বেল ল্যাবরেটরিজ

মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান
(বেল ল্যাব্‌স থেকে পুনর্নির্দেশিত)

নকিয়া বেল ল্যাবজ্ (প্রাক্তন নাম বেল ল্যাবস্ ইনোভ্যাশন (১৯৯৬-২০০৭)[] এটি & টি বেল ল্যাবরেটরিজ (১৯৮৪–১৯৯৬)[] এবং বেল টেলিফোন ল্যাবরেটরিজ (১৯২৫–১৯৮৪)[]) হল একটি মার্কিন বাণিজ্যিক অনুসন্ধান এবং বিকাশ কোম্পানি। এটি ফিনীয় কোম্পানি নকিয়া দ্বারা অধিকৃত। নিউ জার্সির মারে হিল-এ এটির সদর দপ্তর অবস্থিত। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের গবেষণাগার পরিচালনা করে। বেল সিস্টেম-এর জটিল অতীতের সাথে এটির উৎপত্তি জড়িত আছে।

নকিয়া বেল ল্যাবজ্
ধরনসাবসিডিয়ারি
শিল্পটেলিযোগাযোগ, তথ্য প্রযুক্তি, উপাদান বিজ্ঞান
প্রতিষ্ঠাকাল১৯২৫; ৯৯ বছর আগে (1925) (বেল টেলিফোন ল্যাবরেটরিজ্ হিসাবে)
সদরদপ্তরমারে হিল, নিউ জার্সি,
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
প্রধান ব্যক্তি
মার্কাস ওয়েলডন
মাতৃ-প্রতিষ্ঠানAT&T (১৯২৫–৯৬)
ওয়েস্টার্ন ইলেক্ট্রিক (১৯২৫-৮৩)
AT&T (১৯৮৪-১৯৯৬)
লুসেন্ট টেকনোলজিস (১৯৯৬-২০০৬)
অ্যালকাটেল-লুসেন্ট (২০০৬-১৬)
নকিয়া (২০১৬–বর্তমান)
ওয়েবসাইটwww.bell-labs.com উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
বেল ল্যাবরেটরি, মারে হিল, নিউ জার্সি

১৯ শতকের শেষের দিকে, গবেষণাগারটি ওয়েস্টার্ন ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ হিসাবে শুরু হয়েছিল এবং নিউ ইয়র্ক শহরের ৪৬৩ ওয়েস্ট স্ট্রিটে অবস্থিত ছিল। ১৯২৫ সালে কয়েক বছর ধরে ওয়েস্টার্ন ইলেকট্রিকের অধীনে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার পর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে বেল টেলিফোন ল্যাবরেটরিতে রূপান্তরিত করা হয়। আমেরিকান টেলিফোন অ্যান্ড টেলিগ্রাফ কোম্পানি এবং ওয়েস্টার্ন ইলেকট্রিকের যৌথ মালিকানার অধীনে এটিকে রাখা হয়।

বেল ল্যাবে কর্মরত গবেষকদের বেতার জ্যোতির্বিজ্ঞান, ট্রানজিস্টর, লেজার, ফটোভোলটাইক সেল, চার্জ কাপল্‌ড ডিভাইস (সিসিডি), তথ্য তত্ত্ব, ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেম এবং বি, সি, সি++, এস, এসএনওবিএল, এডব্লুকে, এমপিএল প্রভৃতি প্রোগামিং ভাষার বিকাশের জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়। বেল ল্যাবরেটরিস-এ সম্পন্ন কাজের জন্য নয়টি নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।[]

উৎপত্তি এবং ঐতিহাসিক অবস্থান

সম্পাদনা

টেলিফোনের পরে বেল-এর ব্যক্তিগত গবেষণা

সম্পাদনা

১৮৮০ সালে যখন ফরাসি সরকার টেলিফোন উদ্ভাবনের জন্য আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলকে ৫০,০০০ ফ্র্যাঙ্ক (সেই সময়ে আনুমানিক মার্কিন $১০,০০০; প্রায় $২৭০০০০ জানুয়ারি ২০১৯-এর ডলারে)[] ভোল্টা পুরস্কার প্রদান করা হয়েছিল। তিনি চার্লস স্যামনার টেইন্টার এবং বেলের চাচাতো ভাই চিচেস্টার বেলের সহযোগিতায় ওয়াশিংটন ডিসিতে ভোল্টা ল্যাবরেটরি-কে (আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল ল্যাবরেটরি) তহবিলের জন্য এই পুরস্কার ব্যবহার করেছিলেন।[] গবেষণাগারটি বিভিন্নভাবে ভোল্টা ব্যুরো, বেল ক্যারেজ হাউস, বেল ল্যাবরেটরি এবং ভোল্টা ল্যাবরেটরি ইত্যাদি নামে পরিচিত ছিল।

এটি শব্দের বিশ্লেষণ, রেকর্ডিং এবং প্রেষণ-এ মনোনিবেশ করেছিল। গবেষণাগার থেকে প্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মুনাফাকে তিনি আরও গবেষণার এবং শিক্ষার জন্য ব্যবহার করেছিলেন "বধির সম্পর্কিত জ্ঞানের বিস্তার [বৃদ্ধি]"-র অনুমতি পেতে:[] যার ফলস্বরূপ ভোল্টা ব্যুরো প্রতিষ্ঠিত হয় (আনুমানিক ১৮৮৭) যেটি ওয়াশিংটন ডি.সি-র ১৫২৭ ৩৫তম স্ট্রীট এন.ডব্লু-তে বেল-এর বাবার বাড়িতে অবস্থিত ছিল। ১৮৮৯ সালে এটির ক্যারেজ হাউস তাদের প্রধান কার্যালয় হয়ে ওঠে।[]

১৮৯৩ সালে, বেল ১৫২৭ ৩৫তম স্ট্রীট এন.ডব্লু-এর কাছাকাছি একটি নতুন অট্টালিকা নির্মাণ করেন, বিশেষত গবেষণাগারটির জায়গা আরও প্রসারিত করার জন্য।[] ১৯৭২ সালে এই অট্টালিকাটিকে জাতীয় ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।[][][]

টেলিফোন উদ্ভাবনের পর, বেল সামগ্রিকভাবে বেল সিস্টেম থেকে অপেক্ষাকৃত ক্ষীণ ভূমিকা বজায় রেখেছিলেন, কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত গবেষণার অব্যাহত রেখেছিলেন।[১০]

 
ওয়াশিংটন ডি.সি-তে বেল-এর ১৮৯৩ ভোল্টা ব্যুরো অট্টালিকা

প্রারম্ভিক অবস্থা

সম্পাদনা

১৮৭৬ ​​সালে টেলিফোনের জন্য প্রথম পেটেন্ট দাখিল করার সময় আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল, থমাস স্যান্ডার্স এবং গার্ডিনার হবার্ড কর্তৃক বেল পেটেন্ট অ্যাসোসিয়েশন গঠিত হয়।

সর্বপ্রথম টেলিফোন কোম্পানি বেল টেলিফোন কোম্পানি তার এক বছর পরে গঠিত হয়। এটি পরবর্তীতে অ্যামেরিকান বেল টেলিফোন কোম্পানির একটি অংশে পরিণত হয়।

অ্যামেরিকান টেলিফোন অ্যান্ড টেলিগ্রাফ কোম্পানি এবং তার নিজস্ব সহযোগী কোম্পানি ১৮৮৯ সালের মধ্যে অ্যামেরিকান বেল এবং বেল সিস্টেম-কে নিজের আয়ত্তে আনে।[১১][১২]

আমেরিকান বেল ওয়েস্টার্ন ইলেকট্রিকের (যা ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় উৎপাদন কার্যের অন্যতম শাখা ছিল) একটি উল্লেখনীয় লগ্নী ধারণ করেছিল, যেখানে এটিঅ্যান্ডটি পরিষেবা প্রদানকারীদের নিয়ে গবেষণা করছিল।

১৮৮৪ সালে, অ্যামেরিকান বেল টেলিফোন কোম্পানি এক বছর আগে গঠিত বৈদ্যুতিক এবং পেটেন্ট বিভাগ থেকে যান্ত্রিক বিভাগ তৈরি করেছিল।

আনুষ্ঠানিক সংগঠন এবং অবস্থান পরিবর্তন

সম্পাদনা
 
১৯২৫ সালের শুরুতে বেল ল্যাবরেটরির আসল নিবাস, ৪৬৩ ওয়েস্ট স্ট্রীট, নিউ ইয়র্ক

১৮৯৬ সালে, ওয়েস্টার্ন ইলেকট্রিক ৪৬৩ ওয়েস্ট স্ট্রিটে তাদের নির্মাতা এবং প্রকৌশলীদের যারা এটিঅ্যান্ডটি-কে তাদের পণ্য সরবরাহ করছিল, তাদের কর্মকেন্দ্র দেওয়ার জন্য সম্পত্তি কিনেছিল। এটির মধ্যে টেলিফোন, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ সুইচগুলো এবং ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে সবকিছু ছিল।

১ জানুয়ারী, ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে বেল টেলিফোন ল্যাবরেটরিজ, ইনক. বেল সিস্টেমের জন্য যোগাযোগ ক্ষেত্র এবং সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানগুলিতে উন্নয়ন এবং গবেষণার কার্যক্রম একত্রিত করার জন্য সংগঠিত করা হয়েছিল। ওয়েস্টার্ন ইলেকট্রিক এবং এটিঅ্যান্ডটি-র মধ্যে সমানভাবে মালিকানা ভাগ করা হয়েছিল। নতুন কোম্পানিতে প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী এবং সহকারীদের ৩,৬০০জন বিদ্যমান কর্মী ছিল। গবেষণা সুবিধার জন্য বিদ্যমান ৪০০,০০০ বর্গফুট জায়গা ছাড়াও, শহরের ব্লকের প্রায় এক চতুর্থাংশে একটি নতুন ভবনের সাথে এর স্থান বাড়ানো হয়েছিল।[১৩]

পরিচালনা পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন জন জে কার্টি, এটিঅ্যান্ডটি-র সহ-সভাপতি; এবং প্রথম সভাপতি ছিলেন ফ্রাঙ্ক বি জুয়েট[১৩], এছাড়াও তিনি একজন বোর্ড সদস্য ছিলেন ও যিনি ১৯৪০ সাল পর্যন্ত সেখানে ছিলেন।[১৪][১৫][১৬] ক্রিয়াকলাপগুলি পরিচালনা করেছিলেন ই. বি. ক্রাফট, কার্যনির্বাহী সহ-সভাপতি এবং প্রাক্তন ওয়েস্টার্ন ইলেকট্রিকের প্রধান প্রকৌশলী।

১৯৪০ দশকের গোড়ার দিকে, বেল ল্যাবস প্রকৌশলী এবং বিজ্ঞানীরা নিউইয়র্ক শহরের যানজট এবং পারিপার্শ্বিক বিক্ষেপ থেকে দূরে অন্য জায়গায় যেতে শুরু করেছিলেন, এবং ১৯৬৭ সালে বেল ল্যাবরেটরিজ-এর সদর দপ্তরটি আনুষ্ঠানিকভাবে মারে হিলে, নিউ জার্সিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।

নিউ জার্সিতে বেল ল্যাবরেটরিজগুলির পরবর্তীকালের অবস্থানের মধ্যে ছিল হল্ম্ডেল, ক্রফোর্ড হিল, ডিল টেস্ট সাইট, ফ্রিহোল্ড, লিনক্রফট, লং ব্রাঞ্চ, মিডলটাউন, নেপচুন, প্রিন্সটন, পিসক্যাটাওয়েই, রেড ব্যাঙ্ক, চ্যাস্টার এবং হুইপানি। এগুলোর মধ্যে মারে হিল এবং ক্রফোর্ড হিল আজাবধি বিদ্যমান আছে (পিসকাটাওয়ে এবং রেড ব্যাঙ্ক অবস্থানগুলি স্থানান্তরিত করা হয়েছিল এবং এখন টেলকর্ডিয়া টেকনোলজিস দ্বারা পরিচালিত হয় এবং হুইপ্প্যানি সাইট বাইয়ার দ্বারা ক্রীত হয়েছে)।[১৭]).

কোম্পানির সবচেয়ে বড় গোষ্ঠী ছিল শিকাগো এলাকার ইলিনয়-এর নেইপারভিল-লাইয়ালতে, যেখানে ২০০১ এর আগে কর্মচারীদের সর্বাধিক ঘনত্ব ছিল (প্রায় ১১,০০০)। ইন্ডিয়ানাপোলিস, ইন্ডিয়ানাতেও কর্মীদের গোষ্ঠী ছিল; কলম্বাস, ওহিও; নর্থ অ্যান্ডোভার, ম্যাসাচুসেটস; অ্যালেনটাউন, পেনসিলভেনিয়া; রেডিং, পেনসিলভেনিয়া; এবং ব্রেইনিগ্স্ভিলে, পেনসিলভেনিয়া; বার্লিংটন, নর্থ ক্যারোলিনা (১৯৫০-১৯৭০ দশক পর্যন্ত, ১৯৮০ সালে গ্রিন্স্বারো-তে স্থানান্তরিত হয়) এবং ওয়েস্টমিনস্টার্, কলোরাডো। ২০০১ সাল থেকে, পূর্বের অনেক স্থানকে ছোট করা হয়েছে বা বন্ধ করা হয়েছে।

 
পুরাতন বেল ল্যাব্স্ হল্ম্ডেল কমপ্লেক্স., নিউ ইয়র্ক থেকে দক্ষিণে প্রায় ২০ মাইল দূরে নিউ জার্সিতে অবস্থিত।

হল্ম্ডেল সাইট, ৩ একরে স্থাপিত ১.৩ মিলিয়ন বর্গফুটের কাঠামো, ২০০৭ সালে বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিবিম্বিত-গ্লাসের ভবনটি এরো সারিনেন দ্বারা নকশাকৃত হয়েছিল। আগস্ট ২০১৩ সালে, সামারসেট ডেভেলপমেন্ট ভবনটি কিনেছিল, এটিকে একটি মিশ্র বাণিজ্যিক এবং আবাসিক প্রকল্প হিসাবে পুনর্নির্মাণের উদ্দেশ্যে। ২০১২ সালের একটি নিবন্ধ নতুন বেল ওয়ার্কস নামক সাইটের সাফল্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল,[১৮] কিন্তু বেশ কিছু বড় ভাড়াটিয়া ২০১৬ এবং ২০১৭ সালের মধ্যে স্থানান্তরের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল।.[১৯][২০]

আবিষ্কার ও উদ্ভাবন

সম্পাদনা

বেল ল্যাবরেটরি প্রথম আলোচিত হয় ১৯২৫ সালে। এ সময় বেল ল্যাবরেটরির গবেষকেরা সাধারণ মানুষের ব্যবহার-উপযোগী ফ্যাক্স মেশিন উদ্ভাবন করেন। ১৯২৬ সালে এই গবেষণাগার থেকেই প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য শব্দগ্রাহক যন্ত্র নির্মাণ করা হয়। ১৯৪০ সালে গবেষক রাসেল ওল ‘ফোটোভোল্টিক কোষ’ উদ্ভাবন করেন। ১৯৪৭ সালে বেল ল্যাবসের গবেষকেরা ট্রানজিস্টর উদ্ভাবনের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ মাধ্যমে বিপ্লব ঘটান। গবেষক জন বার্ডেন, ওয়াল্টার হাউজার ব্রাটেন ও উইলিয়াম ব্রাডফোর্ড শকলে ট্রানজিস্টর উদ্ভাবনে সফলতা লাভ করেন। ১৯৪৮ সালে গবেষক কাউড শ্যানোন তথ্যপ্রযুক্তির ‘ম্যাথেমেটিক্যাল থিওরি অব কমিউনিকেশনস’ নামের বিখ্যাত তত্ত্ব প্রদান করেন। ১৯৫২ সালে বেল ল্যাবসের গবেষক উইলিয়াম গার্ডনার ফ্যান অর্ধপরিবাহির বিশুদ্ধতা উন্মোচনের জন্য নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। ১৯৫৪ সালে বেল ল্যাবস সৌরকোষ উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের নতুন দ্বার উন্মোচন করে। একই বছরে বেল ল্যাবসের গবেষকেরা ‘মিউজিক’ নামের কম্পিউটারের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ তৈরি করেন। ১৯৫৮ সালে বেল ল্যাবসের দুই গবেষক আর্থার শোহালো ও চার্লস হার্ড টাইনস তাত্ত্বিকভাবে লেজার রশ্মি সম্পর্কে ধারণা দেন। ১৯৬০ সালে গবেষক ডাউন কাং ও মার্টিন আটালা ধাতুর অক্সাইডে নির্মিত ‘মোসফেট’ নামের অর্ধপরিবাহির ট্রানজিস্টর উদ্ভাবন করেন। গেরহার্ড সেসলার ও জেমস এডওয়ার্ড ওয়েস্ট ১৯৬২ সালে বৈদ্যুতিক মাইক্রোফোন উদ্ভাবন করেন। ১৯৬২ সালে বেল ল্যাবসের গবেষকেরা প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট ‘টেলস্টার-১’ পৃথিবীর কক্ষপথে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করে। গবেষক কুমার পাতিল ১৯৬৪ সালে কার্বননির্ভর লেজার উদ্ভাবন করেন। ১৯৬৫ সালে জ্যোতি-গবেষক পেনজাইস ও উইলসন কসিমিক মাইক্রোওয়েভ আবিষ্কার করেন। কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম ‘ইউনিক্স’ তৈরি করেন বেল ল্যাবসের বিখ্যাত কম্পিউটার বিজ্ঞানী ডেনিস রিচি ও কেন থম্পসন। ১৯৭০ সালে গবেষক ডেনিস রিচি ‘সি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ’ উদ্ভাবন করেন। বেল ল্যাবসের আরেক দল গবেষক ‘এডব্লিউকে’ নামের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ উদ্ভাবন করেন। ১৯৭১ সালে বেল ল্যাবসের গবেষক এরনা স্নাইডার হুভার প্রথম সফটওয়্যার পেটেন্ট লাভ করেন। বেল ল্যাবস ১৯৭৬ সালে জর্জিয়ায় প্রথম ফাইবার অপটিক কেবল স্থাপন করে। ১৯৮০ সালে এই গবেষণাগারে ৩২-বিট মাইক্রোপ্রসেসর তৈরি করা হয়। আশির দশকে বেল ল্যাবস মোবাইল প্রযুক্তির সিডিএমএ ও টিডিএম পদ্ধতির সেলুলার টেলিফোন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে। এ সময় বেল ল্যাবসের গবেষকেরা ‘প্ল্যান নাইন’ কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম উদ্ভাবন করেন। ল্যাবসের কম্পিউটার প্রোগ্রামার বিজার্নে স্ট্রুয়াসটাপ ‘সি++ প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ’ উদ্ভাবন করেন। ১৯৯১ সালে গবেষক নুরি দাগডেভিরেন ইন্টারনেট মডেম উদ্ভাবন করেন। নব্বইয়ের দশকে বেল ল্যাবসের সবচেয়ে বড় উদ্ভাবন ছিল ‘ওয়্যারলেস লোকাল এরিয়া নেটওয়াকর্’ বা ডব্লিউল্যান। ১৯৯৫ সালে গবেষকেরা তারবিহীন এই ইন্টারনেট প্রযুক্তি অবমুক্ত করেন। নব্বইয়ের দশকে বেল ল্যাবসের গবেষকেরা ‘ইনফার্নো অপারেটিং সিস্টেম’ ও ‘লিম্বো’ প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ উদ্ভাবন করেন। ১৯৯৭ সালে বেল গবেষকেরা পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্র ট্রানজিস্টর প্রস্তুত করেন। ৬০ ন্যানোমিটার দৈর্ঘ্যের এই ট্রানজিস্টর এখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত সবচেয়ে ছোট ট্রানজিস্টর। [২১]

