বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর (সংক্ষেপে: বেরোবি) বাংলাদেশের রংপুর শহরে অবস্থিত একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।[২] যা রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ, ২০০৮ দ্বারা স্থাপিত হয়, পরবর্তীতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন, ২০০৯ আইন দ্বারা অধ্যাদেশটি লোপ করা হয়।[৩] রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে যাত্রা শুরু করে ২০১১ সালে বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার নামানুসারে বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম “বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর” নামকরণ করা হয়।[৪] বর্তমানে ২২টি বিভাগে স্নাতক স্তরে ৫৯৮২ জন এবং স্নাতকোত্তর স্তরে ১০৬৮ জন মিলে মোট ৭০৫০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে।[৫]
![]() প্রাতিষ্ঠানিক লোগো | |
প্রাক্তন নাম | রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় |
---|---|
নীতিবাক্য | জ্ঞানেই শক্তি |
ধরন | সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় |
স্থাপিত | ১২ অক্টোবর ২০০৮ |
অধিভুক্তি | বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন |
বাজেট | ৭১.৪৪ কোটি (২০২৪-২৫)[১] |
ইআইআইএন | ১৩৬৬১৩ |
আচার্য | রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন |
উপাচার্য | শওকত আলী |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ১৯৯ |
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ | ১৩১ |
শিক্ষার্থী | ৭০৫০ |
স্নাতক | ৫৯৮২ |
স্নাতকোত্তর | ১০৬৮ |
ঠিকানা | পার্কের মোড়, ঢাকা-কুড়িগ্রাম মহাসড়ক , , ৭৩০১ , বাংলাদেশ |
শিক্ষাঙ্গন | শহুরে, ৭৫ একর (৩০ hectare) |
ভাষা | বাংলা, ইংরেজি |
সংক্ষিপ্ত নাম | বেরোবি (BRUR) |
ওয়েবসাইট | brur |
![]() |
ইতিহাস
সম্পাদনা২০০৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রংপুরে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে রংপুরে একটি স্বতন্ত্র পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ, ২০০৮ দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়, শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ছিল রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৯ সালের ৪ এপ্রিল ৩০০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে রংপুর সদরের ধাপ এলাকায় সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (টিটিসি) অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়।[৬] ২০১১ সালে মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়।[৪] ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর ক্যাডেট কলেজ ও কারমাইকেল কলেজের নিকটবর্তী ২০০১ সালে রংপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে অধিগ্রহণকৃত [৭] জমির উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে একাডেমিক কার্যক্রম স্থানান্তরিত হয়।[৮]
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমান প্রথম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ক্যাম্পাস
সম্পাদনারংপুরের ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজ ও রংপুর ক্যাডেট কলেজের মধ্যবর্তী স্থানে পার্কের মোড়ে এই ক্যাম্পাসটি গড়ে উঠেছে যা রংপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে রংপুর কুড়িগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত।
ক্যাম্পাসটিতে ৩০০ প্রজাতির প্রায় ৩৬ হাজার গাছ আছে। এর মধ্যে ওষুধি, ফলজ ও বনজ সহ অনেক দুর্লভ প্রজাতির গাছ আছে।[৯][১০]
আবাসিক হলসমূহ
সম্পাদনাছাত্র হল
সম্পাদনা- শেখ মুজিবুর রহমান হল
- শহীদ মুখতার ইলাহী হল
ছাত্রী হল
সম্পাদনা- শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল।
- শেখ হাসিনা হল (নির্মাণাধীন)।
স্থাপত্যসমূহ
সম্পাদনা- স্বাধীনতা স্বারক
- বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি
- শহীদ মিনার (অস্থায়ী)
অনুষদ ও বিভাগ
সম্পাদনাবিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ এবং এর অধীনে পঠিত বিভিন্ন বিভাগ এর নাম:
কলা অনুষদ
সম্পাদনাসামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ
সম্পাদনা- অর্থনীতি বিভাগ
- রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
- সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ
- জেন্ডার ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ
- গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
- লোকপ্রশাসন বিভাগ
বিজ্ঞান অনুষদ
সম্পাদনা- পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
- গণিত বিভাগ
- রসায়ন বিভাগ
- পরিসংখ্যান বিভাগ
প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ
সম্পাদনা- কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ
- ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স প্রকৌশল বিভাগ
জীব ও ভূবিজ্ঞান অনুষদ
সম্পাদনা- ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ
- দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা বিভাগ
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ
সম্পাদনা- হিসাব ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগ
- মার্কেটিং বিভাগ
- ব্যবস্থাপনা বিভাগ
- অর্থসংস্থান ও ব্যাংকিং বিভাগ
- ব্যবস্থাপনা ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগ
ইনস্টিটিউট
সম্পাদনাএ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হলেও সে প্রতিষ্ঠান অদ্যাবধি স্বতন্ত্রভাবে তার কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।[১১]
প্রোগ্রাম
সম্পাদনাএই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্নলিখিত প্রোগ্রাম চালু আছে:
উপাচার্যের তালিকা
সম্পাদনানাম | হইতে | পর্যন্ত | সূত্র |
---|---|---|---|
এম. লুৎফর রাহমান | ২০ অক্টোবর, ২০০৮ | ৭ মে, ২০০৯ | [১২] |
আবদুল জলিল মিয়া | ৮ মে, ২০০৯ | ৭ মে ২০১৩ | [১৩][১৪] |
এ. কে .এম নুরুন্নবী | ৮ মে, ২০১৩ | ৫ মে, ২০১৭ | |
নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ | ১৪ জুন, ২০১৭ | ১৩ জুন, ২০২১ | [১৫] |
হাসিবুর রশীদ | ১৪ জুন, ২০২১ | ৯ আগস্ট, ২০২৪ (পদত্যাগ) | [১৬] |
শওকত আলী | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | বর্তমান | [১৭] |
সহশিক্ষা কার্যক্রম
সম্পাদনাবেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সক্রিয় সহশিক্ষা সংগঠনসমূহ (বর্ণানুক্রমিক)
ক্রিয়া
সম্পাদনা- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় দাবা সমিতি
- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস এসোসিয়েশন (BRUSA)
পরিবেশবাদী সংগঠন
সম্পাদনা- গ্রীন ভয়েস
- বহ্নিশিখা
বিজ্ঞান
সম্পাদনা- জনবিজ্ঞান আন্দোলন
- প্রগতি বিজ্ঞান আন্দোলন
- বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ
- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল সমিতি (BRUGA)
- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রসায়ন সমিতি (BRU CHEMICAL SOCIETY)
- বাংলাদেশ ওপেন সায়েন্স অর্গানাইজেশন
- সেন্টার ফর ডিজাস্টার এইড (সিডিএ)[১৮]
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন
সম্পাদনা- স্বপ্নসিঁড়ি
সাংস্কৃতিক
সম্পাদনা- আদিস
- উদীচী
- ইকোনমিকস স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন
- ইংলিশ কালচার সোসাইটি (ইসিএস)
- এআইএস ক্লাব-একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস ক্লাব, বেরোবি
- গুনগুন
- চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
- জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন
- ডিবেটিং হাউজ অফ পলিটিকাল সায়েন্স
- পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন স্টুডেন্ট সোসাইটি
- ফিল্ম এন্ড আর্ট সোসাইটি (ফ্লাস), বেরোবি
- বিছনবাড়ি সাহিত্য আড্ডা
- বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র
- বেগম রোকেয়া ইউনিভার্সিটি ডিবেট অ্যাসোসিয়েশন (ব্রুডা)
- বেগম রোকেয়া ইউনিভার্সিটি ডিবেট ফোরাম
- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি
- বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর
- ম্যানেজমেন্ট নেট
- রণন
- রাষ্ট্রবিজ্ঞান সংসদ
- সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, বেরোবি
বিবিধ
সম্পাদনা- মার্কেটিং আই, মার্কেটিং বিভাগ।
- রেডলাইট (শুধুমাত্র সিএসই স্টুডেন্টদের সংগঠন)
- রিসার্চ অফ ফ্রিডম বই পর্যালোচনা ও ভ্রমণ বিষয়ক সংগঠন
উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী
সম্পাদনা- আবু সাঈদ-কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম শহীদ।
আরো দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "৫৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কে কত বাজেট পাচ্ছে"। thedailycampus.com। ২০২৪-০৬-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-১৪।
- ↑ "Begum Rokeya University, Rangpur -" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৯-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-০৮।
- ↑ "বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন, ২০০৯"। bdlaws.minlaw.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০২৪।
- ↑ ক খ "মহা সংকটে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়"। উত্তর বাংলা। ৫ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "Begum Rokeya University, Rangpur - Historical Outline"। brur.ac.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১২-১০।
- ↑ প্রতিবেদক, বিশ্ববিদ্যালয় (২০২৪-১০-১২)। "১৭ বছরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়"। dhakapost.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১২-১০।
- ↑ "একটি অসাধারণ গল্প-'বেরোবি'"। ঢাকাপ্রকাশ। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১২-১০।
- ↑ "বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১২-১০।
- ↑ "এক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই ৩৬ হাজার গাছ"। Bangla Tribune। ২০২২-০৯-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-০৮।
- ↑ Team, Online (২০২২-০৭-১৬)। "বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬ হাজার গাছ লাগিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ড. তুহিন ওয়াদুদ"। SATV (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-০২।
- ↑ দৈনিক কালের কণ্ঠ, ১৪ নভেম্বর, ২০১১, মুক্তধারা, পৃঃ ১৭, মুদ্রিত সংস্করণ
- ↑ "New Rangpur University gets VC"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০০৮-১০-২০। ২৪ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০০৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০০৯-০৫-০৭। ১৭ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-০৮।
- ↑ "রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি জলিল কারাগারে"। Dhakatimes News। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১২-১০।
- ↑ "শেষ কর্মদিবসেও ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত উপাচার্য কলিমউল্লাহ"। প্রথম আলো। ১৩ জুন ২০২১। ১৩ জুন ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০২১।
- ↑ "বেরোবির দায়িত্ব নিলেন ড. হাসিবুর রশীদ"। রাইজিংবিডি.কম। ১৪ জুন ২০২১। ১৪ জুন ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০২১।
- ↑ "বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হলেন ঢাবির অধ্যাপক শওকত আলী"। আজকের পত্রিকা। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
- ↑ "বেরোবির এক ঝাঁক তরুনের ব্যতিক্রম প্রতিষ্ঠান - CCNews24.com"। CCNews24.com। ২০১৮-০৯-১৪। ২০১৮-১০-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-০২।