২০১১ সালের আদমশুমারী অনু্যায়ী ভারতবর্ষের বর্তমান জনসংখ্যা ১২১ কোটি যার মধ্যে ৬২কোটি পুরুষ ও ৫৮কোটি নারী।[১] রাজ্যভেদে এখানে জনস্বাস্থ্যের অবস্থার অসামঞ্জস্য লক্ষনীয়। যেমন, কেরালা রাজ্যে শিশুমৃত্যুর হার হাজারে ৬ জন[২] কিন্তু উত্তরপ্রদেশে ঐ হার হাজারে ৬৪ জন[৩]

প্রধান স্বাস্থ্য সূচক সম্পাদনা

ভারতবর্ষের মানুষের গড় আয়ু ১৯৭০-৭৫ সালে ৪৯.৭ বছর থেকে বেড়ে ২০১০-১৪ সালে ৬৭.৯ বছর হয়েছে। এর মধ্যে মহিলাদের গড় আয়ু ৬৯.৬ বছর ও পুরুষদের ৬৬.৪। ২০১৮ সালে সাধারণ গড় আয়ু ৬৯.১ বছর।[৪]

ভারতে শিশুমৃত্যুর হার আগের তুলনায় অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। এই হার ১৯৯৪ সালে প্রতি হাজারে ৭৪ থেকে কমে ২০১৫ সালে ৩৭ এ দাঁড়িয়েছে। তবে, ২০১৫ সালের হিসাবে এই হারে গ্রাম (৪১) এবং শহরের (২৫) পরিস্থিতিতে পার্থক্য এখনও যে অনেকটাই বেশি তা বলা বাহুল্য।[১] ২০১৬ সালে শিশুমৃত্যুর হার হাজারে ৩৪.৬ বলে অনুমান করা হয়।[৪]

ভারতবর্ষে ১৯৯৪ পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর হার ছিল প্রতি হাজারে ১১৩ জন যেখানে ২০১৮ সালে সেই হার কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি হাজারে ৪১.১ জন।[৪]

শিশুর মায়ের মৃত্যুর হার ২০০৭-২০০৯ সালে ছিল প্রতি লাখে ২১২ জন সেই হাট ২০১১-২০১৩ সালে কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি লাখে ১৬৭ জন। ২০১১-২০১৩ সালের হিসাব অনুযায়ী কেরল ও আসাম রাজ্যের এই হারের মধ্যে বিস্তর ফারাক লক্ষ্য করা যায়। কেরল রাজ্যের শিশুর মায়ের মৃত্যুর হার প্রতি লাখে ৬১ জন হলেও আসাম রাজ্যে এই একই হার প্রতি লাখে ৩০০ জন।[১] ২০১৩ সালের শিশুর মায়ের মৃত্যুর আনুমানিক হার ছিল প্রতি লাখে ১৯০ জন।[৪]

২০১৫ সালে এদেশের গ্রামাঞ্চলে সন্তান উৎপাদনের হার ছিল ২.৩ এবং শহরাঞ্চলে এই হার ছিল ১.৮।[১]

২০১৬ সালের হিসেব অনুযায়ী ভারতের যেকোনো বয়সের এবং যেকোন লিঙ্গের নাগরিকদের "অসুস্থতার কারণে নষ্ট জীবনকাল" বা সংক্ষেপে ড্যালি(DALY - ডিসেবিলিটি অ্যাডজাস্টেড লাইফ ইয়ার ) -এর সাধারণ কারণগুলি ছিল প্রথমত ইসকেমিক হৃদপিন্ডের সমস্যা(এর পরিমাণ এর ৮.৬৬ শতাংশ), দ্বিতীয়তঃ ফুস্ফুসের সমস্যা বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (মোট পরিমাণের ৪.৮১ শতাংশ), তৃতীয়তঃ ডায়ারিয়া (মোট পরিমাণ এর ৪.৬৪ শতাংশ) এবং চতুর্থত, শ্বাসনালীর সংক্রমণ বা লোয়ার রেস্পিরাটরি ইনফেকশন (মোট পরিমাণের ৪.৩৫ শতাংশ)।[৫]

শিশুমৃত্যুর হার ভারতবর্ষের সরকারের একটা বড় সমস্যা। পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায় যে ভারতে ৫ বছরের কমবয়সী শিশুর মৃত্যুর কারণগুলির মধ্যে দ্বিতীয় প্রধান কারণ হল কয়েকটি প্রতিরোধযোগ্য অসুখ যেমন ডায়ারিয়া, শ্বাসনালীর সংক্রমণ ইত্যাদি। ২০১৬ সালের হিসেবে প্রতি ১লাখে ২২৫৯৮.৭১ ড্যালি এই কারণে নষ্ট হয়।[৫]

স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পাদনা

অপুষ্টি সম্পাদনা

অপুষ্টি বলতে আমরা বুঝি মানুষ খাদ্যগ্রহণের সঙ্গে যে শক্তি এবং পুষ্টি উপাদান সমূহ গ্রহণ করে তার স্বল্পতা, বাহুল্যতা অথবা অসামঞ্জস্যতা। অপুষ্টি শব্দটি শরীরের দুটো অবস্থাকে নির্দেশ করে। প্রথমটা হচ্ছে অপর্যাপ্ত পুষ্টি বা পুষ্টি সীমার নিম্নে অবস্থা যার মধ্যে পড়ে - স্টান্টিং বা খর্বতা(বয়স অনুযায়ী কম উচ্চতা), উচ্চতা অনুযায়ী কম ওজন, বয়স অনুযায়ী কম ওজন এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানের অপ্রতুলতা। অপরটি হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত ওজন এবং খাদ্যাভ্যাস জনিত অসংক্রামক ব্যাধি সমূহ যেমন হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সার।[৬]

