনা

মির হলো একটি স্পেস স্টেশন যেটি ১৯৮৬ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত পৃথিবীর নিম্ন অক্ষাংশের কর্যকর ছিল। এতি প্রথম সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বারা পরিচালিত হলেও পরবর্তিতে রাশিয়া দ্বারা পরিচালিত হয়। মির সর্বপ্রথম মডুলার স্পেস স্টেশন এবং এটি ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত কক্ষপথে একত্রিত করা হয়েছিল। এই স্টেশনটি ক্ষুদ্র মহাকর্ষীয় গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে কর্যকর ছিল যেটাতে যাত্রীরা মহাকাশে স্থায়ীভাবে থাকার যন্ত্রপাতি উন্নয়নের উদ্দেশ্যে জীববিজ্ঞান, মানবিক জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা, ধুমকেতুবিদ্যা এবং মহাকাশযানের ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন। একটি নির্দিষ্ট মহাকাশযাত্রার সবচেয়ে দীর্ঘদিন স্থায়ী ছিলেন ভালেরী পলিয়াকোভ। ১৯৯৪ সালের ৮ই জানুয়ারি তিনি পৃথিবী থেকে মহাকাশে গমন করেন এবং মোট ৪৩৭ দিন, ১৭ ঘণ্টা, ৫৮ মিনিট সময় যাপন করে ১৯৯৫ সালের ২২শে মার্চ পৃথিবীতে ফেরত আসেন। বির্তমানে সারজেই ক্রিকালিওভ মহাকাশে সম্মিলিত সর্বোচ্চ সময় থাকার ঐতিহাসিক চিত্র বহন করে: ৮০৩ দিন ৯ ঘণ্টা ৩৯ সেকেন্ড। মির স্টেশনটি অবিরত অবস্থায় ৩৭৪৪ দিন কার্যরত ছিল, যা ১০ বছর থেকে কেবলমাত্র ৮ দিন কম। এটি হয়েছিল ১৯৮৯ সালে সয়োয টিএম-৮ এর উৎক্ষেপণ থেকে ১৯৯৯ সালের ২৮শে আগস্ট সয়োয টিএম-২৯ এর অবতরণ পর্যন্ত। এই রেচর্ডটি ২০১০ সন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন কর্তৃক ভঙ্গ করা হয়।আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ৬৮২৩ দিন অবিরত ভাবে কার্যরত আছে।

বুরান সম্পাদনা

বুরান কর্মসূচি প্রথমে সোভিয়েত এবং পরবর্তীতে রাশিয়া দ্বারা পরিচালিত পুনঃব্যবহারযোগ্য মিহাকাশযান কার্যাক্রম যা ১৯৭৪ সালে মস্কো শহরে আবস্থিত সেন্ট্রাল অ্যারো হাইড্রোডাইনামিক ইন্সটিটিউট-এ আরম্ভ হয় এবং ১৯৯৩ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে ব্যাহত করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস শাটল কর্মসূচির প্রতিক্রিয়া হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়ন বুরান কর্মসূচিটি শুরু করে। আনুষ্ঠানিক ভাবে, মহাকাশযান,নভোচারী এবং সরবরাহকৃত বস্তুর জন্য কক্ষপথে মালামাল সরবরাহ এবং পৃথিবীতে ফেরত আসার উদ্দেশ্যে অক্ষীয় বাহন হিসেবে বুরানকে নকশা করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন সম্পাদনা

বর্তমানে বৈশ্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে মহাকাশ অনুসন্ধান পরিচালিত হয়। এর একটি মখ্য প্রমাণ হলো আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন গঠন অ পরিচালনা। একই সময়ে, ক্ষুদ্র মহাকাশ শক্তির মধ্যকার আন্তর্জাতিক মহাকাশ প্রতিযোগিতা২০শ শ্তাব্দীর শেষ দিকে বেসরকারি রকেট উৎক্ষেপণ এবং মহাকাশ পর্যটন বাণিজ্যের ভিত্তি ও বিস্তারের কয়ারণ হয়ে দাঁড়ায়।

যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশ অনুসন্ধান অব্যাহত রাখে, যার মধ্যে নিজস্ব মডিউল-এ বিস্তারিত অংশগ্রহণ অন্তর্ভুক্ত। ২০০৪ সালে রাষ্ট্রপতি জর্জ ডাব্লিউ বুশ দ্বারা সূচিত কন্সটেলেশন মহাকাশ কর্মসূচীর উদ্দেশ্য ছিল ২০১৮ সালের পূর্বে পরবর্তী প্রজন্মের একাধিক কার্যসম্পন্ন অরিওন মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা। ২০২০ পর্যন্ত আবার চাঁদে গমন এবং পরবর্তীতে মঙল গ্রহে মনুষ্যবাহী মহাকাশ যাত্রার পরিকল্পনা হয়েছিল কিন্তু এটি ২০১০ সালে বাতিল করে দেওয়া হয়। এর পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবসায়িক মনুষ্যবাহী উৎক্ষেপণ ক্ষমতা তৈরিকে উৎসারিত করা হয়।

সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্তরাধিকারী উচ্চ সম্ভাবনা থাকলেও অর্থের অভাব। এটির নিজস্ব মহাকাশ কর্মসূচীসমূহ নানান কার্যকলাপ সম্পাদন করে যেগুলোর মধ্যে সামরিক প্রকৃতি অন্তর্ভুক্ত। নিজস্ব মডিউলের মধ্যমে আইএসএস-কে অবিরতভাবে সহয্য করআর পাশাপাশি তারা বিস্তারিত বাণিজ্যিক উৎক্ষেপণ সেবা প্রদান করেন। এছাড়াও তারা মনুষ্যবাহী এবং পণ্যবাহক ময়াহাকাশযান পরিচালনা করে যা যুক্তরাষ্ট্রের শাটল কর্মসূচি সমাপ্তির পরেও অব্যাহত থাকে। তারা ২০১৮ সনে ব্যবহারার জন্য একাধিক ক্রিয়া সম্পন্নকারী পিপিটিএস মনুষ্যবাহী মহাকাশযানের উন্নয়ন করছে এবং মনুষ্যবাহী চন্দ্র অভিযানের পরিকল্পনা আছে। এই কর্মসূচীর মাধ্যমে ২০২০এর দশকে চাঁদে মানুষ পাঠানর পরিকল্পনা করা হয়। উক্ত কর্ম সম্পাদনে এদেশ দ্বিতীয়।

ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা সম্পাদনা

ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা ১৯৮৮ সালে আরিএন ৪ এর পরিচালকের মাধ্যমে বাণিজ্যিক মনুষবিহীন উৎক্ষেপণে এগিয়ে আছে কিন্তু নাসা, রাশিয়া, সী লঞ্চ(বেসরকারি), চীন,ভারত ও অন্যান্যের সাথে পরতিযোগিতায় জড়িত। ইএসএ মনুষ্যবাহী শাটল হারমিস নকশা করে এবং ১৯৮০ এর দশকের শেষ দিকে ইউরোপে কোলাম্বাস স্পেস স্টেশন্টি উন্নয়ন প্রক্রিয়য় ছিল; যদিও পরবর্তীতে এই প্রকল্পটী বাতল করে দেওয়া হয় এবং ইউরপ তৃতীয় বৃহৎ 'স্পেস পাওয়ার' হতে বিচ্যুত হন।

ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা কয়েকটি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে, মনুষ্যবাহী স্পেস লয়াব মডিউল ব্যবহার করেন(ইউএস শাওএল আরহিত) এবং মঙ্গল ও দুমকেতুতে মহাকাশযান পাঠায়। এরা নিজস্ব মডিউল এবং মনুষ্যবিহীন(যান্ত্রিক) মহাকাশযান এটিভি ।

