রাজিয়া মাহবুব

(বেগম রাজিয়া মাহবুব থেকে পুনর্নির্দেশিত)

রাজিয়া মাহবুব (১৯২৭ – ২০১৩ খ্র‌ি‌.) একজন বাংলাদেশী সাহিত্যিক ও সমাজসেবী, তিনি শিশুতোষ সাহিত্যে খ্যাতিমান ছিলেন। তিনি কর্মজীবনে মূলত ছিলেন শিক্ষক।[২] তিনি বাংলা একাডেমির ফেলো ছিলেন।[৩]

শিশু সাহিত্যিক

রাজিয়া মাহবুব
জন্ম১৯২৮
ফরিদপুরের মাদারীপুর, বাংলা প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (অধুনা বাংলাদেশ)
মৃত্যু৩১ জানুয়ারি ২০১৩(2013-01-31) (বয়স ৮৪–৮৫) [১]
ঢাকা, বাংলাদেশ
পেশাশিক্ষক, শিশু সাহিত্যিক
ভাষাবাংলা
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
শিক্ষাস্নাতক
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানলেডি ব্রাবোর্ন কলেজ, কলকাতা
উল্লেখযোগ্য রচনা‘খাপছাড়া’; ‘ভূত-ভূতুম’
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারবাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১)
দাম্পত্যসঙ্গীমাহবুবুর রহমান খান
সন্তানমাসুমা খান; এস আর খান
আত্মীয়খান বাহাদুর আবদুর রহমান খাঁ; ফজলুর রহমান খান

জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

রাজিয়া মাহবুব ১৯২৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ম্যাজিস্ট্রেট আরশাদুজ্জামান খাঁ (খান বাহাদুর আবদুর রহমান খাঁর ভাই) এবং মা নূরজাহান বেগম। মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার ভাণ্ডারিকান্দি গ্রামে তার পৈতৃক নিবাসটি অবস্থিত। তিনি কোলকাতার 'লেডি ব্রাবোর্ন কলেজ' থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন।[৪]

কর্মজীবন সম্পাদনা

রাজিয়া মাহবুব স্নাতক সম্পন্ন করে ঢাকা হলিক্রস কলেজে অধ্যাপনার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। শিশু সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার লক্ষে তিনি ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন লিটল ফ্রেন্ডস এসোসিয়েশন। এই সংগঠনের শিশু সদস্যরাই তার লেখা বেশ কয়েকটি নাটকে তারই পরিচালনায় ব্রিটিশ কাউন্সিল মঞ্চে অভিনয় করে আলোচনায় আসে। এই সময়ে তিনি শিশুদের জন্য পানতুয়া নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেও প্রশংসিত হয়েছিলেন। ষাটের দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে তার লেখা নাটক তারই পরিচালনায় প্রায় নিয়মিত প্রচারিত হতো। ঢাকার ওয়ারীতে নিজ বাড়িতে ১৯৬১ সালে তিনি লিটল ফ্রেন্ডস কিন্ডারগার্টেন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।[৪]

সাহিত্যকর্ম সম্পাদনা

রাজিয়া মাহবুব একটি উপন্যাস এবং বহু ছোটগল্প লিখেছেন, বেশ কয়েকটি প্রবন্ধের বইও রয়েছে। তার প্রকাশিত উপন্যাসেটির নাম বন্ধনদুর্ভাগিনীমুখরিত গহনে তার উল্লেখযোগ্য ছোটগল্প গ্রন্থ। সাগর কন্যাভূত-ভূতুম ছোটদের জন্য লেখা উল্লেখযোগ্য নাটক। তার খাপছাড়া নামে ছোটগল্পের বইটি ১৯৫৭ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার পায়।[৪] এছাড়া তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলির মধ্যে বিয়ে ও সাফল্য, আপনি ও আপনার সন্তান, ছোটদের গল্প, স্বনির্বাচিত গল্প, খেলতে খেলতে জীবন শুরু, হ্যান্স এন্ডারসনের রুপকথা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।[২]

পারিবারিক জীবন সম্পাদনা

রাজিয়া মাহবুব ১৯৪৮ সালে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ-সাহিত্যিক খান বাহাদুর আবদুর রহমান খাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুবুর রহমান খানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহিত জীবনে তিনি এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জননী ছিলেন।[১]

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

  • ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৫৭);
  • ইসাবেলা ইটন পুরস্কার (১৯৬৭), লন্ডন;
  • বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ কর্তৃক সম্মাননা (১৯৮০);
  • বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১)।

মৃত্যু সম্পাদনা

রাজিয়া মাহবুব ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ বাংলাদেশ বেতার থেকে স্থানীয় সংবাদে প্রথম প্রচারিত হয়।[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "শোক"দৈনিক প্রথম আলো। ২০১৯-১২-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-৩০ 
  2. মিয়া, আবদুল জাব্বার (১৯৯৪)। মাদারীপুর জেলা পরিচিতি। মিসেস লীনা জাব্বার। পৃষ্ঠা ২০২। 
  3. "পরিষদ উপবিভাগ"বাংলা একাডেমি (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১০-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-৩০ 
  4. "জীবন শিল্পী রাজিয়া মাহবুব"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-৩০