১২৭ আওয়ারস (বাংলাঃ ১২৭ ঘণ্টা) হচ্ছে ২০১০ সালের একটি জীবনীমূলক উত্তরজীবি নাট্য চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা, সহ-রচনা এবং প্রযোজনা করেন ড্যানি বয়েল। চলচ্চিত্রটিতে জেমস ফ্র্যাঙ্কো এরন র‍্যালস্টোন নামে একজন গিরিসংকট অভিযানকারী চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি ২০০৩ সালের এপ্রিলে দক্ষিণ-পূর্ব উতাহ এর জনমানবহীন গিরিসংকট জন ক্যানিয়নে পাথরের নুড়িরর ফাঁদে আটকা পড়েন। এটি ব্রিটিশ এবং মার্কিন যৌথ প্রযোজনা করে এভারেস্ট এন্টারটেইনমেন্ট, ফিল্ম৪ প্রডাকশন্স, হ্যান্ডমেইড ফিল্মস এবং ক্লাউড এইট ফিল্মস।

১২৭ আওয়ারস
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পোস্টার
পরিচালকড্যানি বয়েল
প্রযোজক
চিত্রনাট্যকার
  • ড্যানি বয়েল
  • সিমন বিউফয়
উৎসএরন র‍্যালস্টোন কর্তৃক 
বিটিউন এ রক এন্ড এ হার্ড প্লেইস
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকারএ আর রহমান
চিত্রগ্রাহক
  • এন্থোনিও ডড মান্থলে
  • এনরিক চেদিয়াক
সম্পাদকজন হ্যারিস
প্রযোজনা
কোম্পানি
  • পথ
  • এভারেস্ট এন্টারটেইনমেন্ট
  • ফিল্ম৪ প্রডাকশন
  • হ্যান্ডমেইড ফিল্মস
  • ক্লাউড এইট ফিল্মস[১]
পরিবেশক
  • ফক্স সার্চলাইট পিকচার্স(যুক্তরাষ্ট্র)
  • ওয়ার্নার ব্রস পিকচার্স(যুক্তরাজ্য)
মুক্তি০৪ সেপ্টেম্বর ২০১০ (টেল্লুরাইড চলচ্চিত্র উৎসব)
০৫ নভেম্বর ২০১০ (যুক্তরাষ্ট্র)
০৭ জানুয়ারি (যুক্তরাজ্য)
স্থিতিকাল৯৩ মিনিট
দেশ
  • যুক্তরাজ্য
  • যুক্তরাষ্ট্র
ভাষাইংরেজি
নির্মাণব্যয়১৮ মিলিয়ন ইউএস ডলার[২]
আয়৬০.৭ মিলিয়ন ইউএস ডলার[২]

চলচ্চিত্রটি র‍্যালস্টোনের আত্মজীবনী “বিটিউন এ রক এন্ড এ হার্ড প্লেইস”(২০০৪) এর উপর নির্মিত। চলচ্চিত্রটি রচনা করেন বয়েল এবং সিমন বিউফয়, প্রযোজনা করেন ক্রিশ্চিয়ান কলসন এবং জন স্মিথসন, এবং সংগীত পরিচালনা করেন এ আর রহমান। বিউফয় , কলসন, এবং রহমান এর আগেও একত্রে কাজ করেছেন বয়েলের ২০০৮ সালের স্লামডগ মিলিয়নিয়ার চলচ্চিত্রে। ১২৭ আওয়ারস সমালোচক এবং দর্শকদের দ্বারা প্রশংসিত হয় এবং ছয়টি একাডেমি পুরস্কার এর জন্য মনোনীত হয়।, যার মধ্যে ছিল সেরা অভিনেতা এবং সেরা চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রের শিরোনামটি নির্দেশ করে র‍্যালস্টোনের দূর্ঘটনার দিন জেগে উঠা থেকে শুরু করে তার উদ্ধারের সময় এন্থেশিয়ার পূর্ব পর্যন্ত।[৩]

