নগেন্দ্রনাথ ভাদুড়ী (৬ ডিসেম্বর ১৮৪৬[] – ২ নভেম্বর ১৯২৬[] ), যিনি "ভাদুড়ী মহাশয়" (Bhāduṛī mahāśaẏa) নামেও পরিচিত, ছিলেন একজন ভারতীয় সিদ্ধ যোগী। আধ্যাত্মিক উপাধি - 'মহাশয়' মহান যোগী শ্যামাচরণ লাহিড়ীর মতো নগেন্দ্রনাথের নামের সঙ্গেও সংযুক্ত। পরমহংস যোগানন্দ তাঁকে "ভাদুড়ী মহাশয়"[] হিসেবেই অভিহিত করেছেন। নগেন্দ্রনাথ 'মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ' নামেও অভিহিত হন। কাশীর সুমেরু মঠাধীশ শংকরাচার্য প্রমুখ ধর্মপ্রচারকরা তাঁকে 'মহর্ষি' উপাধিতে ভূষিত করেন। []

ভাদুড়ী মহাশয়
জন্মডিসেম্বর ১৮৪৬
পায়রাটুঙ্গী, হাওড়া
মৃত্যুনভেম্বর ১৯২৬
রামমোহন রায় রোড, কলকাতা
অন্যান্য নামমহর্ষি নগেন্দ্রনাথ
পরিচিতির কারণসিদ্ধ যোগী, ধর্মীয় গুরু
পিতা-মাতাপিতা: পার্বতীচরণ ভাদুড়ী
মাতা: ত্রিপুরাসুন্দরী দেবী

জীবন কথা

সম্পাদনা

মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ জন্মগ্রহণ করেন হাওড়া জেলার পায়রাটুঙ্গী গ্রামে[] এক সম্পন্ন জমিদার পরিবারে। বর্তমানে এই গ্রামের নাম ধারসা। মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের পিতার নাম ছিল পার্বতীচরণ ভাদুড়ী। মাতা ছিলেন ত্রিপুরাসুন্দরী দেবী। এঁরা ছিলেন বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ। এই ভাদুড়ী বংশেরই সন্তান রাজা গণেশ, উদয়নাচার্য ভাদুড়ী

পার্বতীচরণ ভাদুড়ীর ভ্রাতা কালীচরণ ভাদুড়ী ছিলেন প্রখ্যাত সেতার ও এস্রাজ বাদক সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের পিতা। সুরেন্দ্রনাথ - ভট্টাচার্য উপাধিতে ভূষিত হন। তাই ভাদুড়ী হলেও সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যই ব্যবহার করতেন। এই সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যেরই তিন পুত্র বাংলা সংগীত জগতের তিন কিংবদন্তি - সুরকার প্রফুল্ল ভট্টাচার্য, প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য এবং সাধক শিল্পী পান্নালাল ভট্টাচার্য[]

শিক্ষা ও কর্মজীবন

সম্পাদনা

মেধাবী নগেন্দ্রনাথ কলকাতার ডাফ কলেজে সিনিয়র স্কলারশিপ লাভ করেন।[] ইনি স্বগ্রামে অবৈতনিক বিদ্যালয় স্থাপন করে পাঠদানের ব্যবস্থা করেন।[] মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ ছিলেন বহু ভাষাবিদ। তিনি ইংরেজী, বাংলা, সংস্কৃত, হিন্দী, ফারসী, আরবী, ল্যাতিন, গ্ৰীক প্রভৃতি আটটি ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন।[] মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জনাই ইংরেজী বিদ্যালয়ে ও পরে বালি হাইস্কুলে।[] সাধন জীবনে প্রবেশের পরও শিক্ষক মহর্ষির কাছে প্রায়ই ছুটে আসতেন ছাত্ররা :