২০০৫ এর রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতের তিন বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ৬০ শতাংশ শিশুই অপুষ্টির শিকার। আফ্রিকার সাহারা-নিম্ন এলাকার পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই অপুষ্টি ২৮ শতাংশ যা ভারতের থেকে অনেক কম।[৭] বিশ্বব্যাংকের হিসেব বলে যে সমগ্র পৃথিবীর মধ্যে যে সমস্ত দেশের শিশুরা সবচাইতে বেশি অপুষ্টির শিকার ভারতবর্ষ তাদের মধ্যে অন্যতম প্রধান এবং তা আফ্রিকার সাহারা-নিম্ন এর অপুষ্ট শিশুদের সংখ্যার দ্বিগুণ। বিশ্বের অভুক্ত মানুষদের সূচি অনুযায়ী ভারতের স্থান ৬৭। পৃথিবীর সবচাইতে বেশি অভুক্ত মানুষের দেশ গুলির সংখ্যা মোট ৮০। ইহা এমনকি উত্তর কোরিয়া এবং সুদানের থেকেও নিচে। ভারতের ৪৪ শতাংশ পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় কম তাছাড়া ৭২ শতাংশ শিশু রক্তাল্পতার শিকার।[৮] এটা ধরে নেওয়া যায় যে সমস্ত পৃথিবীর তিনজন অপুষ্ট শিশু দের মধ্যে একজন ভারতবর্ষের অধিবাসী।

নিচের রাজ্যগুলিতে মানুষের অপুষ্টি সুস্পষ্ট।[৮]

  1. উত্তর প্রদেশ: ভারতের সবচাইতে ঘনবসতিপূর্ণ এই রাজ্যের পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের বেশিরভাগই শারীরিক বিকাশ এবং বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত। কারণ এই অপুষ্টি।
  2. তামিলনাড়ু: এই রাজ্যটিতে শিক্ষিতের সংখ্যা বেশি হওয়া সত্ত্বেও শিশুদের অপুষ্টি জনিত সমস্যা খুবই স্পষ্ট জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষার বক্তব্য অনুযায়ী এখানে ২৩ শতাংশ শিশুর ওজন স্বাভাবিকের থেকে কম যেখানে চেন্নাইয়ের শিশুদের ২৫% বৃদ্ধি যথেষ্ট বাধাপ্রাপ্ত।
  3. মধ্যপ্রদেশ: ২০১৫ সালের হিসেব অনুযায়ী মধ্যপ্রদেশের অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা ভারতের মধ্যে সবচাইতে বেশি তার মধ্যে ছয় বছরের কম বয়সী শিশুদের ৭৪.১ শতাংশ রক্তাল্পতার শিকার এবং ৬০ শতাংশ অপুষ্টিজনিত রোগ আক্রান্ত।
  4. ঝাড়খণ্ড এবং বিহার: ঝাড়খণ্ড ভারতের দ্বিতীয় অপুষ্ট শিশুর রাজ্য পরিমাণ ৫৬.৫ শতাংশ ও বিহারে পরিমাণ ৫৫.৯ শতাংশ।

অপুষ্টির ধরণ সম্পাদনা

শিশু অপুষ্টি সম্পাদনা

৫ বছরের কম বয়সী শিশু[১০]
অবস্থা ব্যাপকতা %
জন্মকালীন ওজন কম ২২
কোয়াশিওরকোর/ম্যারাস্মাস# <১
বিটটস্ স্পট# ০.৮-১.০
লৌহ খনিজের অভাবে রক্তাল্পতা (৬–৫৯ মাস) ৭০.০
ত্তজনে কম(বয়সের অনুপাতে)* (<৫ বছর)# ৪২.৬
উচ্চতায় কম(বয়সের অনুপাতে)* (<5 years)# 48.0
ওজনে কম(উচ্চতার অনুপাতে)*# ২০.০
শৈশবে স্থুলত্ব ৬-৩০

* : <Median -2SD (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাপকাঠি অনুযায়ী)

# : NNMB গ্রামীণ সমীক্ষ্মা - ২০০৫-০৬

আমরা একটি সুপুষ্ট শিশু তাকেই বলব বয়স এবং লিঙ্গ অনুযায়ী যার ওজন এবং উচ্চতা স্বাভাবিক মাত্রার মধ্যে আছে।[১১] একটি শিশুর দৈনন্দিন খাদ্যাভাসে যদি যথেষ্ট পুষ্টি না থাকে তবে সেটা কেবলমাত্র তার শারীরিক গঠন এবং বুদ্ধির বিকাশ দ্বারা প্রকাশিত হয় না, তার নশ্বরতা, রোগ-প্রতিরোধ অক্ষমতা, জ্ঞান এবং শিক্ষাগ্রহণের অসমর্থতার ঝুঁকিও অনেক বৃদ্ধি পায়। যারা এরকম অপুষ্টির শিকার তাদের জনন ক্ষমতায়ও এর প্রভাব দেখা দেয়। এই অপুষ্টির ফলে শারীরিক বিকাশ বিঘ্নিত হয় এবং শিশুর বুদ্ধিমত্তার বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়। পুষ্টির অভাবে অসুস্থ শিশুরা, বিশেষত যারা রক্তাল্পতার শিকার, তাদের বিদ্যালয়ের প্রথম বছরেই শিক্ষা গ্রহণ ক্ষমতার অভাব স্পষ্ট ধরা পড়ে।.[৯]

প্রাপ্তবয়স্কদের অপুষ্টি সম্পাদনা

প্রাপ্তবয়স্ক (ব্যাপকতা)[১০]
অবস্থা একক পুরুষ নারী
শহর গ্রাম# আদিবাসী^ শহর গ্রাম# আদিবাসী^
গুরুতর শক্তির অভাব (BMI < ১৮.৫) % ৩৩.২ ৪০.০ ৩৬.০ ৪৯.০
নারীর রক্তাল্পতা (অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ) % ৭৫
আয়োডিনের অভাব - গয়টার দশ লাখ ৫৪
আয়োডিনের অভাব - ক্রেটিনিজম দশ লাখ ২.২
আয়োডিনের অভাব -মৃতসন্তান প্রসব(নবজাতকের মৃত্যু) ৯০,০০০
স্থুলত্ব জনিত দুরারোগ্য ব্যাধি (BMI >২৫) % ৩৬.০ ৭.৮ ২.৪ ৪০.০ ১০.৯ ৩.২
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ % ৩৫.০ ২৫.০ ২৫.০ ৩৫.০ ২৪.০ ২৩.০
ডায়াবেটিস মেলিটাস বা মধুমেহ (২০০৬) % ১৬.০ ৫.০ ১৬ ৫.০
করোনারি আর্টারি ডিজিজ % ৭-৯ ৩-৫ ৭-৯ ৩-৫
ক্যান্সারের হার প্রতি দশ লাখে ১১৩ ১২৩

* : <Median -2SD of WHO Child Growth Standards

# : NNMB Rural Survey - 2005-06

^ : NNMB Tribal Survey - 2008-09

নারীদের সামাজিক পদমর্যাদা কম বলে পুরুষদের তুলনায় নারীদের অপুষ্টিজনিত ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। এইরকম সাংস্কৃতিক পক্ষপাতিত্বের ফলস্বরুপ ভারতবর্ষের এক-তৃতীয়াংশ মহিলা স্বাভাবিকের তুলনায় কম ওজনবিশিষ্ট হয় এই সমস্ত নারীদের প্রতি (বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়) যত্নশীলতার অভাবের দরুন তাদের প্রসূত সন্তান অসুস্থ এবং রোগগ্রস্ত হয়।[১২]

সংক্রামক রোগ সমূহ সম্পাদনা

ভারতবর্ষের ডেঙ্গু জ্বর, হেপাটাইটিস-বি, ম্যালেরিয়া এবং নিউমোনিয়া রোগের উপদ্রব এর কারণ মানুষের শরীরে ওষুধের অকার্যকারিতা বেড়ে যাওয়া। [১৩]

 
ন্যাশনাল হেলথ প্রোফাইল ২০১৭ অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ভারতে সংক্রামক রোগে মৃত্যুর বিস্তার/বন্টন এই ছকে দেখানো হচ্ছে
 
ন্যাশনাল হেলথ প্রোফাইল ২০১৭ অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ভারতে সংক্রামক রোগে মৃত্যুর বিস্তার/বন্টন এই ছকে দেখানো হচ্ছে

২০১১ সালে ভারতে ভারতের টিবি (T.D.R) রোগের একটি সম্পূর্ণ ওষুধ প্রতিরোধী প্রকারের প্রাদূর্ভাব হয়েছে।[১৪] বিশ্বের এইচআইভি এইডস রোগাক্রান্ত দেশগুলির মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম দেশ ভারতবর্ষ। ভারতের জাতীয় এইডস নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বা ন্যাশনাল এইডস কন্ট্রোল অরগানাইজেশন একটি সরকারি সংস্থা হিসেবে এইচআইভি এইডসের ব্যাপকতা হ্রাস করতে সবরকম চেষ্টায় রত।[১৫] ডায়ারিয়া বা পেটের অসুখজনিত রোগগুলি শিশুমৃত্যুর প্রাথমিক কারণ।[১৬] এই সমস্ত রোগগুলির কারণ বলা যেতে পারে অনুন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অপর্যাপ্ত শুদ্ধ এবং নিরাপদ পানীয় জল।[১৭] বিশ্বে রেবিস বা জলাতংক জাতীয় রোগের প্রাদুর্ভাব ভারতবর্ষের সবচাইতে বেশি। ম্যালেরিয়া একটি মৌসুমী স্বাস্থ্য সমস্যা এবং এই সমস্যা বহুদিন থেকেই ভারতে বিদ্যমান আছে। উড়িষ্যায় গ্রামাঞ্চলে এই ম্যালেরিয়া রোগের প্রকোপ বেশি এবং মৃত্যুর হার বেশি। সাধারণভাবে বলা যায় যে এই রোগ ২০১২-১৩ সালে অনেক কমে গিয়েছিল কিন্তু আবার ২০১৪ সালে সামান্য বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় আবার ২০১৫ সাল থেকে এই রোগের প্রকোপ হ্রাস পেতে থাকে। কালাজ্বর একটি সাংঘাতিক এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশ্রয়ী জীবাণুঘটিত মারণরোগ। বিহার রাজ্যে ২০১৬ সালে এর খুব বাড়াবাড়ি(৭৬%) হয়েছিল। ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়া এগুলো এডিস মশা বাহিত রোগ এবং ভারতের এটা বড় সমস্যা। ডেঙ্গু রোগের আকস্মিক আবির্ভাব ঘটেছিল ১৯৫০ সালে এবং তারপর থেকে চলে আসছে কিন্তু গত দুই দশক ধরে প্রচন্ডতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৬ সালে ভারতে চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৮,২৬৪। এই একই বছরে চিকেন পক্স এর ঘটনা ছিল ৬১,১১৮টি এবং তার মধ্যে মৃতের সংখ্যা ৬০। [১]

২০১২ সালে ভারত প্রথমবার পোলিওমুক্ত দেশ হিসেবে গণ্য হয়েছে।[১৮] এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে ১৯৯৫-৯৬ সালে সরকারি প্রচেষ্টায় শুরু হওয়া পালস পোলিও কর্মসূচী।[১৯]

শিশুমৃত্যুর উচ্চহার সম্পাদনা

বিগত ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্য পরিকল্পনার উন্নতি সত্ত্বেও ভারতে নবজাতকদের প্রতি অপর্যাপ্ত যত্ন এবং প্রসবকালীন অব্যবস্থার কারণে শিশু রোগ এবং শিশু মৃত্যু বর্তমান। প্রতি বছর কুড়ি লক্ষেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয় বিভিন্ন রকম প্রতিরোধযোগ্য সংক্রমণে।[২০]

প্রতিবছর প্রায় ১.৭২ মিলিয়ন শিশুর এক বছর বয়সে পৌঁছানোর আগেই মৃত্যু হয়।[২১] পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু এবং একদম ছোট শিশুদের মৃত্যুহার ক্রমহ্রাসমান, ১৯৭০ সালে ওই হার ছিল প্রতি হাজারে যথাক্রমে ২০২ এবং ১৯০, ২০০৯ সালে ছিল যথাক্রমে ৬৪ এবং ৫০, ২০১৮ সালে মোট মৃত্যুহার ছিল ৪১.১ এবং ২০১৬ সালে সেই হার কমে হয়েছে ৩৪.৬।[৪][২১][২২] যাইহোক এই ক্রমহ্রাসমানতা খুবই ধীর গতিতে এগিয়েছে। ইমিউনাইজেশন বাজেটে ঘাটতির জন্য এখনও পর্যন্ত মাত্র ৪৩.৫ শতাংশ শিশুকে সম্পূর্ণ টীকাকরণ করানো গেছে।[২৩] ফিউচার হেলথ সিস্টেম কনসর্টিয়াম এর পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার উপর করা এক সমীক্ষায় জানা গেছে যে এই টিকাদান প্রক্রিয়ায় অধিক এলাকার অন্তর্ভুক্তি গঠনের পথে বাধা হচ্ছে প্রথমত ওই এলাকার ভৌগোলিক অবস্থান, দ্বিতীয়ত অপর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী এবং তৃতীয়তঃ টিকাদান গ্রহণের প্রয়োজনানুভুতির অভাব।[২৪] গ্রামীণে এলাকাগুলিতে হাসপাতাল, রাস্তাঘাট, জলের ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পরিকাঠামোজনিত ত্রূটি বর্তমান। স্বাস্থ্যসেবা কর্মীর অভাব, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এবং নবজাতকদের প্রয়োজনীয় যত্নের বিষয়ে দুর্বল ব্যবস্থাও অধিকহারে শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ।[২১]

পরিচ্ছন্নতা সম্পাদনা

২০০৮ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতবর্ষে ১২২ মিলিয়নেরও বেশি পরিবারের কোন শৌচালয় নেই, ৩৩% এর কোন ল্যাট্রিন বা পায়খানা নেই ও ৫০ শতাংশের উপরে মানুষ (প্রায় ৬৩৮ মিলিয়ন) খোলা জায়গায় মলত্যাগ করে।[২৫] এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই অপরিচ্ছন্নতার হার বাংলাদেশ এবং ব্রাজিল (৭ শতাংশ) এবং চীনের(৩৪ শতাংশ) থেকে অনেক বেশি।[২৫] যদিও ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে প্রায় ২১১ মিলিয়ন মানুষ উন্নত স্বাস্থ্যপরিষেবা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সুযোগ পেয়েছে কিন্তু তার মধ্যে মাত্র ৩১ শতাংশ মানুষই এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পেরেছে।[২৫] কেবলমাত্র ১১ শতাংশ ভারতীয় গ্রাম্য করিবার নিরাপদ অবস্থানে মলত্যাগ করে যেখানে গ্রামের জনসংখ্যার ৮০% মানুষ উন্মুক্ত স্থানে মাঠে-ঘাটে মলত্যাগ করে।[২৫] উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ এর দরুন নানারকম পরজীবী এবং জীবাণুঘটিত সংক্রামক রোগ এবং অপুষ্টি প্রভাব বিস্তার করে।[২৬]

এখানকার দুর্বল স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং বিপদজনক পানীয় জলের কারণে কয়েক লাখ মানুষ বিভিন্ন রকম পেট সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হয় এবং অনেক মানুষ হেপাটাইটিস-এ, আন্ত্রিক জ্বর, আন্ত্রিক কৃমির সংক্রমণ জনিত রোগে আক্রান্ত হয়।[২৭]

১৯৯০ সালে জনসংখ্যার ৬৮ শতাংশ থেকে ২০০৮ সালে ৮৮ শতাংশ মানুষের নিকট নিরাপদ এবং উন্নত মানের জল পাওয়ার সুযোগ এসেছে।[২৫] যদিও বস্তি এলাকায় মাত্র ২৬ শতাংশ মানুষ শুদ্ধ পানীয় জল পায়[২৬] এবং মোট জনসংখ্যার মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষের বাড়িতে পানীয় জলের ব্যবস্থা আছে।[২৫] এই সমস্যার বৃদ্ধি ঘটেছে কারণ সেচের কাজের জন্য জল কাজে লাগানো হচ্ছে বলে মাটির নিচে জল স্তর নেমে যাচ্ছে।[২৫] অপর্যাপ্ত পরিবেশ সংরক্ষণ ব্যবস্থা (বিশেষ করে জলের উৎস স্থানে), ভূগর্ভস্থ জল দূষণ, অতিরিক্ত আর্সেনিক এবং ক্লোরাইড মিশ্রিত পানীয় জল ইত্যাদি ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পক্ষে বিপদ সংকেত বহন করছে।[২৫]

নারীস্বাস্থ্য সমস্যা সম্পাদনা

খুব কম সংখ্যক মহিলা গর্ভাবস্থায় দক্ষ জন্মকালীন পরিচারিকা এবং দক্ষ আপৎকালীন ধাত্রীবিদ্যা পারদর্শী কর্মী পায়। তাছাড়া মাত্র ১৫ শতাংশ মায়ের গর্ভবতী অবস্থায় প্রয়োজনীয় যত্ন পায় এবং মাত্র ৫৮% গর্ভবতী মহিলা প্রয়োজনীয় আয়রন ট্যাবলেট এবং ফোলেট ট্যাবলেট বা সিরাপ পায়।[২০] নারীস্বাস্থ্যের নিম্নলিখিত সমস্যাগুলি ভারতে উল্লেখযোগ্য।

  • অপুষ্টি : ভারতে মেয়েদের অপুষ্টির মূল কারণ হ'ল পরিবারের সকলের শেষে খাওয়ার রীতি যা মহিলাদের গর্ভাবস্থায় এবং স্তন্যদানের সময় শরীরের ক্ষতি করে।[২৮]
  • স্তন ক্যান্সার : ইহা ভারতের নারীদের অন্যতম প্রধান মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
  • মাতৃকালীন মৃত্যু : গ্রামীণ অঞ্চলে ভারতীয় মাতৃমৃত্যুর হার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে বেশির দিকে।[২৮]

গ্রামীণ স্বাস্থ্য সম্পাদনা

পল্লী বা গ্রামীণ ভারতে ভারতের মোট জনসংখ্যার ৬৮% এরও বেশি মানুষ রয়েছে,[২৯] এবং গ্রামীণ অঞ্চলের সমস্ত বাসিন্দার অর্ধেক দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, স্বাস্থ্যসেবা এবং পরিষেবাগুলি পাওয়ার জন্য তারা প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলেছে।[৩০] গ্রামীণ লোকেরা প্রধানত যে স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলির মুখোমুখি হন তা হ'ল ম্যালিগ্ন্যান্ট ম্যালেরিয়া থেকে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস পর্যন্ত, খারাপভাবে সংক্রামিত ক্ষত থেকে ক্যান্সার [৩১] প্রসবোত্তর প্রসূতি অসুস্থতা একটি গুরুতর সমস্যা এবং বিশেষত গ্রাম্য ভারতে যেখানে সবকিছুরই অভাব দেখা যায় এবং ইহা বহুক্ষেত্রে মাতৃমৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।[৩২] ২০০৯ সালে পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ৪৩.৯% মা তাদের প্রসবের ছয় সপ্তাহ পরে প্রসবোত্তর অসুস্থতা বোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন।[৩৩] উপরন্তু, সরকারী সংস্থানগুলির সীমাবদ্ধতার কারণে, স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহের বেশিরভাগই বিভিন্ন অলাভজনক সংস্থা থেকে আসে।

শহরাঞ্চলে স্বাস্থ্য সম্পাদনা

দ্রুত শহরায়ন ও অসামঞ্জস্য সম্পাদনা

২০০১ সালে ভারতের শহরের জনসংখ্যা ২৮৫ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ২০১১ সালে ৩৭৭ মিলিয়ন (৩১%) হয়েছে। ২০২৬ এর মধ্যে এটি ৩৩৫ মিলিয়ন (৩৮%) হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের অনুমান ২০৫০ সালের মধ্যে ৮৭৫ মিলিয়ন মানুষ ভারতীয় শহরগুলিতে বসবাস করবে। ভারতের শহরাঞ্চল যদি একটি পৃথক দেশ হত তবে এটি চীন, ভারত এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পরে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম দেশ হয়ে উঠত। ২০১১ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুসারে, ভারতে প্রায় ৫০% শহুরে বাসিন্দা শহরে বাস করেন এমন শহরে যার জনসংখ্যা ৫ লাখেরও কম। বৃহত্তর মুম্বই, কলকাতা, দিল্লি এবং চেন্নাই - চারটি বৃহত্তম নগর ভারতের শহুরে জনসংখ্যার ১৫% এর বাসস্থান।[৩৪]

 
উড়িষ্যায় সরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত কেন্দ্রে প্রসবকালীন স্বাস্থ্যপরিষেবা পাওয়ার পর একটি শিশু ও তার মা

শহরের শিশুদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতিতে অসামঞ্জস্য সম্পাদনা

২০০৫-০৬-এর জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা তথ্য(বিশ্লেষণের জন্য সর্বাধিক উপলব্ধ) দেখায় যে ভারতের নগর জনসংখ্যার মধ্যে - দরিদ্রতম চতুর্থাংশ আট রাজ্যের জন্য পাঁচ বছরের কম বয়সী মৃত্যুর হার, ভারতের সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য উত্তরপ্রদেশে (হাজারে ১১০), যেখানে ২০১১ সালের আদমশুমারিতে ৪৪.৪ মিলিয়ন শহুরে বাসিন্দা ছিল।[৩৫] এরপরে আছে রাজস্থান (১০২), মধ্য প্রদেশ (৯৯), ঝাড়খণ্ড (৯৯) এবং বিহার (৮৫), দিল্লি (৭৪), এবং মহারাষ্ট্র (৫০)। পাঁচ বছরের কম বয়সী মৃত্যুর হার বিশ্লেষণের জন্য পশ্চিমবঙ্গের স্যাম্পেল বা নমুনা খুব ছোট ছিল। উত্তর প্রদেশে মহারাষ্ট্র ও মধ্য প্রদেশের বাকী নগর জনগোষ্ঠীর চেয়ে চারগুণ বেশি ছিল। মধ্য প্রদেশে, তার দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী মৃত্যুর হার তার নগরের বাকী জনসংখ্যার চেয়ে তিনগুণ বেশি ছিল।[৩৬]

মায়েদের স্বাস্থ্য পরিষেবায় অসামঞ্জস্য সম্পাদনা

ভারতের শহুরে জনসংখ্যার দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রসূতি মায়েদের মধ্যে খুব কমই পর্যাপ্ত যত্ন পেয়ে থাকে; গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে মাত্র ৫৪% অন্তত তিনটি প্রাক-প্রসবকালীন চেক-আপ বা স্বাস্থ্য পরিষেবার পরামর্শ পায় যেখানে বাকি এলাকার জন্য এই হার ৮৩%। দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর এক চতুর্থাংশেরও কম মায়েরা বিহারে (১২ শতাংশ), এবং উত্তরপ্রদেশে (২০ শতাংশ) পর্যাপ্ত প্রসূতি যত্ন পেয়েছেন, এবং মধ্য প্রদেশে (৩৮ শতাংশ), দিল্লি (৪১ শতাংশ), রাজস্থানে (৪২) শতাংশ), এবং ঝাড়খণ্ড (৪৮ শতাংশ) এই হার ৫০% এরও কম। বরঞ্চ দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর মধ্যে গর্ভাবস্থায় তিন বা ততোধিক প্রাক-প্রসবকালীন চেক-আপ নেওয়া মায়েদের অনুপাত পশ্চিমবঙ্গে (১ শতাংশ), মহারাষ্ট্রে (৭৩ শতাংশ) ভাল।[৩৬]

শহরাঞ্চলের দরিদ্রদের অপুষ্টির উচ্চহার সম্পাদনা

২০০৫-০৬-এ ভারতের শহরের দরিদ্রতম এলাকার ৫৪% শিশুর বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত এবং ৪৭% স্বল্প ওজনের ছিল, আর শহরের বাকী অংশের জন্য ওই হার যথাক্রমে ৩৩ শতাংশ এবং ২৬ শতাংশ ছিল। দরিদ্রতম এলাকার পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশুদের বাধাপ্রাপ্ত বৃদ্ধি উত্তর প্রদেশে ৬৪ শতাংশ, মহারাষ্ট্রে ৬৩ শতাংশ, বিহারে ৫৮ শতাংশ, দিল্লিতে ৫৮ শতাংশ, মধ্য প্রদেশে ৫৫ শতাংশ, রাজস্থানে ৫৩ শতাংশ এবং ঝাড়খণ্ডে ৪৯ শতাংশ(অপেক্ষাকৃত উন্নত)। এমনকি অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থার রাজ্যে যেমন পশ্চিমবঙ্গেও পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের অর্ধেকের কাছাকাছি বাধাপ্রাপ্ত বৃদ্ধি(৪৮ শতাংশ) দেখা যায়।[৩৬]

অনুকূল পরিবেশের অভাবে শিশুর পুষ্টির ভাঁড়ার ফুরিয়ে যায় ও সেই কারণে ভারতে শহুরে দরিদ্রদের মধ্যে বাধাপ্রাপ্ত বৃদ্ধি এবং কম ওজনের মতো সমস্যাগুলির উচ্চ হার দেখা যায় যা বারংবার সংক্রমণের কারণে হয়। এটি জনসংখ্যার এই অংশের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতারও ইঙ্গিত দেয়। দিল্লির বস্তিগুলিতে করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ৫১% বস্তি পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীন্তায় ভোগে।[৩৭]

অসংক্রামক রোগ সম্পাদনা

স্বাধীনতার পর থেকে ভারত তার জনগণের স্বাস্থ্যের সার্বিক পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করেছে। এই পরিবর্তনের প্রভাব অর্থনৈতিক বিকাশ, পুষ্টির পরিস্থিতি, বন্ধ্যাত্ব রোধ এবং মৃত্যুর হারে দেখা গেছে এবং ফলস্বরূপ, বিভিন্ন রোগের পরিসংখ্যান পরিবর্তিত হয়েছে। সংক্রামক রোগগুলি নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সেগুলি এখনও দেশের রোগব্যাধিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ দখল করে রেখেছে। সংক্রামক রোগে মৃত্যু এবং বিকলাঙ্গত্ব হ্রাসের সাথে সাথে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ফুসফুসের রোগ, ক্যান্সার, মানসিক ব্যাধি এবং জখমের মতো দীর্ঘস্থায়ী অসংক্রামক রোগের প্রবণতাতে বৃদ্ধি ঘটেছে।[১] ভারতীয়রা বিশেষত এথেরোস্ক্লেরোসিস(ধমনী গাত্রে কোলেস্টেরল জমার দরুণ) এবং করোনারি ধমনীর রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে আছে। এর কারণগুলি হল বিপাক সিনড্রোম, জিনগত প্রবণতা এবং করোনারি ধমনী ভাসোডিলেশনে বা সম্প্রসারণের কুপ্রভাব ইত্যাদি।

২০১৮ সালের হিসাবে ফুস্ফুসের বায়ুচলাচলে বাধাজনিত রোগ, হৃদরোগের ঠিক পরেই মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দূষিত ১০ টি শহরের সবকটিই হ'ল উত্তর ভারতে। এই শহরগুলিতে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিরাপদ সীমারেখার ১০ গুণেরও বেশি বিষাক্ত বায়ু নিঃশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করে থাকে। ২০১৭ সালে দূষণের মাত্রার দরুন স্কুলগুলিকে বেশ কয়েক দিন বন্ধ রাখতে হয় এবং বায়ু দূষণের ফলে মোট ১২ লাখেরও বেশি ভারতীয় মারা যায়।[৩৮]

উদ্যোগ[৩৯] সম্পাদনা

স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মসূচী সম্পাদনা

ভারত সরকার গ্রাম এবং শহুরে বস্তি উভয় ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবহারের সুযোগ বাড়াতে গত কয়েক দশক ধরে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ বাস্তবায়িত করেছে। আন্তর্জাতিক গবেষকগণ এবং সংগঠনগুলি স্থায়ীভাবে বস্তি এলাকার স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য দীর্ঘমেয়াদী সমাধানগুলির আরো প্রয়োগ করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছে; তাদের যুক্তি এই যে জাতীয় পল্লী স্বাস্থ্য মিশন (এনআরএইচএম) বা জাতীয় আরবান স্বাস্থ্য মিশন (এনইউএইচএম) এর মতো সরকারী অর্থায়নে পরিচালিত কর্মসূচিগুলির প্রভাব স্বল্পস্থায়ী।[৪০] জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি, একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ, যাতে সংক্রামক রোগের বিস্তার আটকাতে বস্তিবাসীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এই কর্মসূচির কার্যকারিতা আশানুরুপ হয়নি কারণ বস্তিবাসীরা টিকা দেওয়ার তাৎপর্য সম্পর্কে সচেতন ছিল না।[৪১] এই ঘটনা স্বাস্থ্য শিক্ষার গুরুত্ব বুঝতে সাহায্য করে।[৪২] বিভিন্ন নন-প্রফিট সংস্থা বিভিন্ন উপায়ে এই সমস্যার মোকাবিলা করার চেষ্টা করেছে।

কিছু সংস্থা যেমন একদিকে অভ্যন্তরীণ শহরাঞ্চলে চিকিৎসা সুবিধা প্রদান বা পরিকাঠামোগত পরিবর্তন (যেমন জল পরিস্রূতকরণ) এর পক্ষে সওয়াল করে সেবা প্রদান করছে, অন্য়দিকে নতুন সংস্থাগুলি জনগোষ্ঠীভিত্তিক স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষ্কে এ ব্যাপারে শিক্ষিত করার চেষ্টা করছে।[৪৩] পরিণতির ভয়, লিঙ্গ, দায়িত্ব এবং সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক পরিবেশের মতো বিষয়গুলিও স্বাস্থ্য পরিষেবা সন্ধানের জন্য রোগীদের ক্ষমতা এবং ইচ্ছার উপর প্রভাব ফেলে।[৪৪] স্বাস্থ্য সচেতনতা কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের জ্ঞান বাড়ানো কার্যত তাদের পরিষেবা গ্রহণের ক্ষমতা, রোগ প্রতিরোধ এবং চাকরি হারানো আটকানোর দক্ষতার উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখে।[৪৫] উদাহরণস্বরূপ, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে, জনসাধারণের সুবিধাগুলি যক্ষ্মার জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সরবরাহ করা হলেও, অনেক বস্তিবাসীই এই প্রোগ্রাম সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে ব্যয়বহুল বেসরকারি হাসপাতালে দেখাতে যান। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা উদ্যোগ নিয়ে এই বিষয়ে বস্তিবাসী পরিবারের সাথে কথা বলার পরে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাসিন্দা বিনা ব্যয়ে চিকিৎসা পেতে বেসরকারী হাসপাতালের পরিবর্তে সরকারী সুযোগ-সুবিধার দিকে ঝুঁকছেন।[৪৬]

শিশুদের মধ্যে পুষ্টির ঘাটতি এবং অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সংস্থাগুলি শহুরে স্কুলগুলির মধ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষার একই পদ্ধতি প্রয়োগ করেছে। তথ্যসমৃদ্ধ ভিডিও, পোস্টার এবং পাঠ্যক্রমের পরিবর্তনের মাধ্যমে, স্কুলের গন্ডীর মধ্যেই কিশোর-কিশোরীদের তাদের পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা এবং তারা যে সমস্ত সংস্থান ব্যবহার করতে পারে সে সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা গেছে।

কর্মসূচী - স্বাস্থ্যপরিষেবায় অগ্রগতি সংক্রান্ত

  • মিশন ইন্দ্রধনুষ

কর্মসূচী - সংক্রামক রোগ

  • ন্যাশনাল ভাইরাল হেপাটাইটিস কন্ট্রোল প্রোগ্রাম
  • ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ সার্ভিলেন্স প্রোগ্রাম
  • রিভাইজড ন্যাশনাল টিউবরকুলোসিস কন্ট্রোল প্রোগ্রাম
  • ন্যাশনাল লেপ্রসি এরাদিকেশন প্রোগ্রাম
  • ন্যাশনাল vector-borne ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম
  • ন্যাশনাল এইচ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম
  • পালস পোলিও প্রোগ্রাম

কর্মসূচী - অসংক্রামক রোগ

  • ন্যাশনাল টোবাকো কন্ট্রোল প্রোগ্রাম
  • ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর প্রিভেনশন অন্ড কন্ট্রোল অফ ক্যান্সার-ডায়বেটিস, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এন্ড স্ট্রোক
  • ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর কন্ট্রোল ট্রিটমেন্ট অফ অকুপেশনাল ডিজিজেস
  • ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর প্রিভেনশন অন্ড কন্ট্রোল অফ ডিফনেস
  • ন্যাশনাল মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রাম
  • ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর কন্ট্রোল অফ ব্লাইন্ডনেস

কর্মসূচী - সুপুষ্টি সংক্রান্ত

  • ইন্টিগ্রেটেড চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস
  • ন্যাশনাল আয়োডিন ডেফিসিয়েন্সি ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম
  • মিড ডে মিল প্রোগ্রাম

কর্মসূচী - কল্যাণমূলক

  • আয়ুষ্মান ভারত যোজনা
  • ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফ হেলথকেয়ার ফর এল্ডারলি
  • রিপ্রোডাক্টিভ ম্যাটারনাল নিউবর্ন চাইল্ড এন্ড এডোলেসেন্ট হেলথ
  • ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন
  • ন্যাশনাল আরবান হেলথ মিশন

বিবিধ

  • ভলান্টারি ব্লাড ডোনেশন প্রোগ্রাম
  • ইউনিভার্সাল ইমিউনাইজেশন প্রোগ্রাম
  • প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনা
  • জননী শিশু সুরক্ষা যোজনা
  • রাষ্ট্রীয় কিশোর স্বাস্থ্য কার্যক্রম