কাহিনী সংক্ষেপ সম্পাদনা

পর্বতারোহী এবং অভিযানকারী এরন র‍্যালস্টোন উতাহ এর ক্যানিয়নল্যান্ডস ন্যাশনাল পার্কে ভ্রমণ শুরু করেন। পায়ে হাঁটার সময় সে ভ্রমণকারী ক্রিস্টি এবং মেগান এর সাথে বন্ধুত্ব হয়, এবং তাদের একটি ভূগর্ভস্থজলাশয় দেখায়। সেখানে সাঁতার কাটার পর এরন ভ্রমণকারীদের পথ থেকে অন্য পথ নেয়, এবং ব্লু জন ক্যানিয়ন এর ঠুনকো গিরিসংকটে যাত্রা শুরু করে। যখন সে নিচে নামছিল তখন সে পিছলে এবং পড়ে যায়, একটা পাথর এসে তার ডান হাতে আঘাত হানে দেয়ালের বিপরীতে কবজির মধ্যে। আটকা পড়ে সে সাহায্যের জন্য ডাকে কিন্তু বুঝতে পারে সে একা। সে মনোবল বৃদ্ধির জন্য ভিডিও ধারণ করা শুরু করে, সে পাথরটিকে ভাঙ্গার চেষ্টা করে যাতে সে মুক্ত হয় এবং রাতে যাতে উষ্ণ থাকে। সে তার খাবার এবং পানিকে ভাগ করে বেঁচে থাকার জন্য। সে একটা কপিকল বসায় তার আরোহণের দড়ি দ্বারা এবং পাথরটি তুলার বৃথা চেষ্টা করে।

আটকা পরার কিছু দিন পর, র‍্যালস্টোন তার পকেটের ছুরি দ্বারা হাত কেটে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে, কিন্ত ভুতা ছুরিটি তার হাড় কাটতে ব্যার্থ হয়। একসময় কোন পানি না থাকায় সে তার মূত্র পান করতে বাধ্য হয়। তার ভিডিও হতাশ এবং বিষণ্ণ হতে থাকে এবং সে ভ্রম দেখতে থাকে তার মুক্তি, ব্যক্তিগত সম্পর্ক, এবং পূর্ব অভিজ্ঞতা যার মধ্যে প্রাক্তন প্রেমিকা, পরিবার, এবং ক্রিস্টি ও মেগান। একটি ভ্রম এর মধ্যে সে বুঝতে পারে তার ভুল ছিল সে কাউকে বলেনি সে কোথায় যাচ্ছে। সে মনে করে পাথরের মধ্যে আটকা পড়াই তার ভাগ্যের লিখন। টর্ক সম্পর্কে তার জ্ঞান কাজে লাগিয়ে, র‍্যালস্টোন তার ক্যামেলব্যাকের টিউবটি হাতে বাধে এবং পর্বত আরোহণের স্প্রিং কাজে লাগিয়ে তা আরো শক্ত করে। ধীরে ধীরে সে তার বাহুটি বিচ্ছেদ করে। রক্তপাত বন্ধ হওয়ার জন্য সে তার হাতটি মোড়ায় এবং পাথরটির একটি ছবি তুলে। এরপর সে একটি ৬৫-ফুট উঁচু শিলামুখ অন্য হাতের সাহায্যে অতিক্রম করে ফেরে এবং একটি ছোট জলাশয় থেকে বৃষ্টির পানি পান করে। সে একটি অভিযানকারী পরিবারের দেখা পায়, যারা র‍্যালস্টোনের উপস্থিতি কর্তৃপক্ষকে জানায়, এবং একটি উতাহ হাইওয়ে পেট্রোল রওনা দিয়ে পৌছায় এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। র‍্যালস্টোন একটি পরিবার শুরু করে, অভিযান অব্যাহত রাখে এবং সবসময় সে কোথায় যাচ্ছে সে সম্পর্কে একটি চিরকুট রেখে যায়।