"উত্তর কলিকাতার ৫নং বাদুড়বাগান লেনে ( দোতলা বাড়িতে ) তিনি কিছুকাল বসবাস করেন ; দোতলায় থাকতেন তিনি, আর নীচের ঘরগুলিতে তাঁর কয়েকজন ভক্ত-শিষ্য তাঁর সেবাশুশ্রূষার জন্যে থাকতেন । ১৯০৫ খ্রীষ্টাব্দ ; বাঙ্গলাদেশ তখন এক বিরাট রাজনৈতিক বিস্ফোরণের মুখে দাঁড়িয়ে ৷ বঙ্গভঙ্গ রোধ করতে সারাদেশে বিপ্লবের বহ্নিশিখা জ্বলে উঠেছিল। সেই সময় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু ছাত্রের আগমন হ'ত মহর্ষির নিকট । ছাত্রদের তিনি পরম সমাদরে গ্রহণ ক’রে তাদের সাথে শিশুর মতো প্রাণখুলে আলাপ-আলোচনা করতেন এবং সময় সময় কৌতুক- পরিহাসও করতেন। এই ছাত্রদের মধ্যে মহেন্দ্ৰনাথ ( এম্. এ. পি-এইচ. ডি. ) কানাই (এম্. এ ) ; সচ্চিদানন্দ (বি. এ ), বিষ্ণুপদ ( বি. এল্.), নগেন ( বি. এ. ), প্রমোদারঞ্জন ( এম্.এ.) ও সত্যেন্দ্র ( এম্. এস্-সি.) প্রভৃতি প্রায়ই বিকেল ৫টার সময় মহর্ষির নিকট উপস্থিত হ’য়ে আধ্যাত্মিক বিষয়ে আলোচনা, তর্ক ও নানা প্রশ্নাদি করতেন । মহর্ষি তাঁদের সকল প্রশ্নেরই উত্তর দিয়ে, নানা সমস্যা ও সন্দেহের মীমাংসা করে দিতেন।"

[]

বিদ্যালয় ও গ্রন্থাগার স্থাপন

সম্পাদনা

১৮৯৪ খ্রী. নগেন্দ্রনাথ কলকাতায় ‘পেট্রিয়টিক ইনস্টিটিউশন’ নামে একটি ইংরেজী স্কুল স্থাপন করেন।[] ‘পেট্রিয়টিক লাইব্রেরী’ স্থাপনও[] তাঁর আর একটি অনন্য কীর্তি।

গ্রন্থ রচনা

সম্পাদনা

নগেন্দ্রনাথ বেশকিছু গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। ‘প্রতিজ্ঞা শতক’, ‘সামুদ্রিক বিদ্যা (১ম ভাগ)’, ‘পরমাৰ্থ সঙ্গীতাবলী’ প্রভৃতি তাঁর রচিত গ্রন্থ।[] তাঁর রচিত 'প্রতিজ্ঞা শতক' নীতি গ্রন্থটিকে মহাকালী পাঠশালার প্রতিষ্ঠাত্রী মাতাজী গঙ্গাবাঈ পাঠ্য পুস্তক হিসেবে মনোনীত করেছিলেন।[]

সনাতন ধর্মপ্রচার

সম্পাদনা

ধর্মপ্রচারের জন্য নগেন্দ্রনাথ ‘সত্যপ্ৰদীপ’ পত্রিকা প্রকাশ করেন।[] এই 'সত্য প্রদীপ' পত্রিকার গুরুত্ব নির্দেশ করতে গিয়ে কলিকাতা, বর্ধমান ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন খ্যাতনামা অধ্যাপক পরেশনাথ ভট্টাচার্য লিখেছিলেন :

"মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ সনাতন ধর্ম সমাজের অশেষ কল্যাণ সাধন করলেন সনাতন ধর্ম প্রচারিণী সভা এবং সত্য প্রদীপ, এই দুই রক্ষাকবচের সাহায্যে।"

[]

মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ ১৮৯১ খ্রী. এই সনাতন ধর্ম প্রচারিণী সভা প্ৰতিষ্ঠা করেন।[] এই ‘সনাতন ধর্ম প্রচারিণী সভা’-র কার্যাবলীর বিবরণ দিয়েছেন স্বামী নির্বাণানন্দ :

"কলিকাতার রামমোহন রায় রোডে সনাতন ধর্ম প্রচারিণী সভা প্রতিষ্ঠিত হবার পর কয়েক মাসের মধ্যে দেখা গেল, অলিকুল মধুপান লোভে দলে দলে যেমন ফুলের কাছে উড়ে যায়, সাগর-সঙ্গম আশায় নদীসকল যেমন অধীর আগ্রহে উন্মাদ তরঙ্গ-ভঙ্গে ছুটে যায়, তেমনভাবে সম্ভাবসম্পন্ন ভক্তগণ বিষয়-মধু তুচ্ছ জ্ঞান ক'রে নামসুধা পানের উদ্দেশ্যে মহর্ষির শ্রীচরণপ্রান্তে দলে দলে উপনীত হ’তে লাগলেন। প্রতি রবিবারে শ্রীহরিনামসংকীর্তন, নগরফেরি, দরিদ্রনারায়ণসেবা, ধর্মাধিবেশন, পল্লীর মধ্যে ও চতুষ্পার্শ্বে বেশ একটা সাড়া ও নাড়া-চাড়া সৃষ্টি ক’রল । স্থানীয় অধিবাসিগণের মধ্যে একটা বিশেষ ধর্মভাব ও আকর্ষণ জাগিয়ে তুলল।"

[]