চীন সম্পাদনা

১৯৫৬ সাল থেকি চীনের মহাকাশ কর্মসূচী ছিল এওং ১৯৫৭-১৯৬০ সন প্রাথমিক অবস্থা থেকেই সোভিয়েতের সাহায্য পেয়েছিল। তাদেরকে গবেষণার জন্য নিক্ষেপণাস্ত্র প্রদান করা হয়ছিল। ১৯৭৯ সালের পূর্বে মানুষকে মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় এবং ১৯৬৭ সালের ৮ঠা জুন মনুষ্যবাহী মহাকাশযানের পরিকল্পনা করা হয়। "ইস্ট ইস রেড" ১৯৭০ সালের ২৪শে এপ্রিল চীন দ্বারা উৎক্ষেপণ করা হয়। ১৯৭৪ সালে নীতি প্রস্তুতকারীরা ইউএস ও ইউএসএসআর-এর সাথে তুলনায় কৃত্রিম উপগ্রহের প্রয়োগ বাশি গুরুতর মনে করায় মনুষ্যবাহী মহাকাশ যাত্রার পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। এটির মনোযোগ সামাজিক প্রয়োগ হলেও মনুষ্যবাহী মহাকাশ যাত্রার উদ্দেশ্যও ছিল।

নাসা কিংবা ইএসএ এর তুলনায় কম পুঁজি থাকে সত্বেও গণপ্রজাতন্ত্রী চীন মউষ্যবাহী মহাকাশ যাত্রা অর্জন করেছে এবং একটি বাণিজ্যিক মহাকাশযান উৎক্ষেপণ সেবা পরিচালনা করেছে।চিনের স্পেস স্টেশনে তৈরি এবং মঙ্গলে মনুষ্যবিহীন মহাকাশযান পাঠানোর পরিকল্পনা আছে।

চীনের মনুষ্যবাহী মহাকাশযানের প্রথম প্যাস, সুগুয়াং, কয়েক বছরের উন্নয়নের পরে পরিত্যক্ত করা হয়। কিন্তু ২০০৩ সালের ১৫ই অক্টোবরে সেঞ্জাউ ৫ বাহনের মাধ্যমে ইয়্যাং লিউয়েই কক্ষপথে প্রবেশ করলে চীন নিজস্ব মনুষ্যবাহী মহাকাশ যাত্রার ক্ষমতাসম্পন্ন ৩য় রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পায়।

জাপান সম্পাদনা

জাপানের মহাকাশ সংস্থা, জাপান মহাকাশ অভিযান সংস্থা, এশিয়ার উল্লেখ্য মহাকাশ ক্রীড়ক। বাণিজ্যিক উৎক্ষেপণ সেবা না থাকলেও জাপান আইএসএস-এ একটি মডিউল সক্রিয় করেছে এবং এইচ-১১ ট্রান্সফার ভেহিকেল নামক একটি মনুষ্যবিহীন পণ্যবাহী মহাকাশযান পরিচালনা করে। জাক্সা মঙ্গলে(ফ্লাই-বাই) মহাকামহাকাশ উৎক্ষেপণ পরিচালনা করে। সিলীন,চন্দ্র মহাকাশযানটি আ্যপোলো-যুগের পরবর্তীতে সবচেয়ে জটিল অভিযান হিসেবে গণ্য করা হয়। জাপানের হায়াবুসা মহাকাশযানের মাধ্যমে মানুষ সর্বপ্রথম একটি ধুমকেতু থেকে নমুনা নিয়ে আসে। ইকারস সৌরশক্তি দ্বারা পরিচালিত সর্বপ্রথম সক্রিয় মহাকাশযান ছিল। জাপান হোপ-এক্স,কানকহ-মারু এবং ফুজি নামক মনুষ্যবাহী ক্যাপ্সুল উৎপাদনের সত্ত্বেও, কোনোটিই এখনও উৎক্ষেপণ করা হয়নি। জাপানের বর্তমান লক্ষ্য হলো ২০১৫ এর মধ্যে একটি নতুন মনুষ্যবাহী মহাকাশযান চাঁদে পাঠানো এবং ২০৩০ সালের মধ্যে চন্দ্রে একটি ঘাটি প্রতিষ্ঠা করা।

