ভিভিএস লক্ষ্মণ

ভারতীয় ক্রিকেটার

ভাঙ্গিপুরাপ্পু বেংকাট সাই লক্ষ্মণ (তেলুগু: వి.వి.యెస్.లక్ష్మణ్, pronunciation; জন্ম: ১ নভেম্বর ১৯৭৪) ভি.ভি.এস. লক্ষ্মণ নামেই বেশি পরিচিত যিনি একজন ভারতীয় ক্রিকেটার এবং বর্তমানে একজন ক্রিকেট ভাষ্যকার।[১] তিনি ডান হাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং ডান হাতি অনিয়মিত অফ-স্পীন বোলার।

ভিভিএস লক্ষ্মণ
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম (1974-11-01) ১ নভেম্বর ১৯৭৪ (বয়স ৪৯)
হায়দ্রাবাদ, তেলেঙ্গানা, ভারত
ডাকনামভিভিএস, Very Very Special
ব্যাটিংয়ের ধরনডান হাতি
বোলিংয়ের ধরনডান হাতি অফ স্পিন
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২০৯)
২০ নভেম্বর ১৯৯৬ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট২৪ জানুয়ারি ২০১২ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১১২)
৯ এপ্রিল ১৯৯৮ বনাম জিম্বাওয়ে
শেষ ওডিআই৩ ডিসেম্বর ২০০৬ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯২–২০১২হায়দ্রাবাদ
২০০৭–২০০৯ল্যাঙ্কাশায়ার
২০০৮–২০১০হায়দ্রাবাদ ডেকান চার্জার্স
২০১১কোচি টাস্কার্স কেরালা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা Test ODI FC LA
ম্যাচ সংখ্যা ১৩৪ ৮৬ ২৬৭ ১৭৩
রানের সংখ্যা ৮,৭৮১ ২,৩৩৮ ১৯,৭৩০ ৫,০৭৮
ব্যাটিং গড় ৪৫.৫ ৩০.৭৬ ৫১.৬৪ ৩৪.৫৪
১০০/৫০ ১৭/৫৬ ৬/১০ ৫৫/৯৮ ৯/২৮
সর্বোচ্চ রান ২৮১ ১৩১ ৩৫৩ ১৫৩
বল করেছে ৩২৪ ৪২ ১,৮৩৫ ৬৯৮
উইকেট ২২
বোলিং গড় ৬৩.০০ ৩৪.২৭ ৬৮.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/২ ৩/১১ ২/৪২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৩৫/– ৩৯/– ২৭৭/১ ৭৪/–
উৎস: ESPNcricinfo, 30 January 2012

তাঁর দুর্দান্ত স্ট্রোকপ্লে আর টেল-এন্ডার( আট থেকে এগারো নম্বরে অবস্থানকারী ব্যাটসম্যান) ব্যাটসম্যানদের সাথে বড় ইনিংস খেলার ক্ষমতা এবং অসংখ্য হেরে যাওয়া ম্যাচ জয় করার নজির তাঁকে ক্রিকেট কিংবদন্তিদের মধ্যে একটি অনন্য মর্যাদায় দিয়েছে। তিনি তাঁর সময়ের সেরা দল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, তাঁর অনেকগুলি দুর্দান্ত ক্রীড়াকৌশল প্রদর্শন নথি রয়েছে যেমন ২০০১-এর ইডেন গার্ডেনে তাঁদের বিপক্ষে ২৮১ করা তাঁর রান সর্বকালের সেরা টেস্ট ইনিংস হিসাবে বিবেচিত হয়।[২] পরবর্তীকালে, তিনি অনেক পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছেন, যেমন ২০০১ সালে 'অর্জুন' পুরস্কার, ২০১১ সালে 'পদ্মশ্রী', ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার।[৩] তিনি এমন কয়েকজন খেলোয়াড়ের মধ্যে পড়েন যিনি ক্রিকেট বিশ্বকাপে কখনও না খেলে[৪] ১০০ টেস্ট খেলেছেন। উইকেটের মধ্যে তুলনামূলকভাবে ধীরে দৌড়নো সত্ত্বেও তিনি তাঁর মাস্টার স্ট্রোক খেলার ক্ষমতায় জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার জন্য নিজেকে বারবার প্রমাণ করেছেন। তিনি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে হায়দারবাদের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটেও ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে খেলেন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধনী মরসুমে তিনি ডেকান চার্জার্স দলের অধিনায়কত্ব করেন।[৫] পরে তিনি কোচি টাস্কারস দলের হয়ে খেলেছিলেন। তিনি ক্রিকেট কোচিংয়ের সংস্থা 'আইএমডিআই - আই এম দ্যা আই' সাথে যুক্ত আছেন।[৬][৭][৮] ২০০২ সালে, উইজডেনের বর্ষসেরা পাঁচ ক্রিকেটারের মধ্যে তিনি একজন ছিলেন। ২০১২ সালে, লক্ষ্মণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন।[৯]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

