বাংলা উইকিপিডিয়ায় স্বাগতম সম্পাদনা

ভূগণিত সম্পাদনা

প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। তবে আপনি উপরের নিবন্ধটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করছেন না। দয়া করে ইংরেজি নিবন্ধ থেকে অনুবাদ করুন, অন্যথায় এটি অপসারণ করা হতে পারে। ধন্যবাদ। ~ যুদ্ধমন্ত্রী আলাপ ০৯:৩৩, ১৩ জুলাই ২০১৯ (ইউটিসি)উত্তর দিন

নিবন্ধ সম্পর্কে সম্পাদনা

সুধী, আপনার জমা দেওয়া উপরের নিবন্ধটি গ্রহণ করা হয়নি। নিয়ম অনুসারে নিবন্ধটি ইংরেজি থেকে পুরোটা বাংলাতে অনুবাদ করতে হবে গুগল ট্রান্সলেটরের সাহায্য ছাড়া। পুরো নিবন্ধ অনুবাদ করে তারপর জমা দিন শুধু শিরোনাম। ধন্যবাদ। ~ যুদ্ধমন্ত্রী আলাপ ১৫:৫৭, ১৪ জুলাই ২০১৯ (ইউটিসি)উত্তর দিন

ইংল্যান্ডের ইতিহাস, ভূগণিত সম্পাদনা

সুধী, আপনার জমা দেওয়া উপরের নিবন্ধটি গ্রহণ করা হয়নি। নিয়ম অনুসারে নিবন্ধটি ইংরেজি থেকে পুরোটা বাংলাতে অনুবাদ করতে হবে গুগল ট্রান্সলেটরের সাহায্য ছাড়া। উপরের নিবন্ধ দুটি পাঠযোগ্য নয় এবং যান্ত্রিক। নিয়ম অনুসারে যান্ত্রিক নিবন্ধ অপসারণ করা হতে পারে। দয়া করে নিবন্ধ দুটি পাঠযোগ্য করে পুনরায় জমা দিন। ধন্যবাদ। ~ যুদ্ধমন্ত্রী আলাপ ১৬:০১, ১৪ জুলাই ২০১৯ (ইউটিসি)উত্তর দিন

'প্রানঘাতি ভাইরাস করোনা
নামকরণ

২০১৯-২০২০ সালে করোনাভাইরাসঘটিত ব্যাধির প্রাদুর্ভাব ও বিশ্বব্যাপী বিস্তার COVID-19-outbreak ২০১৯ সালের করোনাভাইরাসঘটিত ব্যাধির প্রাদুর্ভাব বলতে ২০১৯ সালের করোনাভাইরাসঘটিত ব্যাধির (COVID-19) উদ্ভব এবং এর দ্রুত ও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার চলমান ঘটনাটিকে নির্দেশ করা হয়েছে। ব্যাধিটি একটি ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট হয়, যাকে ভাইরাসবিজ্ঞানীরা গুরুতর তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক উপসর্গসমষ্টি-সংশ্লিষ্ট করোনাভাইরাস ২ (Severe Acute Respiratory Syndrome Coronavirus 2) বা সংক্ষেপে ২ নং সার্স করোনাভাইরাস (SARS-CoV-2) নামকরণ করেছেন। কোথায় প্রথম দেখা যায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে মধ্য চীনের হুপেই প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানী (ও তৎকালীন চীনের ৭ম বৃহত্তম নগরী) উহান নগরীর কর্তৃপক্ষ এই নতুন ধরনের করোনাভাইরাসটি শনাক্ত করেন। সেসময় এই ভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় ৪১ জন চীনা ব্যক্তির গুরুতর ফুসফুস প্রদাহ (নিউমোনিয়া) রোগ হয়েছিল এবং প্রথমদিকে তাদের রোগের কোনও পরিষ্কার কারণ বের করা যায়নি কিংবা প্রচলিত ভাইরাস নিরোধক চিকিৎসা দিয়ে তাদের সারিয়ে তোলা যায়নি।[৪] উহান নগরীর হুয়ানান সামুদ্রিক খাদ্যের পাইকারি বাজারে বিক্রিত কোনও প্রাণী থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে বাজারের দোকানদার ও ক্রেতাদের মধ্যে প্রথম ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটে বলে ধারণা করা হয়। পরবর্তীতে চীনা বিজ্ঞানীরা এই নতুন প্রকারের করোনাভাইরাসটি পরীক্ষাগারে আলাদা করে শনাক্ত করতে সক্ষম হন।

২ নং সার্স করোনাভাইরাস প্রথমে প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমিত হলেও বর্তমানে এটি বিবর্তিত হয়ে মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে সক্ষম।[৫] ইতিমধ্যে বিশ্বের অনেকগুলি দেশে মানুষ থেকে মানুষে ভাইরাসটির সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। ভাইরাসটি দেহে সংক্রমিত হবার পরে ২ থেকে ১৪ দিন সুপ্তাবস্থায় থাকতে পারে এবং এ সময় বাহকের অগোচরে এটি অপর কোনও ব্যক্তির দেহে সংক্রমিত হতে পারে। ভাইরাসটির সংক্রমণের ফলে যে ব্যাধিটি হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার নাম দিয়েছে ২০১৯ সালের করোনাভাইরাসঘটিত ব্যাধি। এই ব্যাধির উপসর্গগুলির মধ্যে আছে জ্বর, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট, পেশীতে ব্যথা ও অবসাদগ্রস্ততা। সঠিক সময়ে সেবা-শুশ্রুষা না পেলে ব্যাধিটি জটিল আকার ধারণ করে, যার ফলে ফুসফুস প্রদাহ (নিউমোনিয়া), তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত উপসর্গসমষ্টি, রক্তে জীবাণুদূষণরোধী তীব্র অনাক্রম্য প্রতিক্রিয়া (সেপসিস) ও জীবাণুদূষণজনিত অভ্যাঘাত (সেপটিক শক) হতে পারে এবং পরিশেষে মৃত্যুও হতে পারে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২০১৯ সালের করোনাভাইরাসঘটিত ব্যাধির কোনও প্রতিরোধক টিকা কিংবা কার্যকরী প্রতিষেধক চিকিৎসা ছিল না। হাসপাতালে মূলত রোগীদের উপসর্গ উপশম করার চেষ্টা করা হয়।

প্রতিরোধের উপায়

সার্স করোনাভাইরাস-২ দ্বারা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে ঘনঘন সাবান-পানি দিয়ে কিংবা এর অনুপস্থিতিতে বিশেষ অ্যালকোহল দ্রবণ দিয়ে হাত ধুতে হবে, যাতে হাতে লেগে থাকা ভাইরাস বিনষ্ট হয়। কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় অস্থায়ী কাগজের রুমাল বা টিস্যুপেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে এবং সাথে সাথে সেই রুমাল বর্জ্যে ফেলে দিতে হবে ও হাত সাবান-জলে ধুয়ে ফেলতে হবে, যাতে ভাইরাস এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে না ছড়ায়। যেসব ব্যক্তির জ্বর, সর্দি, কাশি ও হাঁচি হচ্ছে, তাদের থেকে ন্যূনতম ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, যাতে বাতাসে ভাসমান ভাইরাস কণা শ্বাসগ্রহণের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ না করে। চোখ, নাক ও মুখে হাত দিয়ে স্পর্শ করা পরিহার করতে হবে, কেননা হাতে পরিবেশে উপস্থিত ভাইরাস স্পর্শের মাধ্যমে লেগে থাকতে পারে এবং নাক, মুখ, চোখের উন্মুক্ত শ্লেষ্মাঝিল্লী দিয়ে দেহে প্রবেশ করতে পারে। রাস্তায় ও যত্রতত্র থুতু ফেলা যাবে না, কেননা থুতু থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে। রাস্তায় বা অন্যত্র অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রস্তুতকৃত খাবার খাওয়া পরিহার করতে হবে, কারণে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রস্তুত খাবারের মাধ্যমেও ভাইরাস ছড়াতে পারে।

১২ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখ থেকে শুরু হওয়া সোনালী-হলুদ রঙের অনুভূমিক স্তম্ভগুলি চীনের হুপেই প্রদেশের সেই সমস্ত সংক্রমণের ঘটনাকে নির্দেশ করে, যেগুলি পরীক্ষা করে নয়, বরং উপসর্গ ও চিকিৎসা-চিত্রণে দৃষ্ট ফুসফুস প্রদাহের লক্ষণের উপরে ভিত্তি করে নিদানিকভাবে নির্ণয় করা হয়।[৬]