সম্মাননা

সম্পাদনা

১৯৩৭ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত উদ্ভাবনের বিশাল এই গবেষণাগারের সাতটি উদ্ভাবন ও আবিষ্কার নোবেল পুরস্কার লাভ করে। ১৯৩৭ সালে গবেষক কিনটন ডেভিসন পদার্থের তরঙ্গ প্রকৃতির ওপর গবেষণার জন্য প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৫৬ সালে ট্রানজিস্টর উদ্ভাবন, ১৯৭৭ সালে কাচ ও চুম্বকের বৈদ্যুতিক কাঠামো তত্ত্বের জন্য, ১৯৭৮ সালে মহাবিশ্বের তরঙ্গ প্রকৃতির গবেষণার জন্য, ১৯৯৭ সালে লেজার গবেষণায়, ১৯৯৮ সালে কোয়ান্টাম হল এফেক্টের জন্য ও সর্বশেষ ২০০৯ সালে অর্ধপরিবাহকের ‘চার্জড কাপল্ড ডিভাইস’ উদ্ভাবনের জন্য বেল ল্যাবরেটরির গবেষকেরা নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।[২১]

সম্মাননা ও স্বীকৃতি

সম্পাদনা

আইইইই মেডেল অব অনার

সম্পাদনা

[২২]

ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন

সম্পাদনা
  • ২০০১ Arun Netravali
  • ১৯৯৪ Richard Frenkiel and Joel Engel

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Bell Labs Innovations"American Institute of Physics। সংগ্রহের তারিখ জুন ৯, ২০১৯ 
  2. "AT & T Bell Laboratories"। American Institute of Physics। সংগ্রহের তারিখ জুন ৯, ২০১৯ 
  3. "Bell Telephone Laboratories"। American Institute of Physics। সংগ্রহের তারিখ জুন ৯, ২০১৯ 
  4. "2018 Nobel Prize in Physics laureate Arthur Ashkin delivers his Nobel Lecture at Nokia Bell Labs"Nokia (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৯, ২০২০ 
  5. 1634–1699: McCusker, J. J. (১৯৯৭)। How Much Is That in Real Money? A Historical Price Index for Use as a Deflator of Money Values in the Economy of the United States: Addenda et Corrigenda (পিডিএফ)American Antiquarian Society  1700–1799: McCusker, J. J. (১৯৯২)। How Much Is That in Real Money? A Historical Price Index for Use as a Deflator of Money Values in the Economy of the United States (পিডিএফ)American Antiquarian Society  1800–present: Federal Reserve Bank of Minneapolis। "Consumer Price Index (estimate) 1800–"। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৬, ২০২২ 
  6. Bruce, Robert V. Bell: Alexander Bell and the Conquest of Solitude. Ithaca, New York: Cornell University Press, 1990. আইএসবিএন ০-৮০১৪-৯৬৯১-৮.
  7. "Volta Bureau"National Historic Landmark summary listing। National Park Service। অক্টোবর ১১, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ১০, ২০০৮ 
  8. Unsigned (n.d.), National Register of Historic Places Inventory-Nomination: Volta Bureau, National Park Service 
  9. "Volta Laboratory & Bureau"Washington D.C. National Register of Historic Places Travel Itinerary listing। National Park Service। মে ১২, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ১০, ২০০৮ 
  10. Mackay, James (১৯৯৭)। Alexander Graham Bell, A Life। USA: John Wiley & Sons Inc.। 
  11. Garnet, Robert (১৯৮৫)। The Telephone Enterprise। Baltimore, Maryland: The Johns Hopkins University Press। পৃষ্ঠা 1–44। 
  12. "Nokia Bell Labs History"Nokia Bell Labs। জুলাই ২০, ২০১৮। জুলাই ১৪, ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১ 
  13. Telephony, Volume 87(5), p.20, January 31, 1925
  14. Donofrio, Angelo (মে–জুন ১৯৬৬)। "West Street Story"। Bell Labs Reporter15 
  15. Gertner, Jon (২০১২)। The Idea Factory। New York: The Penguin Press। 
  16. Adams, Butler (১৯৯৯)। Manufacturing the Future। Cambridge: Cambridge University Press। 
  17. "It's official! Bayer buys Alcatel-Lucent site in Hanover Twp"। The Hanover Eagle। সংগ্রহের তারিখ মে ২১, ২০১২ 
  18. "Future takes shape for Bell Labs site"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৩ 
  19. "iCIMS Plans Move to Landmark Bell Works Building, Commits to Continued Growth in NJ"ICIMS.com। জুলাই ১০, ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০১৮ 
  20. "Hundreds of new workers to move into historic Bell Labs building"NJ.com। এপ্রিল ১০, ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০১৮ 
  21. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; archive.prothom-alo.com নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  22. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৮ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা