ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ
ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ বা ভাঙ্গা গোলচত্বর হলো ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গায় অবস্থিত বাংলাদেশের একটি প্রধান সড়ক ইন্টারচেঞ্জ যা একটি ক্লোভারলিফ নিয়ে গঠিত।[১] এটি বাংলাদেশের দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলাকে দেশের রাজধানী ঢাকার সাথে সংযুক্ত করে যা ঢাকা–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা–খুলনা মহাসড়ক, ভাঙ্গা–ফরিদপুর মহাসড়ক ও ঢাকা–পটুয়াখালী মহাসড়ক নামক চারটি জাতীয় মহাসড়কের সংযোগস্থল।[২]
ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ | |
---|---|
ভাঙ্গা গোলচত্বর | |
অবস্থান | |
ভাঙ্গা, ফরিদপুর জেলা, বাংলাদেশ | |
স্থানাঙ্ক | ২৩°২৩′২৫″ উত্তর ৮৯°৫৯′০২″ পূর্ব / ২৩.৩৯০১৮৭৮° উত্তর ৮৯.৯৮৩৯৩০৮° পূর্ব |
সংযোগস্থল সড়ক | |
নির্মাণ | |
ধরন | ক্লোভারলিফ ইন্টারচেঞ্জ |
লেন | ২ |
নির্মাণ | ২০১৬–২০২১ |
চালু | ২০২১ |
রক্ষণাবেক্ষণকারী | সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ |
টোল | হ্যাঁ |
পটভূমি
সম্পাদনা২০১৬ সালে[৩] একটি এক্সপ্রেসওয়েতে রূপান্তর করার জন্য ২০১৯ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে জাতীয় মহাসড়ক ৮-এর ঢাকা–ভাঙ্গা অংশে কাজ শুরু হয়। রূপান্তর প্রকল্পের অংশ হিসেবে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গায় এক্সপ্রেসওয়ের তিনটি সড়ক ইন্টারচেঞ্জের মধ্যে একটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়।[৪] ১২ মার্চ ২০২০ সালে ঢাকা–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে নামে এক্সপ্রেসওয়েটি উদ্বোধন করা হয়।[৫] এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণের আগে ভাঙ্গাতে একটি চৌরাস্তা ছিল যা এপ্রিল ২০২০ সালে চালুর পরে একটি ইন্টারচেঞ্জে পরিণত হয়। ইন্টারচেঞ্জের কাজ শেষ হওয়ার পর বর্তমানে এটি একটি দর্শনীয় স্থান।[৬]
সমস্যা
সম্পাদনাইন্টারচেঞ্জটিতে নকশাগত ত্রুটি রয়েছে। এর সড়কবাঁধ কংক্রিটের তৈরি না হওয়ায় ইন্টারচেঞ্জটি বৃষ্টির ফলে একাধিকবার ভেঙ্গে যায়। এছাড়া বৃষ্টির কারণে উদ্ভূত জলাবদ্ধতা ইন্টারচেঞ্জে যানবাহন চলাচলে অসুবিধার সৃষ্টি করে থাকে। ঢাকা–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের দুটি সার্ভিস লেনের সাথে ইন্টারচেঞ্জটি সংযুক্ত নয়। ফলে সার্ভিস লেন ব্যবহারকারী যানগুলো ইন্টারচেঞ্জ ব্যবহার করে অন্য সড়কে যেতে পারেনা। মালবাহী যানবাহনের কথা আমলে না নিয়ে ইন্টারচেঞ্জের নকশা করা হয়েছে বিধায় এর ২৭০ ডিগ্রি বিশিষ্ট চারটি লুপ ব্যবহার করে ইন্টারচেঞ্জে উঠা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায় ও চালকদের বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়।[৭] সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ৳৩১ লাখ পরিমাণ বিল বকেয়া থাকার কারণে ৬ জুন ২০২৩ সালে[৮] ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ইন্টারচেঞ্জের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ দাবি করেছিল যে তাদের কাছে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য অর্থ নেই। বিদ্যুতের অভাবে ইন্টারচেঞ্জের ল্যাম্পপোস্টগুলোয় আলো জ্বলে উঠা বন্ধ হওয়ার ফলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যায়[৯] এবং পর্যটকদের সংখ্যা কমে আসে। ২৬ জুলাই ২০২৩ সালে বকেয়ার ৳২৫ লাখ পরিশোধ করার পরের দিন অর্থাৎ ৫১ দিন পর বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ইন্টারচেঞ্জে যাত্রীদের চলাচল স্বাভাবিক হয়।[৮]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Cloverleaf interchange, 4-lane highway to boost connectivity, trade in North Bengal"। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩।
- ↑ "A new look for Bhanga Gol Chattar"। বিডিনিউজ২৪.কম। ১৫ অক্টোবর ২০২১। ২৭ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
- ↑ Malakar, Dipu। "ঢাকা থেকে ভাঙ্গা এক ঘণ্টায়"। দৈনিক প্রথম আলো। ১০ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১।
- ↑ "বদলে যাচ্ছে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়ক"। বাংলা ট্রিবিউন। ৩ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী"। দ্য ডেইলি স্টার। ১২ মার্চ ২০২০।
- ↑ "দুবাইয়ের চেহারা পেয়েছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা!"। কালের কণ্ঠ। ১১ জুন ২০২১।
- ↑ "অব্যাহত ভাঙনের মুখে ভাঙ্গা গোল চত্বরের সড়কবাঁধ"। বণিক বার্তা। ১১ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ ক খ "Electricity restored on Bhanga Expressway after 51 days"। ঢাকা ট্রিবিউন। ২৭ জুলাই ২০২৩।
- ↑ "ভাঙ্গার এক্সপ্রেসওয়ের ইন্টারচেঞ্জে দেড় মাস নেই বিদ্যুৎ"। আমাদের সময়। ২২ জুলাই ২০২৩।
আরও পড়ুন
সম্পাদনা- মায়ুখ, আলী আহনাফ আবিদ (২০২৩)। "Analyzing the traffic efficiency and environmental impact of the cloverleaf interchange at Bhanga, Bangladesh by simulation" [সিমুলেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাঙ্গার ক্লোভারলিফ ইন্টারচেঞ্জের ট্রাফিক দক্ষতা ও পরিবেশগত প্রভাব বিশ্লেষণ] (পিডিএফ)। জার্নাল অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (ইংরেজি ভাষায়)। ঢাকা: ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ। ৫১ (২): ৮১–৮৬।