বেলাল মোহাম্মদ
বেলাল মোহাম্মদ (২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬ - ৩০ জুলাই ২০১৩) হলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনালগ্নে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের একজন প্রতিষ্ঠাতা এবং বেতার কেন্দ্রের সংগঠকদের মধ্যে একজন অগ্রদূত।
বেলাল মোহাম্মদ | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ৩০ জুলাই ২০১৩ | (বয়স ৭৭)
জাতীয়তা | বাংলাদেশ |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা |
আদি নিবাস | সন্দ্বীপ,চট্টগ্রাম |
আন্দোলন | বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ |
সন্তান | আনন্দ |
পিতা-মাতা | মৌলভি মোহাম্মদ ইয়াকুব মাহমুদা খানম |
পুরস্কার | স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (২০১০) বাংলা একাডেমী পুরস্কার (২০১১) |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাবেলাল মোহাম্মদ ১৯৩৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার মুছাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম মাহমুদা খানম এবং বাবার নাম মৌলভি মোহাম্মদ ইয়াকুব। ছাত্রাবস্থায় তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রথম চট্টগ্রাম কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি দৈনিক আজাদীতে উপসম্পাদক হিসেবে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন এবং ঐ বছরই রেডিও পাকিস্তান চট্টগ্রাম, কেন্দ্রে স্ক্রীপ্ট রাইটার হিসেবে যোগ দেন। তিনি স্বাধীনতা বিষয়ক বেশ কিছু কবিতা লিখেছেন।[১]
তার স্ত্রী ১৯৭৩ সালে এবং তার একমাত্র পুত্র আনন্দ ১৯৯৮ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান
সম্পাদনা১৯৭১ সালে বেলাল মোহাম্মদ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন। ২৬শে মার্চ ১৯৭১ সালে ৭টা ৪০ মিনিটে বেলাল মোহাম্মদ (বেলাল মোহাম্মদের সাক্ষাতকারটি ইউটিউবে দেখুন), আবুল কাসেম সন্দ্বীপ, আব্দুল্লাহ আল ফারুক এবং কবি আব্দুস সালাম-সহ আরও কয়েকজন মিলে প্রথম কালুরঘাটের বেতার স্টেশনে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার নামে বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। বেলাল মোহাম্মদ প্রথমে স্বাধীন বাংলা বেতার নামকরণ করলেও সহকর্মীর মধ্যে একজন সাথে বিপ্লবী শব্দটি যোগ করেন। সেদিনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের একটি লিফলেট বেলাল মোহাম্মদের হাতে এসে পৌছায়। ২৬শে মার্চ দুপুর বেলা এম এ হান্নান ও রেডিওর কয়েকজন সহ এই লিফলেটটি নিয়ে আসেন।[১][২]
২৭শে মার্চ সন্ধ্যায় বেলাল মোহাম্মদ মেজর জিয়াউর রহমানকে সাথে নিয়ে কালুরঘাট পৌঁছান। বেলাল মোহাম্মদ রেডিওতে বক্তব্যের জন্য বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের অনুসারে একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করে দেন যা মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে সেইদিন ঘোষণা করেন। ঘোষণাটির শুরু ছিল:
"‘আই এম মেজর জিয়া, অন বিহ্যাভ গ্রেট লিডার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান......"[২]
২৬শে মার্চকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র পাঠকারী হিসেবে মেজর জিয়া ছিলেন ৯ম। (ইউটিউবে বেলাল মোহাম্মদের সাক্ষাতকারটি দেখুন)।
পুরস্কার
সম্পাদনাবাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১০ সালে তাকে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এছাড়া স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কিত সাহিত্য রচনার জন্য ২০১১ সালে তাকে বাংলা একাডেমী পুরস্কার প্রদান করা হয়।[৩]
মৃত্যু
সম্পাদনাবেলাল মোহাম্মদ ৩০শে জুলাই , ২০১৩ তারিখ ৭৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫টার দিকে তিনি মারা যান।[৪][৫] বেলাল মোহাম্মদের ইচ্ছানুসারে তার মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাশাস্ত্রের শিক্ষার্থীদের গবেষণার উদ্দেশ্যে দান করা হয়।[৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;media
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ক খ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৯ মার্চ ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৩।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১৩।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৩।
- ↑ দৈনিক প্রথম আলো[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৩।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- স্বাধীনতার ঘোষণা: বেলাল মোহাম্মদের সাক্ষাৎকার প্রদীপ চৌধুরী | ২৮ মার্চ ২০১০ http://arts.bdnews24.com/?p=2769 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ মার্চ ২০১০ তারিখে