কুশীলব সম্পাদনা

এরন র‍্যালস্টোন এবং তার স্ত্রী ও পুত্র ছবিটির শেষের দিকে ক্ষণিক চরিত্রাভিনয় করে।

সত্যতা সম্পাদনা

ছবিটির প্রথমদিকে একটি দৃশ্যে যেখানে র‍্যালস্টোন দুইজন অভিযানকারীকে লুকায়িত জলাশয় দেখিয়েছেন, সেটা মূলত পরিবর্তিত করে দেখানো হয়, বাস্তবে র‍্যালস্টোন তাদেরকে কিছু আরোহণের ধাপ দেখিয়েছেন। এই পরিবর্তনগুলো ছাড়া, যেগুলোতে র‍্যালস্টোন একটু অস্বস্তিবোধ করেছেন, বাকি ছবি নিয়ে তিনি বলেন যে “এটি একটি ডকুমেন্টারীর কাছাকাছি মোটামুটি নির্ভুল এবং এরপরও একটি নাট্য।[৪]

অন্যান্য পরিবর্তন যেগুলো বই থেকে করা হয়েছিল যেগুলোর মধ্যে ছিল র‍্যালস্টোন নিজেকে মুক্ত করার পর দেখা গেছে ছবিটির শুরুতে তার সাইকেলটি গাছের সাথে শিকল বাঁধা ছিল না, বরং এটি শুধুমাত্র সাইকেলের মধ্যে শিকল ছিল। তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে কোথায় দ্রুত চিকিৎসা পাওয়া যাবে। সে একটি বাদামী পুকুরে নিজের ছবি নিয়েছে বাস্তবে সে সেখান থেকে পানি খেয়েছে। সে মুক্তির পর অনেক জিনিসই ফেলে এসেছে, সে গিরিসংকটের একটি পাশে হারিয়ে যায়, এবং তার নেদারল্যান্ডের একটি পরিবারের(যুক্তরাষ্ট্রের পরিবার নয়) এরিক, মনিক এবং এন্ডি মেইজারের সাথে দেখা হয়, যারা জানত যে সে সম্ভবত এই এলাকায় হারিয়ে গিয়েছে, তার পিতা-মাতা এবং কর্তৃপক্ষকের বদৌলতে।(এরিক মেইজারের চরিত্রে অভিনয় করা পিটার জেন ব্রুগ মূলত ডাচ)।

ফ্র্যাঙ্কোকে কখনো দেখা যায়নি একটি “উহ” শব্দ করতে, র‍্যালস্টোন লিখেছিলেন যে সেটি সঠিক।[৫] র‍্যালস্টোন মনিক এবং এন্ডিকে সামনে পাঠিয়েছিলেন সাহায্যের জন্য, এবং র‍্যালস্টোন হেলিকপ্টার আসার আগে সাত মাইল হেটেছিলেন,[৬] যদিও চলচ্চিত্রে যে পথ দেখানো হয়েছিল সেটি ছিল বিকল্প সমাপ্তি।

নির্মাণ সম্পাদনা

ড্যানি বয়েল প্রায় চার বছর থেকে অপেক্ষা করছিলেন র‍্যালস্টোনের এই অগ্নিপরীক্ষা নিয়ে।[৭] সে ছবিটি রচনা করে এবং সিমন বাফয় এর চিত্রনাট্য লিখেন।[৮] বয়েল “১২৭ আওয়ারস” বর্ণনা করেন "একজন লোককে নিয়ে একশন মুভি যে নড়তে পারে না[৯] সে তার আগের ছবি স্লামডগ মিলিয়নিয়ার এর চেয়ে বেশি ব্যক্তিগত আগ্রহ দেখিয়েছে এই ছবিতেঃ “আমি মনে করি যে আমি ভাবছি, আমি একটি ছবি করব এমনভাবে যেভাবে ড্যারেন আরোনোফস্কি একজন অভিনেতাকে অনুসরণ করে দ্য রেসলার(২০০৮) চলচ্চিত্রটি করেছেন। আর সেটার আমার ভার্সন হচ্ছে ১২৭ আওয়ারস”[১০]

