ভগ্ন হৃদয় (এছাড়াও মর্মপীড়া বা মর্মবেদনা হিসাবে পরিচিত) শব্দটি একজন ব্যক্তির তীব্র মানসিক—এবং কখনও বা শারীরিক—চাপ বা ব্যথার রূপক। ধারণাটি আন্তঃ-সাংস্কৃতিক, প্রায়ই এটি কোন অভিপ্রেত বা হারানো প্রেমের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ধৃত হয় এবং এটি কমপক্ষে ৩০০০ বছর পুরনো।[১]

মর্মবেদনা হতে পারে, গুরুতর মানসিক এবং এছাড়াও শারীরিক ব্যথা
একটি কাগজের ভগ্নহৃদয় চিহ্ন

গুরুতর আবেগ সংক্রান্ত বেদনা 'ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম' নামক রোগের কারণ হতে পারে ও হৃৎপিণ্ডের শারীরিক ক্ষতিসাধন করতে পারে।

দেহতত্ব সম্পাদনা

ভগ্নহৃদয়ের "বেদনা"র অনুভূতিকে মানুষের বেঁচে থাকার প্রবৃত্তির অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। মানুষ যাতে তার নিকট সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখে সেজন্য যখন মানুষের সম্পর্কবিচ্ছেদ ঘটে তখন "সামাজিক-সংযুক্তি সিস্টেম" "পীড়া সিস্টেম"কে ব্যবহার করে তাকে বেদনা অনুভব করায়। ২০০৫ সালে কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবৈজ্ঞানিক জিওফ ম্যাকডোনাল্ড এবং ওয়েক ফরেস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্ক লিয়ারি প্রস্তাব দেন যে শারীরিক এবং মানসিক উভয় ব্যথার প্রতিক্রিয়ার জন্য একটি সাধারণ বিবর্তন প্রক্রিয়া দায়ী এবং তারা বলেন যে, "এই অনুভূতি প্রকাশ কেবলমাত্র রূপকের চেয়ে বেশি কিছু"।[২][৩] এই ধারণাটিকে বিশ্বজনীন বলে গণ্য করা হয়। অনেক মানবসমাজে একই শব্দ দ্বারা শারীরিক ব্যথা এবং সম্পর্কবিচ্ছেদের পীড়াময় অনুভূতি উভয়কে বর্ণনা করা হয়ে থাকে।[২][৩]

মর্মবেদনার উপলব্ধির সাথে জড়িত স্নায়বিক প্রক্রিয়ার সম্বন্ধে সঠিক জানা না গেলেও মনে করা হয় যে ইহা মস্তিস্কের সম্মুখ সিঙ্গুলেট করটেক্সের সঙ্গে যুক্ত যা মানসিক চাপের সময় ভেগাস নার্ভকে অতিরিক্ত পরিমাণে উদ্দীপিত করে ব্যথা, বমি বমি ভাব বা বুকের পেশীর টানের সৃষ্টি করে।[৪] ২০০৮ সনে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাওমি আইজেনবার্গার এবং ম্যাথিউ লিবারম্যান এর গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে প্রত্যাখ্যানের সঙ্গে পৃষ্ঠীয় সম্মুখ সিঙ্গুলেট করটেক্সের এবং ডান-ভেন্ট্রাল প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্সের অ্যাক্টিভেশন সম্পর্কিত। এই সত্যটি প্রতিষ্ঠিত যে মস্তিস্কের এই দুই এলাকাই ব্যথা ও অন্যদের দ্বারা অনুভূত ব্যাথার সাথে সমব্যাথি হওয়ার প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত।[৪] একই গবেষকরা হৃদয়ের উপর সামাজিক মনস্তাত্ত্বিক চাপের প্রভাব এবং ব্যথার উপলব্ধির উপর ব্যক্তিত্বের প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছেন।[৫]