তাইওয়ান সম্পাদনা

জাতীয় মহাকাশ সংস্থা (এসএসপিও; যা পুর্বে জাতীয় মহাকাশ কার্যক্রম দপ্তর নামে পরিচিত ছিল) এবং জাতীয় চাং-সান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গণতান্ত্রিক শিল্পোন্নত উন্নত দেশের জাতীয় বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা যা তাইওয়ান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতার অন্তর্ভুক্ত। জাতীয় চাং-সান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি তাইওয়ানের অস্ত্র, শব্দোত্তর গতির ক্ষেপঅস্ত্র এবং মহাকাশযান উৎক্ষেপণের জন্য মহাকাশযান ও রকেট নকশা এবং তৈরী করে। অন্যদিকে, জাতীয় মহাকাশ সংস্থা মহাকাশ অভিযান, মহাকাশযান গঠন, কৃত্রিম উপগ্রহ এবং সংক্রান্ত,,,,

ভারত সম্পাদনা

ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা হলো ভারতের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা। এটি সক্রিয় মহাকাশ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এরা একটি ছোট বাণিজ্যিক উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা পরিচালনা করে এবং ২০০৭ সালে ভারতের চন্দ্রমান-১ নামক একটি সফল মনুষ্যবিহীন অভিযান চাঁদে পাঠান। ২০১৩ সালে ভারত একটা সফল আন্তঃগ্রহ অভিযান উৎক্ষেপণ করেছিল। মার্স অর্বিটাল অভিযান ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মঙ্গল পৌঁছালে ভারত এমন একটি দেশ হিসেবে পরিচিত লাভ করে, যারা তাদের প্রথম চেষ্টায় মঙ্গলের অভিযনে সফল হয়। ইস্রো বর্তমানে একটি ক্ষুদ্র শাটল ব্যবস্থা উন্নয়ন করছে।

অন্যান্য রাষ্ট্র সম্পাদনা

অন্যান্য রাষ্ট্রের মহাকাশচারীরাও মহাকাশে ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছে। এটির সূচনা হয় ভালদামির রেমেক, একজন চেক ব্যক্তির মহাকাশ যাত্রার মাধ্যমে, যা ১৯৭৮ সালের মার্চের ২ তারিখে সোভিয়েত মহাকাশযান দ্বারা সম্পন্ন হয়েছিল। ২০১৩ সালে ৬ই নভেম্বর ৩৮টি রাষ্ট্র ফাই(পথ নির্দেশক সূত্র) এর সূত্রানুসারে ৩৮টি রাষ্ট্র থেকে সর্বমোট ৫৩৬ জন মহাকাশে গিয়েছিলেন।

ভারত,তাইওয়ান এবং জাপান মহাকাশের গবেষণার এবং কর্যক্রমের ক্ষেত্রে ক্রমান্বয়ে ক্ষমতাধীন প্রতিযোগীতে পরিণত হচ্ছে। চীন এবং উল্লেখ্য দেশগুলো এশীয় মহাকাশ প্রতিযোগিতার প্রধান খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে উঠেছে। ইরান ২০২১ সালের মধ্যে মনুষ্যবাহী মহাকাশ কর্মসূচি সূচনার ঘোষিত দিয়েছে।

টীকা সম্পাদনা

  1. Project Mercury's first two flights were suborbital flights (listed below), while its latter four flights were orbital flights.
  2. Includes several special cases. Soyuz 1 and Soyuz 11 were both fatal missions which reached space. Soyuz 19 was the Soviet participant in the Apollo-Soyuz Test Project, a separate craft from the American Apollo craft which is listed below. Soyuz 32 brought a crew to the Salyut 6 space station, but the crew returned on Soyuz 34, which had been sent to the station without a crew. Soyuz T-10a was an aborted launch attempt which failed to reach space. As orbital flights or committed attempts, all of the above are included in the number. The one crewed Soyuz flight not included in this number is Soyuz 18a, an aborted mission which nevertheless reached space as a suborbital flight, and which is therefore listed separately below.
  3. Does not include Apollo 1.
  4. Represents the American Apollo craft. The Soviet craft, Soyuz 19, is counted in the above Soyuz number.
  5. Includes two fatal missions: STS-51-L, and STS-107. The former did not reach space, while the latter did.

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Ragin Williams, Catherine; Neesha Hosein; Logan Goodson; Laura A. Rochon; Cassandra V. Miranda (মে ২০১০)। "NASA Lyndon B. Johnson Space Center Roundup - Pictures in Time" (পিডিএফ)The Space Center Roundup। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১১