সত্যপ্রদীপ পত্রিকা-য় শ্রীমৎ ধ্যানপ্রকাশ ব্রহ্মচারী মহারাজের সম্পাদনায় ১৩৪৫ সালের গুরু পূর্ণিমা থেকে ১৩৫১ সালের আশ্বিন পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে শ্রীশ্রীনগেন্দ্র- উপদেশামৃত প্রকাশিত হয়।[১০] সেই সময়ের বহু বিধগ্ধ পণ্ডিতের লেখায় সত্যপ্রদীপ পত্রিকা সমৃদ্ধ হয়।[১১] এই আধ্যাত্মিক পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে থাকে মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের রচিত পরমার্থসঙ্গীতও।[১২]

সাধন জীবন

সম্পাদনা

১৮৮১ খ্ৰী. দক্ষিণেশ্বরে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সঙ্গে সঙ্গে সাক্ষাতের ফলে নগেন্দ্রনাথের জীবনে বিরাট পরিবর্তন আসে।[] এই মহামিলনের বর্ণনা দিতে গিয়ে শ্রীমৎ ভক্তিপ্রকাশ ব্রহ্মচারী লিখেছেন :

"ঠাকুর নগেন্দ্রনাথ গেলেন তাঁকে দেখতে দেখলেন—মন্দির প্রাঙ্গণে প্রবেশের দক্ষিণ দিকে ৺গঙ্গার নিকটে একটা ছোট্ট ঘরে ঠাকুর রামকৃষ্ণ—একটি খাটিয়ার উপরে পাতা মাদুরের উপরে—৺গঙ্গার দিকে মুখ করে ব’সে আছেন, পরণে লাল পেড়ে ন-হাতি ধুতি, কাঁধে একটা চাদর, মুখ প্রসন্ন, জ্যোতির্ময়, চোখ দুটি টল-টল-ছল-ছল । যেন এখনি মায়ের কাছে কোনও আবদার পূরণের জন্য চেয়ে না পেয়ে কান্নাকাটি ক’রেছেন, তার জের তখনও রয়েছে। ঠাকুর নগেন্দ্রনাথ মাষ্টারি করেন ৷ অত্যন্ত প্রাচীন পন্থী । আচারে ব্যবহারে পূর্ব পুরুষের ভাবধারা তাঁর সর্ব ́ অবস্থায় পরিস্ফুট। ধুতি চাদর-পাঞ্জাবী পরা হ'লেও ফিট্‌ফাট বাবুটি। কিন্তু জহুরী জহর চেনে। ঠাকুর নগেন্দ্রনাথ যেতেই ঠাকুর রামকৃষ্ণ যেন বহু দিনের বহু যুগের পরিচিত এক জনকে কাছে পেয়েছেন,—এমন মনে হ'ল। সাধনার কথা, অনুভবের কথা হ’ল। অনুভবের কথা-প্রসঙ্গ উঠতেই ঠাকুর রামকৃষ্ণের ভাবান্তর উপস্থিতি হ'তে থাকল’, যেন আর স্থির থাকতে পারছেন না, আর বাইরে মন রাখতে পারছেন না। ঠাকুর নগেন্দ্রনাথকে একটা গান গাইতে ব’ললেন— ঠাকুর রামকৃষ্ণ গান বড় ভালবাসেন কিনা ! ঠাকুর নগেন্দ্রনাথ গাইলেন তাঁর স্বরচিত গান— !

“অগাধ জলের মীন তুমি হরে-

তোমায় ধ’রতে কেবা পারে নাথ ! বিনা নিপুণধীবরে ॥"

[১৩]

এরপর -

"তিনি তাঁর সুমধুর কণ্ঠে নিজের রচিত তিনখানি গান ঠাকুরকে শোনান। গান শুনে ঠাকুরের সমাধি হয়েছিল এবং মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ দিব্যভাবে বিভোর এক জ্যোতির্ময় পুরুষে উত্তীর্ণ হন। দু'জন মহান ঈশ্বর সন্ধানী আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়ে যে দিব্য ভাব বিনিময় করেছিলেন তার নজির বিরল। সমাধি ছিল মহর্ষি নগেন্দ্রনাথও সহজাত।"

[১৪]

মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ একসময় ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন। তিনি বলুহাটি ব্রাহ্মসমাজের আচার্যের দায়িত্বও পালন করেন।[১৫] কিন্তু তাঁর ওপর নির্দেশ আসে উপবীত ত্যাগ করার :

" ঠাকুরের ওপরও পৈতা ত্যাগের নির্দেশ এল । এবার ঠাকুর নগেন্দ্রনাথ বেঁকে ব’সলেন। তিনি ব’ললেন—

“সশিখং বপনং কৃক্ত্বা বহিঃসূত্রং ত্যজেদ্ বুধঃ। যদক্ষরং পরং ব্রহ্ম তৎ সূত্রমিতি ধারয়েৎ ॥