২০১১ সনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে শারীরিকভাবে বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার প্রতিক্রিয়ায় মস্তিষ্কের যেসব অংশ সক্রিয় হয়ে ওঠে তীব্র সামাজিক প্রত্যাখ্যানের বা সামাজিক ক্ষতির সময়েও সেই একই অংশসমূহ সক্রিয় হয়।[৩][৬] এই গবেষণায় ওতপ্রোতভাবে জড়িত ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের সামাজিক মনোবিজ্ঞানী ইথান ক্রস বলেন, "এই ফলাফল সামাজিক প্রত্যাখ্যানের ব্যাথাকে নতুন অর্থ দিতে সক্ষম হয়েছে।"[৩] এই গবেষণা সেকেন্ডারী সোমাটোসেন্সরী কর্টেক্স এবং ডরসাল পোস্টেরিওর ইনসিউলাকে পর্যবেক্ষণ করেছে।[৩]

মনোবিজ্ঞান সম্পাদনা

অকৃত্রিম বিষাদ সম্পাদনা

অধিকাংশ শোকসন্তপ্ত ব্যক্তির এই বিষাদময় যাত্রার শেষ পরিণতি হচ্ছে তাদের ভালবাসার মানুষটিকে ছাড়া একটি জীবনের সঙ্গে আপোষ করে নিয়ে তার সাথে সমন্বয়সাধন।[৭]  কিউব্লার-রস মডেলে স্বীকার্য আছে যে একজন প্রিয় ব্যক্তির সাথে বিচ্ছেদের পর বিষাদের পাঁচটি ধাপ থাকে। অস্বীকার, রাগ, লাভক্ষতির হিসেবনিকেশ করা, বিষণ্ণতা ও গ্রহণযোগ্যতা।[৮] যদিও এটা স্বীকৃত যে, সাধারণত একজন শোকার্তকে প্রাথমিক পর্যায়ে অসাড়তার মধ্য দিয়ে যেতে হয় যা বিষণ্নতার জন্ম দেয় এবং শেষে পুনর্গঠন সম্ভব হয় এবং পুনঃ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে; অধিকাংশ আধুনিক বিষাদ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বিষাদ অভিজ্ঞতার বৈচিত্র এবং অনুভুতির তীব্রতা এবং দৈর্ঘ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাংস্কৃতিক পটভূমি উপর নির্ভর করে এবং ব্যক্তিবিশেষে ভিন্ন ভিন্ন হয়।

প্রায়ই স্মৃতিরোমন্থন বা নিরবিচ্ছিন্নভাবে অনিবারিত অনধিকারমূলক এবং কষ্টদায়ক চিন্তা করা [৯] শোকার্ততার পরিচয় দেয়। জন বোলবির হৃত বস্তুর জন্য অনুসন্ধানের ধারণা মূলত শোকসন্তপ্ত ব্যক্তির উদ্বেগ এবং ক্রমবর্ধমান হতাশার কথা বলে। এর মধ্যে আছে চলে যাওয়া ব্যাক্তির স্মৃতি বার বার মনে করা এবং সম্ভবত তার সাথে আবার দেখা হওয়ার মনগড়া অনুভূতি। 'পরিত্যক্ত হওয়া' বা 'প্রতিদানহীন ভালবাসা'র,[১০] ক্ষেত্রে উপর্যুক্ত অনুভূতিগুলির উপরন্তু এই মানসিক অনুসন্ধানের মধ্যে থাকে বিচ্ছেদের কারণ অনুসন্ধান ও  চলে যাওয়া মানুষটির সঙ্গে পুনর্মিলনের সম্ভাবনার আশা। [১১] এছাড়াও যখন এই বিচ্ছেদের সাথে প্রত্যাখ্যান জড়িত থাকে তখন জড়িত হতে পারে লজ্জানুভূতি যেমন অগ্রহণযোগ্যতা, পরিত্যাগযোগ্যতা, অযোগ্যতার বেদনাদায়ক অনুভূতি। [১২]

শোকার্ততার শারীরিক লক্ষণ হল:[১৩]