বয়েল এবং ফক্স সার্চলাইট ২০০৯ সালের নভেম্বরে ১২৭ আওয়ারস তৈরি করার ঘোষণা দেন,[১১] এবং নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড প্রতিবেদন করে যে সিলিয়ান মার্ফি হচ্ছে র‍্যালস্টোনের চরিত্রাভিনয় করার জন্য প্রথম পছন্দ।[১২] ২০১০ সালের জানুয়ারিতে জ্যামস ফ্রাঙ্কোকে নেয়া হয় র‍্যালস্টোনের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য।[১৩] ২০১০ সালের মার্চে উতাহতে ছবির শুটিং শুরু হয়,[১৪] বয়েল চেয়েছিলেন ছবিটির প্রথমদিক কোন ডায়লগ ছাড়া ধারণ করতে।[৭] ২০১০ সালের ১৭ জুনের মধ্যে চলচ্চিত্রটি পোস্ট-প্রডাকশনে যায়।[১৫]

বয়েল একটি বেশ অসচরাচর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ছবিতে দুইজন চিত্রধারণকারী ভাড়া করে, এন্থনি ডড মান্তলে এবং এনরিক চেদিয়াক, তার প্রত্যেকেই ছবির পঞ্চাশ ভাগ করে ধারণ করেছেন। যেটি বয়েল এবং ফ্রাঙ্কোকে দীর্ঘদিন কাজ করতে সাহায্য করেছিল কোনরকম কর্মীশূন্যতা ছাড়াই।[১৬]

বয়েল তালিকায় যুক্ত করেন মেকাপ এফেক্ট নকশাকারী টনি গার্ডনার এবং তার কোম্পানি আল্টেরিয়ান ইঙ্ককে, চরিত্রটির হাতের বিচ্ছেদের অংশটি পুনরায় তৈরি করতে। বয়েল জোর দিয়েছিলেন যে হাতটির বাস্তবতা এবং প্রক্রিয়া দর্শকদের চরিত্রটির অভিজ্ঞতা বুঝতেই বিনিয়োগের প্রধান চাবিকাঠি এবং এই মেকাপের প্রভাবই চলচ্চিত্রটিকে সফল হতে প্রভাব ফেলবে। এই কৃত্রিম হাতটি তৈরি করা হয়েছিল কয়েকটি স্তরে, ফাইবার গ্লাস থেকে স্টিলের হাড়, সিলিকনের জৈব এবং তন্তুময় পেশী ও কন্ডুরা, থেকে সক্রিয় ধমনী ও শিরা, এবং সবশেষে ত্বক যেটি তৈরি করার হয়েছিল পরিষ্কার সিলিকন স্তর দ্বারা। গার্ডনার বলেন যে এফেক্টের কাজ করা ছিল ভীষণ পীড়াদায়ক, যেখানে বয়েল গল্পটির প্রতি ন্যায়বিচার করতে চেয়েছে, গার্ডনার জেমস ফ্রাঙ্কোকে সমভাবে কৃতজ্ঞতা দেয় যে এফেক্টের কাজগুলো সহজ করে দেয়ার জন্য। তিনটি কৃত্রিম বাহু পুরোপুরি ব্যবহার করা হয় যেখানে দুইটিতে হাতের ভেতরের অংশ দেখানো হয় এবং একটিতে বাহিরের।[১৭] ফ্রাঙ্কো পরবর্তিতে বলেন যে হাতের মধ্যে রক্ত দেখা বেশ কঠিন তার জন্য এবং দৃশ্যগুলোতে তার প্রতিক্রিয়া ছিল আসল।[১৭]

