মইনুল হক চৌধুরী

ভারতীয় রাজনীতিবিদ

ম‌ইনুল হক চৌধুরী (১৯২১-১৯৭৬) আসাম থেকে আগত একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ।[১] তিনি পাঁচবার বিধানসভায় নির্বাচত হন;[২] ১৯৭১ সালে ইন্দিরা গান্ধী শাসালামলে তিনি শিল্পমন্ত্রী ছিলেন।[৩]

মইনুল হক চৌধুরী

জীবনী সম্পাদনা

১৯২১ সালের ১৩ই মে[৪] অসম প্রদেশের কাছাড় জেলার সোনাবাড়ীঘাটের এক পরিবারে মইনুল হকের জন্ম হয়। তার পিতা ছিলেন মন্তাজির আলী চৌধুরী আর মাতা ছিলেন মোনা বিবি। তার পিতা মইনুল হক সোনাবাড়ীঘাটের এক মধ্য ইংরাজি স্কুল থেকে তার প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তারপর শিলচর সরকারি বালক উচ্চতর মাধ্যমিক স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপর তিনি গুহাটির কটন কলেজ ও সিলেটের মুরারী চাঁদ কলেজে অধ্যয়ন করেন এবং ১৯৪২ সালে উচ্চতর মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৪৪ সালে কলিকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে সাম্মানিক ইতিহাসে স্নাতক ডিগ্রী প্রাপ্ত হন॥ প্রেসিডেন্সিতে কলেজ নির্বাচনে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরাস্ত করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে MA তে ইতিহাসে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান লাভ করেন। এরপরই তিনি মুসলিম লিগে যোগদান করে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন মুসলিম লীগের যুব মোর্চার জাতীয় স্তরের সাধারণ সম্পাদক। ১৯৪৭ সালে তিনি আলিগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন॥ মহম্মদ আলী জিন্নাহর সাথে একটি সভায় তিনি বরাক উপত্যকার প্রতিনিধিত্ব করেন। নেতাজি সুভাষ বসু ও মৌলানা কালাম আজাদের অনুপ্রেরণায় তিনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদান করেন। স্বাধীনতা প্রাপ্তি এবং ভারত বিভাজনের পর তিনি ফকুরুদ্দিন আলী আহমেদের সক্রিয়তার প্রভাবে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন॥ ১৯৪৮ সালে শিলচরের বার এসোসিয়েশন-এ তিনি তার কর্ম জীবনের সূচনা করেন। পরবর্ত্তীকালে ১৯৫০ সালে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন এবং স্থানীয় বোর্ড-র সদস্য মনোনীত হন। সেই বছরেই তিনি শিলচর পৌরসভার মনোনীত সদস্য ছিলেন॥ ১৯৫২ সালে তিনি পূর্ব সোনাই সমষ্টি থেকে অসম বিধান সভার সদস্য নির্বাচিত হন। একই সমষ্টি থেকে দ্বিতীয়বার জয় লাভের পর ১৯৫৭ সালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কেবিনেট মন্ত্রীর পদ লাভ করেন। ১৯৬২ সালে যখন তিনি তৃতীয়বার একই সমষ্টি থেকে জয়লাভ করেন, ১৯৬২ সালে তিনি কৃষিমন্ত্রীর পদ ছাড়াও বিধানসভায় কংগ্রেস দলের নেতা হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন। ১৯৬৭ সালে তিনি আবার সোনাই সমষ্টি থেকে চতুর্থবারের মত জয়লাভ করেন, কিন্তু বিমলা প্রসাদ চালিহার সাথে মনোমালিন্যের ফলে তিনি মন্ত্রিত্ব হারান॥ ১৯৬৭ সালে তিনি তিনি জাতীয় হজ কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়েছিলেন। ধুবরী সংসদ আসাল থেকে প্রতিদ্ধন্দিতা করার মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে তিনি জাতীয় রাজনীতিতে যোগ দেন এবং ভারত সরকারের শিল্পমন্ত্রীর পদ লাভ করেন॥

কর্ম সম্পাদনা

অবিভক্ত কাছাড়ের কৃষিশিল্প উন্নয়নে রাস্তাঘাট নির্মান ও সংস্কার, All India Radio স্থাপন, শিলচর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ভেটেরিনারি স্কুল, পাঁচ গ্রামের হিন্দুস্থান পেপার মিল, আনিপুরের সুগার মিল, শিলচরের রিজিওনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ যেটা এখন NIT নামে পরিচিত-- এ সমস্তই প্রয়াত মইনুল হক চৌধুরীর অবদান। তিনিই প্রথম কাছাড়ের জন্য বরাক ড্যামের প্রস্তাব করেছিলেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Obituary Reference" (পিডিএফ)Lok Sabha Debates। Second Series। 58 (1): 1–2। ৮ মার্চ ১৯৭৬। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুলাই ২০২১ 
  2. "How old is Moinul Hoque Choudhury"HowOld.co (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "Members Bioprofile"loksabhaph.nic.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১২ 
  4. "MOINUL HOQUE CHOUDHURY MEMORIAL SCIENCE COLLEGE, ALGAPUR, HAILAKANDI"www.mhcmsc.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১২