  1. অবসাদ, পেশীর টান বা দুর্বলতা, শরীরে ব্যাথা, অতি চাপল্য, শক্তির অভাব।
  2. অনিদ্রা, অতিরিক্ত ঘুম, ধকলপূর্ণ স্বপ্ন।
  3. খাওয়ার অরুচি, অতিরিক্ত ক্ষুধা, বমি বমি ভাব, "ফাঁপা পেট", বদহজম, ডায়রিয়ার মত অন্ত্রের রোগ, অত্যধিক ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস।
  4. মাথাব্যাথা, শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ, গলায় টান বা নিবিড়তা।

বিষণ্ণতা সম্পাদনা

হৃদয়ভঙ্গ হওয়া একটি প্রধান চাপ সৃষ্টিকারী এবং গভীর বিষণ্নতাপর্বের কারণ। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ২৪% শোকার্ত এ দুই মাস, ২৩% সাত মাস, ১৬% তেরো মাস এবং ১৪% পঁচিশ মাস বিষন্ন ছিলেন।[১৪]

কিছু  পরস্পর সামঞ্জস্যপূর্ণ উপসর্গ থাকলেও অকৃত্রিম বিষাদকে একটি পূর্ণ বিষাদ পর্বের থেকে আলাদা করা যায়।[১৫] গুরুতর বিষাদ আরো পরিব্যাপক হয়ে থাকে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে স্ব-যাচাই এবং ইতিবাচক অনুভূতি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অসুবিধার সম্মুখীন করতে পারে। একটি স্থিতিশীল এবং সহজে চিহ্নিত করা যায় এমন মনোবল শিথিলকারী উপসর্গ দ্বারা গুরুতর বিষাদ গঠিত হয়। এর সাথে থাকে দীর্ঘায়িত জীবন্মৃত মেজাজ। চিকিৎসা না করা হলে এটা ক্রমাগত ব্যক্তির কাজ এবং সামাজিক কর্মক্ষমতা রোগপ্রতিরোধমূলক ফাংশন এবং অন্যান্য জৈব-স্নায়বিক পরিবর্তন ঘটায়।

প্রেমের সম্পর্ক বিচ্ছেদে শোকার্ত তার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার রাগ নিজেদের উপর আরোপ করতে পারে।[১৬] এর ফলে বিষাদ গভীরতর হয়[১৭] এবং তাকে আত্মরতিমূলক আঘাত দেয়।[১৮] স্ব-আক্রমণ প্রক্রিয়া হাল্কা স্ব-সন্দেহ থেকে কঠোর স্ব-অভিযোগ পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। যা ব্যক্তির জীবনে একটি দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলে এবং তার মনে ভালবাসা পাওয়ার যোগ্যতা, ব্যক্তিত্বের সৌন্দর্য, এবং সঙ্গ পাওয়ার যোগ্যতা নিয়ে শঙ্কা তৈরি করে।[১৯]

মানসিক ট্রমা সম্পাদনা

গুরুতর ক্ষেত্রে ভগ্ন হৃদয়ের বিষণ্নতা একটি দীর্ঘস্থায়ী ধরনের চাপ গঠন করে যা থেকে একটি আবেগীয় ট্রমা হতে পারে।  এই ট্রমা ব্যক্তির জৈবমনস্তত্ত্বের উপর যথেষ্ট গুরুতর ছাপ ফেলতে পারে যা তার ভবিষ্যতে সিদ্ধান্তগ্রহণ এবং প্রত্যাখ্যান, ক্ষতি বা বিচ্ছেদের প্রতিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।[২০] ট্রমা-সৃষ্টিকারী একটি উপাদান হচ্ছে 'নিঃসঙ্গ' হয়ে যাওয়ার শঙ্কা,  যা বিচ্ছেদ ভয় ট্রিগার করতে পারে – একজন ব্যক্তির গুরুত্বপূর্ণ চাহিদার খেয়াল রাখার কেউ রইল না এই ভীতি।

