ভুভুজেলা (ইংরেজি: Vuvuzela) এক ধরনের শিঙ্গা জাতীয় বাদ্যযন্ত্র যা লেপাটাটা (সোয়ানা ভাষায়) এবং ইংরেজি ভাষায় প্লাস্টিক ট্রাম্পেট নামেও পরিচিত। এটি সাধারণত ৬৫ সেমি (২.১৩ ফিট) লম্বা এবং প্লাস্টিকের তৈরি হয়ে থাকে যা উচ্চস্বরে বিকট সুর উৎপন্ন করে । ব্রাজিল এবং অন্যান্য ল্যাটিন আমেরিকান দেশসমূহে এ ধরনেরই কমেটা নামক অপর একটি বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয়ে থাকে।

একটি লাল ভুভুজেলা.

দূরবর্তী গ্রামের গ্রামবাসীদের ডাকার জন্য পূর্বে ভুভুজেলা ব্যবহার করা হত।[১] এখন দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন ফুটবল ম্যাচে দর্শকদের মাঝে ভুভুজেলার ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায় এবং এ কারণে এটি দক্ষিণ আফ্রিকান ফুটবলের প্রতীকে পরিণত হয়েছে।[২] ভুভুজেলা বাদ্যযন্ত্রটির তীব্র ও জোরালো আওয়াজ এরই মধ্যে ২০১০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের দর্শক-শ্রোতাদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।[২]

তবে ভুভুজেলা তার তীব্র আওয়াজের কারণে এরই মধ্যে সমালোচনারও সম্মুখীন হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এর জোরালো আওয়াজ মানুষের শ্রবণ শক্তি হারানোর কারণ হতে পারে।[৩] একারণে নতুন ধরনের ভুভুজেলা বাজারে ছাড়া হয়েছে যা পূর্বের চাইতে ২০ ডেসিবল কম শব্দ উৎপন্ন করে।[৪]

দক্ষিণ আফ্রিকানদের ভুভুজেলা বাজাতে দেখা যাচ্ছে
প্রতিবেদনের ভয়েস অফ আমেরিকা, ফিচার বিশ্বকাপ ২০১০ এর জন্য

উৎপত্তি সম্পাদনা

ভুভুজেলা শব্দটির উৎপত্তি অজানা এবং এর উদ্ভাবকের পরিচয়ও বিরোধপূর্ণ। ২০১০ সালের শুরুর দিকে এ নিয়ে আরও বিতর্কের সূচনা হয়। ফ্রেডি সাদ্দাম মাকে দাবি করেন যে তিনিই সর্বপ্রথম ১৯৬৫ সালে সাইকেলের ভেঁপু থেকে ভুভুজেলা উদ্ভাবন করেন এবং এর সপক্ষে ১৯৭০,১৯৮০ ,১৯৯০ দশকে তোলা কিছু ছবিও পেশ করেন।[৫] প্লাস্টিক কোম্পানী মাসিনসিড্যান (Masincedane) দাবি করে তারাই সর্বপ্রথম ভুভুজেলা উদ্ভাবন করেন।[৬] এদিকে নাজারেথ ব্যাপ্টিস্ট চার্চও দাবি করে ভুভুজেলা তাদের চার্চের। [৭]

আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভুভুজেলার ব্যবহার সম্পাদনা

বিশ্ব ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা ভুভুজেলার অপব্যবহারের কারণ দেখিয়ে স্টেডিয়াম থেকে তা নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার ফুটবল প্রশাসন একে দক্ষিণ আফ্রিকান ফুটবলের অঙ্গ হিসেবে উপস্থাপন করে এবং শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন মহলের বিরোধিতা সত্ত্বেও ফিফা ২০০৯ কনফেডারেশন কাপ এবং ২০১০ বিশ্বকাপ ফুটবলে ভুভুজেলা ব্যবহারের অনুমতি দেয়।[৮][৯]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "V is for Vuvuzela"Fédération Internationale de Football Association। মে ১০, ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ৯, ২০০৮ 
  2. Swanepoel, De Wet; Hall III, James W; Koekemoer, Dirk (২০১০)। "Vuvuzela – good for your team, bad for your ears" (PDF)South African Medical Journal। Cape Town, South Africa। 100 (4): 99–100।  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  3. Swanepoel, D Wet; Hall III, James W (২০১০)। "Football match spectator sound exposure and effect on hearing: A pretest-post-test study"South African Medical Journal। Cape Town, South Africa। 100 (4)।  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  4. "New vuvuzelas turn down volume"Sport24। South Africa: 24.com। জুন ১৪, ২০১০। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ১৪, ২০১০ 
  5. Moyo, Phathisani (জানুয়ারি ৮, ২০১০)। "Vuvuzela creator blown off?"Mail & Guardian। South Africa। 
  6. Casert, Raf (জুন ১৮, ২০১০)। "Vuvuzela innovator cashes in on success at WCup"Associated Press। Yahoo! Inc। ২২ জুন ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১০ 
  7. Fisher, Jonah (১৬ জানুয়ারি ২০১০)। "Unholy row over World Cup trumpet"BBC News। British Broadcasting Corporation। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১৬, ২০১০ 
  8. Makhaye, Chris (জুলাই ১৩, ২০০৮)। "Blasts of joy as vuvuzelas unbanned"। IOL। জুলাই ২০, ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৫, ২০১০ 
  9. "Fifa gives Vuvuzelas thumbs up"News24। South Africa: 24.com। South African Press Association। জুলাই ১১, ২০০৮। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা