বেটি বচাও বেটি পঢ়াও

ভারত সরকারের একটি প্রকল্প

বেটি বচাও, বেটি পঢ়াও অভিযান (অনুবাদ: কন্যা শিশু বাঁচান, কন্যা শিশুকে পড়ান) ভারত-এর একটি সামাজিক প্রচার অভিযান, যার লক্ষ্য হ'ল কন্যা সন্তানের জন্য কল্যাণমূলক পরিষেবা প্রদানের দক্ষতা বৃদ্ধি তথা সচেতনতা সৃষ্টি। এই প্রকল্পটির জন্য ১০০ কোটি টাকা (১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রাথমিক তহবিলে প্রদান করা হয়েছিল ।

এই যোজনাটি প্রথম অবস্থায় উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তরাখন্ড, পাঞ্জাব, বিহার ও দিল্লিতে প্রচলনের টার্গেট করা হয়েছিল ।[১][২] ২০০১ সালের লোকগণনার তথ্য অনুযায়ী, ভারতের শিশুর লিঙ্গের অনুপাত (০-৬বছর) প্রতি ১০০০ জন ছেলের বিপরীতে মাত্র ৯৩৩ জন মেয়ে।[৩] যা ২০১১ সালে প্রতি ১০০০জন ছেলের বিপরীতে ৯১৮ জন মেয়েতে নিম্নগামী হয়। অন্যদিকে ২০১২ সালে UNICEFর এক তথ্যে প্রকাশ হওয়া মতে লিঙ্গ বৈষম্যর অনুপাতের ক্ষেত্রে মোট ১৯৫টি রাষ্ট্রর মধ্যে ভারতে ৪১ তম স্থান অর্জন করেছে। দেশসমূহের এই তথ্য অনুসরি ভারতের ২০১১ সালের জনসংখ্যা অনুপাত ১০০০ জন পুরুষের বিপরীতে ৯৪৩ জন মহিলা। লিঙ্গ বৈষম্যতার এই অনুপাত ২০১১ সালে ২০০১র অনুপাতে উর্দ্ধগামী হয়েছে।

এই যোজনার প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল লিঙ্গ বৈষম্যর অনুপাত হ্রাস করা। এটি, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তথা মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় দ্বারা যৌথভাবে চালানো একটি জাতীয় উদ্যোগ। এই উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে সমগ্র দেশের ১০০টি জেলাকে ধরা হয়েছিল, যেসব জেলার লিঙ্গ বৈষম্যতার অনুপাত বেশি।[৪] ২০১৪ সালের আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস পালন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেব কন্যাভ্রূণ হত্যা নির্মূলকরণের জন্য ভারতবাসিকে আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং এই সম্পর্কীয় অপরাধ নির্মূল হেতু ভারতীয় নাগরিকদের প্রস্তাবনা আহ্বান করেছিলেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৫ সালের ২২ জানুয়াারী তারিখে এই 'বেটি বচাও, বেটি পঢ়াও' (BBBP) প্রকল্পটির শুভারম্ভ করেন। ২০১৬ সালের ২৬ আগস্ট তারিখে ২০১৬ সালের অলিম্পিকের ব্রোঞ্জ মেডেল বিজেতা সাক্ষী মালিককে BBBPর প্রতিনিধি হিসাবে ঘোষণা করা হয়।[৫]

প্রয়োজনীয়তা সম্পাদনা

১৯৯১ সালের জাতীয় লোকগণনার তথ্য প্রকাশের পর ভারতে লিঙ্গবৈষম্যর এই ব্যবস্থাটি প্রথম লক্ষ্য করা হয়েছিল এবং ২০০১ সালের লোকগণনার তথ্যের ভিত্তিতে এই লিঙ্গবৈষম্যর আনুপাতিক সমস্যাটি যে এক গুরুত্বর সমস্যার দিকে যাচ্ছে সেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়। ভারতের অন্যান্য অঞ্চল সমূহ থেকে উন্নয়নশীল রাজ্য সমূহে এই আনুপাতিক পার্থক্য বেশি বলে প্রমাণিত হয়। [৬] ভারতের যৌতুক ব্যবস্থাটিকে প্রায়ই কন্যাভ্রূণ হত্যার কারণ হিসাবে দোষারোপ করা হয়; সমাজে প্রচলিত প্রথা অনুসারে কন্যা সন্তানের বিয়ের সময়ে এক মোটা অঙ্কের যৌতুক প্রদান করতে হয়। [৭] ফলত সন্তানের অভিভাবকের জন্য এটি এক বৃহৎ চিন্তার কারণ, বিশেষকরে আর্থিক ভাবে দুর্বল অভিভাবকরা এই বোঝা বহন করতে না পেরে কন্যাভ্রূণ হত্যার মত অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ে।[৮]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "PM to Launch 'Beti Bachao, Beti Padhao' Programme from Haryana"Newindianexpress.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৬-১২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "PM Narendra Modi to launch 'Beti Bachao, Beti Padhao' programme from Haryana"The Economic Times। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৬-১২ 
  3. "Archived copy" (পিডিএফ)। ৫ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০১৪ 
  4. "PM Narendra Modi invites ideas on "Beti Bachao, Beti Padhao""DNA India। ১১ অক্টোবর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৬-১২ 
  5. "Sakshi Malik to be brand ambassador of 'Beti Bachao, Beti Padhao' campaign in Haryana"। ২০১৬-০৮-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৪ 
  6. Selections from regional press, V। পৃষ্ঠা 68। 
  7. Panwar, Preeti (জুন ২৯, ২০১২)। "Female foeticide: Death before birth"। Bankersadda। ১১ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১২ 
  8. Gupta, Suchandana (অক্টোবর ৩, ২০১১)। "Skewed sex ratio: MP launches 'Beti Bachao Abhiyan'"Times of India। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১২