শোকার্তরা অসহায়তার তীব্র মানসিক চাপও অনুভব করতে পারেন।[২১] যদি তারা তাদের প্রিয়জনকে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করে বার বার ব্যর্থ হন তাহলে তারা আরও অসহায় ও মনজয়ে অপর্যাপ্ত অনুভব করেন। এই 'সীমিত ক্ষমতা'র অনুভূতি ব্যক্তির মানসে একটি ত্রুটি তৈরি করতে পারে যা ব্যক্তিকে তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের সঙ্গে অতিরিক্ত সংবেদনশীল করে তোলে।[২২]

এমন কাউকে হারানো যার সাথে নিজের অজান্তেই এমন সব বন্ধন তৈরি হয়েছিল প্রচণ্ড আঘাত দেয়।[২৩] উদাহরণস্বরূপ,  হতে পারে, কোন প্রেমিক-প্রেমিকাযুগল একে অপরের বাহ্যিক নিয়ন্ত্রকের ন্যায় কাজ করতে পারে যেমন: একজনের কান্নায় আরেকজনের চোখ ভিজে যাওয়া, অজান্তেই একে অপরের স্বর প্রতিধ্বনিত করা, চলাফেরা এবং এমনকি হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনের এবং ইইজির ছন্দের মিল।[২৪] দম্পতিরা একে অপরের পারস্পরিক বায়ো-ফিডব্যাক সিস্টেমের মত একে অপরের জৈব ছন্দকে উদ্দীপিত ও নিয়ন্ত্রিত করতে পারে। পরস্পরের ফেরোমোনকে সাড়া দিয়ে এন্ডোজেন জাতীয় হরমোনের নিয়মিত নিঃসরণের ফলে একে অপরের প্রতি আসক্ত[২৫] হতে পারেন।[২৬]

ট্রমা পরবর্তী স্ট্রেস ডিসর্ডার সম্পাদনা

গবেষণায় দেখা গেছে যে, চরম ক্ষেত্রে, ভগ্নহৃদয় ব্যক্তি ট্রমাপরবর্তী স্ট্রেস ডিসর্ডার এ ভুগতে পারেন।[২৭]

প্রকৃতই ট্রমাপরবর্তী স্ট্রেস ডিসর্ডার হবে কি না তা বিভিন্ন পূর্বনির্ধারিত মনস্তত্ব-জৈবিক এবং পরিবেশগত কারণ যেমন আগে মানসিক ট্রমা হয়েছিল কি না তার উপর নির্ভর করে। এতে যখন তারা চাপের সম্মুখীন হয় তখন পূর্বের বিচ্ছেদের স্মৃতি মনে পড়ে সহজেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। অত: পর তারা আরো ট্রমাটাইজড প্রবণ হয়ে ওঠে।

আরেকটি কারণ হল যে শৈশবের অনিরাপদ সম্পর্ক ব্যক্তিকে পরবর্তীতে প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় নিরাপদ সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি করে এবং প্রত্যাখ্যান এবং ক্ষতির সম্মুখীন হলে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াশীল করে তোলে।[২৮]

ব্যক্তিবিশেষে চাপ নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ুরাসায়নিক সিস্টেমের পার্থক্য থাকে। একজন ব্যক্তির উপর কোন ঘটনার যেমন প্রেমে বিচ্ছেদের ফলে যে চাপ সৃষ্টি হয় তার তীব্রতার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন মাত্রায় সিআরএফ, এসিটিএইচ ইত্যাদি চাপ নিয়ন্ত্রক হরমোন এবং কর্টিসোল মস্তিস্কের অ্যামিগডেলাতে ভবিষ্যতে সাবধান করার জন্য সেই অপ্রিয় ঘটনাটির একটি চিহ্ন অমোচনীয়রূপে এঁকে দেয়।

মেডিকেল জটিলতা সম্পাদনা

ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম সম্পাদনা

অনেক পৌরাণিক কাহিনী এবং কাল্পনিক গল্পে হৃদয়জনিত বিধ্বংসী ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে চরিত্ররা মারা যায়। কিন্তু বাস্তবেও ভগ্নহৃদয়ের ফলস্বরূপ মানুষের মৃত্যু হয়। ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম হল একটি বিচ্ছেদজনিত আঘাত বা প্রিয়জন বিয়োগে মানসিক চাপের ফলে সৃষ্ট হার্টের ব্যথা।[২৯]

ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোমের লক্ষণ হার্ট অ্যাটাকের মত, কিন্তু এটা চিকিৎসাগতভাবে হার্ট অ্যাটাক থেকে ভিন্ন  কারণ হৃদরোগের ক্ষেত্রে রোগীর ঝুঁকি কম এবং হৃদয় পেশীসমূহ দুর্বল হওয়ার পূর্বে সুস্থ ছিল।[২৯] কিছু ইকোকার্ডিওগ্রামে দেখা গেছে কীভাবে ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোমে রোগীর বাম নিলয় সাধারণভাবে সঙ্কুচিত হয় কিন্তু হৃদয়ের পেশীর মাঝের ও উপরের দিকের অংশের বিপর্যস্ত টি তরঙ্গ এবং দীর্ঘতর Q-T পর্যায়কাল যা চাপের সাথে জড়িত দুর্বল সংকোচন হয়।[৩০] এমআরআই ছবিতে দেখা যায় যে  যারা ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোমে ভুগছেন তারা হার্ট এটাক রোগীদের চেয়ে দ্রুত প্রায় দুই মাসের মধ্যে সেরে ওঠেন।[২৯]

এন্ডোক্রাইন এবং ইমিউন বিপর্যয় সম্পাদনা

যেসকল ব্যক্তি উচ্চ মাত্রায় উদ্বেগ এবং বিষণ্নতায় ভোগেন তাদের শরীরে এমন সব শারীরবৃত্তীয় ও জৈবরাসায়নিক পরিবর্তন দেখা যায় যা শারীরিক অসুস্থতা এবং হৃদয় রোগের কারণ। কিছু বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া শোকসন্তপ্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রদাহজনক সাইটোকিনের ও ডিপ্রেশনের দরুন ইমিউন সিস্টেম সংকটাপন্ন হয়।[৩১]

সাংস্কৃতিক উল্লেখ সম্পাদনা

১০১৫ খ্রিস্টপূর্বে হৃদয়ভঙ্গজনিত বেদনার রেফারেন্স বাইবেলে পাওয়া যায়।[৩২]

অপমান আমার হৃদয় ভঙ্গ করে আমাকে দুর্বল করে দিয়েছে, আমি সহানুভূতি চেয়েছিলাম, কিন্তু পাই নাই; কেউ আমাকে সান্ত্বনা দেয় নাই।(সামসংহিতা ৬৯ঃ২০)

ফার্সি কবিতার প্রথম মহান কবি হিসাবে গণ্য  রুদাকি  তার লেখায় ভগ্নহৃদয়ের চিত্রাবলী ব্যবহার করেছেন।

মেঘের দিকে তাকাও, যেন সে কোন শোকার্ত মানুষের রোদন।
বজ্রবিদ্যুৎ গর্জে ওঠে যেন ভগ্ন হৃদয়ের আর্ত গোঙানি।  

শেক্সপীয়ারের নাটক অ্যান্টনি অ্যান্ড ক্লিওপেট্রায় এনোবারবাস হলেন একজন চরিত্র যিনি একজন বন্ধুকে প্রতারিত করার পর ভগ্নহৃদয় নিয়ে মারা যান। রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েটে লেডি মন্টেগু তার পুত্রের নির্বাসনের পর ভগ্নহৃদয়ে মৃত্যুবরণ করেন।[৩৩]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Johnson, R. Skip। "A Broken Heart can Really Hurt You"BPDFamily.com। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০১৪ 
  2. MacDonald, Geoff; Leary, Mark R.। "Why Does Social Exclusion Hurt? The Relationship Between Social and Physical Pain" (পিডিএফ)Psychological Bulletin। ৮ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১২ 
  3. University of Michigan News Service 2011
  4. Scientific American Mind 2015
  5. Eisenberger ও Lieberman 2004
  6. National Academy of Sciences 2011
  7. Zisook, Sidney; Shear, Katherine (জুন ১, ২০০৯)। "Grief and bereavement: what psychiatrists need to know"। World Psychiatry8 (2): 67–74। পিএমআইডি 2691160 
  8. Broom, Sarah M. (আগস্ট ৩০, ২০০৪)। "Milestones"। TIME। আগস্ট ১৭, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ২, ২০১৭ 
  9. Carll 2007
  10. Tennov, Dorothy.
  11. Bowlby, John, Loss: Sadness and Depression; Attachment and Loss, III, Basic Books, 1982.
  12. Lewis, Helen Block.
  13. Staff, Writer। "Bereavement And Grief"। HomeLifeCountry। ৯ জুন ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১২ 
  14. Zisook, S; Shuchter, SR (অক্টোবর ১৯৯১)। "Depression through the first year after the death of a spouse"American Journal of Psychiatry148 (10): 1346–52। 
  15. Auster, T; Moutier, C; Lanouette, N (অক্টোবর ১, ২০০৮)। "Bereavement and depression: implications for diagnosis and treatment"Psychiatric Annals38: 655–661। 
  16. Colin, Virginia A. (১৯৯৬)। Human Attachment। Philadelphia: Temple University Press। পৃষ্ঠা 340। 
  17. Schore, Allan.
  18. Kohut, H. The Restoration of the Self Madison: International Universities Press, 1977.
  19. Robertiello, Richard.
  20. Van der Kolk, Bessel A., Alexander C. McFarlane, and Lars Weisaeth. Traumatic Stress:The Effects of Overwhelming Experience on Mind, Body, and Society. New Y ark: Guilford Press, 1996.
  21. Seligman, Martin. Helplessness: On Depression, Development and Death. San Francisco: W. H. Freeman, 1975.
  22. Balint, Michael. The Basic Fault: Therapeutic Aspects of Regression. Evanston: North Western University Press, 1992.
  23. Winnecott, Donald W. "The Capacity to be Alone." In The Maturational Processes and the Facilitating Environment: Studies in the Theory of Emotional Development. Madison: International Universities Press, 1965 ; Robertiello Richard, Gagnier Terril T (১৯৯৩)। "Sado-masochism as a Defense Against Merging: Six Case Studies"Journal of Contemporary Psychotherapy23 (3): 183–192। 
  24. Tiffany Field, "Attachment as Psychobiological Attunement: Being on the Same Wavelength," in The Psychobiology of Attachment and Separation, pp. 445-448.
  25. L. Monti-Bloch, and B. I. Grosser, "Effect of Putative Pheromones on the Electrical Activity of the Human Vomeronasal Organ and Alfactory Epithilium," Journal of Steroid Biochemistry and Molecular Biology 1001.
  26. Pert, Candace B. Molecules of Emotion. New York: Scribner, 1997' and Panksepp Jaak, Nelson Eric, Bekkedal Marni (১৯৯৭)। "Brain Systems for the Mediation of Separation Distress and Social Reward"। Annals NY Academy of Sciences807: 78–100। 
  27. Goleman, Daniel.
  28. Ainsworth, Mary D. S. "Attachments and Other Affectional Bonds Across the Life Cycle."
  29. Mayo Clinic 2015
  30. Lumb 2014
  31. Field 2011
  32. "Why is Bible engagement down in the digital age? Bible Gateway's Rachel Barach shares some insight". Biblegateway. Retrieved 5 August 2015.
  33. "Romeo and Juliet, Act V Scene III". Shakespeare Literature. Retrieved 5 August 2015.

উৎস সম্পাদনা

মুদ্রিত সম্পাদনা

অনলাইন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

  •   উইকিমিডিয়া কমন্সে Broken hearts সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।