ভাত দে হারামজাদা, নইলে মানচিত্র খাবো
ভাত দে হারামজাদা, নইলে মানচিত্র খাবো রফিক আজাদ কর্তৃক রচিত একটি বিখ্যাত বাংলা কবিতা। এটি তাঁর কাব্যগ্রন্থ সীমাবদ্ধ জলে, সীমিত সবুজে-এ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ নিয়ে কথা বলা হয়েছে, যা বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতির কারণ ছিল। কবি এ কবিতায় শেখ মুজিবুর রহমানকে পরোক্ষভাবে উল্লেখ করেন। এটিতে ৩৩টি ছন্দোবদ্ধ পঙক্তি রয়েছে।
রফিক আজাদ কর্তৃক রচিত | |
দেশ | বাংলাদেশ |
---|---|
ভাষা | বাংলা |
ধারাবাহিক | সীমাবদ্ধ জলে, সীমিত সবুজে |
বিষয় | ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষ |
ধরন | কবিতা |
প্রকাশক | প্রিয়মুখ |
প্রকাশনার তারিখ | ১৯৭৪ |
লাইন | ৩৩ |
পটভূমি সম্পাদনা
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে ব্যাপক দুর্নীতির কারণে একটি দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় যার ফলে সেই সময়ে দেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়।[১] পরবর্তী সময়ে কবির দাবি অনুযায়ী, সে সময় দৈনিক ইত্তেফাকের এক সাংবাদিক জাল পরিহিত এক ব্যক্তি ও অন্য একজনের বমি খাওয়ার ভান করার ছবি তুলে পত্রিকায় প্রকাশ করেন। এই ছবিগুলো দেখে রফিক আজাদ রেগে গিয়ে কবিতাটি লেখেন।[২] কবিতাটি প্রকাশিত হয় তার সীমাবদ্ধ জলে, সীমিত সবুজে কাব্যগ্রন্থে। কবিতাটির জন্য শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন সরকার বইটি নিষিদ্ধ করে।[৩] তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রতি কোনো মন্তব্য না করলেও, রফিক আজাদকে কবিতাটি লেখার কারণ লিখিত আকারে পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শকের নিকট বিশেষ শাখার দপ্তরে জবাবদিহি হিসেবে জমা দিতে হয়।[২]
উপজীব্য সম্পাদনা
কবিতাটির মূল বিষয়বস্তু ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ। সে সময় খাবারের অভাব জনমনে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল, তা কবি তার কবিতায় তুলে ধরেন।[১] কলাম লেখক আকতার হোসেন মনে করেন যে কবি কবিতায় দুর্ভিক্ষের জন্য শেখ মুজিবুর রহমানকে দায়ী করে তাকে "হারামজাদা" বলে অভিহিত করেছেন। আকতার সেজন্য তার কলামে কবির সমালোচনা করেন।[৪]
বিশ্লেষণ সম্পাদনা
একটি গদ্য কবিতা হিসাবে, এখানে অক্ষরবৃত্ত ও ফাঁকা পদ্য ছন্দ এখানে ব্যবহার করা হয়েছে।[৫]
অভ্যর্থনা সম্পাদনা
এই কবিতাটি সিরাজ সিকদার ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সদস্যদের কাছে জনপ্রিয় ছিল। হুমায়ুন আজাদ রফিক আজাদের কবিতাটিকে "অপভাষায় প্রকাশিত ক্ষোভ" বলেছেন। কবিতাটি সম্পর্কে ইমদাদুল হক মিলন বলেন, "রফিক আজাদ একজন জাঁদরেল সাহসী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি কাদের সিদ্দিকীর সহকারী ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসারী ছিলেন। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে কবিতা লিখে দেশ কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন তিনি...."।[৪]
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ ক খ "'ভাত দে হারামজাদা, নইলে মানচিত্র খাবো'"। ঢাকাটাইমস২৪.কম। ১২ মার্চ ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০২২।
- ↑ ক খ জব্বার আল নাইম (১৪ মার্চ ২০২০)। "রফিক আজাদের সাক্ষাৎকার"। বাংলা ট্রিবিউন। ২ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০২২।
- ↑ চৌধুরী, ময়ূর (১০ মার্চ ২০১৭)। "কালের খেয়া: কথা প্রসঙ্গে রফিক আজাদ"। সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০২২।
- ↑ ক খ "রফিক আজাদের কবিতার 'হারামজাদা' সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি"। চ্যানেলআইঅনলাইন.কম। চ্যানেল আই। ১৮ মার্চ ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০২২।
- ↑ "রফিক আজাদ এক বিপ্লবী কবি"। ইনকিলাব। ১ জানুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০২২।
আরো পড়ুন সম্পাদনা
- চাকলাদার, রাজু (১৩ এপ্রিল ২০১৬)। "ভাত দে হারামজাদাঃ ইতিকথার পরের কথা"। বিডিনিউজ২৪.কম। সংগ্রহের তারিখ ১৯ আগস্ট ২০২২।