হ্যারি ডিন

ইংরেজ ক্রিকেটার

হ্যারি ডিন (ইংরেজি: Harry Dean; জন্ম: ১৩ আগস্ট, ১৮৮৪ - মৃত্যু: ১২ মার্চ, ১৯৫৭) ল্যাঙ্কাশায়ারের গারস্ট্যাং এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ বোলার হিসেবে খেলতেন। বামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম সুইং কিংবা উপযুক্ত পরিবেশে ধীরগতিসম্পন্ন স্পিন বোলিং করতেন।

হ্যারি ডিন
১৯২০ সালে হ্যারি ডিন
ক্রিকেট তথ্য
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৬৭
রানের সংখ্যা ১০ ২,৫৫৯
ব্যাটিং গড় ৫.০০ ১০.৩১
১০০/৫০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ৪৯*
বল করেছে ৪৪৭ ৫৯,২৮৯
উইকেট ১১ ১,৩০১
বোলিং গড় ১৩.৯০ ১৮.১৪
ইনিংসে ৫ উইকেট ৯৭
ম্যাচে ১০ উইকেট ২৪
সেরা বোলিং ৪/১৯ ৯/৩১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/০ ১২১/০
উৎস: ক্রিকইনফো, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭

কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ সম্পাদনা

১৯০৬ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে যোগ দেন। প্রথম মৌসুমেই ৬০ উইকেট দখল করে সবিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দেন। ১৯০৭ সালে শতাধিক উইকেট পেলেও বেশ রান দিয়ে ফেলেন। তবে, জর্জ হার্স্টের বোলিংয়ের সাথে মিল রেখে অগ্রসর হওয়ায় বেশ সাফল্য লাভ করতে থাকেন।[১]

শুষ্ক আবহাওয়ায় স্লো-মিডিয়াম স্পিনার হিসেবে আবির্ভূত হন। ১৯১০ সালে ১৩৭ উইকেট দখল করে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রথম একাদশের সেরা বোলারের মর্যাদা লাভ করেন।[২] ১৯১১ সালে ওয়াল্টার ব্রিয়ারলি ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতার কারণে খেলা থেকে সরে আসলে ডিনের ওপর চাপের সৃষ্টি হয়। তাস্বত্ত্বেও কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে ১৫৭ উইকেট পান যা প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিকটতম বোলারের চেয়ে ২৩ উইকেট বেশি ছিল।[৩] ছয় খেলায় ব্রিয়ারলির সাথে অংশ নিয়ে দুজনে অবিস্মরণীয় বোলিং নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। ক্যান্টারবারিতে কেন্টের বিপক্ষে শুরুতেই তারা আট উইকেট তুলে নেন মাত্র ৫৮ রানে। খেলায় দুজনে সবগুলো উইকেট লাভ করেন। তন্মধ্যে, ব্রিয়ারলি ১২/২১৮ ও ডিন পান ৮/১৪৪।[৪] এরফলে কেন্টের হ্যাট্রিক শিরোপায় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।

১৯১২ সালে স্পিনের দিকে ঝুঁকে পড়েন তিনি। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ১৩/৪৯ ও কেন্টের বিপক্ষে ১৫ উইকেট দখল করেন। ১৯১৩ সালে বৃষ্টি আক্রান্ত গোলাপের খেলায় সেরা ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। প্রথম ইনিংসে ৯/৬২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৮/২৯ পান। খেলায় তার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ১৭/৯১ যা অদ্যাবধি প্রথম শ্রেণীর খেলায় ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে বা ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে সেরা হিসেবে চিহ্নিত।

১৯১৪ সালে মৌসুমের প্রথমার্ধের অধিকাংশ সময়ই খেলার বাইরে অবস্থান করেন।[৫] তবে ফিরে এসে শক্তিশালী হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ১৩/৮৪ পেয়েছিলেন। ১৯১৯ সালে বেশ দূর্বল ক্রীড়াশৈলী উপহার দেন। কিন্তু, ১৯২০ সালে স্বরূপ ধারণ করে সমালোচকদের উপযুক্ত জবাব দেন। ১২০ উইকেট নেন তিনি। লরেন্স কুককে সাথে নিয়ে ল্যাঙ্কাশায়ারকে দ্বিতীয় স্থানে নিয়ে যান।

পূর্ণাঙ্গ টেস্ট জীবনের বোলিং গড়
চার্লস ম্যারিয়ট (ইংল্যান্ড)
৮.৭২
ফ্রেডরিক মার্টিন (ইংল্যান্ড)
১০.০৭
জর্জ লোহম্যান (ইংল্যান্ড)
১০.৭৫
লরি ন্যাশ (অস্ট্রেলিয়া)
১২.৬০
জন ফেরিস (অস্ট্রেলিয়া/ইংল্যান্ড)
১২.৭০
টম হোরান (অস্ট্রেলিয়া)
১৩.০০
হ্যারি ডিন (ইংল্যান্ড)
১৩.৯০
আলবার্ট ট্রট (অস্ট্রেলিয়া/ইংল্যান্ড)
১৫.০০
মাইক প্রোক্টর (দক্ষিণ আফ্রিকা)
১৫.০২
জ্যাক আইভারসন (অস্ট্রেলিয়া)
১৫.২৩
টম কেন্ডল (অস্ট্রেলিয়া)
১৫.৩৫
অ্যালেক হারউড (অস্ট্রেলিয়া)
১৫.৪৫
বিলি বার্নস (ইংল্যান্ড)
১৫.৫৪
জন ট্রিম (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
১৬.১৬
বিলি বেটস (ইংল্যান্ড)
১৬.৪২

তথ্য: ক্রিকইনফো
যোগ্যতা: পূর্ণাঙ্গ টেস্ট জীবনে কমপক্ষে ১০ উইকেট।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯১২ সালের ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতায় তিন টেস্টে অংশ নেন। গ্রীষ্মের ঐ প্রতিযোগিতায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুইবার ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক খেলায় তার উপস্থিতি ছিল। পোতানো পিচের অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে উনিশ রানে চার উইকেট পান। নিজ দেশে অনুষ্ঠিত পরবর্তী সিরিজ শুরু হবার পূর্বে অবসরের কথা জানান দেন।

অবসর সম্পাদনা

১৯২৬ সাল পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যান। অবসর নেয়ার পর রোসাল স্কুলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন হ্যারি ডিন। ৭৩ বছর বয়সে ১২ মার্চ, ১৯৫৭ তারিখে ৭৩ বছর বয়সে ল্যাঙ্কাশায়ারের গারস্ট্যাং এলাকায় দেহাবসান ঘটে তার।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. The Times; June 4, 1909; p. 12
  2. Pardon, Sydney H.; John Wisden’s Cricketers’ Almanac; Forty-Eighth Edition (1911); Part II, p. 67
  3. First-Class Bowling in England in 1911 by Wickets
  4. Pardon, Sydney H.; John Wisden’s Cricketers’ Almanac; Forty-Ninth Edition (1912); Part II, p. 37
  5. Pardon, Sydney H.; John Wisden’s Cricketers’ Almanac; Fifty-Second Edition (1915); Part II, p. 191

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা