মঙ্গলকোট (প্রাচীন ভাস্কর্য)
মঙ্গলকোট বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন স্থাপনা। এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা।[১]
মঙ্গলকোট (প্রাচীন ভাস্কর্য) | |
---|---|
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দুধর্ম |
জেলা | বগুড়া জেলা |
অবস্থান | |
অবস্থান | শিবগঞ্জ উপজেলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
অবস্থানসম্পাদনা
মঙ্গলকোট বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় নামুজা ইউনিয়নে অবস্থিত একটি প্রাচীন স্থাপনা। এটি মহাস্থানগড় জাদুঘর থেকে ১.৬ কিলোমিটার দক্ষিণ বা দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে এটি পলিবাড়ি মৌজায় অবস্থিত। চিঙ্গাস্পুর নামক একটি সুবৃহৎ মৌযার পাশে অবস্থিত বলে মানুষ ঢিবিটিকে ভুল করে চিঙ্গাসপুর মৌজায় দেখানো হয়।[২]
বিবরণসম্পাদনা
মঙ্গলকোট ঢিবিটি ছিলো পলিবাড়ি মৌজার ২০৭ নং প্লটে এবং উত্তর দক্ষিণে এর দৈর্ঘ্য ছিলো ৮৭.৮৭ মিটার, প্রস্থ ১২.১২ মিটার থেকে ২১.২১ মিটার ও উচ্চতা ২.১২ মিটার। ভুমির মালিক বা মালিকদের অনধিকার প্রবেশের কারণে ঢিবিটির যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। ১৯৭৪ সালে স্থানীয় কয়েকজন লোক গুপ্তধনের সন্ধানে বেআইনিভাবে খননকার্য চালিয়ে কয়েকটি অতি মুল্যবান ও অতি উচ্চমানের পোড়ামাটির চিত্রফলক আবিষ্কার করেন এবং সেই সংগে ঢিবিটিটির যথেষ্ট ক্ষতি সাধন করেন।[২]
মঙ্গলকোটের ভাস্কর্যসম্পাদনা
মঙ্গলকোটে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ১৯৮১-৮৩ সালে উৎখননের মাধ্যমে এক হাজারেরও বেশি প্রত্ননিদর্শন আবিষ্কার করে। প্রত্ননিদর্শনগুলো গুপ্ত ও গুপ্তোত্তর যুগের পোড়ামাটির ভাস্কর্য। ভাস্কর্যগুলোর গড় উচ্চতা ০.০৬১ মিটার এবং সেগুলোর প্রায় অধিকাংশই সর্পদেবী মনসার আবক্ষ নারী মূর্তি।[৩]
এখানে প্রাপ্ত পোড়ামাটির ভাস্কর্যগুলো গুপ্ত কালে পুন্ড্রবর্ধনভূক্তিতে ধ্রুপদী শিল্পচর্চার উচ্চমার্গীয় ইতিহাসকে সামনে এনেছে। বাংলা অঞ্চলে পাথরের কোন উল্লেখযোগ্য উৎস ছিলো না। তাই শিল্পী পাথরের বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করেছিলো পোড়ামাটির মাধ্যমকে, আর অসাধারণ শৈল্পিক দক্ষতায় তৈরি করেছিলো কালোত্তীর্ণ সব ভাস্কর্য। অনেক ক্ষেত্রেই তা অতিক্রম করেছিল প্রস্তর ভাস্কর্যের শিল্প সুষমাকে। আর এ ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা পরবর্তী সময়ে লক্ষ করা যায় উত্তরবঙ্গে পাল যুগের এবং দেব, চন্দ্র আমলে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গের পোড়ামাটির ফলকচিত্রে এবং খানিকটা ভিন্ন রুপে সুলতানি আমলের বাংলায়।[৩]
আরও দেখুনসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "প্রত্নস্হলের তালিকা"। বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। http://www.archaeology.gov.bd/। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
|প্রকাশক=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য) - ↑ ক খ আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া; প্রশ্নোত্তরে বাঙলাদেশের প্রত্নকীর্তি (প্রথম খন্ড); ঝিনুক প্রকাশনী; তৃতীয় মুদ্রণঃ মার্চ ২০১৩; পৃষ্ঠা-১৬৫-১৬৬, ISBN 984- 70112-0112-0
- ↑ ক খ "মঙ্গলকোটের ভাস্কর্য"। বাংলাপিডিয়া। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৫।