বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তন
বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তন হলো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার কেন্দ্রীয় মিলনায়তন বা অডিটোরিয়াম।[১][২] এটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (টিএসসিসি) বলেও পরিচিত রয়েছে।[৩] মিলনায়তনটি ঝিনাইদহ জেলার ব্যক্তিত্ব বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের নামে নামকরণ করা হয়েছে।[৪] এটি ২০০০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তন হিসাবে নির্মাণ করা হয়েছিলো, তখন এই এই মিলনায়তনের নাম ছিলো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (টিএসসিসি)। পরবর্তীতে ২০০১ সালে ও ২০১২ সালে নাম পরিবর্তন করে বর্তমান নামে আসা হয়। এই মিলনায়তনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক আয়োজন, চলচ্চিত্র উৎসব, নাটিকা পরিবেশনসহ বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ আয়োজনে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।[৫][৬] মিলানায়তনের নিচ তলার বিভিন্ন কক্ষ নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের অফিস রুম হিসাবে ব্যবহার হয়।
| বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তন | |
|---|---|
 | |
 কেন্দ্রীয় মিলনায়তন | |
| অবস্থান | ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস |
| মালিক | ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া |
| পরিচালক | অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল |
| নির্মাণ | ২০০০ |
| উদ্বোধন | ২০০১ |
নির্মাণ খরচ | ৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা |
প্রাক্তন নাম | শাহ আজিজুর রহমান মিলনায়তন |
থিয়েটারের আসন | ১২০০ |
| জায়গা | |
ইতিহাস
সম্পাদনামহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় মিলনায়তনের নামকরণ করা হয়েছে একজন মুক্তিযোদ্ধার নামে, এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকশিত হবে।
তৎকালীন উপাচার্য রাশিদ আসকারী
২০০০ সালে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় ৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এই মিলনায়তন নির্মাণ করা হয়।[৭] এটির নাম দেওয়া হয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, সংক্ষেপে ডাকা হয় ইবি টিএসসিসি নামে। এরপরে ২০০১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কুষ্টিয়া জেলার ব্যক্তিত্ব শাহ আজিজুর রহমানের নামে শাহ আজিজুর রহমান মিলনায়তন নামকরণ করে।[৮] ২০১২ সালে মুনতাসীর মামুন (শহীদ স্মৃতিসৌধের ভাস্কর) ও শাহরিয়ার কবির হাইকোর্টে রিট করেন, এই মিলনায়তনের নামকরণ করা হয়েছে একজন স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতাকারী ব্যক্তির নামে, তাই এটির নাম পরিবর্তন করা দরকার।[৯] এই রিটের জের ধরে ২০১২ সালের ১৪ মে হাইকোর্ট এই স্থাপনার নাম পরিবর্তনের আদেশ দেন।[১০] এরপর ১৪ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩২তম সিন্ডিকেটে আলোচনা করে এই মিলানায়নের নাম নির্ধারন করা হয় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তন।
২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের প্রকোপের জন্য বেশ কয়েক মাসের জন্য মিলানায়তনে সব ধরনের সেমিনার, প্রোগ্রাম ও জনসমাগম নিষিদ্ধ ছিলো।[১১] ২০২২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মাহবুবুর রহমান মিলনায়তনের বর্তমান নামের স্থলে শাহ আজিজুর রহমান মিলনায়তন বলায় সমালোচনার স্বীকার হন।[১২] অক্টোবর ২০২৩ সালে সাংস্কৃতিক ঐক্যমঞ্চ নামক সংগঠন টিএসসিসির সার্বিক মানোন্নয়নের জন্য ১০ দফা দাবি দাবি করে উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন।[১৩][১৪]
কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া
সম্পাদনাইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তন ভবনের একাংশে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া অবস্থিত। এখানে সকালে নানারকম নাস্তা জাতীয় খাবার পাওয়া যায়, দুপুরে ভাত, মাছ মাংস সহ বিভিন্ন দেশীয় খাবার পাওয়া যায় ও রাতে রাতের খাবার পাওয়া যায়। বর্তমানে ক্যাফেটেরিয়ার ডাইনিং ম্যানেজারের কাজ নিয়েছেন আরিফুল ইসলাম কলম। মিলানায়তনের পরিচালকই ক্যাফেটিয়ার পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।[১৫] ২০১৯ সালে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে ক্যাম্পাস ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর ক্যাম্পাস চালু হলেও ক্যাফেটেরিয়া কয়েক মাস বন্ধ ছিলো।[১৬][১৭]
ব্যবহার
সম্পাদনাবীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার সাথে সংযুক্ত স্থাপনা। মূল মিলানায়তনের বাইরেও ছোট ছোট প্রোগ্রামের জন্য নানা সাংস্কৃতিক সংগঠন ভবনের ১১৬ নং কক্ষের হলরুম ব্যবহার করেন।[১৮] বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া ও মিলানায়তন উভয়ই দ্বিতল বিশিষ্ট ভবন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ নানা আয়োজনে এই মিলানায়তন ব্যবহৃত হয়ে থাকে। মিলানায়তনে মোট ১২০০ আসন রয়েছে।[১৯] এসব ব্যবহারের মধ্যে কিছু উল্লেখ করা হলো:
- এই মিলানায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, বিভাগ তাদের বার্ষিক বা বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।
- বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র সংসদ, নাটিকা গ্রুপ ও এখানে চলচ্চিত্র ও নাটিকা প্রদর্শন করে থাকে।
- এই মিলানায়তনে প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাগত শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়ে থাকে।
- শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নানা সেমিনার, ওয়ার্কশপ, সভা, বিতর্ক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
আরো দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের নামে কেন্দ্রীয় মিলনায়তন"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১০।
- ↑ "বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের জন্মদিন আজ"। Barta24। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১০।
- ↑ "নান্দনিক সৌন্দর্যের প্রতিক ইবির টিএসসিসি"। dhakamail.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৮।
- ↑ "বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান - এস, বি, কে ইউনিয়ন"। sbkup.jhenaidah.gov.bd। ২০২২-১০-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১০।
- ↑ "ইবিতে প্রথম আইন অ্যালামনাই সম্মেলন অনুষ্ঠিত"। জাগো নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১০।
- ↑ "আন্তর্জাতিক ছবি প্রদর্শন উৎসবে মেতেছে ইবি"। ঢাকা ইউজ ২৪। ২২ মে ২০২২। ১০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ "ইবিতে শাহ আজিজুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন"। banglanews24.com। ২০১৬-১০-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১০।
- ↑ "শাহ আজিজুর থেকে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান"। সমকাল। ২০২২-১০-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১০।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "ইবি'র ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন"। দৈনিক ইনকিলাব। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১০।
- ↑ ডটকম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। "'স্থাপনায় শাহ আজিজ- সবুরের নাম কেন অবৈধ নয়'"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০২২-১০-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১১।
- ↑ "ইবি'র টিএসসিসিতে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা"। Ekushey TV (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ মার্চ ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৫-০১।
- ↑ নিউজ, ডেক্স (১৮ আগস্ট ২০২২)। "বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনকে রাজাকার আজিজুর রহমান বললেন মাহবুবুর রহমান"। বিডি২৪লাইভ.কম। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ "কক্ষ বরাদ্দসহ ১০ দাবিতে ইবি ঐক্যমঞ্চের স্মারকলিপি"। thedailycampus.com। ৮ অক্টোবর ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৫-০১।
- ↑ "ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: টিএসসিসি সংশ্লিষ্ট সমস্যা ও সংকট নিরসনে ঐক্যমঞ্চের সংস্কার ভাবনা"। সময় জার্নাল। ২৮ অক্টোবর ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০২৫।
- ↑ Correspondent, University। "দুই মাস ধরে বন্ধ ইবির ক্যাফেটেরিয়া"। dhakapost.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-৩০।
- ↑ "অবশেষে খুললো ইবির ক্যাফেটেরিয়া"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-৩০।
- ↑ "ইবির ক্যাফেটেরিয়া বন্ধে ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা"। thedailycampus.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-৩০।
- ↑ নিয়ামাতুল্লাহ, মোহাম্মদ (১১ নভেম্বর ২০২২)। "ইবিতে টিএসসিসির ১১৬নং কক্ষে অনুষ্ঠান করতে লাগে টাকা"। www.amadershomoy.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৫-০১।
- ↑ নিউজ, সময়। "প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির ৪৩ বছরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় | বাংলাদেশ"। সময় টিভি। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-০৭।