বহিঃসূত্রং ত্যজেদ্বিদ্বান্ যোগমুত্তমমাস্থিতঃ । ব্রহ্মভাবময়ং সূত্রং ধারয়েদ্ যঃ সচেতনঃ ॥”

[ ব্রহ্মোপণিষৎ ]

অর্থাৎ পরব্রহ্মই সূত্র, তাঁহার দ্যোতক-বা সূচক যজ্ঞোপবীত। সুতরাং যতদিন না ব্রহ্মজ্ঞানের বিমল জ্যোতিঃ প্রকাশিত হবে, যতদিন কি ব্যুত্থানে, কি সমাধিতে—সর্বাবস্থায় সেই একমেবাদ্বিতীয়ের জ্ঞান হৃদয়ে না ভাসবে, সেই নিরা-কার, নিরাভ্যাস, নিরঞ্জনে, প্রীতিতে মগ্ন না হবে, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম থেকে শুরু ক’রে মহতো মহীয়ান্ এ ব্যাপ্ত না হবে, এক কথায় পরমহংস অবস্থা লাভ না হবে, ততদিন ব্রহ্মদীক্ষার সূচক—“ধীমহি”র প্রেরক চালক স্মারক উপবীত ত্যাগের প্রশ্নই ওঠে না।"

[১৫]

- সুতরাং এমত পরিস্থিতিতে নগেন্দ্রনাথ ব্রাহ্মসমাজ ত্যাগ করেন।[১৫]

মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ কুম্ভ মেলায় যোগদানের জন্য এলাহাবাদে গেলে তাঁর ভাইপো ননীলাল ভাদুড়ী তাঁর সঙ্গী হন। মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের কাছে তাঁর ব্রহ্মচর্য দীক্ষা হলেও তাঁর মনে সন্ন্যাস গ্রহণের বাসনা জাগে। এই সময় মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ নিজেও সন্ন্যাস গ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এমত পরিস্থিতিতে এক মকর সংক্রান্তির পূণ্য প্রভাতে গঙ্গাস্নানের পর তাঁরা দুজনেই সন্ন্যাস নেওয়ার জন্য দীক্ষাগুরুর সন্ধান করতে থাকেন। ১৮৮১-৮২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নগেন্দ্রনাথ কোনও এক দণ্ডী সন্ন্যাসী যোগী পুরুষকে গুরু হিসেবে গ্রহণ করেন এবং সন্ন্যাস দীক্ষার পর হিমালয়ে গিয়ে কঠোর তপস্যা করার ইচ্ছা গুরুর কাছে ব্যক্ত করেন। কিন্তু গুরুদেব তাঁকে গেরুয়াবস্ত্র ধারণ না করে সনাতন ধর্ম প্রচারের নির্দেশ দিয়ে কলকাতায় আসতে বলেন। এর সম্ভাব্য কারণ মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের পাণ্ডিত্য :

" তাঁর ভারতীয় দর্শন এবং হিন্দু শাস্ত্র সম্বন্ধে পাণ্ডিত্যই গুরুকে এই নির্দেশ দিতে বাধ্য করেছিল।"

[১৬]

ননীলাল ভাদুড়ী- যিনি মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের কাছে ব্রহ্মচর্যে দীক্ষিত হয়ে ধ্যানপ্রকাশ ব্রহ্মচারী নামে অভিহিত হন - সেই ধ্যানপ্রকাশ ব্রহ্মচারী-ও এই কাজে ঐ সন্ন্যাসীর নির্দেশে মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের সঙ্গী হন।

একসময় মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি খুব একটা বাইরে বের হবেন না। প্রায় কুড়ি বছর তিনি গৃহেই সাধনা করতে থাকেন। এই পর্যায়ে যাতে তাঁর সাধনা বিঘ্নিত না হয় সেজন্য সদা সতর্ক থাকতেন তাঁর এক শিষ্য। পরমহংস যোগানন্দের লেখায় এর - বিবরণ আছে :

"সেদিন বৈকালে স্কুল থেকে বাড়ী ফেরবার সময় ভাদুড়ী মশায়ের আশ্রমের পাশ দিয়ে আসতে আসতে একবার তাঁকে দর্শন করে আসব বলে মনস্হ করলুম । সাধারণ লোকেদের সেখানে প্রবেশলাভ দূরূহ। একটি যাত্র শিষ্য কেবল নিচের তলায় থেকে গুরুর নির্জনতা যাতে ভঙ্গ না হয়, সে দিকে প্রখর দৃষ্টি রাখেন। শিষ্যটি দারুণ কড়া, সহজে কাউকে তাঁর কাছে ঘেঁসতে দেন না। জিজ্ঞাসা করলেন, দেখা করবার কোন কথা আগে থেকে ঠিক করা আছে কিনা। তাঁর গুরুদেব কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে ঠিক সময়েই এসে পড়ে, আমায় পত্রপাঠ বিদায়ের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিলেন। ভাদুড়ী মশাই চোখদুটি মিট মিট করে

বললেন, “মুকুন্দর যখনই ইচ্ছে হবে ও তখনই আসবে। আমার নির্জনে থাকবার ব্যবস্হা আমার নিজের আরামের জন্যে নয়, বাইরের লোকেদের জন্যে, বুঝলে? সংসারের লোক সরলতা চায় না, যাতে করে তাদের মোহ

টুটে যায় ! সাধুরা যে কেবল বিরল তা নয়, দুর্বোধ্যও। শাস্ত্রেও তাঁদের চালচলন একটু খাপছাড়া ধরণেরই বলে।” আমি ভাদুড়ী মশায়ের সঙ্গে উপরতলায় তাঁর অত্যন্ত সাদাসিধে আস্তানায় গিয়ে পৌঁছলাম। সেখান থেকে কদাচিৎ তিনি কোথাও নড়তেন। পার্থিব সুখদুখের মিছিল সাধুসন্তরা উপেক্ষা করেই চলেন।"

[১৭]

- এই বর্ণনায় যে শিষ্যের কথা বলা হয়েছে তিনি মহর্ষিদেবের ছায়াসঙ্গী ধ্যানপ্ৰকাশ ব্রহ্মচারীই।

শেষ জীবন

সম্পাদনা

১৩ই কার্তিক ১৩৩৩ সালে মহর্ষি নগেন্দ্ৰনাথ অসুস্থতা অনুভব করেন। ১৫ কার্তিক ১৩৩৩ (ইংরেজী ২ নভেম্বর, ১৯২৬) তিনি সকালবেলা শয্যা ত্যাগ করে উঠে পড়েন এবং ধ্যানপ্ৰকাশ ব্রহ্মচারীকে ভগবানের নাম করতে বলেন। সম্পূর্ণ সজ্ঞানে পদ্মাসনে বসে 'রাম নাম' শুনতে শুনতে তিনি মহাসমাধি লাভ করেন। এর পরের দিন ধ্যানপ্রকাশ ব্রহ্মচারী মহর্ষির দেহ নিমতলা ঘাটে সৎকার করেন। [১৮]

শিষ্যবর্গ

সম্পাদনা

দার্শনিক অধ্যাপক ডাঃ মহেন্দ্রনাথ সরকার, ভারতী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ভবতারণ সরকার, টাউন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা কালীচরণ চক্রবর্তী, প্রসিদ্ধ হোমিওপ্যাথি ডাঃ চন্দ্ৰশেখর কালী প্রমুখ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের শিষ্য ছিলেন।[] যোগেশ ব্রহ্মচারী-ও বেশ কয়েকবার মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের কাছে যান। তাঁদের মধ্যে শাস্ত্রীয় বহু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের জ্ঞানের গভীরতায় যোগেশ ব্রহ্মচারী মুগ্ধ হয়ে যান। যোগেশ ব্রহ্মচারী এই মহর্ষি নগেন্দ্রনাথকে নিজের "গুরু" হিসেবে এবং নিজেকে মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের "মন্ত্রণাগ্রহণকারী শিষ্য" হিসেবে অভিহিত করেছেন। যোগেশ ব্রহ্মচারী নিজেই লিখে গিয়েছেন সে কথা :

"আমি মহাত্মা নগেন্দ্রনাথের মুখে বেদে জ্ঞান-কর্ম-ভক্তির সমন্বয়ের কথা শুনিয়া একেবারে হতবুদ্ধি হইয়া গেলাম। তাঁহার অর্জিত জ্ঞানের তথা আত্মোপলব্ধির গভীরতা দেখিয়া জাগ্রত আগ্রহে আমার গর্বিত মস্তকটি তাঁহার চরণে লুটাইয়া দিতে বাধ্য হইলাম । সেই প্রথম দর্শনের দিনের কথা আজও আমাকে তাঁহার চরণে প্রণত করিয়া রাখিয়াছে। জ্ঞানচক্ষু উন্মীলন করিয়া যিনি দেন তাঁহাকে যদি গুরু বলা হয় মহাত্মা নগেন্দ্রনাথও আমার গুরু। অর্জুন যখন কৃষ্ণকে “শিষ্যস্তেঽহম্” ইত্যাদি বাক্য বলিয়া ছিলেন তখন তিনি অন্যায় বলেন নাই। কারণ অর্জুন শ্রীকৃষ্ণের নিকট হইতে মন্ত্র গ্রহণ না করিলেও মন্ত্রণা গ্রহণ করার প্রার্থী হইয়াই নিজেকে শিষ্য বলিয়াছেন। আমিও মহাত্মা নগেন্দ্রনাথের মন্ত্রণাগ্রহণকারী শিষ্য বলিয়া নিজেকে এখনও মনে করি।"

[১৯]

যোগ - ভক্তি মার্গ

সম্পাদনা

ভক্তদের অনুভবে সিদ্ধযোগী ভাদুড়ি মহাশয় - মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ হলেন হরিহর (দেবতা)-এর অবতার। তাঁদের চোখে নগেন্দ্রনাথ ছিলেন - বহিরঙ্গে শিব, অন্তরঙ্গে বিষ্ণু। মহর্ষি নগেন্দ্রনাথকে যোগশিক্ষা প্রদান করেছিলেন স্বয়ং নারায়ণ :

"লঘিমা সিদ্ধ যোগী মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ বলছেন নারায়ণ তাঁকে যোগের গুরু হিসেবে দর্শন দেন। তিনি নিয়ত শঙ্খ, চক্র, গদাপদ্মাধারী শ্রীহরির দর্শন পেতেন, কথোপকথনও হতো।"

[২০]

কিন্তু নিজে সিদ্ধ যোগী হলেও মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ নির্দেশ করে গিয়েছেন ভক্তি মার্গ :

"In Maharshi Nagendranath's life and teachings we find a synthesis of Karma-yoga, Jnana-Yoga, Dhyana-yoga and Bhakti-yoga. But, as we have said, he always affirmed that Bhakti-yoga or the path of devotion is the easiest and safest way to attain God. In his later years he used to say that nothing can be achieved without the Grace of God."

[২১]

পশ্চিমে যাত্রার আগে পরমহংস যোগানন্দ মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের কাছ বিদায় আশীর্বাদ গ্রহণ করেন। নগেন্দ্রনাথ তাঁকে আশীর্বাদ করে বলেন :

“Son, go to America. Take the dignity of hoary India for your shield. Victory is written on your brow; the noble distant people will well receive you.”

[২২]