প্রথম দিকে ভাইরাসটির বিস্তারের হার কম হলেও ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যভাগে এসে এটির সংক্রমণের হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে।[৭] ১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৬০ হাজার ব্যক্তি ভাইরাসটিতে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে (যাদের মধ্যে প্রায় ৮ হাজার ব্যক্তির অবস্থা গুরুতর)। চীনের সবগুলি প্রদেশে বা প্রাদেশিক-স্তরের প্রশাসনিক বিভাগে ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে। তবে দাপ্তরিকভাবে প্রকাশিত সংখ্যার বাইরেও আরও বহু লোকের দেহে ভাইরাসটির সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে, যাদেরকে এখনও শনাক্ত করা হয়নি। চীনের বাইরে ২৭টি রাষ্ট্র ও প্রশাসনিক অঞ্চলে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে। ২০২০ সালের ৯ই জানুয়ারি ভাইরাসটির কারণে প্রথম ব্যক্তিটির মৃত্যু হয় এবং তার পরে প্রায় ১ মাসের মধ্যে (১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখ পর্যন্ত) সর্বমোট ১৩৫৭ জন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটেছে। এছাড়া ৫৬২২ জন ব্যক্তি আরোগ্যলাভ করেছে। চীনের সীমান্তের বাইরে ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জে ১ জন এবং হংকং নগরীতে আরেকজন মারা গেছেন। ১০ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে সার্স করোনাভাইরাস-২-এর কারণে মৃতের সংখ্যা ২০০৩ সালের প্রথম সার্স ভাইরাসের কারণে মৃতের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যায়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এসে সামগ্রিকভাবে মৃত্যুর হার ছিল ২.২%, তবে হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের মধ্যে মৃত্যুর হার আরও বেশি।

চীনে ও বিশ্বজুড়ে সার্স করোনাভাইরাস-২-এর বিস্তার রোধের জন্য জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষসমূহ প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। চীনা সরকার অভ্যন্তরীণ আন্তঃনগরী ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, ঘরের বাইরে বের হওয়ার উপরে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে এবং সঙ্গনিরোধের ব্যবস্থা (কুয়ারেন্টিন) করেছে। এতে চীনের প্রায় ১৭ কোটি নাগরিকের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হয়েছে। বিশ্বের বেশ কিছু দেশ উহান নগরী, হুপেই প্রদেশ এমনকি চীনদেশে ভ্রমণের ব্যাপারে সতর্কতামূলক বার্তা প্রকাশ করেছে। যেসব পর্যটক সম্প্রতি চীনের মূল ভূখণ্ড পরিদর্শন করেছে, তাদেরকে দেশে ফেরত আসার পরে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ স্বাস্থ্যের উপরে নজরদারি করতে বলা হয়েছে। যদি কোনও ব্যক্তির সন্দেহ হয় যে সে করোনাভাইরাস বহন করছে, তাহলে তাকে বিশেষ চিকিৎসা-মুখোশ পরিধান করতে ও নিকটস্থ চিকিৎসকের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করতে উপদেশ দেওয়া হয়েছে এবং স্বশরীরে কোনও হাসপাতাল বা ক্লিনিকে (বহির্বিভাগীয় চিকিৎসাকেন্দ্র) যেতে মানা করা হয়েছে। চীনসহ আরও বেশ কিছু দেশের বিমানবন্দর ও রেলস্টেশনগুলিতে দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, স্বাস্থ্যবিষয়ক সতর্কবাণী স্পিকারে সম্প্রচার করা হচ্ছে ও সতর্কতামূলক তথ্য প্রদানকারী নির্দেশফলক (সাইনবোর্ড) স্থাপন করা হয়েছে।

৩০শে জানুয়ারি ২০২০ তারিখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৯ সালের করোনাভাইরাসঘটিত ব্যাধির প্রাদুর্ভাব ও তৎপরবর্তীকালে এর মহাবিস্তারকে জনস্বাস্থ্যের জন্য আন্তর্জাতিক গুরুত্ববিশিষ্ট জরুরী অবস্থা (Public Health Emergency of International Concern; PHEIC) হিসেবে ঘোষণা দেয়। যেসব দেশে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা অপেক্ষাকৃত দুর্বল, সেসব দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লে সম্ভাব্য ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি বা মহামারীর কথা চিন্তা করে এই ঘোষণাটি দেওয়া হয়। এছাড়া আন্তর্জাল বা ইন্টারনেটে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক গণমাধ্যমগুলির সুবাদে সার্স করোনাভাইরাস-২ সংক্রান্ত উপকারী তথ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন ভুল ও মিথ্যা তথ্য এমনকি আতঙ্ক-সৃষ্টিকারী গুজবের অতিদ্রুত বিস্তার ঘটেছে, যাকে “তথ্য মহাবিস্তার” (ইনফোডেমিক) নামে ডাকা হয়েছে।[৮] এর একটি নেতিবাচক ফল হিসেবে বিশ্বের বেশ কিছু দেশে বিদেশীভীতি ও বিশেষত চীনাদের বিরুদ্ধে জাতিবিদ্বেষ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।[৯][১০][১১] [১২]


উদ্ভব ও ইতিহাস ২০১৯ সালের শেষের দিকে উহান নগরীর হুয়ানান সামুদ্রিক খাদ্যের পাইকারি বাজারের দোকানদারদের মধ্যে প্রথম ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটে বলে ধারণা করা হয়। বাজারটিতে সামুদ্রিক খাদ্যদ্রব্যের পাশাপাশি জীবন্ত বাদুড়, সাপ 'বন্যপ্রাণী' ও তাদের সদ্য জবাইকৃত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি হত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় যে হয়ত কোনও প্রাণীদেহ হতে করোনাভাইরাসটি বিবর্তিত হয়ে আরেকটি মধ্যবর্তী পোষক প্রাণীর মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রমিত হয়েছে। চীনা বিজ্ঞানীরা ২০২০ সালের ৭ই জানুয়ারি তারিখে এটিকে একটি নতুন ধরনের করোনাভাইরাস হিসেবে ঘোষণা দেন এবং এর বংশাণুসমগ্র বা জিনোমের তথ্যগুলি বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের কাছে ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের কাছে বিতরণ করেন।

করোনাভাইরাস একই ধরনের অনেকগুলি ভাইরাসের একটি বৃহৎ পরিবার যা প্রাণী ও মানুষে সংক্রমিত হতে পারে। ২১শ শতকের আগ পর্যন্ত করোনাভাইরাসগুলি মানুষের দেহে সাধারণ সর্দি-কাশি ব্যতীত অন্য কোনও উপসর্গ বা রোগব্যাধি সৃষ্টি করত না। কিন্তু ২১শ শতকে এসে এ পর্যন্ত ৩টি নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের উদ্ভব হয়েছে (সার্স, মার্স ও উহান করোনাভাইরাস) যেগুলি মানব সম্প্রদায়ে ব্যাপক অঞ্চল জুড়ে প্রাণঘাতী আকার ধারণ করার ঝুঁকি বহন করে।[১৩]

উহান করোনাভাইরাসটির বংশাণুসমগ্রের অনুক্রম (জিনোম সিকোয়েন্স) ও সার্স করোনাভাইরাসের বংশাণুসমগ্রের অনুক্রমের মধ্যে প্রায় ৭০% মিল পাওয়া গেছে। এর আগে ২০০২ সালেও চীনদেশেই একই ধরনের জীবন্ত প্রাণী বিক্রির বাজার থেকে ("গুরুতর তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত উপসর্গসমষ্টি-সংশ্লিষ্ট করোনাভাইরাস"; "Severe Acute Respiratory Syndrome-related Coronavirus", সংক্ষেপে SARS‐CoV) সার্স করোনাভাইরাসের সংক্রমণ, প্রাদুর্ভাব ও বিশ্বব্যাপী বিস্তার ঘটেছিল। বিশ্বের ৩০টি দেশে সার্স ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে, এতে ৮৪৩৭ জন ব্যক্তি নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত হয় এবং ৮১৩ জনের মৃত্যু হয়।[১৪] এর ১০ বছর পরে ২০১২ সালে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব থেকে মার্স (মধ্যপ্রাচ্যীয় শ্বাসকষ্টজনিত উপসর্গসমষ্টি-সংশ্লিষ্ট করোনাভাইরাস; "Middle Eastern Respiratory Syndrome-related Coronavirus", সংক্ষেপে MERS‐CoV) নামের আরেকটি বিপজ্জনক প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস উট থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়েছিল। ভাইরাসটি ২৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে, এতে ২৪৯৪ জন নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত হয় এবং এদের মধ্যে ৮৫৮ জনের মৃত্যু হয়।[১৪]