১ নভেম্বর, ১৯৭৪ তারিখে নামকরা চিকিৎসক ডাঃ শান্তরাম এবং বিজয়ওয়াদার সত্যভামা[১০] দম্পতির সন্তান ভি.ভি.এস. লক্ষ্মণ অন্ধ্র প্রদেশের হায়দরাবাদে জন্মগ্রহণ করেন।[১১][১২] লক্ষ্মণ হলেন ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ড।সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ নাতির পুত্রের ভাইপো।[১২] লক্ষ্মণ হায়দরাবাদের লিটল ফ্লাওয়ার হাই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। স্নাতকোত্তর পড়াশোনার জন্য তিনি মেডিকেল স্কুলে যোগদান করলেও তিনি ক্রিকেটকে ক্যারিয়ার হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ তারিখে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন স্নাতক, গুন্টুর জি আর শায়লাজকে বিয়ে করেছিলেন।[১০] তাঁদের দুটি সন্তান - পুত্র সর্বজিৎ এবং মেয়ে অচিন্ত্যা।

কীর্তি ও সম্মাননা সম্পাদনা

২০০১ সালে 'অর্জুন' পুরস্কার। ২০০২ সালে, উইজডেনের বর্ষসেরা পুরস্কার। ২০১১ সালে 'পদ্মশ্রী', ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার।[৩] একক ওয়ানডে সিরিজে সর্বাধিক সংখ্যক সেঞ্চুরি (৩) গড়ার কয়েকজন ক্রিকেটারের মধ্যে তিনি রয়েছেন।[১৩] ২০০১ সালে কলকাতায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৮১ রানের ইনিংসটি উইজডেনের খেলার ইতিহাসে ১০০ টি দুর্দান্ত টেস্ট ইনিংসের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রাখা হয়েছে। একক ওয়ানডে সিরিজে উইকেটকিপারের ছাড়া সবচেয়ে বেশি ক্যাচ (১২) নেওয়ার রেকর্ড তাঁরই রয়েছে, তিনি এই রেকর্ডটি অ্যালান বর্ডারের সাথে ভাগ করেছেন।[১৪] তিনি রাহুল দ্রাবিড়ের সাথে টেস্ট ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ (৩৬৬ রান) করেন, যা কোনও এক উইকেটের পার্টনারশিপের বিশ্ব রেকর্ড। লক্ষ্মণ একটি টেস্ট ম্যাচের একক অধিবেশনে ১০০ রান সংগ্রহ করা ছয় ভারতীয় টেস্ট খেলোয়াড়ের মধ্যে একজন। তিনি দ্বিতীয় ভারতীয় খেলোয়াড় যিনি একই মাঠে ১০০০ বা তারও বেশি রান করেছেন। তিনি ইডেন গার্ডেন ১১০.৬৩ গড়ে মোট ১২১৭ রান করেছিলেন। তিনি একমাত্র ভারতীয় খেলোয়াড় যিনি একই মাঠে ১০০ এর বেশি গড়ে ১০০০ রান করেছেন। একাধিক বার টেস্টের উভয় ইনিংসে অপরাজিত ৫০ করার রেকর্ড মাত্র ৩ জন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ের মধ্যে তিনি একমাত্র ভারতীয় খেলোয়াড়, অন্যরা শিবনারায়ণ চন্দরপল এবং স্টিভ স্মিথ। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, নিউ দিল্লির টেরি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রিতে ভূষিত করেছে।[১৫][১৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "VVS Laxman"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯ 
  2. "Laxman's Kolkata epic voted best Test performance"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯ 
  3. "VVS Laxman conferred with Padma Shri"Zee News। ২৫ জানুয়ারি ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯ 
  4. https://www.deccanchronicle.com/sports/cricket/160616/4-terrific-cricketers-who-never-played-world-cup.html
  5. "Deccan Chargers Squad"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯ 
  6. "imd1 on-boards VVS Laxman as a Legend for cricket coaching offerings; joins hands with photography training community DCP Expeditions" 
  7. "imd1 on-boards VVS Laxman as a Legend for cricket coaching offerings"। ৬ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৯ 
  8. "imd1 (I Am The 1), on-boards VVS Laxman as a Legend for cricket coaching offerings; also joins hands with India's biggest photography training community DCP Expeditions" [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  9. "Laxman retires from international cricket"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১২ 
  10. "Cricket"The Times of India 
  11. "'Blessed to be born in Hyderabad, city modern, values intact'" 
  12. "Who is VVS Laxman?"। NDTV.com। ২০১২-০৮-২০। ২০১২-১১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-০৭ 
  13. "Records | One-Day Internationals | Batting records | Most hundreds in a series | ESPN Cricinfo"। Stats.espncricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-০৭ 
  14. "Records | One-Day Internationals | Fielding records | Most catches in a series | ESPN Cricinfo"। Stats.espncricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-০৭ 
  15. "VVS Laxman conferred with honorary doctorate degree by TERI University"Deccan Chronicle। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯ 
  16. India, Press Trust of (৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "VVS Laxman awarded honourary doctorate"Cricket Country। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা