একটি মরুগ্রহ বা শুষ্ক গ্রহ (ইংরেজি: Desert planet বা Dry planet) হল শিলাময় গ্রহের একটি তাত্ত্বিক প্রকারভেদ। এই জাতীয় গ্রহগুলির পৃষ্ঠতলের সঙ্গে পৃথিবীর উষ্ণ মরু অঞ্চলগুলির সাদৃশ্য অনুমান করা হয়। মরুগ্রহের ধারণাটি কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের একটি সুপরিচিত প্রেক্ষাপটে পরিণত হয়েছে।[১] ১৯৫৫ সালে প্রকাশিত ফ্যাঙ্ক হারবার্টের ডিউন উপন্যাসে এবং ১৯৫৬ সালে নির্মিত চলচ্চিত্র ফরবিডেন প্ল্যানেট-এ এই ধারণাটির প্রথম প্রয়োগ দেখা যায়।[২][৩][৪] পরবর্তীকালের স্টার ওয়ার্স ফ্র্যাঞ্চাইজের ট্যাটুইন, জিওনোসিসজাক্কু হল মরুগ্রহের উদাহরণ।

একটি মরু গ্রহ সম্পর্কে শিল্পীর ধারণা

বাসযোগ্যতা সম্পাদনা

২০১১ সালের একটি পর্যালোচনা অনুযায়ী, জীবন-ধারণযোগ্য মরুগ্রহের অস্তিত্ব যে শুধু সম্ভব তাই নয়, বরং এই জাতীয় গ্রহগুলির সংখ্যা পৃথিবী-সদৃশ গ্রহগুলির থেকেও বেশি হতে পারে।[৫] এই পর্যালোচনায় এই জাতীয় গ্রহের মডেল তৈরির সময় দেখা যায়, মরুগ্রহগুলির বাসযোগ্য অঞ্চল মহাসাগরীয় গ্রহগুলির বাসযোগ্য অঞ্চলের থেকে অনেকটাই বড়ো।[৫] একই পর্যালোচনা থেকে অনুমিত হয় যে, প্রায় ১ বিলিয়ন বছর আগে শুক্র সম্ভবত একটি বাসযোগ্য মরুগ্রহ ছিল।[৫] সূর্যের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও এক বিলিয়ন বছরের মধ্যে পৃথিবী একটি মরুগ্রহে পরিণত হবে বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়ে থাকে।[৫]

২০১৩ সালের একটি পর্যালোচনা থেকে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গিয়েছে যে, সূর্য-সদৃশ তারাগুলির ০.৫ এইউ-এর মধ্যে পলাতক গ্রিনহাউস প্রভাব-মুক্ত উষ্ণ মরুগ্রহগুলির অস্তিত্ব সম্ভব। এই পর্যালোচনার অপর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড দূর করতে ন্যূনতম ১% আর্দ্রতাই যথেষ্ট, কিন্তু অতিরিক্ত জল নিজেই গ্রিনহাউস গ্যাসের কাজ করতে পারে। যে নির্দিষ্ট সীমায় জল তরল আকারে থাকতে পারে, উচ্চতর বায়ুমণ্ডলীয় চাপ তা বাড়িয়ে তুলতে পারে।[৬]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Touponce, William F. (১৯৮৮)। "Intellectual Background"। Frank HerbertBoston: Twayne Publishers imprint, G. K. Hall & Co। পৃষ্ঠা 119আইএসবিএন 978-0-8057-7514-3 
  2. Wright, Les। "Forbidden Planet (1956)"। Culturevulture.net (Internet Archive)। মে ৭, ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ৭, ২০০৬ 
  3. Hladik, Tamara I.। "Classic Sci-Fi Reviews: Dune"। SciFi.com। এপ্রিল ২০, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২০, ২০০৮ 
  4. Michaud, Jon (জুলাই ১২, ২০১৩)। "Dune Endures"The New Yorker। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২৭, ২০১৩ 
  5. Choi, Charles Q. (সেপ্টেম্বর ২, ২০১১)। "Alien Life More Likely on Dune Planets"। সংগ্রহের তারিখ জুন ১২, ২০১৪ 
  6. Andras Zsom; Sara Seager; Julien de Wit; Vlada Stamenkovic (সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৩)। "Towards the Minimum Inner Edge Distance of the Habitable Zone"। The Astrophysical Journal778 (2): 109। arXiv:1304.3714 ডিওআই:10.1088/0004-637X/778/2/109বিবকোড:2013ApJ...778..109Z