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. National Health Profile 2017। Central Bureau of Health Intelligence। ১৯ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৯ 
  2. National Family Health Survey - 4, State Fact Sheet - Kerala। ১৯ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৯ 
  3. National Family Health Survey - 4, State fact sheet - Uttar Pardesh। ১৯ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৯ 
  4. Rosling। "Gapminder" 
  5. "Global Burden of Diseases" 
  6. "WHO - Malnutrition"WHO 
  7. Rieff, David (১১ অক্টোবর ২০০৯)। "India's Malnutrition Dilemma"Source: The New York Times 2009। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-২০ 
  8. "Malnutrition in India Statistics State Wise"Save the Children। ৬ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  9. "Child malnutrition"। ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  10. http://ninindia.org/DietaryGuidelinesforNINwebsite.pdf ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে Dietary Guidelines for NIN
  11. "Factors affecting prevalence of malnutrition among children under three year of age in Botswana" (পিডিএফ) 
  12. (http://www.unicef.org/india/children_4259.htm ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে)
  13. "Dengue"Source: Centers for Disease Control and Prevention US। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-২০ 
  14. Goldwert, Lindsay. "‘Totally drug-resistant’ tuberculosis reported in India; 12 patients have not responded to TB medication." ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ মে ২০১৩ তারিখে New York Daily News 16 January 2012.
  15. "HIV/AIDS"Source: UNICEF India। ২০১১-০৯-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-২০ 
  16. "Life Expectancy and Mortality in India"Source: The Prajnopaya Foundation। ২০১০-০৭-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-২০ 
  17. "Health Conditions"Source: US Library of Congress। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-২০ 
  18. "India marks one year since last polio case." Al Jazeera, 13 January 2012.
  19. "National Portal of India" 
  20. "FAQs – UNICEF"। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৯ 
  21. "Childhood Mortality and Health in India" (পিডিএফ)Source: Institute of Economic Growth University of Delhi Enclave North Campus India by Suresh Sharma। ২ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-২০ 
  22. "Maternal & Child Mortality and Total Fertility Rates" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-১৩ 
  23. Robinson, Simon (১ মে ২০০৮)। "India's Medical Emergency"Source: Time US। ২৬ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-২০ 
  24. Kanjilal, Barun; Debjani Barman; Swadhin Mondal; Sneha Singh; Moumita Mukherjee; Arnab Mandal; Nilanjan Bhor (সেপ্টেম্বর ২০০৮)। "Barriers to access immunisation services: a study in Murshidabad, West Bengal"FHS Research Brief (3)। ৩০ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৯ 
  25. "Water, Environment and Sanitation"Source: UNICEF India। ২০১১-১০-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-২০ 
  26. "Initiatives: Hygiene and Sanitation"Source: Sangam Unity in Action। ২১ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১১ 
  27. "What We Do – UNICEF"। ২ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৯ 
  28. "Chronic hunger and the status of women in India"। ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  29. "RURAL URBAN DISTRIBUTION OF POPULATION" (পিডিএফ) 
  30. Urban Rural Population of India ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ মার্চ ২০১২ তারিখে. Indiafacts.in. Retrieved on 2012-07-17.
  31. JSS – The Bitter Truth About Rural Health ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ এপ্রিল ২০১২ তারিখে. Jssbilaspur.org. Retrieved on 2012-07-17.
  32. Sutherland, T; DM Bishai (২০০৮)। "Cost-Effectiveness Of Misoprostol And Prenatal Iron Supplementation As Maternal Mortality Interventions In Home Births In Rural India"International Journal of Gynecology & Obstetrics। ৩০ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১২ 
  33. Tuddenham, S A; ও অন্যান্য (ফেব্রুয়ারি ২০১০)। "Care seeking for postpartum morbidities in Murshidabad, rural India"International Journal of Gynecology & Obstetrics109 (3): 245–246। ডিওআই:10.1016/j.ijgo.2010.01.016পিএমআইডি 20207357। ১০ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১২ 
  34. Agarwal, Siddharth (২০১৪-১০-৩১)। "Making the Invisible Visible"। এসএসআরএন 2769027  
  35. Office of the Registrar General and Census Commissioner (2011). Population Census of India 2011 Accessed 9-10-016http://www.census2011.co.in/census/state/uttar+pradesh.html
  36. Agarwal, Siddharth (২০১১-০৪-০১)। "The state of urban health in India; comparing the poorest quartile to the rest of the urban population in selected states and cities"Environment and Urbanization (ইংরেজি ভাষায়)। 23 (1): 13–28। আইএসএসএন 0956-2478ডিওআই:10.1177/0956247811398589 
  37. Agarwal, Siddharth; Sethi, Vani; Gupta, Palak; Jha, Meenakshi; Agnihotri, Ayushi; Nord, Mark (২০০৯-০৮-০৪)। "Experiential household food insecurity in an urban underserved slum of North India"। Food Security (ইংরেজি ভাষায়)। 1 (3): 239–250। আইএসএসএন 1876-4517ডিওআই:10.1007/s12571-009-0034-y 
  38. "Dirty air: how India became the most polluted country on earth"। Financial Times। ১১ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১৯ 
  39. "Ministry of Health and Family Welfare - India"। ৩০ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  40. Nolan, Laura B. (মার্চ ২০১৫)। "Slum Definitions in Urban India: Implications for the Measurement of Health Inequalities"Population and Development Review (ইংরেজি ভাষায়)। 41 (1): 59–84। ডিওআই:10.1111/j.1728-4457.2015.00026.xপিএমআইডি 26877568পিএমসি 4746497  
  41. Singh, Sanjeev; Sahu, Damodar; Agrawal, Ashish; Vashi, Meeta Dhaval (জুলাই ২০১৮)। "Ensuring childhood vaccination among slums dwellers under the National Immunization Program in India - Challenges and opportunities"। Preventive Medicine (ইংরেজি ভাষায়)। 112: 54–60। ডিওআই:10.1016/j.ypmed.2018.04.002পিএমআইডি 29626558 
  42. Lilford, Richard J; Oyebode, Oyinlola; Satterthwaite, David; Melendez-Torres, G J; Chen, Yen-Fu; Mberu, Blessing; Watson, Samuel I; Sartori, Jo; Ndugwa, Robert (ফেব্রুয়ারি ২০১৭)। "Improving the health and welfare of people who live in slums"। The Lancet (ইংরেজি ভাষায়)। 389 (10068): 559–570। ডিওআই:10.1016/S0140-6736(16)31848-7পিএমআইডি 27760702 
  43. Lilford, Richard J; Oyebode, Oyinlola; Satterthwaite, David; Melendez-Torres, G J; Chen, Yen-Fu; Mberu, Blessing; Watson, Samuel I; Sartori, Jo; Ndugwa, Robert (ফেব্রুয়ারি ২০১৭)। "Improving the health and welfare of people who live in slums"। The Lancet389 (10068): 559–570। আইএসএসএন 0140-6736ডিওআই:10.1016/s0140-6736(16)31848-7পিএমআইডি 27760702 
  44. Das, Moumita; Angeli, Federica; Krumeich, Anja J. S. M.; van Schayck, Onno C. P. (ডিসেম্বর ২০১৮)। "Patterns of illness disclosure among Indian slum dwellers: a qualitative study"BMC International Health and Human Rights (ইংরেজি ভাষায়)। 18 (1): 3। আইএসএসএন 1472-698Xডিওআই:10.1186/s12914-018-0142-xপিএমআইডি 29338708পিএমসি 5771001  
  45. Yang, Li; Zhao, Qiuli; Zhu, Xuemei; Shen, Xiaoying; Zhu, Yulan; Yang, Liu; Gao, Wei; Li, Minghui (আগস্ট ২০১৭)। "Effect of a comprehensive health education program on pre-hospital delay intentions in high-risk stroke population and caregivers"। Quality of Life Research (ইংরেজি ভাষায়)। 26 (8): 2153–2160। আইএসএসএন 0962-9343ডিওআই:10.1007/s11136-017-1550-4পিএমআইডি 28401417 
  46. Samal, Janmejaya (২০১৭)। "Impact of a Structured Tuberculosis Awareness Strategy on the Knowledge and Behaviour of the Families in a Slum Area in Chhattisgarh, India"Journal of Clinical and Diagnostic Research11 (3): LC11–LC15। ডিওআই:10.7860/JCDR/2017/24107.9489পিএমআইডি 28511415পিএমসি 5427341