ফ্রাঙ্কো স্বীকার করেন যে চলচ্চিত্রটি ধারণ তার জন্য শারীরিকভাবে বেশ কষ্টকর ছিল, “ওইসময় শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যাথা ছিল এবং ড্যানি জানত যে এটি বেশ ব্যাথা দিবে। এবং আমি তাকে চলচ্চিত্র শেষে জিজ্ঞেস করি যে ‘তুমি কীভাবে জান যে তুমি এর কতটুকু দিতে পারবে?’... আমার শরীরের অনেক দাগ আছে... এই নয় যে আমি শুধু ব্যাথা পাচ্ছি কিন্তু আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ছিলাম। আমি ততই কম ছদ্মরূপ ধারণ করছিলাম এবং বেশ ভাল এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি”।[১৮]

মুক্তি সম্পাদনা

১২৭ আওয়ারস টরেন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শন করা হয় ২০১০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর, তেল্লুরাইড চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনীর পর।[১৯] চলচ্চিত্রটি লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে নির্বাচন করা হয় উৎসবের সমাপ্তি চলচ্চিত্র হিসাবে ২০১০ সালের ২৮ অক্টোবর।[২০] এটাকে যুক্তরাষ্ট্রের সল্পসংখ্যক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেয়া হয় ২০১০ সালের ৫ নভেম্বর।[২১] ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যে মুক্তি দেয়া হয় এবং ভারতে ২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি।[২২][২৩]

কিছু প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়(সব নিশ্চিত নয়) যে ট্রেইলার এবং চলচ্চিত্রটি দেখে কিছু দর্শক অসুস্থ হয়ে পড়ে। দ্য হাফিংটন পোস্ট, ২০১০ সালের নভেম্বরে লিখে যে “চলচ্চিত্রটি দেখে অজ্ঞান হওয়া, বমি করা এবং আরো খারাপ অবস্থা হয়েছে দর্শকদের দ্য এক্সরসিস্ট চলচ্চিত্র থেকে, এমনকি চলচ্চিত্রটি এখনও সকল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়নি”[২৪] তেল্লুরাইড চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি প্রদর্শনীর সময় দুইজন লোককে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল, প্রথম প্রদর্শনীতে একজন দর্শক মাথা হালকা অনুভব করছিলেন এবং তাকে স্ট্রেচারের করে প্রদর্শনীর বাইরে নেয়া হয়।পরবর্তি প্রদর্শনীতে একজন দর্শন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে।[২৫] প্রায় একই ধরনের পরিস্থিতির খবর প্রকাশ করা হয় টরেন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে[২৬] এবং একটি বিশেষ প্রদর্শনী করে পিক্সারলি আনরিক, টয় স্টোরি ৩(২০১০) এর পরিচালক দ্বারা।[২৭] মুভিলাইন ওয়েভসাইট প্রকাশ করে যে “সশস্ত্র এবং ভয়ঙ্করঃ যারা অজ্ঞান(বা তার চেয়েও খারাপ অবস্থা) হয়েছে তাদের জন্য খুবই মর্মাহত সময়রেখা ১২৭ আওয়ারস এ।”[২৮]

সমালোচনা সম্পাদনা

পর্যালোচনা সংযোগকারী ওয়েভসাইট রুটেন টমেটোস, এর মধ্যে চলচ্চিত্রটি শতকরা ৯৩ ভাগ গ্রহণ হয়েছে ২২১জন পর্যালোচনাকারীর মধ্যে। ওয়েভসাইটটির সমালোচনাকারী ঐকমত্য প্রকাশকরে ‘সাহসিকতার পাশাপাশি এটি অনুপ্রেরণামূলক, ১২৭ আওয়ারস এর মধ্যে ড্যানি বয়েলের সবচেয়ে সুন্দর সমৃদ্ধ পরিচালনা দেখা যায় সাথে জেমস ফ্রাঙ্কোর অসাধারণ অভিনয়।”[২৯] মেটাক্রিটিক এর মধ্যে পর্যালোচনার পাল্লায় ভার যোগ করে, যেটি ১০০ এর মধ্যে ৮২ স্কোর করে ৩৮ জন পর্যালোচনাকারীর মধ্যে যেটি নির্দেশ করে ‘সার্বজনীন প্রশংসা’।[৩০]

‘ডিভিডি টক’ এর জন্য লিখতে গিয়ে, কেসি বার্কাভি সমাপ্তি করেন যে “১২৭ আওয়ারস তোমার সাথে একটি বেঁচে থাকার গল্প হিসাবেই থাকবে না, কিন্তু মর্মভেদী আভ্যন্তরিক অভিজ্ঞতার গল্প হিসাবে।”[৩১] শিকাগো সান-টাইমস-এর রিচার্ড রপার চলচ্চিত্রটিকে চার তারকা দেন এবং বলেন যে তিনি বিশ্বাস করেন ফ্রাঙ্কোকে একটি অস্কার মনোনয়ন পাওয়া উচিত, এবং চলচ্চিত্রটিকে এই যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের মধ্যে একটি। রজার ইবার্ট চলচ্চিত্রকে চার তারকা দেন এবং লিখেন “১২৭ আওয়ারস হচ্ছে ক্যামেরায় ধারণ করা যায়না এমন চলচ্চিত্র তৈরির অনুশীলন"[৩২] দ্য হাফিংটন পোস্টের জন্য গাজিল ইমামি লিখেন ফ্রাঙ্কোর অভিনয়কে “সম্মোহিত” এবং “অসাধারণ”[৩৩]

প্রশংসা সম্পাদনা

১২৭ আওয়ারস তিনটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়, যার মধ্যে ছিল সেরা নাট্য চলচ্চিত্র অভিনেতা, সেরা চিত্রনাট্য, সেরা মৌলিক সুর[৩৪]

চলচ্চিত্রটি নয়টি ব্রিটিশ একাডেমি চলচ্চিত্র পুরস্কারে মনোনীত হয়, যার মধ্যে ছিল অসাধারণ ব্রিটিশ চলচ্চিত্র, সেরা পরিচালনা, সেরা প্রধান চরিত্রে অভিনেতা, সেরা উপযোগকৃত চিত্রনাট্য, সেরা চিত্রগ্রহণ, সেরা সম্পাদনা, এবং সেরা চলচ্চিত্রের সঙ্গীত[৩৫]

চলচ্চিত্রটি ৮৩তম একাডেমি পুরস্কারে ছয়টি মনোনয়ন পায়, যার মধ্যে ছিল সেরা চলচ্চিত্র, সেরা অভিনেতা, সেরা উপযোগকৃত চিত্রনাট্য, সেরা মৌলিক সুর, সেরা মৌলিক গান, এবং সেরা চলচ্চিত্র সম্পাদনা[৩৬]

এটি আটটি ব্রডকাস্ট চলচ্চিত্র সমালোচক সংঘের পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়; যার মধ্যে ছিল সেরা চলচ্চিত্র, সেরা পরিচালক, সেরা অভিনেতা, সেরা উপযোগকৃত চিত্রনাট্য, সেরা চিত্রগ্রহণ, সেরা সম্পাদনা, সেরা গান, এবং সেরা শব্দগ্রহণ[৩৭] চলচ্চিত্রের মূল গান "ইফ আই রাইজ" সেরা গান বিভাগে ক্রিটিকস চয়েস চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে।[৩৮]

জেমস ফ্র্যাঙ্কো সেরা অভিনেতা বিভাগে নিউ ইয়র্ক চলচ্চিত্র সমালোচক অনলাইন এবং ডালাস-ফোর্ট ওউর্থ চলচ্চিত্র সমালোচক সমিতির পুরস্কার লাভ করেন।[৩৯][৪০]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "British Council Film: 127 Hours" (ইংরেজি ভাষায়)। ব্রিটিশ কাউন্সিল। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  2. "127 Hours (2010)"বক্স অফিস মোজো (ইংরেজি ভাষায়)। ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজ। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১১ 
  3. Ralston, Aron (২০০৪)। Between a Rock and a Hard Place (ইংরেজি ভাষায়)। New York: Atria Books। পৃষ্ঠা 326আইএসবিএন 978-0-7434-9282-9...before my streak of 127 hours of uninterrupted experience ends at three forty-five P.M., Thursday, May 1, 2003. 
  4. Barkham, Patrick (১৫ ডিসেম্বর ২০১০)। "The Extraordinary Story Behind Danny Boyle's 127 Hours"দ্য গার্ডিয়ান (ইংরেজি ভাষায়)। London। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১১ 
  5. Between a Rock and a Hard Place, p. 283. "I still haven't uttered even an 'Ow!' "I don't think to verbalize the pain; it's a part of the experience, no more important to the procedure than the color of my tourniquet."
  6. Ralston, Between a Rock and a Hard Place, p. 317. "It is mile seven, and a few minutes after three P.M. ... It will kill me if I try to hike out of this canyon. I've lost too much blood; I'm on the verge of deadly shock. I contemplate sending Eric up to get help as well, but before I can spit out the idea, the rapid stutter of a booming echo interrupts my thoughts... Two hundred yards in front of us, the metallic body of a wingless black bird rises over the canyon wall."
  7. Thompson, Anne (৬ নভেম্বর ২০০৯)। "Nine Things I Learned at BAFTA's Brittania Awards"ইন্ডিওয়্যার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ জুন ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০১০ 
  8. Fleming, Mike (৪ নভেম্বর ২০০৯)। "Boyle, Searchlight Firm Mountaineer Tale"ভ্যারাইটি (ইংরেজি ভাষায়)। রিড বিজনেস ইনফরমেশন। ৯ নভেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০১০ 
  9. Jury, Louise (১৩ আগস্ট ২০১০)। "Danny Boyle's latest movie boosts London Film Festival"লন্ডন ইভেনিং স্ট্যান্ডার্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ১৭ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১০ 
  10. Karger, Dave (১২ সেপ্টেম্বর ২০১০)। "Danny Boyle & Darren Aronofsky: Toronto Déjà Vu"এন্টারটেইনমেন্ট উয়িকলি (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১১ 
  11. Mitchell, Wendy (৫ নভেম্বর ২০০৯)। "Danny Boyle plans film about mountaineer Aron Ralston"এন্টারটেইনমেন্ট উয়িকলি (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ জানুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১১ 
  12. Colin, Robbie (১৫ নভেম্বর ২০০৯)। "Tale of climber who amputated his own arm"নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০১০ 
  13. Siegel, Tatiana (৬ জানুয়ারি ২০১০)। "James Franco puts in Hours"ভ্যারাইটি (ইংরেজি ভাষায়)। রিড বিজনেস ইনফরমেশন। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০১০ 
  14. Filmapia.com Movie Locations for 127 Hours. Accessed 19 February 2012. 21 February 2012.
  15. Kemp, Stuart (১৭ জুন ২০১০)। "Boyle, Daldry to oversee Olympic ceremonies"দ্য হলিউড রিপোর্টার (ইংরেজি ভাষায়)। e5 Global Media। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০১০ 
  16. Caranicas, Peter (২৬ অক্টোবর ২০১০)। "Boyle hikes up number of d.p.'s on 127 Hours"ভ্যারাইটি (ইংরেজি ভাষায়)। 
  17. Yuan, Jada। "James Franco and Aron Ralston Explain How to Watch 127 Hours Without Fainting"Vulture (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৬ 