শনাক্তকরণ, উপসর্গ ও নিরাময় পলিমারেজ শৃঙ্খল বিক্রিয়া পরীক্ষার (পিসিআর টেস্ট) মাধ্যমে উপরোক্ত বাজারের সাথে সরাসরি জড়িত অনেক ব্যক্তির দেহে এবং বাজারের সাথে জড়িত নয়, এমন ব্যক্তিদের দেহেও ভাইরাসটির সংক্রমণ হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ হতে পারে, এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে।[১৫] তবে এই নতুন ভাইরাসটি সার্স ভাইরাসের সমপর্যায়ের মারাত্মক কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। উপসর্গ এই ভাইরাসের সংক্রমণে জ্বর, অবসাদ, পেশীতে ব্যথা, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট ও শ্বাসনালীর রোগ (যেমন- ক্লোমনালীর প্রদাহ তথা ব্রঙ্কাইটিস এবং নিউমোনিয়া) হয়। কদাচিৎ মাথাব্যথা বা কফসহ কাশি হতে পারে। রোগীদের রক্ত পরীক্ষা করে দেখা গেছে এই ভাইরাসের কারণে তাদের শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা হ্রাস পায়। এছাড়া যকৃৎ ও বৃক্কের (কিডনি) ক্ষতি হয়। সাধারণত এক সপ্তাহের আগ পর্যন্ত উপসর্গগুলি ডাক্তার দেখানোর মত জটিল রূপ ধারণ করে না। কিন্তু ২য় সপ্তাহে এসে ব্যক্তিভেদে অবস্থার দ্রুত ও গুরুতর অবনতি ঘটতে পারে। যেমন ফুসফুসের ক্ষতিবৃদ্ধির সাথে সাথে ধমনীর রক্তে অক্সিজেনের স্বল্পতা (হাইপক্সেমিয়া) দেখা দেয় এবং রোগীকে অক্সিজেন চিকিৎসা দিতে হয়। এছাড়া তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত উপসর্গসমষ্টি (ARDS বা acute respiratory distress syndrome) পরিলক্ষিত হয়। ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ রোগীকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (intensive care unit বা ICU) রেখে যান্ত্রিকভাবে শ্বাসগ্রহণ করাতে হয় এবং কখনও কখনও কৃত্রিম ফুসফুসের ভেতরে রক্ত পরিচালনার মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেন যোগ করতে হয়। এছাড়া ফুসফুসের ব্যাপক ক্ষতি হবার কারণে ব্যাকটেরিয়াঘটিত ২য় একটি নিউমোনিয়া হবার বড় সম্ভাবনা থাকে এবং নিবিড় পরিচর্যাধীন রোগীদের ১০% ক্ষেত্রে এটি হয়।[১৩]

ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের আক্রমণের মত উপসর্গ হলেও ফ্লুয়ের ঔষধে কোনও কাজ হয় না। এ পর্যন্ত রোগটির জন্য কোনও ঔষধ বা টিকা উদ্ভাবিত হয়নি। হাসপাতালে নিবিড় চিকিৎসা ছাড়া রোগ থেকে সেরে ওঠার উপায় নেই। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আগে থেকেই কম, তাদের নিউমোনিয়া হয়ে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সাধারণত বৃদ্ধদের মধ্যে ভাইরাসটির ক্ষতিকর প্রভাব বেশি দেখা গেছে। তবে এ পর্যন্ত ইনফ্লুয়েঞ্জার চেয়ে বেশি মারাত্মক হবার কোনও সম্ভাবনা দেখা যায়নি। উল্লেখ্য যে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে প্রতি বছর ৪ লক্ষ লোকের মৃত্যু ঘটে।[২০]

বিস্তারের উপায় উহান করোনাভাইরাসটি অপেক্ষাকৃত বড় আকারের; এর আকার প্রায় ১২৫ ন্যানোমিটার (অর্থাৎ ১ মিটারের প্রায় ১ কোটি ভাগের এক ভাগ)। আকারে বড় বলে এটি বাতাসে কয়েক ঘণ্টার বেশি ভাসন্ত অবস্থায় থাকতে পারে না এবং কয়েক ফুটের বেশী দূরত্বে গমন করতে পারে না। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মতো এটিও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংস্পর্শের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে ছড়াতে পারে। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের সময় মুখের হাঁচি, কাশি, লালা বা থুতু থেকে সরাসরি ভাইরাসটি এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে সংক্রামিত হতে পারে। অন্যদিকে জনসাধারণ্য স্থানে কোনও আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি-কাশি দিলে বা ভাইরাসযুক্ত হাত দিয়ে ধরলে কাছাকাছি পৃষ্ঠতলে যেমন দরজার হাতলে, খাটের খুঁটিতে বা মুঠোফোনে ভাইরাস লেগে থাকতে পারে এবং সেখান থেকে পরোক্ষভাবে আরেকজন ব্যক্তির কাছে সেটি ছড়াতে পারে।[১৩]

এছাড়া উহান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার সময়ে যেমন ক্লোমনালীবীক্ষণ বা শ্বাসনালীর চিকিৎসার সময়ে বাতাসে দেহ থেকে নিঃসৃত ভাইরাসবাহী তরলের বাতাসে ভাসমান কণাগুলি একাধিক চিকিৎসাকর্মীকে সংক্রামিত করতে পারে এবং সাবধানতা অবলম্বন না করলে হাসপাতালের সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। হাত পরিষ্কার রাখলে এবং বিশেষ পোষাক বা গাউন, হাতমোজা, মুখোশ ও চশমা পরিধান করলে বাতাসে ভাইরাসবাহী ভাসমান কণার বিস্তার কমানো সম্ভব। ভাইরাসটির সংক্রমণ ও লক্ষণ প্রকাশের অন্তর্বর্তী কাল (ইনকিউবেশন পিরিয়ড) এখনও নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও সংক্রমণের মোটামুটি ১ থেকে ১৪ দিনের মধ্যেই রোগের উপসর্গ দেখা যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

ঝুঁকি ২০২০ সালের ২৩শে জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উহান করোনাভাইরাসের বিস্তারকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি জরুরী অবস্থা হিসেবে ঘোষণা দেবার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়।[২১][২২] তবে তারা বলে যে তাদের জরুরী অবস্থা সমিতি প্রয়োজন হলে এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে পুনরায় খতিয়ে দেখতে পারে। এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটির ব্যাপক বিস্তারের সম্ভাবনার ব্যাপারে সতর্ক করেছিল। সে সময় চীনা নববর্ষ উপলক্ষে চীনের পর্যটকদের গমনাগমনের শীর্ষ মৌসুমের কারণে ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে দুশ্চিন্তা ছিল।

প্রতিক্রিয়া ২০১৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বর তারিখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে প্রথম ভাইরাসটির সংক্রমণের কথা অবহিত করা হয়। ২৭শে জানুয়ারি ২০২০ তারিখ পর্যন্ত চীনে প্রায় ৪৫১৫ ব্যক্তির দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৯৭৬ জনের অবস্থা গুরুতর।[২৩] ভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের ৯ই জানুয়ারি প্রথম ব্যক্তিটি মারা যায়। ২৭শে জানুয়ারি ২০২০ তারিখ পর্যন্ত ভাইরাসটির কারণে চীনে ১০১ জন ব্যক্তি মারা যায়।

ভাইরাসের বিস্তার রোধের উদ্দেশ্যে চীনের বহু শহরে নববর্ষ উৎসব বাতিল করে দেওয়া হয়, উৎসব-উদ্দীপনামূলক জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয় এবং পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় বেড়াবার স্থানগুলিও জনসাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। চীনা সরকারের নির্দেশে উহান শহরে ও হুপেই প্রদেশের আরও ১৭টি শহরে অন্তর্গামী ও বহির্গামী সমস্ত গণপরিবহন সেবা স্থগিত করা হয়েছে। ফলে প্রায় ৫ কোটি চীনা অধিবাসী (উহান শহরের ১ কোটি ১০ লক্ষ অধিবাসীসহ) নিজ শহরে প্রায় অবরুদ্ধ জীবনযাপন করছে। উহানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে।

সমস্থিতি সম্পাদনা

আপনার তৈরি এই নিবন্ধটিতে অবোধগম্য যান্ত্রিক অনুবাদ বিদ্যমান। তাই পরিষ্করণ ট্যাগ যোগ করা হয়েছে। নিবন্ধ সংশোধন করে ট্যাগ অপসারণ করতে পারেন — AKanik 💬 ১৪:৫৬, ১৯ মে ২০২১ (ইউটিসি)উত্তর দিন