শ্রীশ্রী নগেন্দ্র মঠ এবং নগেন্দ্র মিশন

সম্পাদনা

মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ যে সনাতন ধর্মপ্রচারিণী সভা তৈরি করেন - মহর্ষি যেখানে থাকতেন সেখানেই এর সভা চলত। পরে তাঁর শিষ্য-ভক্তরা তাঁকে স্থায়ী আবাসের কথা বলেন। মহর্ষি প্রথমে রাজি না হলেও শেষ পর্যন্ত শিষ্য- ভক্তদের ক্রমাগত অনুরোধে রাজি হন এবং কলকাতার গড়পার অঞ্চলে রামমোহন রায় রোডে একটি স্থায়ী আবাস গৃহ নির্মিত হয়। ১৯১৬ সালের দোল পূর্ণিমার দিনে এখানে গৃহপ্রবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মহর্ষির দেহাবসানের একদিন পর মহর্ষির ভক্ত- শিষ্যরা মিলে মহর্ষিদেবের নামে একটি মঠ তৈরীর পরিকল্পনা করেন।[২৩] এই মঠ তৈরির উদ্দেশ্য ছিল মহর্ষিদেবের বাণী, সাধনা ও আদর্শের প্রচার এবং প্রসার। তাঁর অস্থিকলস মাটিতে পুঁতে দিয়ে তার ওপর সমাধি মন্দির নির্মিত হয়। তাঁর ব্যবহৃত দ্রব্যাদি এবং পাদুকাও তাঁর বসবাসের ঘরে সংরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করা হয়।[১৮] এই গৃহে এই সূত্রেই ১৯২৬-এ শ্রীশ্রী নগেন্দ্র মঠ গড়ে ওঠে। ২০০৫-এ গড়ে ওঠে নগেন্দ্র মিশন। মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের শেষ জীবনের এই সাধন ভূমি দর্শনে প্রতিদিনই আসেন দেশ-বিদেশ থেকে ভক্তরা।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. সেনগুপ্ত, বসু, সুবোধচন্দ্র, অঞ্জলি (১৯৮৮)। সংসদ বাঙালী চরিতাভিধান ( সংশোধিত ও পরিবর্ধিত দ্বিতীয় সংস্করণ )। পৃষ্ঠা ২৩৫। 
  2. Yogananda, Paramhansa (২০১৮)। The Levitating Saint, AUTOBIOGRAPHY OF A YOGI। THE PHILOSOPHICAL LIBRARY, INC, 15th East 40th Street, New York, N.Y। পৃষ্ঠা 59। 
  3. মুখোপাধ্যায়, রঘুপতি (ফেব্রুয়ারি ২০১২)। যুগাচার্য্য মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ। সনাতন ধর্ম প্রচারিণী সভা ও শ্রীশ্রী নগেন্দ্র মঠ এবং নগেন্দ্র মিশন, ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা- ৯। পৃষ্ঠা ১৫। 
  4. সেনগুপ্ত, বসু, সুবোধচন্দ্র, অঞ্জলি (১৯৮৮)। সংসদ বাঙালী চরিতাভিধান ( সংশোধিত ও পরিবর্ধিত দ্বিতীয় সংস্করণ )। পৃষ্ঠা ২৩৫। 
  5. Sen Shastri, Prof. Tripurasankar (ডিসেম্বর ২০২০)। The Levitating Saint। Nagendra Mission, 2B, Rammohan Roy Road, Kolkata - 700009। 
  6. বসু, গোস্বামী, রাহা, অধ্যাপক শ্রীনির্মলকান্তি, অধ্যাপক ডঃ শ্রীকৃষ্ণপদ, ডাঃ শ্রীদীপেন (আগষ্ট ১৯৮১)। ছাত্রদের সঙ্গে মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ, মহর্ষি নগেন্দ্র-স্মারক গ্রন্থ। অধ্যাপক শ্রীনির্মলকান্তি বসু [বিভাগীয় প্রধান, সংস্কৃত বিভাগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।] আহ্বায়ক, যুগাচার্য মহর্ষি নগেন্দ্র-মেমোরিয়াল কমিটি, ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা - ৯। পৃষ্ঠা ৯৭। 
  7. বসু, গোস্বামী, রাহা, অধ্যাপক শ্রীনির্মলকান্তি, অধ্যাপক ডঃ শ্রীকৃষ্ণপদ, ডাঃ শ্রীদীপেন (আগষ্ট ১৯৮১)। মহর্ষি নগেন্দ্র-স্মারক গ্রন্থ। অধ্যাপক শ্রীনির্মলকান্তি বসু [বিভাগীয় প্রধান, সংস্কৃত বিভাগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।] আহ্বায়ক, যুগাচার্য মহর্ষি নগেন্দ্র-মেমোরিয়াল কমিটি, ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা - ৯। পৃষ্ঠা ৩৪। 
  8. ব্রহ্মচারী, শ্রীমদ্ ভক্তিপ্রকাশ (জুলাই ২০১১)। শ্রীশ্রীনগেন্দ্র-উপদেশামৃত[ প্রথম খণ্ড]। শ্রীশ্রী নগেন্দ্র মঠ, ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা- ৯। পৃষ্ঠা এগার। 
  9. বসু, গোস্বামী, রাহা, অধ্যাপক শ্রীনির্মলকান্তি, অধ্যাপক ডঃ শ্রীকৃষ্ণপদ, ডাঃ শ্রীদীপেন (আগষ্ট ১৯৮১)। মহর্ষি নগেন্দ্র-স্মারক গ্রন্থ। অধ্যাপক শ্রীনির্মলকান্তি বসু [বিভাগীয় প্রধান, সংস্কৃত বিভাগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।] আহ্বায়ক, যুগাচার্য মহর্ষি নগেন্দ্র-মেমোরিয়াল কমিটি, ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা - ৯। পৃষ্ঠা ২৬। 
  10. ব্রহ্মচারী, শ্রীমদ্ ভক্তিপ্রকাশ (জুলাই ২০১১)। শ্রীশ্রীনগেন্দ্র-উপদেশামৃত[ প্রথম খণ্ড]। শ্রীশ্রী নগেন্দ্র মঠ, ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা- ৯। পৃষ্ঠা ঞ। 
  11. মুখোপাধ্যায়, রঘুপতি (ফেব্রুয়ারি ২০১২)। যুগাচার্য্য মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ। সনাতন ধর্ম প্রচারিণী সভা ও শ্রীশ্রী নগেন্দ্র মঠ এবং নগেন্দ্র মিশন, ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা- ৯। পৃষ্ঠা ঙ। 
  12. ব্রহ্মচারী, শ্রীমদ্ ভক্তিপ্রকাশ (জুলাই ২০১১)। শ্রীশ্রীনগেন্দ্র-উপদেশামৃত[ প্রথম খণ্ড]। শ্রীশ্রী নগেন্দ্র মঠ, ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা- ৯। পৃষ্ঠা দশ। 
  13. বসু, গোস্বামী, রাহা, অধ্যাপক শ্রীনির্মলকান্তি, অধ্যাপক ডঃ শ্রীকৃষ্ণপদ, ডাঃ শ্রীদীপেন (আগষ্ট ১৯৮১)। মহর্ষি নগেন্দ্র-স্মারক গ্রন্থ। অধ্যাপক শ্রীনির্মলকান্তি বসু [বিভাগীয় প্রধান, সংস্কৃত বিভাগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।] আহ্বায়ক, যুগাচার্য মহর্ষি নগেন্দ্র-মেমোরিয়াল কমিটি, ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা - ৯। পৃষ্ঠা ১২৮। 
  14. মুখোপাধ্যায়, রঘুপতি (ফেব্রুয়ারি ২০১২)। যুগাচার্য্য মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ। সনাতন ধর্ম প্রচারিণী সভা ও শ্রীশ্রী নগেন্দ্র মঠ এবং নগেন্দ্র মিশন, ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা- ৯। পৃষ্ঠা ১৬-১৭। 
  15. বসু, গোস্বামী, রাহা, অধ্যাপক শ্রীনির্মলকান্তি, অধ্যাপক ডঃ শ্রীকৃষ্ণপদ, ডাঃ শ্রীদীপেন (আগষ্ট ১৯৮১)। মহর্ষি নগেন্দ্র-স্মারক গ্রন্থ। অধ্যাপক শ্রীনির্মলকান্তি বসু [বিভাগীয় প্রধান, সংস্কৃত বিভাগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।] আহ্বায়ক, যুগাচার্য মহর্ষি নগেন্দ্র-মেমোরিয়াল কমিটি, ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা - ৯। পৃষ্ঠা ১৩৭। 
  16. মুখোপাধ্যায়, রঘুপতি (ফেব্রুয়ারি ২০১২)। যুগাচার্য্য মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ। সনাতন ধর্ম প্রচারিণী সভা ও শ্রীশ্রী নগেন্দ্র মঠ এবং নগেন্দ্র মিশন, ২ বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা - ৯। পৃষ্ঠা পৃষ্ঠা ১৬। 
  17. শ্রীশ্রী পরমহংস, যোগানন্দ (১৯৬০)। যোগিকথামৃত [পরমহংস যোগানন্দ-কৃত ইংরেজী " অটো বাইওগ্র্যাফি অফ এ যোগী"-র বঙ্গানুবাদ]। যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ্ ইন্ডিয়া, যোগদা সৎসঙ্গ মঠ, দক্ষিণেশ্বর, কলকাতা - ৭৬। পৃষ্ঠা ৭২। 
  18. মুখোপাধ্যায়, রঘুপতি (ফেব্রুয়ারি ২০১২)। যুগাচার্য্য মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ। সনাতন ধর্ম প্রচারিণী সভা ও শ্রীশ্রী নগেন্দ্র মঠ এবং নগেন্দ্র মিশন, ২ বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা - ৯। পৃষ্ঠা ২৭। 
  19. বসু, গোস্বামী, রাহা, অধ্যাপক শ্রীনির্মলকান্তি, অধ্যাপক ডঃ শ্রীকৃষ্ণপদ, ডাঃ শ্রীদীপেন (আগষ্ট ১৯৮১)। মহর্ষি নগেন্দ্র-স্মারক গ্রন্থ। অধ্যাপক শ্রীনির্মলকান্তি বসু [বিভাগীয় প্রধান, সংস্কৃত বিভাগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।] আহ্বায়ক, যুগাচার্য মহর্ষি নগেন্দ্র-মেমোরিয়াল কমিটি, ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা - ৯। পৃষ্ঠা ২০। 
  20. মুখোপাধ্যায়, ডঃ রঘুপতি (ডিসেম্বর ২০১৬)। শ্রীশ্রী নগেন্দ্র গীতা। সনাতন ধর্ম প্রচারিণী সভা (১৮৯১) ও শ্রীশ্রীনগেন্দ্র মঠ (১৯১৬), ২বি রামমোহন রায় রোড, কলকাতা- ৯। 
  21. Sen Shastri, Prof. Tripurasankar (ডিসেম্বর ২০২০)। The Levitating Saint। Nagendra Mission, 2B Rammohan Roy Road, Kolkata-7000009। পৃষ্ঠা 28। 
  22. Paramhansa, Yogananda (২০১৮)। The Levitating Saint, AUTOBIOGRAPHY OF A YOGI। THE PHILOSOPHICAL LIBRARY, INC, 15th East 40th Street, New York, N.Y। পৃষ্ঠা 64। 
  23. মুখোপাধ্যায়, রঘুপতি (ফেব্রুয়ারি ২০১২)। যুগাচার্য্য মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ। সনাতন ধর্ম প্রচারিণী সভা ও শ্রীশ্রী নগেন্দ্র মঠ এবং নগেন্দ্র মিশন, ২ বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা - ৯। পৃষ্ঠা ২৬–২৭।