  18. "James Franco: '127 Hours' Caused Extreme Physical Pain" (ইংরেজি ভাষায়)। হাফিংটন পোস্ট। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১৩ 
  19. "127 Hours" (ইংরেজি ভাষায়)। টরোন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। ২০১০। ২৭ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ আগস্ট ২০১০ 
  20. Brooks, Xan (১৩ আগস্ট ২০১০)। "Danny Boyle's 127 Hours to close London Film Festival"দ্য গার্ডিয়ান (ইংরেজি ভাষায়)। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ আগস্ট ২০১০ 
  21. Fischer, Russ (৩০ জুলাই ২০১০)। "Fox Searchlight Sets November 5th Release Date For Danny Boyle's 127 Hours"/Film (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১০ 
  22. "127 Hours"FilmDates.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১১ 
  23. "Danny Boyle's 127 Hours releases on 26th Jan" (ইংরেজি ভাষায়)। আইবিএন লাইভ। ২৫ জানুয়ারি ২০১১। ২ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১১ 
  24. "'127 Hours' Causes Fainting, Vomiting, Seizures" (ইংরেজি ভাষায়)। হাফিংটন পোস্ট। ৪ নভেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১৩ 
  25. Nemiroff, Perri (৭ সেপ্টেম্বর ২০১০)। "Danny Boyle's 127 Hours Labeled "Too Intense" After Medics Called to Screenings"সিনেম্যাটিক্যাল (ইংরেজি ভাষায়)। ৯ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  26. Kellett, Christine (১৫ সেপ্টেম্বর ২০১০)। "Audience faints at "realistic" amputation film"দি এজ (ইংরেজি ভাষায়)। Melbourne। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  27. Finke, Nikki (১৭ অক্টোবর ২০১০)। "Dial 911 For 127 Hours Screenings"ডেডলাইন (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১১ 
  28. VanAirsdale, S.T. (৪ নভেম্বর ২০১০)। "Armed and Dangerous: A Comprehensive Timeline of Everyone Who's Fainted (Or Worse) at 127 Hours" (ইংরেজি ভাষায়)। মুভিলাইন। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১৩ 
  29. "127 Hours Movie Reviews, Pictures"রটেন টম্যাটোস (ইংরেজি ভাষায়)। Flixster। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১১, ২০১৮ 
  30. "127 Hours Reviews, Ratings, Credits"মেটাক্রিটিক (ইংরেজি ভাষায়)। CBS Interactive। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ৭, ২০১১ 
  31. Burchby, Casey। "127 Hours: DVD Talk Reviews of the DVD Video"DVD Talk (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৪, ২০১১ 
  32. Ebert, Roger (১০ নভেম্বর ২০১০)। "127 Hours"শিকাগো সান-টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ নভেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১০ 
  33. Emami, Gazelle (২৬ অক্টোবর ২০১০)। "HuffPost Review: 127 Hours" (ইংরেজি ভাষায়)। হাফিংটন পোস্ট। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১৩ 
  34. "The 68th Annual Golden Globe Award" (ইংরেজি ভাষায়)। গোল্ডেন গ্লোব। ১৪ ডিসেম্বর ২০১০। ২৫ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  35. "2011 BAFTA Nominees" (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। বাফটা। ১৫ জানুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  36. "Nominees for the 83rd Academy Awards" (ইংরেজি ভাষায়)। অস্কার। ২৫ জানুয়ারি ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  37. "Broadcast Film Critics Association Awards Nominees" (ইংরেজি ভাষায়)। বিএফসিএ। ১৮ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  38. "A.R. Rahman wins Critics' Choice award" (ইংরেজি ভাষায়)। Chennai, India: দ্য হিন্দু। ১৭ জানুয়ারি ২০১১। ২৭ জানুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  39. "NYFCO Awards 2001-2013" (ইংরেজি ভাষায়)। nyfco.net। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১৭ 
  40. "2010" (ইংরেজি ভাষায়)। dfwcritics.com। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা